বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে। শরীরে অধিক ঘামের কারণে ত্বকের রুম ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় যার ফলে ঘাম বেরোতে পারে না তখন ঘামাচি হয়। বাচ্চাদের রুম ছিদ্র ছোট হওয়ায় তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে। ঘামাচি ছোট ছোট লাল রঙের মতো দেখায় এর ফলে তোকে চুলকানি হয় ও বাচ্চারা কাঁদে। সেজন্য আজকে আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি।
কয়েক মাসের শিশু থেকে শুরু করে বিদ্যালয়গামী যে কোন বয়সের শিশুই ঘামাচিতে আক্রান্ত হতে পারে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মিলিয়ারিয়া রুবা মিলিয়া ক্রিস্টিলাইন ও বলা হয়। নিতম্ব ও ভাজযুক্ত স্থানে ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে।পেইজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি
- ভূমিকা
- বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হওয়ার কারণ
- বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে যা করতে হবে
- বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে চিকিৎসা
- উপসংহার
ভূমিকাঃ
প্রচন্ড গরম যখন পড়ে তখন মানুষ নানাভাবে কষ্ট পায় বিশেষ করে ত্বকের নানা সমস্যা
ও ঘামাচি যন্ত্রণাময় হয়ে ওঠে। শিশুদের মধ্যে গরম কালে ঘামাচির সমস্যা দেখা দেয়
বেশি ঘামাচি থেকে বড় কোন সমস্যা না হলেও এর জ্বালা থেকে চুলকানি তো কষ্ট পায়
তারা।
কয়েক মাসের শিশু থেকে শুরু করে বিদ্যালয়গামী যে কোন বয়সের শিশুই ঘামাচিতে
আক্রান্ত হতে পারে। পেট বুক ঘাড় এবং শরীরের যেখানে ভাসযুক্ত স্থান আছে সেখানে
খামাচি বেশি হয়ে থাকে। শরীরের অধিক ঘামের কারণে ত্বকের রুম ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়
যার ফলে ঘাম বের হতে পারে না তখন ঘামাচি বেশি হয়।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
বাচ্চাদের বেশি হয় কারণ বাচ্চাদের রুম ছিদ্র ছোট হওয়ায় তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের
তুলনায় ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে। কারণ তাদের বাইরে বের হতে পারে না এজন্য ঘামাচি
বেশি হয় বাচ্চাদেরা কাপড়ের ঘষা খেলে শরীরে জ্বালা করে বাচ্চাদের।
বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হওয়ার কারণঃ
প্রতিদিন ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে গোসল করান আবার ভেজা কাপড় দিয়ে
গাম মুছিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন আপনার শিশুর। এতে করে ঘামাচি কম হবে আপনার
শিশুর।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ক্রিম ব্যবহার করবেন না বাচ্চার শরীরে। বাচ্চারা
যাতে প্রকৃতি খাওয়া পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন আপনি।
যদি ঘন ঘন ঘেমে যায় তাহলে তাদের তক ভেজা কাপড় পরিষ্কার করে দিন আপনার শিশুর।
ঘাড় বাহু মূল এমন অংশে বাজ বেশি হয় তাই এসব স্থানে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে দিন স্থানগুলো যাতে শুকনা থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
ঘামাচি রোদে শিশুর ত্বকে ত্বক ঠান্ডা রাখার জন্য ঘামাচি প্রতিরোধ তেল কম পাউডার ব্যবহার করুন। তবে পাউডার লাগানোর সময় খেয়াল রাখবেন মোটা করে শিশুর ত্বকের টেলকম পাউডার লাগাবেন না এতে শিশু শরীরের লোমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি দূর করার উপায়ঃ
নিম্নে বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি দূর করার কিছু উপায় তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
চলুন নিম্নে জেনে নেই বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি দূর করার উপায় সম্পর্কে।
বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি দূর করার উপায় হিসেবে আপনি নিতে পারেন গোলাপজল। এর
জন্য আপনাকে সবার আগে প্রথমে বাজার থেকে এক বোতল গোলাপজল কিনে আনতে হবে তারপর সে
গোলাপ জল একটু পরিষ্কার পাত্রে ঢেলে নিয়ে গোলাপ জলের সঙ্গে কিছুটা পরিমাণ মধু
মিশিয়ে গোলাপ জল ও মধু মিশিয়ে বরফের কিউব গুলো ফ্রিজে রেখে কিউব তৈরি করে নিতে
হবে আপনাকে। এবার সেই কিউব গুলো কাপড়ে বেঁধে বাচ্চাদের ঘামাচি হওয়া
জায়গাগুলোতে লাগাতে হবে। এতে করে আপনার বাচ্চার শরীরে ঘামাচি অনেকটাই দূর হয়ে
যাবে।
শরীরে যদি অতিরিক্ত ঘামাচি হয় তবে সেই ঘামাচি দূর করার জন্য আপনি শিশুর ত্বকে
আলু কেটে লাগাতে পারেন। কারণ আলুর রসে মিশে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান।
সেজন্য আপনি আপনার রান্নাঘর থেকে দু-একটা আলু নিয়ে এসে আলু গোল গোল চাকা চাকা
করে কেটে নিয়ে বাচ্চা রে ঘামাচি গ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাগান তাহলে খুব সহজেই
আপনার শিশুর ঘামাচি প্রতিরোধ তৈরি হয়ে যাবে।
বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার উপায় হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন লেবুর রস। এর
জন্য আপনাকে বাজার থেকে পাতিলেবু কিনে নিয়ে এসে পাতি লেবু টিকে কেটে মাছ বরাবর
দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এরপরে পাতিলেবুটকে বাচ্চার ঘামাচি গ্রস্ত এলাকায়
ভালো করে বলিয়ে নিতে হবে এইভাবে নিয়ম করে আপনি যদি দুই দিন অন্তর বাতিলের রস
আপনার বাচ্চার ঘামাচির স্থানগুলোতে লাগাতে পারেন তবে দেখবেন খুব অল্প সময়ের
মধ্যে বাচ্চার ঘামাচি ভালো হয়ে যাবে।
আপনার বাচ্চা যখন ঘুমাবে তখন সাবধানে আপনার বাচ্চার ঘামাচি গ্রস্ত এলাকাগুলোতে হালকা করে নারিকেল তেল লাগিয়ে দিতে পারেন কারণ নারিকেল তেল ত্বকের জলীয় বাষ্প ধরে রাখে যা শিশুদের ত্বকে আদ্রতার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রেখে তোকে মশ্চারাইজ করে রাখে। তবে বাচ্চাদের জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করবেন সেই নারিকেল তেলের গুণ বার্তার দিক অবশ্যই নজর রাখবেন কোন ভেজাল দেওয়ার নারিকেল তেল শিশুদের ত্বকে ব্যবহার করবেন না।
নজর রাখবেন নারিকেল তেলের রক্ষণাবেক্ষণ যেন শীতল আবহাওয়া হয় গরমকালে গরম
গলে যাওয়া নারিকেল তেলের ব্যবহার না করে ফ্রিজে রক্ষণাবেক্ষণ করে ঠান্ডা জমানার
নারিকেল তেল আপনার শিশুর শরীরে লাগান এতে করে আপনার শিশুর অতিরিক্ত ঘামাচি
অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধে ১৫ টি ঘরোয়া প্রতিকার
প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। শিশুদের ত্বকে ঘামাচি
প্রতিরোধে আপনি নিমপাতা কে এক অবাধ্য ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এর জন্য
আপনাকে একমুঠো নিম পাতা জোগাড় করে নিয়ে এসে নিম পাতা থেঁতলে নিয়ে নিমপাতার
পেস্ট শিশুর ঘামাচিযুক্ত ত্বকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর শিশুকে স্নান
করিয়ে দিতে হবে। এরপরে একইভাবে আপনি যদি দুই দিন অন্তর গ্যাপ মেন্টেন করে নিয়ম
পাতার পেস্ট লাগান তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার শিশুর ত্বকের সমস্যা দূর
হয়ে যাবে।
বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে চিকিৎসাঃ
আপনার সন্তানের যদি ফোসকা ঘা ফোড়া হয়ে যায় বা ত্বকে আরো নানা সমস্যা দেখা দেয়
তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়াতে পারেন শিশুকে।
চুলকানি ও জ্বালা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়ে সাময়িক স্বস্তি হতে পারে আপনার
শিশুর। বেবিটেল কম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে ঘামাচিতে লাল ঘা দেখা দিলে
চিকিৎসকের পরামর্শ মতে কিছুদিন অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়া এক ধরনের লোশন রয়েছে যা ঝাঁকিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত শরীরে ঘন্টাখানেক লাগিয়ে রেখে সেটি ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে এরকম ৩-৪ দিনের বেশি করা যাবে না।
চক বা চামড়ায় যাতে ঠিকমতো হাওয়া লাগে তার জন্য ঢিলঢালা পোশাক পড়ুন।
শারীরিক ব্যায়ামের পরে স্নান করে নিন ত্বকের জ্বালা ভাব আটকাতে নরম জামা কাপড়
পড়ুন
ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রতিকার নেওয়া যেতে পারে যেমন ঠান্ডা এলোভেরা জেল ব্যবহারের
পাশাপাশি ঘামাচি হওয়া যায়গাটা ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেললে চুলকানির থেকে উপশম
পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে আলাদা করে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে আপনার।
উপসংহারঃ বাচ্চাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হলে করণীয় কি
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে বাচ্চাদের ঘামাচি হলে কি করা উচিত পুরো ব্যাপারটা আলোচনা
সাপেক্ষে আমরা আপনাদের আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে জানিয়েছি আশা করি আমাদের
আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার উপায় হিসেবে সঠিক কিছু তথ্য
আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরেছি।
আরো পড়ুনঃ স্তনের নিচের চুলকানি কেন হয় - স্তন ক্যান্সারের ১৪ টি লক্ষণ
আপনারা যদি আমাদের আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এটি শেয়ার করুন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url