রোজা ভঙ্গের কারণ এবং ওযু ভঙ্গের কারণ

 অন্যের হক নষ্ট করা, ঘুষ খাওয়া, অন্যকে ঠকিয়ে কোন কিছু নিজের করে নেওয়া, কারোর ওপর অন্যায় অবিচার করা, মূর্খের মতো আচরণ করা এগুলো রোজা রেখে করা উচিত নয়। রোজা রেখে কাজগুলো করলে রোজা একটি প্রাণহীন দেহের মতো হয়ে যায়। যার কোন অস্তিত্ব থাকে না। তাই রোজা রাখার পরে সতর্ক থাকতে হবে যেন এমন কিছু না হয় যেটার কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়। রোজার পাশাপাশি ওযুর গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন ও হাদিসে ওযু ভঙ্গের অনেকগুলো কারণ আছে। চলুন জেনে নেই আসলে কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়।

রোজা ভঙ্গের কারণ এবং ওযু ভঙ্গের কারণ

সাধারণত তিনটি কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়, সেগুলো হল-পান করা , খাওয়া ,স্ত্রী- সম্পর্ক। এই তিনটি কারণ ছাড়াও আরো কিছু কারণেই রোজা ভেঙে যায় যেগুলো জেনে রাখা প্রত্যেক রোজাদারদের উচিত। নিম্নে প্রজা ভঙ্গের কারণ এবং ওযু ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেইজ সূচিপত্রঃ রোজা ভঙ্গের কারণ এবং ওযু ভঙ্গের কারণ 

রোজা ভঙ্গের কারণঃ

পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান হল রোজা। তাই রোজা রাখার পর সতর্ক থাকতে হয় যেন কোন কারণে রোজা ভেঙে না যায়। নিম্নে রোজা ভঙ্গের কারণগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

আরো পড়ুনঃ যক্ষা রোগ কেন হয়

ভুলে কোন কিছু খেয়ে ফেলার পরে আপনি মনে করেন আপনার রোজা ভেঙে গেছে সেটা মনে করে  আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাবার খেলে রোজা ভেঙে যাবে।

আপনি রোজা আছেন তবুও বিড়ি, সিগারেট, হোকা শ্রবন করলে আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় আপনি যদি কাচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেকগুলো লবণ খান তবে আপনার রোজা ভেঙে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় এমন কোন বস্তু খাওয়া যা সাধারণত খাওয়া হয় না যেমন- কাট, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি এগুলো মুখে দিয়ে চি বলে রোজা ভেঙে যাবে।

রোজা আছেন এমন অবস্থায় পাথর, কাদামাটি, তুলা, সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় নিজের থুতু হাতে নিয়ে নিজেই খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

আপনি রোজা আছেন ভুলে স্ত্রী সঙ্গমের পর রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসের সম্পর্ক করা তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় কানে বা নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া যাবে না যদি দেন তবে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

আপনি রোজা আছেন কিন্তু আপনার দাঁত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে থুতুর চেয়ে পরিমাণ বেশি এবং কণ্ঠনালীতে চলে গেছে তখন আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে।

সেহেরী খাওয়ার পরে মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ওই অবস্থায় সুবে সাদিক হয়ে গেছে এমন অবস্থায় আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় হস্তমৈথুন করা।

আরো পড়ুনঃ ফ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ

আপনি রোজা আছেন জেনেও এমন ভাবে  কুলি কিংবা নাকে পানি দিচ্ছেন কণ্ঠনালীতে পানি চলে যাচ্ছে তাহলে আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে।

রোজা থাকা অবস্থায় কাউকে জোরজবরদস্তি করে পানাহার করানো।

রাত মনে করে শুভ সাদিকের পরও সেহেরি খাওয়া, এভাবে সেহরি খেলে রোজা হবে না।

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা।

রোজা আছেন সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করে ফেলা তাহলে আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে।

যদি আপনি মনে করেন রাত আছে বলে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যাবেন অতঃপর সুভহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যাবেন তবে আপনার রোজা হবে না রোজা ভেঙে যাবে।

বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যনালির ভেতরে চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

ওযু ভঙ্গের কারণঃ

বিভিন্ন কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়। নিম্নে ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

শরীরের যেকোনো অঙ্গ থেকে নাপাকি বের হওয়াঃ

কোন ক্ষতস্থান থেকে বেশি পরিমাণ রক্ত বমি বা পুঁজ বের হলে অথবা অপারেশন করে পাইপের মাধ্যমে প্রস্রাব পায়খানা বের করলে ওযু ভেঙ্গে যায়।

গোসল ফরজ হয় এমন কিছু ঘটে যাওয়াঃ

যেসব কারণে গোসল ফরজ হয় সেসব ঘটনায় ওযু ভেঙ্গে যায়।

পোশাক পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়াঃ

প্রসাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে মেয়েদের হায়েস্ট বা নিপাশের রক্ত বের হলে ওযু ভেঙ্গে যায় এবং পোষা পায়খানা রাস্তা দিয়ে প্রসাব পায়খানা বায়ু কিউ এগুলো যদি বের হয় তাও ওযু ভেঙে যায়।

লজ্জাস্থান স্পর্শ করাঃ

বিনা আবরণে হাত দ্বারা লিঙ্গ স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করলে ওযু ভাঙ্গে না।

আরো পড়ুনঃ টিবি রোগ কি - টিবি রোগ কেন হয়

চিত হয়ে বা ঠেস  দিয়ে ঘুমানোঃ

শুয়ে বা হেলা দিয়ে ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় কিন্তু বসে বসে ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না। পাগল মাতালো বেহুশ হয়ে গেলে সর্বাবস্থায় ওযু ভাঙ্গে যাবে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ রুকু সেজদা বিশিষ্ট নামাজের অট্টহাসি হাসলে ওযু বন্ধ হয়ে যায়।

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, নামাজ পড়ার পূর্ব শর্ত হলো ওযু। ওযু নামাজের চাবি ছাড়া নামাজ হয় না। অজু করার পর যদি ভেঙে যায় তখন নতুন করে ওযু করে নেওয়া উত্তম। অজুর পরে রোজা, রোজা পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই ইসলামে ওযু ও রোজার গুরুত্ব অপরিসীম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url