করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের জানাবো করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে । করলা সূর্যের রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। করলায় রয়েছে রক্তে চিনি চিনি কমানোর উপাদান । আমরা অনেকেই জানিনা পড়লা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। যা যারা জানে না তাদের জন্য আজকে আমাদের এই পোস্টটি লেখা। চলুন জেনে নেওয়া যাক করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম

ডায়াবেটিস রোগীরা রক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করোলা খেতে পারেন। আপনি যদি করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম না জেনে থাকেন তবে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। পানির সঙ্গে মধু ও করলার রস মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা স্বাস্থ্য ও গলার প্রদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিম্নে করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেইজ সূচিপত্রঃ করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম 

ভূমিকাঃ

করলা একপ্রকার ফল জাতীয় সবজি। করলা তেতো হলেও অনেকের প্রিয়। করলা রুচিবোধক সবজি। ভাজি ভর্তা চিংড়ির সহযোগে ভাজি ডালের সঙ্গে রান্না কিম্বা মুচমুচে ভাজা রান্না যেভাবেই হোক করলার স্বাদের কোন তুলনা নেই। গরম ভাতে আলু করোলা ভাজি খাবার কে আনন্দদায়ক করে তুলে।

স্বাস্থ্যের জন্য এই সবজি উপকারীগুলো কম নয় তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত করোলা রাখুন এতে করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। শেষ করা যাবে না। আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত করোলা রাখলে রোগ বালাই দূরে পালাবে।

আরো  পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

করলার উপকারিতাঃ

আপনার খাদ্য তালিকায় আপনি কি নিয়মিত করলা রাখছেন। আপনি কি জানেন নিয়মিত করলা খেলে কি হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মিত করলা খাবেন-

খাবারের রুচিঃ

খাবারের অরুচি দেখা দিলে অপুষ্টিজনিত  সমস্যায় ভোগার প্রবণতা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে এক চা চামচ করে করলার  রস সকাল ও বিকালে খেলে খাবারের রুচি পারবে।

বাতের ব্যথা নিরাময়েঃ

দেহ থেকে বাত ব্যথা তাড়াতে চার চা চামচ করলা বা উচ্ছেপাতার রস একটু গরম করে দেড় চাচি চামচ বিরুদ্ধে গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন এতে করে আপনার যতই পুরাতন বাতের ব্যথা হোক না কেন সেটা নিরাময়ই হয়ে যাবে।

হার্ট অ্যাটাক রোধেঃ

করলা রক্তের চর্বি তথার ট্রাই গ্লিসারাইড বা টিজি কমায় আর বাড়াই ভালো কোলেস্টেরল ই এস ডি এল এতে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন প্রতিদিন করলা গ্রহনে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহজ হয় এবং প্রতিরোধ হয় রক্তনালীতে চর্বি জমার কারণে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা।

ম্যালেরিয়া রোগের জন্যঃ

আপনি কি ম্যালেরিয়া রোগে ভুগছেন তবে আপনি নিয়মিত করলা পাতার রস খেতে পারেন এতে করে আপনি খুব উপকার পাবেন। এছাড়া ম্যালেরিয়া রোগীকে দিনে তিনটি করলার পাতা ও সাড়ে তিনটি আস্ত গোলমরিচ একসাথে থেঁতো করে নিয়ম করে সাত দিন খাওয়ালে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। করলার পাতার রস খেলে জ্বর সেরে যায় শরীর থেকে কৃমি দূর করতে করলা কাজ করে অত্যান্ত।

সুগার নিয়ন্ত্রণেঃ

এডিনোসিন মনোষ হস্পেট এক্টিভেটেড প্রোটিন ক্রাইনেস নামক এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে রক্ত থেকে শরীরে কোষ গুলোতে সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় করলা। এটি শরীরে কোষের গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে এতে করে আপনার শরীরে সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ

করলায় রয়েছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্তে চিনি কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করোলা খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরে ডায়াবেটিসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাবেন।

রোগ প্রতিরোধের জন্যঃ

রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ার জন্য করলার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা করোলা সব ধরনের সংকরণী বিরুদ্ধে শরীরকে লড়তে সাহায্য করে সেজন্য আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আপনি নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় করলা রাখুন।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ

করলায় আছে লৌহ ভিটামিন এ সি এবং আশ । অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিন এ এবং সি বার্ধক্য বিলম্বিত করে এছাড়া করোলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী রুটিন এবং ক্যান্সার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন।

শ্বাস রোগ দূর করতেঃ

করলার রসে পুষ্টিগুণে ভরা এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের দূষণ দূর করে হজম প্রক্রিয়ার গতি বাড়ায়। পানির সঙ্গে মধুও করলার রস মিশিয়ে খেলে এজমা  ও গলার প্রদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

হজমে স্বস্তি আনার জন্যঃ

করলার বড় গুণ হচ্ছে এটি হজমের জন্য খুব উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর ভূমিকা অপরিসীম। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা দূর করতে নিয়মিত আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় করলা রাখুন এ তো করে আপনার হজমের যত সমস্যা সব দূর হয়ে যাবে।

তারুণ্য ধরে রাখতেঃ 

করলা চর্বি ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এর তে তো রস কৃমিনাশক। এটি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এছাড়া এটি ভাইরাস নাশক। আপনি কি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন এমন রোগের উত্তম খাবার হচ্ছে করলা। করলা শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে শরীরের রক্তের উপাদান বাড়ায়। করলার ভিটামিন সি তো প্রচুর ভালো রাখে এবং ম্যালেরিয়া জ্বরের স্বস্তি দেয়। মাথাব্যথারও উপশম করে করলা এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। করলার সবচেয়ে বড় গুণ এটি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। খেয়ে ধরে রাখুন আপনার ত্বরণ্য।

আরো পড়ুনঃ ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

করলার অপকারিতাঃ

তিতা করলা খেলে উপকারের কথা শুনেছেন বহু কিন্তু তার অপকারের কথা কি জানেন। তাহলে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক করলা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে-

  • গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। গর্ভবতী মহিলার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাধিক পরিমাণে তিতা করলা খেলে মাসিকের প্রবাহ বৃদ্ধি এবং গর্ভনিরোধক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  • খিচুনিতে আক্রান্ত হতে পারে এবং এইভাবে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ডাইবেটিস রোগীদের জন্য তিতা করলা খুবই উপকারী এবং উচ্চ সরকার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করতে পারে। তবে ডাইবেটিক রোগীদের জন্য আপনার নিয়মিত ওষুধের সাথে তিতা করলা গ্রহণ করলে  প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সত্যিটা করোলা এমনভাবে আপনার শর্করা কমাবে যে আপনি ক্ষমাই চলে যেতে পারেন তাই একটি করলা চারভাগের একভাগ জুস করে খাবেন।
  • অনিয়মিত হার্টবিট কারণ হতে পারে তিতা করলা আমাদের হৃদয়ের জন্য উপকার জনক কারণ এটি ধমনীতে ক্লোজিং প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। 
  • শিশুরা খেলে শিশুর পেটে ব্যথা বমি ও পেট ফাঁপা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের জন্য বিষক্রিয়া করে করলা।
  • হিপ গ্লেসমিক কোমা হতে পারে আমাদের দেহ অত্যন্ত কম রক্তের শর্করার মাত্রা দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি ধরনের কমা তৈরি করে এবং অনিয়মিত হৃদপিন্ডের জন্ম দেয়।
  • লিভার ইনফ্লেমেশন হতে পারে আমাদের শরীরের রক্তে শর্করা মাথা নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খরচ কম। চিন্তা করলা বেশি খেলে লিভার এনজাইম কে উন্নত করে লিভারের প্রদাহসৃষ্টি করতে পারে।
  • করলা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে যাদের শর্করার সমস্যা কম তারা চিকিৎসকের পরামর্শই একটি গ্রহণ করুন।

করলা পুষ্টিমানঃ

প্রচন্ড গরমে স্বস্তি দেয় করলা, শরীর সুস্থ রাখতে করলার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতি 100 গ্রাম করলায় 28 কিলো ক্যালরি, ৯৪.২ গ্রাম জলীয় অংশ,৪.৩  গ্রাম শর্করা, ২.৫ গ্রাম  আমিষ, ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিইয়াম, ১.৮ মিলিগ্রাম লোহা এবং ৬৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে।

করলা খাওয়ার নিয়মঃ

আরবের শাস্ত্রের মতে করলার রস সপ্তাহে দুইদিন খাবেন আর সকালে খালি পেটে খান। করলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।করলাই রয়েছে রক্তের চিনি কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিস রোগীরা রক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করলা খেতে পারেন। পানির সঙ্গে মধু ও করলার রস মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা স্বাস্থ্য ও গলার প্রদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

করলার ঔষধি গুনঃ

শরীর কামড়ানো, জল পিপাসা বেড়ে যাওয়া, বমি ভাব হওয়া থেকে মুক্তি পেতে  করোলা পাতার রস উপকারী । এক চা চামচ করোলা পাতার রস একটু গরম করে অথবা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেলে উপকার পাওয়া যায়।

করলা ব্যবহারের নিয়মঃ

করলা নানাভাবে ব্যবহার করা যায় এখানে আমরা আপনাকে এর কিছু সাধারণ ব্যবহার সম্পর্কে বলছি।

  • এটি রান্না ঘরের সবজি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • খুব বেশি জ্বর হলে এর মূলের পেস্ট সারা শরীরে লাগাতে পারেন এতে করে আপনি জর থেকে মুক্তি পাবেন।
  • ব্রণ রোধ করতে করলার পাউডার ত্বকে লাগাতে পারেন।
  • এর শুকনো মূলের পাউডার ত্বককে নরম করতে এবং ঘাম কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • করলা বীজের গুড়া বানিয়ে একজিমা প্রতিরোধ করা যায়।

উপসংহারঃ করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা -  করলা খাওয়ার নিয়ম অনেক। আপনারা যারা করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানেন না আমাদের এই আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - করলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার ২০ টি  উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন 

 এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এবং আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url