লাল শাক চাষ পদ্ধতি ও অধিক উৎপাদনের কৌশল
লাল শাক একপ্রকার শাক বা পাতা সবজি। যার পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। লাল শাকের রং লাল এবং রান্না করার সময় এই লাল শাক থেকে লাল রং বের হয়। লাল শাক আগে শুধুমাত্র শীতকালে পাওয়া যেত কিন্তু এখন বছরে বারো মাস পাওয়া যায়। লাল শাক ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। লাল শাকের গোড়া থেকে যদি শাক ভেঙে নিয়ে আসা হয় তবে তার ঘোড়া বা কান্ড থেকে আবার নতুন লাল শাক গজায়।
আমাদের দেশে লালশাক জনপ্রিয় সাক। বাংলাদেশের সব অঞ্চলে লাল শাকের চাষ হয়। রান্না করার পর গারো লাল রং হয় শাকের এই শাক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। লাল শাক এর ইংরেজি নাম Red Amaranth ও বৈজ্ঞানিক নাম Anaranthus oleraceus বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় লালশাক
বাণিজ্যিকভিত্তিতে বাজারজাত করা হচ্ছে। নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
পেইজ সূচিপত্রঃ লাল শাক চাষ পদ্ধতি ও অধিক উৎপাদনের কৌশল
চাষের সময়
সারাবছর লাল শাক চাষ করা হয়। তবে ভাদ্র পৌষ পর্যন্ত বেশি চাষ হয়।
পুষ্টিগুণ
লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন এ বি সি ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
জাত
আলতাপে টি ২০ ,রক্ত লাল, রক্ত জবা ,রক্ত রাঙ্গা ,ললিতা , বারি লাল শাক১,পিংকি কুইন ও স্থানীয় জাত।
বারি লালশাক এক জাতের বৈশিষ্ট্য
আমাদের দেশের বারি লালশাক এক জাতের শাক ১৯৯৬ সালে অনুমোদন হয়।
এশাগের ফুলের রং লাল এবং বিচ গোলাকার হয়।
প্রতি গাছে ১৫ থেকে ২০টি পাতা থাকে।
বিচের উপরিভাগ কালো ও কিছুটা লাল দাগ মেশানো থাকে।
গাছের উচ্চতা২৫-৩৫সেঃমি এবং ওজন১০-১৫ গ্রাম হয়ে থাকে।
এ শাকের পাতার বোটা নরম ও উজ্জ্বল লাল রঙের হয়।
আরো পড়ুনঃ ফুলকপি এর বীজ ও বিজ তলার তথ্য ও উপকারিতা
জলবায়ু
সারাবছরই লাল শাক চাষ করা হয়। তবে লালশাকের ফলন বেশি হয় শীতের শুরুতে।
মাটির প্রকৃতি
সব ধরনের মাটিতে এ শাক চাষ করা যায় তবে বেলে দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ মাটি এবং যেখানে পানি জমে না এমন জমি চাষের জন্য বেশি উপযোগী।
বীজ বপন ও জমি তৈরি
একটি কাঠি দিয়ে ১৫ থেকে 20 সেন্টিমিটার গভীর লাইন টেনে শারিতে মাটি সমান করে দিতে হবে।
একসারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব 20 সেন্টিমিটার হতে হবে।
লাল শাকের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বপন করা যায় ,তবে সারিতে বীজ বপন করা সুবিধাজনক।
চাষের আগে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে।
জমি ও মাটির অবস্থা বুঝে চার থেকে ছয় টি চাষ ও মই দিতে হবে।
সার প্রয়োগ
ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার দিতে হবে।
সারের পরিমাণ
সার এক শতকে হেক্টরপ্রতি
গোবর ৪০কেজি ১০ টন
ইউরিয়া ৫০০গ্রাম ১২৫ কেজি
টিএসপি ৭৫গ্রাম ৭৫ কেজি
এম ও পি ৪০০গ্রাম ১০০ কেজি
আরো পড়ুনঃ শসা খাবেন জেনে নিন শসার ১০ টি উপকারী গুণ
পরিচর্যা
ছিটিয়ে বোনা হলে প্রতি বর্গমিটারে ১০০থেকে ১৪০ টি গাছ রাখতে হবে। ঘন জায়গা থেকে চারা তুলে পাতলা করে দিতে হবে। ৪-৫ দিন পর পর শেচ দিতে পারলে ভালো। শারিতে বোনা হলে প্রতি লাইনের ৫ সেন্টিমিটার দূরে দূরে গাছ রাখতে হবে। তাছাড়া পরিষ্কার করে সময়মতো মাটি আলগা করে দিতে হবে।
রোগবালাই
শুঁয়াপোকাঃ
এ পোকা গাছের পাতা খেয়ে থাকে। মেলামিইয়ন ,৫৭ ইসি, রক্সি অন৪০ ইসি এই ওষুধগুলো যেকোনো একটি ১.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মরিচা রোগঃ
এ রোগ গাছের শিকড় ছাড়া সব জায়গায় আক্রমণ করে। সাদা অথবা হলুদ দাগ পাতার নিচের দেখতে পাওয়া যায়।
ফসল সংগ্রহ
বিচ বোনার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে সাখ খাওয়ার উপযুক্ত হয় এক সাথে না তুলে ধীরে ধীরে তুলা ভালো।
ফলন
প্রতি শতকে ৩০ থেকে ৪০ কেজি ,হেক্টর প্রতি ৫ থেকে ৬ টন।পরিশেষে আমি বলতে চাই, শরীরে আইরন এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে লাল শাক হতে পারে উপকারী বন্ধু। লালসাগে দেহে রক্ত বাড়ে ,পুষ্টি মূল্য বিচারের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য লাল শাক উপকারী।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url