কাঁচা আমের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

 কাঁচা আম আমাদের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাঁচা আম স্ট্রোকের ঝুকি কমায়। কাঁচা আমের থাকে ভিটামিন সি ভিটামিন  ই এবং একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে রক্ত কণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার কাঁচা আমের শরবত খেতেও খুব পছন্দ করেন। কাঁচা আমরা নানাভাবে খেয়ে থাকি।

কাঁচা আমের উপকারিতা ও অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

প্রখর তাপের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেহক্তা রক্ষা করতে কাঁচা আমের শরবত শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না কাঁচা আম শুধু স্বাদ নয় গুণেও অনন্য। কাঁচা আমরা নানাভাবে খেয়ে থাকি কেউ কাঁচা সরাসরি চিবিয়ে খায় কিংবা কেউ আবার কাঁচা আমের আচার, চাটনি তৈরি করে খেয়ে থাকি। চলুন নিম্নে আমরা জেনে নেই কাঁচা আমের উপকারিতা  অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

পেইজ সূচিপত্রঃ কাঁচা আমের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

কাঁচা আমের উপকারিতাঃ

চোখের সমস্যায়ঃ

কাঁচা আমে রয়েছে ও লুটেইন ও জিয়াজ্যাস্নিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের চোখের সমস্যা দূর করতে খুবই উপকারী। এবং কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি চোখে সমস্যায় ভুগছেন তবে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঁচা আম রাখুন।

আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা এবং কাঁঠাল খাওয়ার সঠিক সময়

মুখের সমস্যাইঃ

মুখের ইসকাভি ও মাড়ি থেকে রক্তপাতের মত সমস্যায় কাঁচা আমের ভূমিকা অত্যাধিক কেননা কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। তাই কাঁচা মুখের নানা রকম সমস্যা নিরাময়ের সহায়তা করে। কাঁচা আম নিয়মিত খেলে মুখের নানা রকম ক্ষত দূর হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

কাঁচা আম নিয়মিত খেলে দেহে রক্তকণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং দেহের  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাঁচা আমের থাকে সেজন্য নিয়মিত কাঁচা আম খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

 গরম থেকে বাঁচতেঃ

কাঁচা আম নিয়মিত খেলে দেহে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। এবং হার্ড স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় কাঁচা আম। থেকে দেহকে রক্ষা করতে কাঁচা আমের গুরুত্ব অনেক। আচ্ছা আমরা নানাভাবে খেয়ে থাকি। কেউ আবার শরবত হিসেবে খেতে বেশি পছন্দ করে।

পেটের সমস্যাইঃ

কাঁচা আম চিবিয়ে খেলে এসিডিটি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এসিডিটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যায় কাঁচা আমের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনি কি অনেকদিন যাবত ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন তবে আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন কাঁচা আম রাখুন দেখবেন অল্প দিনেই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাবেন আপনি।

আরো পড়ুনঃ সজনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা আমের অপকারিতাঃ

এলার্জির কারণঃ

অতিরিক্ত কাঁচা আম খেলে কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জি হতে পারে। এর ফলে চোখ ও নাক দিয়ে পানি পড়া শ্বাসকষ্ট হাতি পেট ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। কাঁচা আম খাওয়ার পরে এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ওজন বৃদ্ধি করেঃ

ফলের রাজা আম।  কাচা আমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকাই আপনার শরীরে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করে থাকে। এবং অতিরিক্ত যদি কাঁচা আম খাওয়া যায় তবে বদহজম এর সমস্যা হতে পারে। একটি মাঝারি আকারের কাঁচ  এ থাকে ১৫০ ক্যালোরি। সুতরাং আপনি যদি ওজন কমাতে চান তবে মাত্রা অতিরিক্ত কাচা আম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

সতর্কতাঃ

কাঁচা আম মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে সংক্রমণ হতে পারে তাই কাঁচা আম খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকবেন।

আরো পড়ুনঃ শসা খাবেন জেনে নিন শসার দশটি  উপকারী গুণ

কাঁচা আমের পুষ্টিগুণঃ

কাঁচা আমের উপকারিতাঃ

  • ক্যালসিয়াম ও আয়রন রয়েছে।
  • ভিটামিন বি এক ও ভিটামিন ২ ভাল পরিমাণে রয়েছে।
  • কাঁচা আমের প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা অনিমিয়া ও রক্তস্বল্পতা সমস্যা বেশ উপকারী।
  • পরিশ্রমে বা নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকলে কাঁচা আম খেতে পারেন পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করতে পারে। কেরোটি ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখার জন্য দরকার হৃদপিন্ডের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে কাঁচা আম।
  • পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকায় এসিডিটি বা অম্বল বেশি সংকোচন মানসিক চাপের ফল তৈরি শারীরিক সমস্যার উপকারী।

রোগ প্রতিরোধঃ

  • কলেরা রক্তস্বল্পতা ও যক্ষা প্রতিরোধে সাহায্য করে কাঁচা আম।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলেও গরমের সময় সর্দিকর্মী থেকে রক্ষা করে কাঁচা।
  • ফাইবার বা আর সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে কাঁচা আম।
  • আমের বীজ শুকিয়ে শূন্য করে ডায়রিয়া সারাতে ব্যবহার করা হয়।
  • আমের পাতা ব্যবহার করে বহুমূত্র রোগের প্রকোপ কমানো যায়।
  • নিউক্রাইটিস বা বক্ষ প্রদাহ এবং কিডনির সমস্যা সমাধানের সাহায্য করে।
  • নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে কাঁচা আম।

অন্যান্য উপকারিতাঃ

  • কাঁচা আম শুকিয়ে তৈরি করা হয় আমচুর গুড়া ইস্কেভি সারানোর কার্যকর। যথেষ্ট পরিমাণে টাটকা শাকসবজিও ফলমূল না খাওয়ার ফলে সৃষ্ট রক্ত ঘাটতি রোগই হচ্ছে ইসকাভি।
  • কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এমনকি পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে।
  • ত্বক উজ্জ্বল রাখতে কাঁচা আমের আঁশ সাহায্য করে।
  • ইন্টেক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়া অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিক আনসার উপাদান রয়েছে।
  • অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার হওয়া এসিডিটি উপশমের ভালো কাজ করে।
  • যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।

শেষ কথাঃ

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আম খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ আসলেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের সকলের পছন্দের তালিকায় একটি ফল হল কাঁচা আম পাকা আম। কাঁচা আমের পচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে আমাদের শরীরে। অন্যদিকে অতিরিক্ত কাঁচা আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে সংক্রমণ হতে পারে তাই এ ব্যাপারে আপনারা সাবধান থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url