চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ইনফেকশন বা কোন কারনে চোখের লাইনিং বা আবরণ যদি উত্তেজিত হয় তখন যে অবস্থা হয় তাকে চোখ ওঠা বলে। চোখ ওঠার আগে চোখের পাতা লাল হয় এবং চোখ বন্ধ হয়ে যায়। চোখ ওঠার কারণে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে চোখের পাতা একটার সাথে আরেকটা যুক্ত হয়ে যায় চোখ ওঠার কারনে। ঠান্ডার সময় মৃদু চোখ উঠতে দেখা যায়। তবে যে কোন মৌসুমেই চোখ উঠতে পারে।
বর্তমান সময়ে চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ বেশি বাড়ছে। এ রোগ কে ইংরেজিতে কনজাংটিভাইটিস
বলা হয়। যখন দেখবেন চোখ উঠা রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তৎক্ষণা দেরি না করে
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এবং এ রোগের প্রতিকার সমূহ মেনে চলা উচিত। চোখ
উঠা রোগ ভাইরাসজনিত ও ছোঁয়াচে। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
পেইজ সূচিপত্রঃ চোখ উঠা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- চোখ ওঠার কারণ
- চোখ ওঠা রোগ কেন হয়
- চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ কি
- চোখ ওঠা রোগ কিভাবে ছড়ায়
- চোখ ওঠা রোগে করণীয়
- কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত
- চোখ উঠা রোগের প্রতিকার
চোখ ওঠার কারণঃ
ইনফেকশন বা কোন কারণে চোখের লাইনিং বা আবরণ যদি উত্তেজিত হয় তখন যে অবস্থা হয়
তাকে চোখ ওঠা বলে। নিম্নে চোখ ওঠার কারণ তুলে ধরা হলো-
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের দুই পাতা লেগে থাকলে
চোখ থেকে পানি পড়তে পারে।
চোখের চারপাশে হালকা লাল রং হতে পারে।
চোখের পাতা ফুলে গেলে।
চোখ জ্বালাপোড়া করতে পারে।
চোখ থেকে ঘন হলুদ বা সবুজ হলুদ রঙের ময়লা জাতীয় পদার্থ চোখ হতে বের
হতে পারে।
লাল রঙ যদি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং চোখ ফুলে যায় তবে ডাক্তারের কাছে যেতে
হবে।
আরো পড়ুনঃ ফ্লু ভাইরাসের লক্ষণ
চোখ ওঠার রোগ কেন হয়ঃ
চোখ ওঠা রোগ একটি ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগ সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে
থাকে। যাদের শরীরে এলার্জি আছে তাদের কখনো কখনো এই এলার্জির কারণেও চোখ ওঠা রোগ
হয়। আবার যে মৌসুমে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকে সে সময় চোখ উঠা রোগটা বেশি হয়।
চোখ ওঠা রোগের লক্ষণঃ
চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
চোখের ভিতরে খচখচ করে।
চোখের পাতা ফুলে যায়।
চোখে হালকা জ্বালাপোড়া হয়।
ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা লেগে যায়।
কারো চোখের কোন নিয়া আক্রান্ত হলে তারা চোখে কম দেখেন।
চোখে পেজটি হয়।
চোখে ব্যথা হয়।
চোখ ওঠার রোগ কিভাবে ছড়ায়ঃ
চোখ ওঠার রোগ একটি ছোয়াচে রোগ। চোখ ওঠা রোগ সাধারণত কন্টাক্ট এর মাধ্যমে ছড়ায়। চোখ উঠা রোগের ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্র জামাকাপড় গামছা অন্যরা ব্যবহার করলে তাদেরও চোখ ওঠা রোগ হবে। আবার চোখ ওঠা রোগীর সাথে কন্টাক্ট এর পর হাত না ধুয়ে ওই হাত চোখে চুলে আপনিও চোখ ওঠার আগে আক্রান্ত হবেন।
আরো পড়ুনঃ টিবি রোগ কি - টিবি রোগ কেন হয়
চোখ ওঠা রোগে করণীয়ঃ
যেসব কারণে চোখ ওঠার সম্ভাবনা থাকে সেগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন-এলার্জিজনিত
কারণ বা কোন কেমিক্যালস কিংবা পরিবেশ দ্বারা চোখ ওঠে সেসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে
হবে। যদি আপনার শিশুর চোখ ওঠে তবে শিশুর চোখ সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে এবং ও
কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে। এবং চোখের পাতাগুলো যতটা সম্ভব খোলা রাখতে
হবে। বড় বাচ্চারা চোখে কালো চশমা ব্যবহার করতে পারে।
চোখ ওঠা প্রতিরোধে করণীয়ঃ
যেহেতু চোখ ওঠারও একটি ছোঁয়াচে রোগ তাই একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই এরূপ
প্রতিরোধ করা যায়। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
চোখ ওঠা রোগ সাধারণত এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
চক্ষু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে আর্টিফিশিয়াল টিয়ার, এনটিওটিক ড্রপ ডোজ
মেনে ব্যবহার করতে হবে।
ভিড়ে নিয়ে চলতে হবে।
চোখ মুছার জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
চোখ ওঠা রোগীদের সব সময় আলাদা রাখতে হবে যাতে অন্যদের মাঝে এই রোগ ছড়াতে না
পারে।
চোখ ওঠা রোগীকে কালো চশমা পড়তে হবে
হাত দিয়ে চোখ চুলকানো যাবে না।
আরো পড়ুনঃ যক্ষা রোগ কেন হয়
চোখ ওঠা রোগীরা নিজেরাই ঔষধের দোকান থেকে স্টোরের জাতীয় ড্রপ নেন কিন্তু এই ড্রপ
বেশি দিলে চোখের ক্ষতি হতে পারে। যেমন, গ্লূমোসার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
থাকে। তাই নিজে কোন ড্রপ ব্যবহার করা উচিত নয়।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিতঃ
শিশু এবং বড়দের ক্ষেত্রে এ রোগের চিকিৎসা একই তবে শিশুরা যেহেতু বড়দের মতো যত্ন
নিতে পারে না তাই শিশুদের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
অনেক সময় চোখ ওঠার রোগীদের চোখ অনেক ফুলে যায় এবং চোখের কোনায় পানি জমে।
সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
সাধারণভাবে চোখ লাল হলেও সামান্য পানি পড়লেই চোখ ফুলে যায় এক্ষেত্রে সাত
দিন অপেক্ষা করাই ভালো। এরপরে যদি না ভালো হয় তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া
উচিত।
চোখ ওঠা রোগের প্রতিকারঃ
চোখ উঠা রোগ একটি ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে এ
রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জানা জরুরী যথা-
পুরো হাত ভালো মতো পরিষ্কার করতে হবে।
যেসব বিষয় শিশুর জন্য এলার্জি সেসব বিষয়গুলো থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোখ ওঠা রোগ পরিবারের একজনের থেকে অন্য জনের হতে পারে সুতরাং
এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পরিবারের সবার পৃথক কাপড় তোয়ালে
থাকতে হবে।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, চোখ হলো অমূল্য সম্পদ ,চোখের যে কোন রোগই অবহেলা করবেন না। আপনার একটা সামান্য ভুলের কারণে সারা জীবন আফসোস করতে হবে, ওপরে উল্লেখিত পরামর্শ গুলো কেবলমাত্র এই সচেতনতার জন্যই তাই চোখের যে কোন সমস্যায় অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url