পাইলস কি, পাইলসের লক্ষণ, চিকিৎসা ও ঘরোয়া প্রতিকার

  পাইলস যাকে আমরা অশ্ব রোগ ও বলে থাকি। বৃহদান্তের শেষাংশে রেকটামের বাইরে ও ভেতরে থাকা কুশনের মত একটি রক্তশিরা থাকে যা প্রয়োজনে প্রসারিত ও সংকুচিত হয় যা আমরা পাইলস নামে জেনে থাকি। যখন পায়ুপথে চাপ বাড়ে বা প্রদাহ হয় বা এসব ফেরার সংক্রমণ হয় তখন পাইলস বা হিমোর য়েডসে প্রদাহ হয়। যাকে আমরা সাধারণ ভাষায় পাইলস বা অশ্ব রোগ বলে থাকি। পাইলস মলদ্বারের এক ধরনের জটিল রোগ। পাইলসের কারণে রক্তনালী গুলো বড় হয়ে গিয়ে ফাঁস কুলার কুশন তৈরি হয়।

পাইলস কি, পাইলসের লক্ষণ, চিকিৎসা ও ঘরোয়া প্রতিকার

শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কোন বয়সের মানুষ পাইলস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পাইলস হল একটি সাধারণ চুলকানি। পাইলসের কারণে মলদ্বারের নিচের অংশে গোল আকারে ফুলে ওঠে ফলে যে কোন সময় সেই জায়গা থেকে রক্তপাত হতে থাকে। পাইলস খুবই অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ। নিম্নে পাইলস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেইজ সূচিপত্রঃ পাইলস কি, পাইলসের লক্ষন, চিকিৎসা ও ঘরোয়া প্রতিকার

পাইলসঃ

এটি মলদ্বারের এক ধরনের জটিল রোগ। দীর্ঘকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের পাইলসের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও যাদের মন ত্যাগের অকারনে বেগ প্রদানের বদ অভ্যাস হয়েছে তারাও এই পাইলস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কোন বয়সের মানুষ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

পাইলসের কারণঃ

পাইলসের প্রধান কারণ গুলো হচ্ছে পুরনো ডায়রিয়া, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগা, মলত্যাগের সময় দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা, এছাড়া পারিবারিকভাবেও  পাইলস হতে পারে ভারী মালপত্র বহন করা, আইকসম কম করা, আসযুক্ত খাবার কম খাওয়া। গর্ভকালীন সময়ে পায়ুপথে জনপ্রিয়া যকৃত রোগ বা লিভার সিরোসিস ইত্যাদি কারণেও এ রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। সর্বোপরি উপরে উল্লেখিত পাইলসের প্রধান কারণ এবং উপরে উল্লেখিত যে কোন কারনে পায়ে অঞ্চলে সেরা গুলোতে চাপের ফলে পাইলসের সৃষ্টি হয়।

পাইলসের লক্ষণঃ

পাইলস রোগে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হচ্ছে ভেতরের পাইলস রোগের সাধারণত তেমন কোন ব্যথা বেদনা অসস্তি থাকে না। অন্যদিকে পায়ুপথের বহি অশ্ব রোগে পায়ুপথ চুলকায়, বসলে ব্যথা করে। পায়খানার সঙ্গে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায়।

পাইলসের সাধারণ লক্ষণঃ

  • মল বা মলত্যাগের পর রক্ত
  • মলদ্বারে চারপাশে একটি শক্ত গলদা
  • পায়ু অঞ্চলে ব্যথা এবং চুলকানি

পাইলসের প্রকারভেদঃ

আরো পড়ুনঃ চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

সাধারণত পাইলস দুই প্রকার হয়ে থাকে যথা-

  • অভ্যন্তরীণ পাইলস
  • বাহ্যিক পাইলস

অভ্যন্তরীণ পাইলসঃ 

  • অভ্যন্তরীণ অর্শ রোগ চারটি শ্রেণি বা পর্যায়ে হয় যা পোলাপের উপর ভিত্তি করে।
  • পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে না বা প্রলেপস হয় না।
  •  মলমূত্রত্যাগের পর পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে এবং তারপর আপনা আপনি ঠিক হয়ে যায়।
  • পাইলস ফুলের বাইরের দিকে বের হয়ে আসলে সেটা নিজে নিজে ঠিক করতে হয়।
  •  পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে বা প্রলেপ্স হয় এবং তা আর নিজে ঠিক হয় না বা করা যায় না।

বাহ্যিক পাইলসঃ

 মলদ্বারের বাইরের প্রান্তে ছোট ছোট গলদ গঠন করে এগুলো প্রায় চুলকানিদায়ক এবং বেদনাদায়ক হয়ে থাকে।

পাইলস এর চিকিৎসাঃ

এ ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে অনেকের চেপে যান প্রথমে যে অসুখের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। পায়ুদার সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা হলো প্রথমেই চিকিৎসকের স্বর্ণপর্ণা হওয়া উচিত। চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয় করে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন। প্রথম পর্যায়ে মলম, ইনজেকশন, বা রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের সাহায্যে রোগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে অসুখটা ভালো হয়ে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই আবার ফিরে আসার শঙ্কা থাকে যদি না সাবধান থাকা যায়।

পাইলস এজন্য খাওয়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে এড়িয়ে চলতে হবে।  তেল ঝাল মসলাযুক্ত রান্না পাইলসের রোগীদের পক্ষে শুকনো লঙ্কা ভারী জিনিস তুলেও কিন্তু বারণ। এ রোগ থেকে বাঁচার জন্য বদলে ফেলবেন আপনার লাইফ স্টাইল। পাইলস থেকে ক্যান্সার হওয়ার পূর্বে এর চিকিৎসা করার জরুরী। এই অপারেশন শুধু তাদের জন্যই করা হয় যাদের রিং লাইগেশন এর জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেকিত করা হয়। অপারেশন করার পর ক্ষতস্থান শুকাতে এক দুই মাস সময় লাগে।

পাইলসের ঘরোয়া প্রতিকারঃ

আরো পড়ুনঃ পুদিনা পাতার উপকারিতা অপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম

আপনি যদি উপরের থেকে চিকিৎসা গুলো না করে ঘরে অভাবে এর সমাধান বের করতে চান। সে ক্ষেত্রে নিচে নির্দেশনা গুলো আপনার জন্য।

  • দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  • পরিমাণ মতো আর যুক্ত খাবার নিয়মিত পেতে হবে পাইলসের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে পাইলসের লক্ষণ ধরা দেওয়ার পূর্ব থেকেই এ সকল খাবার খেতে হবে।
  • পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা পালনের নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে।
  • এসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে জাম গাছের কুশি পাতা খেলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

শেষ কথাঃ

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে,পায়ুপথের যেকোনো রোগকে অধিকাংশ মানুষ পাইলস বলে জানে। কিন্তু পায়ু পথের রোগ মানেই পাইলস নাই। নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে বেশিরভাগ রোগী বিশেষ করে নারীরা এসব সমস্যার কথা গোপন করে রাখেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করতে দেরি করে ফেলেন। পাইলসের চিকিৎসা না নিলে এ থেকে কখনো কখনো ক্যান্সার বা বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর চিকিৎসা ও সতর্কতা জরুরী।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url