থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ

 প্রিয় পাঠক, আজকে আপনাদের জানাবো থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে। শুধু পেটই নয়, আলসার, একজিমা - হাপানি সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। সেজন্য আজকে আপনাদের জানাবো থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে। চলন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক তারপরে পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে। 
থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুন

প্রতিদিন থানকুনি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে বড় বড় রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে ত্বকের ও জেল্লা বাড়ে। তাই আজকে আপনাদের জানাবো স্নান করে পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে। নিম্নে থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

পেইজ সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ 

  • থানকুনি পাতার উপকারিতা
  • থানকুনি পাতার অপকারিতা
  • থানকুনি পাতার ব্যবহার
  • থানকুনি পাতার পুষ্টিগুণ
  • থানকুনি পাতার ঔষধি গুণ
  • উপসংহার

থানকুনি পাতার উপকারিতাঃ

আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ হল থানকুনি পাতা। গ্রাম অঞ্চলে থানকুনি পাতার ব্যবহার আদিকাল থেকেই হয়ে আসছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যদি কেউ নিয়মিত থানকুনি পাতা খান তবে মাথায় চুল থেকে শুরু করে পায়ের পাতা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক খানিক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।

ক্ষত নিরাময়ঃ

খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে বা অন্য কোন কারণে হাতপা কেটে গেলে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করার জন্য থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। থানকুনি পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা কমবে এবং রক্ত পড়া বন্ধ হবে। এমনকি ক্ষতস্থানে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যায়।

বিশুদ্ধ রক্তঃ

থানকুনি পাতার রস পান করলে রক্ত পরিষ্কার থাকে। অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শৈল সমস্ত কষে যায় ফলে অন্য অনেক সমস্যার সমাধান হয়। আমাদের হাত এবং পায়ের ফোলা কমাতেও থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রদাহ কমাতেঃ

শরীরের অভ্যন্তরে কোন ক্ষত থাকলে তা জ্বর, ক্লান্তি, ক্ষুধা হাস এবং পেশীতে ব্যথাসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। থানকুনি পাতায় রয়েছে প্রচুর উপাদান যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলে ব্যথা জ্বালা ক্লান্তি খুব দ্রুত চলে যায়। এছাড়াও থানকুনি পাতা অনেক ধরনের সংক্রমণ করতেও বাধা দেয়।

আলসার নিরাময়ঃ

পেটের যে কোন সমস্যায় থানকুনি গাছের পাতা খুবই উপকারী। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ আলসার এবং ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য এই পাতা ব্যবহার করে আসছে। যাদের প্রায় ডায়রিয়া হয় তাদের জন্য থানকুনি পাতা দারুন উপকারী।

মানসিক অবসাদ কমায়ঃ

যাদের মানসিক সমস্যা আছে তাদের জন্য থানকুনি পাতার রস বিস্ময়কর ভাবে কাজ করে। থানকুনি স্ট্রেস হরমোন তৈরি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে মানসিক চাপ অস্থিরতা ও উদ্বিগ্নতার সম্ভাবনা কমে যায়।

মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

থানকুনি পাতা নিয়মিত খাওয়া হলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নামক রাসায়নিকের পরিমাণ বাড়ে, যা মস্তিষ্কে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এতে স্মৃতিশক্তি যেমন ভালো হয় তেমনি বুদ্ধিও পখর হয়।

টক্সিন থেকে মুক্তিঃ

থানকুনি পাতা আমাদের শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় উপাদান গুলি বের করে শরীর পরিষ্কার রাখে। নিয়মিত থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে সব খারাপ জিনিস বেরিয়ে যায়।

থানকুনি পাতার অপকারিতাঃ

  • থানকুনি পাতা অধিক ব্যবহারে মাথা ব্যথা বমি ভাব মাথা ঘোরা এবং ঘুম ঘুম ভাব করতে পারে।
  • বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এই মেসেজটি কতটা নিরাপদ সেই সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য নেই তাই মায়েদের থানকুনি পাতা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে পেট খারাপ বা পেট ব্যথা হতে পারে।
  • যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা থানকুনি পাতা সমান করলে শরীরে লাল লাল চোখ বা দাগ সৃষ্টি হতে পারে।

থানকুনি পাতার ব্যবহারঃ

  • চুল পড়ার হার কমায়।
  • শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।
  • শরীরের ক্ষত নিরাময়ে উপকারী।
  • হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
  • আমাশয়ের মত সমস্যা দূর করে।
  • কাশির প্রকোপ কমাই।
  • গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে।

আরো পড়ুনঃ

থানকুনি পাতার পুষ্টিগুণঃ

প্রতি ১০০ গ্রাম থানকুনি পাতায় যতটা পুষ্টিগুণ থাকে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো।

  • ক্যালসিয়াম:171 মিলিগ্রাম
  • আয়রন:5.6 মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম:391 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন এ:442 মাইক্রগ্রাম
  • ভিটামিন সি:48.5 মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন B2:0.19 মিলিগ্রাম

থানকুনি পাতার ঔষধি গুণঃ

থানকুনি একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ছোট ছোট পাতার এই গাছ শরীরের জন্য অনেক উপকারী। ইংরেজিতে এর নাম Indian Pennywort. ৭ বলুন বা পাতা উপকারিতা কারণেই থানকুনি একটু পরিচিত নাম। এর কোন স্বাদ নেই। থানকুনি অনেক রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আসুন জেনে নেই এই পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে-

আরো পড়ুনঃ

  •  পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশে রান্না করে একমাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • থানকুনি পাতার রস এক চা চামচ ও শিউলি পাতার রস এক চা চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে জ্বর প্রতিরোধ করবে।
  •  অল্প পরিমাণ আম গাছের ছাল, আনারসের কচি পাতা একটি, কাঁচা হলুদের রস, চার-পাঁচটি থানকুনি গাছের শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে একত্রে পেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি কার্যকর।
  • আধা কেজি দুধে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি ও১৭৫ গ্রাম থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে এক সপ্তা খেলে গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়।
  • দুই চামচ থানকুনি রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। এক সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।
  • সকালে খালি পেটে চার চামচ থানকুনি পাতার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে সাত দিন খেলে রক্ত দূষণ দূর হয়।
  • যেসব বাচ্চা কথা বলতে দেরি করে এক চা চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে 2025 ফোটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সাথে কিছুদিন খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
  •  প্রতিদিন সকালে 5 থেকে 7 টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে সাত দিন খেলে আমার শরীর ভালো হয়। থানকুনি পাতা পেটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দুই চা চামচ দিনে দুইবার খেলে আমার শরীর ভালো হয়।
  • থানকুনি পাতা বেটে গরম ভাতের সাথে খেলে পেট ব্যথা ভালো হয়।
  • প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস এক চা চামচ পাঁচ ছয় ফোঁটা হলুদের রস সামান্য চিনি ও মধুসহ একমাস খেলে লিভারের সমস্যা ভালো হয়।
  • যদি মুখ মলিন হয় লাবণ্যটা কমে যায় তবে পাঁচ ছয় চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত করলে উপকার পাবে।
  • কোথাও থেতলে গেলে থাকবো নি গাছ পেটে অল্প গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে উপলব দিয়ে রাখলে সেটা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।
  • অপুষ্টিও ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে গেলে পুষ্টি পর ভিটামিন সম্পৃক্ত খাবারের পাশাপাশি ৫-৬ চা চামচ সার কলিকাতার রস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে এতে করে আপনার চুল ওঠার প্রতিরোধ করবে।
  • মল পরিষ্কারভাবে না হলে পেটে গ্যাস হলে কোন কোন সময় মাথা ধরায় সব ক্ষেত্রে তিন চার চামচ তারপরে রস গরম করে ও সমপরিমাণ গরম দুধ মিশিয়ে খেতে হবে নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।
  • ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে অথবা সর্দি হলে থানকুনি শিকড় ও ডাটার মিহি গুঁড়ার নিশি নিলে উপকার পাওয়া যায়।

উপসংহারঃ থানকুনি  পাতার উপকারিতা অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুন

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, থানকুনি পাতা বেটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দুই চা চামচ দিনে খেলে পেটের আমাশয় ভালো হয়। থানকুনি পাতার অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়েন তবে বুঝতে পারবেন থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - থানকুনি পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে ধৈর্য সহকারে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url