এজমা রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

    শ্বাসনালির প্রদাহজনিত  দীর্ঘস্থায়ী রোগ হলো এজম। অ্যাজমাই মানুষ মারা যায় না বললেই চলে। কিন্তু সু চিকিৎসার এর অভাবে তারা বেশ কষ্ট পায়। শ্বাসনালীতে বিভিন্ন কোষ প্রধানত ইউসিনোফিল ও অন্যান্য উপাদান জমা হয়ে শাসনলের ছিদ্রপথ শুরু হয়ে যায়। শিশুসহ যে কোন বয়সের নারী-পুরষ এজমায় আক্রান্ত হতে পারে। অ্যাজমা আক্রান্ত আক্রমণের সময় শাসন আলীর আস্তরণ ফুলে যায় যার ফলে শ্বাসনালী এতটাই সংকীর্ণ হয়ে যায় যে প্রশ্বাস ও নিঃশ্বাসে শ্বাস বায়ুর গতি অনেকটাই কমে যায়।

এজমা রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
শীতকালে শুষ্ক ঠান্ডা আবহাওয়া বাতাসে উড়ে বেড়ানো ধূলিকণার আধিক্যে অ্যাজমার সমস্যা বেড়ে যায়। আপনাদের মধ্যে যারা অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন এই পোস্টটি তাদের জন্য। শিশুসহ যে কোন বয়সের নারী পুরুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে। নিম্নে এজমা রোগের কারণ লক্ষণ প্রতিকার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানুন।

পেইজ সূচিপত্রঃ এজমা রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

এজমা রোগের কারণঃ

এজমা রোগের কারণ এখনো জানা যায়নি। কিছু বংশগত ও পরিবেশগত কারণেও অ্যাজমা হয়। সব বয়সের মানুষই এ রোগে আক্রান্ত হয় তবে শিশুদের ক্ষেত্রে রোগটি বেশি সমস্যা দেখা দেয়। যাদের মা-বাবা ভাই বোন এদের মধ্যে এজমা থাকে তবে তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যাদের অ্যাজমার লক্ষণ আছে তারা ধুলাবালি, গাছের আগাছা ফুলের পরাগরেণু পশু পাখির পালক কীটপতঙ্গ এগুলো থেকে দূরে থাকবেন। তা না হলে এই রোগ আরো বেশি আষ্টেপিষ্ট ধরবে আপনাকে। 

আরো পড়ুনঃ এজমা কি, ঘরোয়া উপায়ে এজমা থেকে মুক্তির উপায়

এজমা রোগের লক্ষণঃ

এজমা রোগের কয়েকটি লক্ষণ আছে যেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-

  • কফ থাকতে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট।
  • বুক ভার হয়ে থাকে।
  • শারীরিক কর্মকান্ড যেমন হাঁটলে বা সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
  • শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো আওয়াজক হয়।
  • কাশি রাতে ঘুমানোর সময় বেড়ে যায়।

এজমা রোগ হলে করণীয়ঃ

  • আপনি যদি এজমার রোগী হন তবে নিয়মিত চেকআপ করাবেন।
  • ভিটামিন এ জাতীয় খাবার বেশি করে খান যথা- কলিজা, গাজর, শাকসবজি, মধু।
  • ধূমপান ও ধুলোবালি দেখলে সেখান থেকে এড়িয়ে চলুন।
  • ঘরে কার্পেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • বাড়িতে যদি আপনার পোষা কোন প্রাণী থাকে তবে তাকে নিয়মিত গোশল করিয়ে দিন।
  • ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার থেকে নিজেকে সামলিয়ে রাখুন।
  • এজমা রোগী নিজে যত্নবান হলে এ রোগ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। শুধু ঔষধ খেয়ে রোগ কমাতে পারেন। এজমা অনেক সময় যদি বিলও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। স্থায়ী ও পুরনো তাদের হার্ট ফেল হতে পারে এবং রোগীর শয্যাশায়ী হয়ে যেতে পারে। অক্সিজেনের অভাবে রোগীর স্থিতিশক্তি কমতে থাকে ফুসফুসের অংশবিশেষে যেতে পারে নিউমোনিয়াও হতে পারে মুখ থেকে ছিটেফোঁটা রক্ত বেরিয়ে আসতে পারে রোগের পায়ে পানিও আসতে পারে।

এজমা রোগ কেন হয়ঃ

  • বংশের মা - বাবা ,দাদা, দাদী বা অন্য কারো হাঁপানি থাকলে এজমা আপনার ও হতে পারে।
  • যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের এজমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • ঘরবাড়ি, ধুলো ময়লা-ফুলের রেনু, পাখির পালক, জীবজন্তুর পশম এগুলো থাকলে অ্যাজমা আপনার শরীরে আরো কোকোড আকার ধারণ করবে।

এজমা রোগ এর উপসর্গঃ

এজমা রোগের বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে-যথা

আরো পড়ুনঃ গরমে পুরুষদের ত্বকের যত্ন - ত্বকের যত্নে কয়েকটা টিপস

  • ঘনঘন কাশি।
  • বুক ভার হয়ে থাকা।
  • শ্বাস নিতেও ছাড়তে কষ্ট হওয়া।
  • বুকের ভেতর বাসির মতো সাই সাই শব্দ করা।
  • দম বন্ধ হয়ে আসা।

এজমা রোগের চিকিৎসাঃ

  • সালবিউটামল,টারবিউটালিন, এগুলো তাড়াতাড়ি শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। এবং এগুলো এজমার মূল ঔষধ।
  • এলার্জির হাত থেকে সুস্থ থাকা সবচেয়ে সহজ উপায় হলো যে জিনিস সে আপনার এলাচি সেগুলো থেকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
  • এজমা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাস সংক্রমণ। এক্ষেত্রে হাঁপানি রোগীদের রোগ নির্ণয়ে না থাকলে করো না হলে তাতে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হতে পারে এজন্য ওষুধ শোভন করে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় হাঁপানি হলে উচ্চ রক্তচাপ প্রীতম লেবার পি এল কামাছিয়া এবং শিশু বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তাই মা ও সন্তানের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য যদি আপনার শরীরে থাকে তবে সেটা তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলুন।
  • কিছু হাঁপানিতে আক্রান্ত হলে তাকে সাধারণত ওষুধ ইনভিলার বা স্প্রের মাধ্যমে দেওয়া হয় একজন ছোট শিশুর থেকে বিশেষ ধরনের মাছ ব্যবহার করা হয়।

এজমা রোগের প্রতিকারঃ

  • আপনাকে নিজের যত্ন নিজেই নিতে হবে। যে কোন রোগ বালাই থেকে মুক্তি পেতে এটাই প্রথম সত্য।
  • অনেকেরই দেখা যায় মানুষের দুশ্চিন্তার কারণে এজমা রোগ বাড়ে। তাই নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
  • যেসব জিনিসে এলার্জি আছে সেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • আমাদের মধ্যে এলার্জি কমবেশি অনেকেরই আছে তাই ধোলাময়লা থেকে দূরে থাকা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা বাধ্যতামূলক।
  • ভিটামিন এ জাতীয় খাবার বেশি করে খান। যথা-কলিজা, গাজর, শাকসবজি, মধু।
  • ধুলোবালি ও ধূমপান মুক্ত জায়গায় বসবাস করুন এবং এগুলো থেকে এড়িয়ে চলুন।
  • বাড়িতে পোশাক পুকুর বেড়াল থাকলে সেগুলোকে প্রতিদিন গোসল করিয়ে দিন।
  • মানসিক চাপ থেকে নিজেকে এড়িয়ে চলুন।
  • বালিশ লেপ বিছানার চাদর তোষক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।।
  • নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন এটা শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজন।
  • একমার ওষুধ বা ইনহেলার সব সময় হাতের কাছে রাখুন।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন।

আরো পড়ুনঃ শিশুর পেট ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা

শেষ কথাঃ

 পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, এজমা রোগ শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক সবার মধ্যেই কম বেশি রয়েছে। অ্যাজমা থেকে মুক্তির উপায় না জানার কারণে এর প্রকোপ থেকে রেহাই পাচ্ছে না অনেকেই। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা ও নিয়মাবলী মেনে চললে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় খুব সহজেই। অ্যাজমা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত দিকনির্দেশনাঅনুসরণ করুন। আশা করি উপরে উল্লেখিত দিকনির্দেশনা থেকে আপনিও একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। ধন্যবদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url