আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - আমড়ার গুনাগুন

আমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কিংবা গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। আমড়া আমাদের সকলের প্রিয় একটি ফল। আমড়া হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ আমড়া তো প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। আমড়া খেলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এবং আমরা যদি নিয়মিত খাবারের পরে আমড়া খাই তবে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবো।

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - আমড়ার গুনাগুন

আমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও সামান্য পরিমাণে প্রোটিন, পেকনিক জাতীয় ফাইবার ও আন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। আমড়াতে। আসুন আমরা জেনে নেই আমড়ার উপকারিতা অপকারিতা ও আমড়ার গুনাগুন সম্পর্কে।

পেইজ সূচিপত্রঃ আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - আমড়ার গুনাগুন

আমড়ার উপকারিতাঃ

ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করেঃ

আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর অভাবে, হাড় দাঁত সমস্যা সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করার ক্ষেত্রে আমরা আর ভূমিকা রয়েছে অনেক। আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি মানুষের দেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা দৃঢ়তা বজায় রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধেও অনেক ভালো কাজ করে আমড়া।

দাঁতের সুরক্ষায়ঃ

আমড়ার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম থাকে যা খেলে আমাদের দাঁতও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

হৃদরোগ থেকে রক্ষাঃ

আমড়াতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজন কারণ মানব স্বাস্থ্যের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই পুষ্টিগুলো সহায়তা করে। আমড়া ক্ষতিকর কোলেস্টোলের মাত্রা কমিয়ে স্ট্রোক ও হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে।

আরো পড়ুনঃ পুদিনা পাতার উপকারিতা  অপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম

পেশি গঠনে সহায়তা করেঃ

আমড়া খেলে অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমড়া ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আমড়া আপনার শরীরকে সুস্থ হাড় হৃদপিণ্ড এবং শরীরের  পেশী গঠনের সহায়তা করে।

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে করতে পারেঃ

আমড়া সাধারণত ফাইবার যুক্ত খাবার। আমড়া খেলে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ উভয় কমতে পারে। আমড়ার  এমন একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

মুখের রুচি বৃদ্ধি করেঃ

যাদের মুখের রুচি কম তারা নিয়মিত আমরা খেতে পারলে এ সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবে। এবং মুখের রুচির পাশাপাশি ক্ষুধা বৃদ্ধি করতেও অনেক কার্যকারিতা রয়েছে আমড়ায়।

ওজন কমায়ঃ

যাদের অতিরিক্ত মেদ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আমড়া উপকারিতা অনেক। আমড়া তো ক্যালরির মাত্রা কম থাকাই ওজন কমাতে সাহায্য করে পতি ১০০ গ্রাম আমড়াই ২৯ ক্যালোরি থাকে এছাড়াও আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা খাদ্য আস থাকে বদহজম কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। দেখা যায় অনেকেই অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য খাবার তালিকা কমিয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে খাবার তালিকা না কমিয়ে প্রতিদিন খাবারের পাশাপাশি আমড়া খান।

আমড়া খাওয়ার অপকারিতাঃ

আমড়ার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তবে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। আমড়া আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও অনেক কার্যকরী। আমড়া ওজন কমাতে সাহায্য করে। যারা ওজন বাড়াতে চান তারা প্রতিদিন আমড়া খান কারন  আমড়াতে ক্যালরির মাত্রা কম থাকায় ওজন কমাতেও সাহায্য করে তাই যারা ওজন কমাতে  চায়  তাদের আমড়া খাওয়া যাবে না। আমড়া একটি টক মিষ্টি ফল। আমড়া টক হওয়ায় খালি পেটে খাওয়া যাবেনা খেলে পেটব্যথা বা বদহজম হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা আমের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিহীন

 আমড়া ভরা পেটে খেতে হবে যেমন সকালে নাস্তার পর বা দুপুরে খাবারের পরে অথবা বিকালে এমন সময় ফলটি খাওয়া ভালো। আমড়া সাধারণত লবণ মরিচের  সংমিশ্রণে খাওয়া হয়। যারা লবণ ও মরিচের সংমিশ্রনে খান তাদের পুরোপুরি পুষ্টিগুণ কাজে লাগে না। সেজন্যে আমড়ার পুরোপুরি পুষ্টিগুণ পেতে হলে আমড়া লবণ বা মরিচের সংমিশ্রণে না খেয়ে আমড়া ধুয়ে খেয়ে নিই এতে করে পুষ্টিগুণ কাজে লাগে।

আমড়ার গুনাগুনঃ

মুখে রুচি বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রে আমড়ার  অনেক কার্যকারিতা রয়েছে। টক ও মিষ্টি ফল হওয়ার কারণে অনেকের কাছে প্রিয় এই ফল এটি মূলত কাচাই খেয়ে থাকি । আবার আচার বানিয়ে আমরা আমড়া খেয়ে থাকি। তাই আমাদের সকলের আমড়ার গুনাগুন জেনে রাখা ভালো তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আমড়ার গুনাগুন সম্পর্কে।

আমড়াতে  প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি অনেকেরই খুবই প্রিয়। ১০০ গ্রাম আমড়া যদি আমরা খেয়ে থাকি তবে তা থেকে এক দশমিক এক গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শেবসার, ১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রগ্রাম ক্যারোটিন পাওয়া যায়। এছাড়া ভিটামিনের মধ্যে ০.২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম রিবক্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা এবং কাঁঠাল খাওয়ার সঠিক সময়

এছাড়াও রয়েছে ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ। আমড়ার খাদ্য শক্তি ৬৬ কেলো ক্যালরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ ০.৬ গ্রাম। এর পাশাপাশি প্রোটিন ক্যালসিয়াম ও আয়রনও তো রয়েছেই।

শেষ কথাঃ

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আমি চেষ্টা করেছি আমড়ার উপকারিতা  অপকারিতা এবং আমড়ার গুনাগুন সম্পর্কে তুলে ধরার। আশা করা যায় এই পোস্ট থেকে আপনি খুব সহজেই জানতে পেরেছেন। আমার ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল রয়েছে। আপনারা চাইলে সেগুলো পড়তে পারেন। এবং আর্টিকেল গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনাদের উপকারে আসলেই আমি উপকৃত হব, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url