রমজান মাসে রোজা আমরা কেন রাখবো
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ফরজ ইবাদত হলো রোজা। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি স্তম্ভ হলো রোজা। শুধু পানাহার থেকে না স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা থেকেও বিরত থাকার নামই হচ্ছে সিয়াম। আল্লাহ তাআলা মানুষকে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অশ্লীলতা এবং সকল ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার নামই হলো রোজা। রোজা শব্দের সাধারণ অর্থ হলো বিরত থাকা তাই তো চুপ বা নিস্তব্ধ থাকা কেউ রোজা বলা হয়। আর যে ব্যক্তি চুপ থাকে তাকে সায়েম বলে।
রোজা রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো দুনিয়ার সব খারাপি থেকে নিজেকে বিরত রাখা অথবা চুপ
থাকা। যা মন মহান আল্লাহ নির্দেশ পালন করা হবে তেমনি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা যাবে।
রোজা মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। নিম্নে রমজান মাসে রোজা
আমরা কেন রাখবো এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
পেইজ সূচিপত্রঃ রমজান মাসে রোজা আমরা কেন রাখবো
ইসলামের পূর্বে যুগে রোজাঃ
আরো পড়ুনঃ রমজান মাসে প্রাথমিক যে বিষয়গুলো জানা জরুরি
রমজান মাসের রোজা উম্মতের উপর প্রথম নয় । বরং পৃথিবীতে যত নবী ও রাসূল
প্রেরণ হয়েছে সকলেরই প্রতি ছিল রোজা পালনের নির্দেশ। কারণ রোজা হল এমন এক ইবাদত
যা মানুষ সৃষ্টির পর থেকেই আল্লাহতালা তার বান্দার জন্য ফরজ করেছেন।এ সম্পর্কে
কুরআনে এসেছে-
' হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর সিয়াম বাজার রোজা ফরজ করা হয়েছে যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জনের অর্জন করতে পারো ' সূরা বাকারা -আয়াত ১৮৩।
ইহুদি ও খ্রিস্টানরা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জিনিস থেকে বিরত থেকে রোজা পালন
করতো। এ থেকে বোঝা যায় যে আগের সব উম্মতের জন্য রোজা ফরজ ছিল। তাওরাত ও ইনজিলের
বর্তমান সংস্কারগুলো থেকে জানা যায় যে আল্লাহতালা রোজাকে আগের বান্দাদের উপর ফরজ
করেছিলেন হিজরতের পর যার প্রমাণ পেয়েছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
একদিন হযরত মুহাম্মদ সাঃ যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় আগমন করলেন তখন দেখলেন মদিনার ইহুদীরা আশুরার দিনে রোজা রেখেছে। তখন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন তোমরা আজকে রোজা রেখেছো কেন ইহুদীরা বলল এ এক মহান দিন এ দিনে আল্লাহ মূসা আলাইহিস সালাম ও তার কাউকে ফেরাউনের অত্যাচার ও আক্রমণ থেকে নাজাত গেলে দিয়েছিলেন। আর আর ফেরাউন ও তার কাউকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন রোজা পালন করেছিলেন আর তাইতো আমরাও এই দিনে রোজা রেখেছি।
আরো পড়ুনঃ রমজানে অতিরিক্ত ঝাল মসলাদার খাবার খাওয়ার অপকারিতা
এ কথা শুনে রাসূল সাঃ বললেন, মুসার স্মৃতি পালন করার ব্যাপারে তোমাদের চাইতে
আমার অধিক হকদার সুতরাং তিনি ওই দিনে রোজা রেখেছিলেন তাই সবাইকে নির্দেশ দিলেন ওই
দিনে রোজা রাখতে। বুখারী ও মুসলিম
ইসলামী শরীয়তে রোজাঃ
সূর্যোদয়ের আগে থেকে সূর্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় খাওয়া ও পান করা। স্ত্রী
সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, অশিল ভাবে কথাবার্তা ইত্যাদি জাবিতেও
রোজা-নিষ্ঠকারী কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ মেনে ইবাদত করার
নামই হলো রোজা। আমরা কেন রোজা রাখব রোজা রাখার উদ্দেশ্যই বাকি এ সম্পর্কে
বিশ্বনবী সাঃ সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়ে বলেছেন-
শুধুমাত্র পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয় বরং অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার
নামই হলো রোজা, সুতরাং যদি আমাকে কেউ গালাগালি করুক অথবা তোমার প্রতি মূর্খতা
দেখায় তাহলে তুমি তাকে বলো যে আমি রোজা রেখেছি, আমি রোজা রেখে তোমাদের সাথে কথা
বলতে পারব না।
রমজান মাসে আমরা কেন রোজা রাখবোঃ
মহান রাব্বুল আলামিন মহা অনুগ্রহ যে তিনি বান্দার ওপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন
পর্যায়ে আদেশ নির্দেশ ও উপদেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে ফরজ তথা আবশ্যকীয় এবং
হারাম তথা বর্জনীয় কাজ। সেরকমই একটি ফরজ কাজ হচ্ছে রমজান মাসের রোজা পালন
করা। আল্লাহর হুকুমে দুনিয়ার সব খারাপই থেকে নিজেদের বিরত রাখার মাধ্যমে তাকওয়া
ও পরহেজকারীর অর্জন করা।
আরো পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ ও ওযু ভঙ্গের কারণ
উপদেশঃ
সমস্ত পৃথিবীতে মুসলমান ভাই ও বোনেরা তোমরা আল্লাহর বিধান মেনে সকল খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে রোজার যথাযথ হক আদায় করে আল্লাহর হুকুমে দুনিয়ার সব খারাপই থেকে নিজেদের বিরত রাখার মাধ্যমে তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জন করো। এবং আমি বলতে চাই রোজার যথাযথ হক আদায় করার তৌফিক দান করুক সবাইকে আমিন। এবং আমার লেখাটা যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে আমার এই পেজটিকে ফলো করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url