গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

 গর্ভাবস্থায় নারীরা তাদের খাদ্যাভ্যাসের  প্রতি খুব যত্নবান হন। এমন পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মহিলাদের জানা উচিত গর্ভাবস্থায় আম খাওয়া যাবে কিনা এবং গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। জেনে নিন এই বিষয়ে। প্রতিনিয়ত আপনি আপনার চারপাশের শত শত নিত্য নতুন জিনিসের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। অনেক মহিলারা গর্ভ অবস্থায় আম খেতে ভয় পান কারণ তারা ভাবে গর্ভাবস্থায় আম খেলে তার পেটের সন্তান  এর ক্ষতি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি জেনে নিন গরবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়া যেতে পারে এবং কাঁচা আম, পাকা আম দুটোই। খাওয়া-দাওয়া ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সকলে বারবার নির্দেশনা দিতে থাকে। এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এই পোস্টে আমি গর্ভ অবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা গুলো ব্যাখ্যা করব। এবং এর মাধ্যমে আপনি নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন গর্ভ অবস্থায় আম খাওয়া যাবে কি যাবে না এবং আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

পেইজ সূচিপত্রঃ গর্ভবস্থায় আম খাওয়া উপকারিতা ও অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় দিনে কয়টি আম খাওয়া যাবেঃ

অল্প পরিমাণে আম খাওয়ার ক্ষুধার কারণ হলো এতে প্রচুর ক্যালরি থাকে।  গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন প্রায় আধা প্লেট কাটা আম খাওয়া যেতে পারে। একটি আমে সাধারণত ১৫০ কিলো ক্যালরি থাকে। সবার গর্ভাবস্থা এক নয় তাই আমের খাবারের পরিমাণে পরিবর্তন হতে পারে এই সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের জন্য অবশ্যই আপনি আপনার সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ এজমা রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় কখন আম খাওয়া উচিতঃ

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার ব্যাপারে বলা যেতে পারে যে, গর্ভাবস্থায় সুষম পরিমাণে আম খাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আমরা প্রথম ও তৃতীয়তি মাসিকে উপকারিতা পাওয়া যায় একই সময়ে ডায়াটিসিয়ানরাও পুরো গর্ভাবস্থা মাস জুড়ে আম অন্তর্ভুক্ত করেন।  এই প্রেক্ষিতে আমার মতে গর্ভাবস্থার পুরো মাস জুড়েই আম খাওয়া যাবে।

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতাঃ

আমের পুষ্টি উপাদান অনেক। যা গর্ভাবস্থায় মা অসুস্থ শিশুর জন্য খুবই ভালো। গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-

হজম  শক্তি বাড়ায়ঃ

আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যার কারণে হজম শক্তির উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে আপনাকে।

রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করেঃ

আমের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আবার আমের কিছু পরিমাণ আয়রন ও পাওয়া যায়। এর কারণে  গর্ভাবস্থায় আম খেলে আয়রনের ঘাটতি ও রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে আম। 

আরো পড়ুনঃ জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উৎসঃ

আম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ভ্রনের বিকাশের সহায়তা করে এবং অকাল জন্মের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে আম।

ভ্রণের বিকাশের সহায়তাঃ

আমি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা ও গর্ভবস্থায় ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন গর্ভবতী মায়েদের কারণ এটি ভ্রুনের বিকাশের সহায়ক বলে মনে করা হয়। 

ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎসঃ

পুষ্টিবিদদের মতে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম ও গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্রনের বিকাশের বাঁধাগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে রক্তচাপ জনিত রোগ প্রতিরোধ হতে সহায়ক গর্ভ অবস্থায় উপকারিতা অনেক।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধঃ

আমি প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি হাড়ের বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই প্রয়োজন। গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করেঃ

কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ সাহায্য করে আম, হাড় ক্ষয় শক্তিশালী করে। এতে আছে ভিটামিন সি শরীরকে ইন ফ্লালমেশেনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে আয়রনের শোষণে এবং রক্তপাতের প্রবণতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে নখ ও চুল মজবুত করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কাঁচা আম।

আমের পুষ্টিগুণঃ

আমি অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছি খনিজ ভিটামিন ফাইবার এবং ফ্যাটি এসিড আমি পাওয়া যায় যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অপরিহার্য । ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন,ফোলেট এগুলো ছাড়াও আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে আমে। সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-

পুষ্টি উপাদান                                                                            প্রতি ১০০ গ্রাম আম

শক্তি                                                                                         ৬০  কিলোক্যালরি

ভিটামিন - এ                                                                             ৫৪ মাইক্রোগ্রাম

ভিটামিন -  বি  ৬                                                                      ০.১১৯ মিলিগ্রাম

ভিটামিন - সি                                                                            ৩৪.৪ মিলিগ্রাম

ভিটামিন - ই                                                                              ০.৯ মাইক্রোগ্রাম

ভিটামিন - কে                                                                           ৪.২মাইক্রোগ্রাম

আমের বিদ্যামান কিলোক্যালরি শক্তি গর্ভবতী মহিলাদের শক্তির অভাব অনেকাংশে পূরণ করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - জামের পুষ্টিগুণ

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার অপকারিতাঃ

গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদের ডায়াবেটিস দেখা দেয় এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই আম খাবেন। তাছাড়াও সবকিছু পরিমাণ অনুযায়ী খাওয়া উচিত না হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।আপনি যদি আমের বাইরের স্তরে হালকা সাদা আবরণ দেখতে পান তবে বলা যেতে পারে যে আমটি কৃত্তিম ভাবে পাকা। কাঁচা বা পাকা যাই হোক না কেন নাম গর্ভাবস্থায় নিরাপদ যদি এটি পরিমিতভাবে গ্রহণ করা যায়। গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার অপকারিতা নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

  • আমি প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে তাই এটি বেশি পরিমাণে খেলে গর্ভ অবস্থায় ওজন বাড়তে পারে। সেজন্য গর্ব অবস্থায় পরিমাণের চেয়ে বেশি আম খাওয়া উচিত নয়।একটু বেশি পরিমাণে আম খেলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • একটু বেশি পরিমাণে আম খেলে ডায়রিয়ার সমস্যাসমস্যা হতে পারে।
  • আমের প্রতি এলার্জি থাকলে কিছু মহিলার ত্বকে চুলকানি এবং খোলা ভাব অনুভব করতে হয়।
  • যদি কোনো কারণে ডাক্তার আপনাকে আম না খাওয়ার পরামর্শ দেন তবে এটিকে ডায়েটের অন্তর্ভুক্ত করবেন না।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মধ্যে আচার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে তবে অতিরিক্ত তেল এবং মসলার কারণে মহিলাদের এটি খাওয়া এড়ানো উচিত। এটি খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে এবং এসিডিটিও হতে পারে আশা করি  অবস্থায় আমের ব্যবহার ও অপকারিতা জানার পর আপনি অবশ্যই এটি খেতে চাইবেন না। গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার আগে অল্প পরিমাণে খান এতে করে আপনি এবং আপনার নবজাতক সুস্থ থাকবে। তাহলে আর দেরি কেন আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তবে আপনার খাদ্য তালিকা প্রতিদিন একটি করে আম রাখুন।

শেষ কথাঃ 

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আমি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে সেজন্য গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আম রাখলে তাদের রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি মেলে। গর্ভাবস্থায় কাঁচা আম খেলে শিশুর হাড় গঠনে সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মা প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে আম খেতে পারেন এক থেকে দেড় কাপ গর্ভবতী মায়েরা বড় আম হলে একটি আর ছোট আম হলে দুইটি আম খেতে পারেন শরীরের অবস্থা বুঝে আম খাওয়া উচিত তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই খাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url