১২ টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী
প্রিয় পাঠক, আজকে আপনাদের জানাবো যে বারোটি উপায়ে সন্তান বুদ্ধিমানও মেধাবী হবে। ঘরের পরিবেশ আপনার সন্তানকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সাহায্য করে। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে সন্তানকে গড়ে তোলার বাড়ির পড়ার স্থান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকে আপনাদের জানাবো যে ১২টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী। কিছু বিষয় আছে যা সন্তানের মেধা বিকাশে বিশেষ প্রভাব ফেলে। তাই আজকে আপনাদের জানাবো বারটি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী।
আমরা সকলে চাই আমাদের সন্তান বুদ্ধিমান ও মেধাবী হয়ে বেড়ে উঠুক। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা সেটা কিভাবে হবে। তাই আজকে আপনাদের জানাবো যে ১২টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক যে বারটি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী।
পেইজ সূচিপত্রঃ ১২ টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী
১২ টি উপায়ের সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী
উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন শিশুদের বৈশিষ্ট্য ও চেনার উপায়
উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন শিশুদের বৈশিষ্ট্য
১২ টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবীঃ
রুটিন মেনে চলতে শেখানঃ
আপনার সন্তানকে পরিকল্পনা করতে শেখান। সময়ের কাজ সময়ে করতে রুটিন তৈরি করুন ও
তা মেনে চলতে শেখান। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করানোটা খুব
গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয় নির্দিষ্ট স্থানে তাকে জিনিসপত্র রাখতে শেখান।
যেমন স্কুল থেকে এসে রাখার জায়গায় ঠিক করে দিন যেন সকালে খুঁজা খুঁজি করতে না
হয়।
আরো পড়ুনঃ রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - রুটির পুষ্টিগুণ
কাজের তালিকা তৈরি করুনঃ
বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানগুলো মনে রাখার জন্য সন্তানের ঘরের পড়ার টেবিলের সামনে
রাখুন হোয়াইট বোর্ড। অথবা আর্ট পেপার রং করেও বানিয়ে নিতে পারেন ছোট
ক্যালেন্ডার। সেখানে তার খেলার দিন বন্ধুদের জন্মদিন সবকিছু উল্লেখ থাকবে সে
বুঝতে শিখবে আপনি তাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মাঝে মাঝে দিন ব্রেকঃ
সব সময় পড়ার কথা বলবেন না সন্তানদের। হালকা বিশ্রামের জন্য তাদের বন্ধুদের
সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দিন। গেম খেলুক সে তবে দেখবেন বিছানায় শুয়ে শুয়ে যেন সে
স্মার্টফোন না ঘাটে।
পড়ার টেবিল থাকুক গোছানোঃ
কৃষকরা জানান পড়ার আলাদা টেবিল ছাড়াও ডাইনিং টেবিল কিচেন কাউন্টার এবং ঘরে যদি
আপনার ছোট্ট কাজের জায়গা থাকে তবে সেখানেও সন্তানরা করতে পারবে। এর জন্য আপনাকে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সন্তানদের পড়ার জন্য যা প্রয়োজন তা যেন হাতের কাছে
থাকে শান্ত পরিবেশ ও গোছানো থাকে এতে তার পড়া থেকে মনোযোগ সরবে না।
প্রতিদিন পড়ার আগে একটু বিনোদনঃ
স্কুল থেকে এসেই পড়ার টেবিলে বসানো নয় বরং তাকে পোশাক ছাড়তে বলুন। হালকা
নাস্তা খেতে দিন পড়ার টেবিলে বসার আগে অবশ্যই তার বিনোদনের ব্যবস্থা রাখুন। হতে
পারে তা টেলিভিশন দেখা অথবা বাইরে খেলতে যাওয়া।
দূরে থাকুক অপ্রয়োজনীয় জিনিসঃ
পড়ার টেবিলে কখনোই অপ্রয়োজনীয় জিনিস রাখবেন না যদি কোন কিছু অসভন দেখায় হতে
পারে তা বইয়ের স্তব তবে বড় ফটো ফ্রেম দিয়ে ঢেকে রাখুন। সন্তানকে ফাইল
অর্গানাইজার কিনে দিন দিতে পারেন কনটেইনার।কনটেইনারে এ অবশ্যই কাগজ দিয়ে ট্যাগ
দিয়ে দিবেন কাগজে লেখা দেখে শিশু জেনে নিতে পারবে কি আছে সেখানে।
পড়ার ঘর হোক আরামদায়কঃ
পড়ার ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ খালি স্থান রাখুন। সেখানে যেন থাকে সন্তানের পছন্দের
খেলনা। ছোট্ট নরম টেডি বিয়ার বিভিন্ন আকৃতির বালিশ ঘরের মধ্যে তাদের আরাম এনে
দেবে। শুধু কি পড়ার বই পড়বে আপনার সন্তান একঘেয়েম এর কারণে শিশুরা পড়াশোনার
মনোযোগী হতে পারে না। তাই ঘরে রাখুন বইয়ের সেল সেখানে এখন মজাদার রঙিন গল্পের
বই।
বাবা মা হিসেবে নিজের দায়িত্ব বুঝুনঃ
সন্তানের ঘরের জন্য কোন কোন নতুন পরিবর্তন আনা যায় তা ভেবে বের করুন। সন্তান
স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারছে কিনা তার বাড়ির কাজে
সহায়ক হবে এমন ওয়েবসাইটের খবর রাখা কোন সফটওয়্যার দরকার এবং কোন কোন ক্ষেত্রে
শিশু পিছে আছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
পর্যাপ্ত আলো রাখুন ঘরেঃ
স্কুলের বাড়ির কাজের শিশুদের অনেক সময় ব্যবহার করতে হয় গ্রাফ পেপারে।
রেখাচিত্র আঁকা সহ অনেক শুকনো কাজ করতে দেওয়া হয় তাদের। এ কাজে প্রয়োজন
উজ্জ্বল আ্লো। সন্তানের ঘরে তাই অক কৃপণ ভাবে রাখুন পর্যাপ্ত আলো।
মাঝে মাঝে বদলে যাক পড়ার টেবিলঃ
সন্তানের পড়ার ঘরে থাকুক পর্যাপ্ত আলো বাতাস। ঘরের দেওয়ালের রং যেন কারনও হয়
সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে শিশুর সৃজনশীলতা নষ্ট হয়। সব সময় পড়ার ঘরের দেওয়াল
রাখুন হালকা সেটের।
আরো পড়ুনঃ ব্লগ লিখে অর্থ উপার্জনের উপায়
শিশুদের মনোযোগের ধরনঃ
আমরা সকলেই জানি যে সাধারণভাবে শিশুদের মনোযোগ একটি গোল্ড ফিসের মতন হয়ে থাকে।
যে কোন আকর্ষণীয় কাজ শুরু করতে কিন্তু তারা ১০ মিনিট সময় নেই এবং যদি একবার মন
বসে যায় তাহলে কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তারা সেই নির্দিষ্ট কাজটি মনোনিবেশ করতে
পারে। যদি ৬ মাস বয়সের আগেই আপনার শিশুদের মধ্যে এই আচরণ লক্ষ্য করেন তাহলে
বুঝবেন আপনার শিশু অত্যন্ত বুদ্ধিমান হতে চলেছে। উদাহরণ স্বরূপ যদি আপনার শিশু
স্বাভাবিকভাবে ধাঁধা গুলির দিকে বেশি আকর্ষিত থাকে এবং সেগুলি ঠিক করার ওপর বেশি
সময় ব্যয় করতে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই আপনারা অনুপ্রাণিত করবেন।
শিশুকে নিজেই নিজের বন্ধু তৈরি করুনঃ
শিশুরা যাতে কখনোই একাকীত্ব না ভোগে এবং যেকোনো সমস্যার সমাধান নিজেরাই করতে পারে
সেটাও কিন্তু একটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। তাই কিছুটা সময় এমন রাখুন যখন শিশু
নিজের সঙ্গেই সময় কাটাবে। যদিও এরকম খুব একটা হয় না কারণ শিশুরা খুবই সামাজিক
হয় এবং বেশিরভাগ সময় কিন্তু সকলের সঙ্গে থাকতে চাই। তবে যদি আপনি লক্ষ্য করেন
যে আপনার শিশু একা একাই খেলছে অথবা যে কোন কাজ করছে তাহলে বুঝবেন আপনার শিশুর
মধ্যেও বুদ্ধিমান সত্তা রয়েছে। আপনার বাচ্চা যতক্ষণ নিরাপদ কোম্পানিতে থাকে
ততক্ষণ তার সাথে চাই তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দিন তবে যদি সে না চায়
তাহলে কিন্তু অতিরিক্ত জোর করবেন না।
উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন শিশুদের বৈশিষ্ট্য ও চেনার উপায়ঃ
সাধারণত মেধা প্রবণতা সৃষ্টিধর্মিতা এবং বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে অধিকাংশ শিক্ষাবিদ উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন বা প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ পরিবার সমাজ ও বিদ্যালয়ে যে শিক্ষার্থী বা শিশুটি সর্বোচ্চ মেধা প্রবনতার স্বাক্ষর রাখতে পারে তারাই হলো উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন বা প্রতিভাবান শিক্ষার্থী। উচ্চ মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থীর সংখ্যা হল বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তিন শতাংশের অন্তর্ভুক্ত। এরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম এবং এদের চাহিদা এত বেশি যে বিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম এদের জন্য অপপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের হয়ে থাকে ।এরা খুব দ্রুত শিক্ষা অর্জন করতে পারে এদের কার্যক্রমের ধরন হয় মৌলিক এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় উন্নতমানের।
উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন শিশুদের বৈশিষ্ট্যঃ
প্রত্যেক উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন শিশু এক ধরনের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নয় তবুও
কতগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য আপাতত ভাবে তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়-
- ছোটবেলায় দৈহিক বিকাশ খুব দ্রুত হয় এরা অপেক্ষাকৃত কম বয়সে হাঁটতে শেখে।
- এদের ভাষার বিকাশ ও দ্রুত হয় প্রায় দুই বছর বয়সের মধ্যেই অনেক কথা এরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারে।
- এরা সব জিনিস সম্পর্কে প্রশ্ন করে এদের জানার আগ্রহ বিশেষভাবে বস্তুর সামগ্রিক দিকের ওপর হয় কোন বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে এরা সন্তুষ্ট থাকতে পারে না।
- এরা খুব দ্রুত পড়তেও গণনা করতে শিখে অনুকরণের দ্বারা এরা খুব সহজে লিখতেও পারে।
- এদের অনুরোধের ক্ষেত্রে অনেক বিস্মিত হয়।
- প্রথম বয়সে এরা বাড়ির বিভিন্ন কাজেও খুব বেশি পরিমাণে আগ্রহ দেখায় এবং বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দিলে খুশি হয়।
- খুব বেশি থাকে এবং খুব সূক্ষ্মভাবে তারা তাদের এই রসবোধকে প্রকাশ করতে পারে। পক্ষ ভিকদিক থেকে এরা অনেক বেশি পরিপক্ক হয়।
- অনেক সময় এরা এদের চেয়ে বেশি বয়সে ছেলে মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করে কারণ সমবয়সীদের মধ্যে তাদের মানসিক ক্ষমতা সম্পন্ন ছেলে তারা সব সময় খুঁজে পায় না।
- এরা খুব কম বয়স থেকে যুক্তিসম্পন্ন কথা বলে।
- এদের মনোযোগের পরিসর বিস্মিত হয় এবং মনোযোগের স্থায়িত্ব বেশি হয়।
- বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে এরা সারা জীবন ধরে তাদের বুদ্ধির উন্নত মান বজায় রাখে।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত ঘুমের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
উপসংহারঃ ১২ টি উপায়ে সন্তান হবে বুদ্ধিমান ও মেধাবী
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, গর্ভাবস্থায় প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডিম মাছ মাংস বেঞ্চ পাঁচমিশালী ডাল সিট নিয়মিত খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়। কলা শুকনো ফল পুদিনা পাতা সবুজ শাকসবজিতে আয়রন ও ফলিক এসিড আছে যা গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে সাহায্য করে। আপনারা যারা জানতে চান আপনার সন্তান বুদ্ধিমানও মেধাবী কিনা তবে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন যে ১২টি উপায় আপনার সন্তানের মধ্যে থাকলে আপনার সন্তান বুদ্ধিমান মেধাবী হবে। এতখন আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url