চুল পড়ার কারন লক্ষণ ও প্রতিকার

আজকে আমরা জানব চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। চুল পড়া অত্যন্ত সাধারণ একটি সমস্যা যা একাধিক কারণে ঘটতে পারে। সেজন্য আজকে আমরা জানবো চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যা প্রায় দেখতে পাওয়া যায়। অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ার ফলে মাথায় টাক পড়ে যায়। চলুন আজকে আমরা জেনে নিয়ে চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

চুল পড়ার কারন লক্ষণ ও প্রতিকার

আপনার বংশগত যদি চুল পড়ার সমস্যা থাকে তবে চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই আজকে আমরা জানবো চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। আবার হরমোনের পরিবর্তনের ফলে রগ ও তালুর চুল পড়ে গিয়ে টাক দেখা দিতে পারে। নিম্নে চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।

পেইজ সূচিপত্রঃ চুল পড়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

চুল পড়ার কারণঃ

চুল নানা কারণে পড়তে পারে , এটি অত্যন্ত সাধারন একটি সমস্যা যা একাধিক কারণে ঘটতে পারে। নিম্নে চুল পড়ার কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো-

  • পুষ্টির অভাবে, ভিটামিন ই জিংক সেলেনিয়াম  প্রভৃতির অভাবে চুল পড়তে পারে।
  • ঘন ঘন চুল রং করা চুলে ট্রেনিং এজেন্ট বা অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহারে চুল পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। 
  • সাধারণতোমোথেরাপি এজেন্ট এন্টি ডিপ্রোসিপ ওষুধের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায় এগুলোতে অধিক পরিমাণে চুল ঝরতে পারে।
  • মানসিক চাপে চুল পড়ার একটি প্রধান কারণ।
  • মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হলে চুল পড়তে পারে।
  • বাবা মায়ের বংশে চুল পড়ার পারিবারিক ইতিহাস থাকলে পরবর্তীতে আপনার চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • হরমনের পরিবর্তন পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় ফলে রোগ ও তালুর চুল পড়ে গিয়ে টাক দেখা দিতে পারে একে বলে মেল প্যাটার্ন ব্যল্ডিং।

আরো পড়ুনঃ সাফা নামের অর্থ কি - সাফা নামের রাশি কি

চুল পড়ার লক্ষণঃ

নানা কারণে আপনার মাথার চুল পড়তে পারে। চুল পড়া সাধারণত কিছু অন্তর্নিহত রোগের উপসর্গ।অন্যান্য যুবসর্গে চুল পড়ার সাথে সম্পর্কিত সেগুলো হলো-

  • পড়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
  • পুরুষ অথবা মহিলা প্যাটার্ন টাক পড়া।
  • মাথার কিছু অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ চুল উঠে যাওয়া।
  • বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু কিছু চুল আসমান ভাবে উঠে যাওয়া।
  • সমগ্র দেহে থেকে চুল পড়ে যাওয়া।
  • মাথার ত্বক শুকনো এবং আখের মত হয়ে যাওয়া।
  • মাথা অতিরিক্ত চুলকালে।
  • চুল শুকিয়ে যাওয়া এবং ডগা ফেটে যাওয়া।

চুল পড়ার চিকিৎসাঃ

সাধারণত নানা কারণে মাথার চুল উঠতে পারে। এর জন্য পুঙ্খানুপু চিকিৎসার ইতিহাস সমগ্র ও পরীক্ষার মাধ্যমে চুল পড়ার সমস্যা নির্ণয় করা হয়। তবে কিছু তদন্ত পদ্ধতির সাহায্যে চুল পড়ার কারণ এবং সমস্যাটির নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণের সব থেকে উপযুক্ত চিকিৎসা জানা যেতে পারে। নিম্নে পদ্ধতি গুলো তুলে ধরা হলো-

  • রক্তে ভিটামিন ও খনিজের অভাব আছে কিনা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা।
  • পুল টেস্ট এবং লাইন মাইক্রোস পি মৃদু টানের মাধ্যমে চুলের স্থিতিস্থাপকতার ও গোড়ার জোর বুঝতে পারা যায়। লাইট মাইক্রোস্পির সাহায্যে চুলের ঘনত্ব এবং রুম কূপের গঠন পরীক্ষা করা হয়।
  • সংক্রমণ জাতীয় কারণগুলি চিহ্নিত করা যায়।
  • চুল পড়ার চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে সমস্যাটির কারণে ওপর নির্ভরশীল। কিছু ক্ষেত্রে এর নিরাময় সম্ভব হয় না কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে। চুল পড়ার বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো নিম্নের রূপ-
  • ওষুধ জিংক সেলনিয়াম ভিটামিন ই প্রভৃতি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট, মিনোক্রিডিল, হরমোন প্রতিস্থাপন ওষুধ  ইত্যাদি।
  • লেশার থেরাপি মাথার ত্বকে লেশার রশ্নির প্রয়োগ চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে।
  • ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি-মাথার ত্বক থেকে ঘন চুল যুক্ত সামান্য অংশ নিয়ে চুল পড়ে যাওয়া অঞ্চলে প্রতিস্থাপন করা।

চুল পড়া কাকে বলেঃ

চুল পড়া একটি অত্যন্ত অপ্রীতিকর সমস্যা যেখানে মাথা থেকে ক্রমশ চুল পড়ে যেতে পারে। দৈনিক ১০০টি পর্যন্ত চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা এই চুলগুলির পরিবর্তে নতুন চুল গজায় কিন্তু যখন চুল তখন সমস্যা দেখা দেয় পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যাটাই দেখতে পাওয়া যায় অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ার ফলে মাথায় টাক পড়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ জরায়ু ক্যান্সারের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

যেভাবে চুলের যত্ন করবেন ঃ

নিয়মিত সপ্তাহে২-৩ দিন চুলে তেল লাগিয়ে স্কাল্পে  ভালোভাবে মেসেজ করুন। যেমন-নারিকেল তেল, বাদামেরতেল, সরিষার তেল, অলিভ অয়েল,তিলের তেল,ভিটামিন ই,ক্যাস্টোর অয়েল। এই তেল একসাথে মিশিয়ে মেসেজ করলে খুব দ্রুত চুল লম্বা হবে এবং চুল পড়া ১০ দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিদিন ৫-৬ বার চুল আঁচড়াবেন। যত বেশি স্কাল্পে চিরুনি পড়বে তত বেশি চুলের ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।

চুলের জন্য কোন মেডিসিন খাবেন না চেষ্টা করুন প্রাকৃতিক খাবারও ঘরোয়া পদ্ধতিতে যত্নের মাধ্যমে চুল নতুন করে গজানোর। ভালো ব্যান্ডের তেল এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। নিয়মিত পানি পান করন। দুশ্চিন্তা পরিহার করুন ভেজা চুল বাঁধবেন না চুল শুকানোর জন্য ফ্যানের নিচে থাকুন। নিয়মিত দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, বাদাম, ভেজিটেবল, তেল ইত্যাদি খাবেন। এতে চুল সুন্দর থাকবে।

চুলের বিচ কোষ বৃদ্ধির চক্রঃ

চুল গজানোর জীববিজ্ঞানিক প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। আমাদের চুলের প্রধানত দুটি অংশ থাকে ফলিকল বা বিস্কুস এবং সাফট বা দন্ড।

চুলের ফলিকল বা বিস্কুস হল টিউবের মতো লোমকূপ যা চুলের গোড়াকে ঘিরে থাকে। আমাদের মাথায় যে ১ লাখ চুলের বিসকোশ আছে এগুলোর সবকটি একসাথে জন্মায় না। চুলের জন্ম বড় হওয়া এবং পড়ে যাওয়া ইত্যাদি কাজ ধাপে ধাপে অর্থাৎ চক্র কারনে হয়ে থাকে যেটিকে হেয়ার গ্রোথ সাইকেল বা চুল বৃদ্ধির চক্র বলে।

 সব চলে একসাথে চকলেট ঢুকে না এবং বেরও হয় না এর ফলে আমাদের সব চলে একসাথে পড়ে না আবার সব একসাথে গজায়ো না। তা না হলে আমরা সবাই টাক হয়ে যেতাম প্রত্যেক বীজ কোষ বারবার এই একই বৃদ্ধি চক্রের মধ্য দিয়ে যাই যার তিনটি স্বতন্ত্র পর্যায়ে রয়েছে-অ্যানাজেন,ক্যাটাজেন, এবং টোলোজেন।

অ্যানাজের সময়কে বলা হয় চুলের বাড়ন্ত কাল যা দুই থেকে সাত বছর ধরে চলে। এই শুরু হওয়া এই ধাপে বিষ কোষের প্রতিটি চুল প্রতি মাসে প্রায় এক সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়ে।

এরপরে শুরু হয় ক্যাটাজেন অ্যানাজন থেকে এভাবে যেতে দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগে। এ সময় চুলের গোড়ায় রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণে পুষ্টিপ্রাপ্তি বন্ধ হয়ে চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাই। এ সময় চুল তার গোড়া থেকে চামড়ার কাছাকাছি অর্থাৎ উপরের দিকে চলে আসে। তখন একে ক্লাব হিয়ার বলে।

টলজেন ধাপে এসে ক্লাব হেয়ার গুলো বিশ্রাম বা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে এবং এক সময় পড়ে যায়। খালি হওয়া ২০ কোষে নতুন চুলের জন্ম হয় তবে যা সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত সময় নিতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে পড়লে দুই থেকে তিন মাসের মাথায় রয়ে যেতে পারে। ফলে যে স্থানে আর চুল গজায় না বলে মাথায় চুল কমতে থাকে যা প্রলোজেন এপলুভিয়াম নামে পরিচিত।

আরো পড়ুনঃ মহিলাদের সাদাস্রাব কি কেন হয় ঘরোয়া প্রতিকার

উপসংহারঃচুল পড়ার কারন লক্ষণ ও প্রতিকার

আমাদের নিয়মিত চুল পড়া স্বাভাবিক। মানুষের সাধারণত দৈনিক ১০০টি চুল পরে। অতিরিক্ত চুল পড়লে চুলের বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। এর পরেও কাজে না দেওয়া মানে মনে হলে এর পেছনে কোন অন্তর্নিহত কারণ রয়েছে যা আপনি ধরতে পারছেন না এমতাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত আপনার। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন এবং যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আমাদের সেটা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url