বাদাম খেলে কি উপকার হয় কাঁচা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি
কাঁচা বাদামের পুষ্টিগুণ ব্রেইনের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। মাংসপেশী ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। কাচা বাদাম খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কাঁচা বাদামে থাকে প্রোটিন, ফ্যাট, ক্যালোরি, ভিটামিন-ই, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, কপার, ফসফরাস, ম্যাংগনিজ সহ আরও অনেক উপকারী উপাদান।
পুষ্টিগুণ দেখতে গেলে কাচা বাদামের কোন বিকল্প নেই। বাদাম খেতে অনেকেই পছন্দ করে। নিয়মিত বাদাম যে কত রোগ নির্মূল করে তা কারও অজানা নয়। বাদামে যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বাদাম খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা বিদ্যামান তাই আজ আলোচনা করব বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো
পেইজ সূচিপত্রঃ বাদাম খেলে কি উপকার হয় কাঁচা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি
- ভূমিকা
- কাঁচা বাদাম খেলে কি উপকার হয়
- কাঁচা বাদামের উপকারিতা
- কাঁচা বাদামের অপকারিতা
- কাঁচা বাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংস পেশি তৈরিতে সাহায্য করে
ভূমিকা
কাঁচা বাদাম খেলে কি উপকার হয়
হাড় গঠনে ও মাংশপেশী মজবুত রাখেঃ কাচা বাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংসপেশি তৈরিতে সাহায্য করে। কাঁচা বাদামের রয়েছে ফসফরাস যা হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাইতো প্রতিদিন ১বাটি করে কাঁচা বাদাম খেলে শরীরে হাড়ের কোন সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে না কোন।
আরো পড়ুনঃ কিসমিস খেলে কি হয় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আমেরিকার এন্ডস ইউনিভার্সিটির গবেষক দের করা এক পরীক্ষায় বাদামে কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ক্যানসার রোগকে প্রতিরোধ করেঃ কাঁচা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে। সেইসাথে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আরো নানা উপকারে আসে যেমন- অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে কোষ দের ক্ষত রোধ করে। সেইসঙ্গে ত্বকের এবং শরীরের বয়স কমাতে সাহায্য করে থাকে।
দেহের পুষ্টি অভাব দূর করেঃ কাঁচা বাদামের উল্লেখিত সবগুলো উপাদানই শরীরের জন্য খুব উপকারী। একাধিক ক্রনিক রোগ দূর করতে উপাদানগুলো সাহায্য করে।
ত্বক ও চুল সুন্দর রাখেঃ কাঁচা বাদামের ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিন ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে। শরীরে বয়স কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ম্যাগনেসিয়াম খনিজ টির অভাবে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। আর বেশিদিন যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে, তাহলে হঠাৎ করে স্টক , হার্ট অ্যাটাক এবং কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই দেখে যাতে কোন সময় ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতি দেখা না দেয় তাই নিয়মিত কাচা বাদাম খেতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে বাদামঃ বাদাম খেলে খিদে কমে যায় যার ফলে বেশি খাবার প্রবণতাও কমে যায়। সেইসঙ্গে শরীরের প্রয়োজন অতিরিক্ত ক্যালরি জমে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাদামঃ বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। চিকিৎসকরা তাই নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেতে পরামর্শ দেয় ডায়াবেটিস রোগীদের। এক গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা বাদাম খেলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায়২৫-৩৮ শতাংশ কমে যায়।
কোষদের ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ বাদামের ভিতরে থাকা ভিটামিন -ই শরীরের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে থাকা কোষের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীরে যাতে কোনভাবে ক্ষতের সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে বয়স বাড়লেও শরীরের ওপর তার কোনো প্রভাব পড়ে না।
কাঁচা বাদামের উপকারিতা
আরো পড়ুনঃ শসা খাওয়ার ১০ টি উপকারী গুণ
ক্লান্তি দূর করেঃ শক্তির ভালো উৎস কাচা বাদাম। কাচা বাদাম খাওয়ার ফলে দেহে এনার্জি দেয়। নিয়মিত বাদাম খেলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়।মস্তিষ্কের শক্তিশালী করেঃ কাঁচা বাদামের একপ্রকার তেল থাকে। যা ভিটামিন বি সমৃদ্ধ এর জন্য এটি একটি শক্তিশালী খাদ্য হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও বাদামে রয়েছে ভিটামিন- বি যা মেমোরি শক্তি বৃদ্ধি করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ বাদামে পটাশিয়ামের পরিমাণ উচ্চমাত্রায় থাকে এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, সোডিয়ামের মাত্রা বেশি হলে দেহে রক্ত বৃদ্ধি পায় তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়া উপকারী।
কোলেস্টেরল কমায়ঃ নিয়মিত বাদাম খাওয়ার দ্বারা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। বাদামের উচ্চ প্রোটিন সামগ্রী হওয়ার কারণে দ্রুত হজম শক্তি বাড়ায়। তাই যারা কোলেস্টরলের সমস্যায় ভুগছেন তাদেরকে নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেতে হবে।
স্বাস্থ্যকর হৃদয়ঃ কাঁচা বাদামের এক প্রকার এসিড পাওয়া যায় যা হার্টের পক্ষে খুব ভালো। এছাড়াও দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম, তামা ও লোহার মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং হৃদরোগের সহায়তা করে।
মেজাজ ভালো রাখেঃ আপনি যদি দিনে একবার অন্তত কাচা বাদাম খান তাহলে আপনাকে ক্যালোরির জন্য অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে না। বাদাম খাদ্য মেজাজ হিসেবে পরিচিতি। তাই নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেলে মনের বিষণ্ণতা দূর করে এবং মন রিফ্রেশ করে তোলে।
ক্যান্সার থেকে বাঁচাইঃ কাজু প্রনোথোসিনিডিন ফ্লাডোনিওয়াইডের একটি প্রকার যা ক্যানসার কোষগুলিকে ক্রমবর্ধমান থেকে আটকায়। কাচা বাদাম নিয়মিত খেলে ক্যান্সার এর কিছু রোগ থেকে রক্ষা রাখে।
বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিবন্ধন বাদামের উপকারিতা জেনে নিলাম। এবার আসা যাক মাত্রাতিরিক্ত কাচা বাদাম খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে। কাচা বাদাম বেশি খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর অধিক পরিমাণে বাদাম খেলে আবার উল্টোটাও হতে পারে। তাই নিম্নে কাঁচা বাদামের অপকারিতা রইল-
কাচা বাদামের অপকারিতা
ওজন বাড়াতে পারেঃ বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিবন্ধের বাদামের উপকারিতা আমরা আগেই জেনেছি। উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে তাই মাত্রা অতিরিক্ত কাচা বাদাম খেলে আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন। কাচা বাদাম ওজন কমায় পাশাপাশি বেশি খেলে ওজন বাড়াতে পারে। এছাড়া অন্যান্য বাদাম রয়েছে যা সঠিক মাত্রায় না খেলে ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। তাই নিয়মিত খাবারের তালিকায় কাচা বাদাম যোগ করলে চারভাগের একভাগ রাখুন।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চা ও সুস্বাস্থ্যের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা
গ্যাস্টিকের সমস্যাঃ আপনার কাচা বাদাম পছন্দ, আর আপনি রোজ প্রয়োজনের থেকে ২০০ গ্রাম বা তার বেশি খেয়ে ফেলেন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে কারণ বাদামের এটি একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
এলার্জির সমস্যাঃ কাঁচা বাদামের উপকারিতা রয়েছে তবু কাচা বাদাম খাওয়ার সময় যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি খাওয়া যায় তাহলে কিছু সাইডএফেক্ট দেখা যায়। তার মধ্যে একটি অ্যালার্জির সমস্যা। কারণ কাঁচা বাদামের এলার্জির হওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই কাচা বাদাম খাওয়ার আগে সচেতন হন কেননা কাঁচা বাদামের আপনার অ্যালার্জি থাকতে পারে।
ঔষধের কাজকর্মে বাধাঃ কাঁচা বাদামে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম ঔষধ এর কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যার কারণে রোগ নির্মূল হতে দেরি হয়। আশাকরি কাঁচা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছন। এবার সঠিক পরিমাণে কাচা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url