যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ

>আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন।আজকের পোষ্টে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ, যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা, যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম কি, যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি, যক্ষ্মা হলে করণীয় ও যক্ষ্মা কি ছোয়াঁচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আজকের পোষ্টে যক্ষ্মা রোগীদের কল্যাণে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ ও এ সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ, তাহলে আল্লাহর নাম নিয়ে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ পোষ্ট টি শুরু করা যাক।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ | যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা | যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম কি | যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি | যক্ষ্মা হলে করণীয় | যক্ষ্মা কি ছোয়াচেঁ

যক্ষ্মা কি এবং যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি

আপনি যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানার আগে অবশ্যই যক্ষ্মা সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে থাকলে তা আগে জানতে হবে।

আপনি কি জানেন টিবি বা যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি ? যক্ষ্মা একটি বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ এবং যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম হলো মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস।
যক্ষ্মা কেবল হৃৎপিণ্ড, ঐচ্ছিক পেশি, অগ্ন্যাশয় ও থাইরয়েড গ্রন্থি ছাড়া মানব শরীরে যেকোনো অঙ্গে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে তবে যক্ষ্মা বেশিরভাগ ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়।

যক্ষ্মা কি ছোয়াঁচে

যক্ষ্মা বা টিবি একটি বায়ুবাহিত সংক্রামক বা ছোয়াঁচে রোগ যা রোগীর হাঁচি কাশি, থুতু এমন কি কথা বলার সময়ও রোগীর ফুসফুস থেকে বাতাসে যক্ষ্মা রোগের জীবানু ছড়ায় এবং পরবর্তীতে এই বাতাসে ভাসমান জীবাণুর ড্রপলেট যার শরীরে প্রবেশ করবে তাকেই যক্ষ্মার রোগ সংক্রমিত করবে।
যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ প্রথমে ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় তবে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের শরীরে ফুসফুস থেকে দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গে ও ছড়িয়ে যেতে পারে যেমনঃ মস্তিষ্ক, ত্বক, কিডনি, লিভার, অন্ত্র, হাড় ইত্যাদি সহ এমনকি দেহের বাহিরে যেকোনো অঙ্গ যেমন মাথার চুল থেকে শুরু করে দেহের যেকোনো অঙ্গে সংক্রমণ করতে পারে।

যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ

যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি, যক্ষ্মা কি ছোয়াঁচে এ বিষয়ে জানার পর এখন আমরা ক্রমান্বয়ে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ গুলো তুলে ধরবঃ
  • যক্ষ্মা রোগের ক্ষেত্রে মৃদু জ্বর টানা দুই সপ্তাহের বেশি থাকবে
  • অনেক দিন ধরে কাশি এবং কাশির সাথে মুখে কফ আসা এবং মাঝে মাঝে কফের সাথে রক্ত বের হওয়া
  • শ্বাসকষ্ট
  • রক্তচাপ কমে যাওয়া
  • ওজন হ্রাস পাওয়া
  • শারিরীক দুর্বলতা
  • বুকে ব্যথা অনুভব করা
  • খাবারে অরুচি বা ক্ষুদামন্দা
উপরোক্ত বর্ণিত যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ গুলো হলো ফুসফুস যক্ষ্মার লক্ষণ তবে আপনার শরীরে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ গুলো ঠিক তখনই দেখা দিবে যখন আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে, আপনি অতিরিক্ত মাদক সেবন করলে, আপনি যদি অপুষ্টিতে ভুগে থাকেন, আপনি যদি কোনো যক্ষ্মা রোগীর বেশি সংস্পর্শে আসেন এবং আপনি যদি বয়স্ক হয়ে থাকেন এক্ষেত্রে আপনার শরীরে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ গুলো দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম কি

আপনি কি জানেন যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম কি? যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম হলো বিসিজি যার পূর্ণরুপ হচ্ছে ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুয়েরিন।

বাংলাদেশে যেহেতু যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ বা পাদুর্ভাব রয়েছে সেহেতু শিশুদের জন্মের পরে যেন তাদের কখনো যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ না দেখা দেয় সেই জন্য এই বিসিজি টিকা দেওয়া হয় এবং এটি যক্ষ্মা প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যক্ষ্মার মতো মরণব্যাধির থাবায় ২০১৮ সালে বিশ্বে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণে ১ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয় এবং মারা যান ১৫ লাখ মানুষ।
তবে যক্ষ্মার ভ্যাকসিন বা বিসিজি টিকার পাদুর্ভাব হওয়ার পর থেকে এখন ভ্যাকসিনেশনর মাধ্যমে যক্ষ্মা নিরাময় বা প্রতিরোধ করা যায়।
তাই যক্ষ্মা প্রতিরোধ করতে জন্মের পরে যত তাড়াতাড়ি পারেন এই বিসিজি টিকা টি দিয়ে দিবেন এবং যক্ষ্মা মুক্ত থাকবেন সারাজীবন।

যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা কিভাবে করা হয়

যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনার শরীরে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ গুলো আছে কিনা তা জানার পর আপনার শরীরে যক্ষা রোগের জীবানু আছে কিনা বা আপনার যক্ষ্মা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ সারাতে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি হলো আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথেষ্ট এবং দীর্ঘায়িতভাবে ৬ থেকে ৯ মাস ব্যাপী যক্ষ্মা রোগের এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করতে হবে এছাড়া যক্ষ্মার মতো মরণব্যাধির আরেকটি উন্নত চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি।

যক্ষ্মা হলে করণীয়

যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ পোষ্টটি তে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ, যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা, যক্ষ্মা কি ছোয়াচেঁ, যক্ষ্মা রোগের টিকার নাম কি, যক্ষ্মা রোগের জীবানুর নাম কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর এখন আপনারা জানবেন যক্ষ্মা হলে করণীয় বা যক্ষ্মা হলে করণীয় কি।
নিম্নে যক্ষ্মা হলে হলে করণীয় উপায়সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
  • যত দ্রুত সম্ভব রোগী কে যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কে অভিজ্ঞ একজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে
  • যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ প্রত্যেক শিশুর শরীরে ঠেকাতে বিসিজি টিকা অবশ্যই দিতে হবে
  • জনবহুল এলাকায় বসবাস করবেন না এবং যথাসম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন
  • যতদিন না রোগী যক্ষা রোগের লক্ষণ হতে সুস্থ হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত রোগীকে আলাদা থাকার ব্যবস্থা করুন
  • রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, খাবারের প্লেট ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং রোগীর ব্যবহৃত জিনিস শুধু তার জন্যই বরাদ্দ রাখুন
  • যক্ষ্মা রোগের লক্ষণে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হবে যাতে হাঁচি কাশি আসলে মুখ থেকে জীবানুর ড্রপলেট বাতাসে না ছড়ায়
  • যেখানে সেখানে কফ থুতু ফেলবেন না এর জন্য আলাদা পাত্র ব্যবহার করুন
  • যক্ষ্মা রোগের লক্ষণে আক্রান্ত এমন ব্যক্তির সাথে কথা বলার সময় একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন কারণ কথা বলার সময়ে ও যক্ষ্মা রোগের জীবানু রোগীর ফুসফুস থেকে বাতাসে ছড়াতে পারে
  • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেসব খাবার গ্রহণ করুন যেমনঃ দুধ, আমলকী, কমলা, পেঁপে, গাজর, আম, কালোজিরা, মধু ইত্যাদি।
  • আপনার ডায়বেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবা গ্রহণ করুন কারণ আপনার ডায়বেটিস থেকে থাকলে আপনার শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি তে বাধাগ্রস্ত হবে।

শেষ কথা, যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ প্রতিরোধে আজকের পোষ্টটি আশা করি আপনাদের কল্যাণে আসবে ইনশাআল্লাহ।
যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ ঠেকাতে পোষ্ট টি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং যক্ষ্মা মুক্ত পরিবেশ গড়ুন, ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url