হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা কি জানেন হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে। যদি না জেনে থাকেন তবে আমাদের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের আজকে জানাবো হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে। কুরআন ইবনে কাসীর এর মতে, ইমাম শাফি এবং যারা তার সাথে একমত পোষণ করেছেন তারা সবাই এই আয়াত দিয়ে হস্তমৈথুন হারাম হওয়ার পক্ষে দলিল দিয়েছেন। চলুন আমরা নিম্নে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে।
ইসলামে হস্তমৈথুন করা নিয়ে পন্ডিতের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। ইসলামী
ধর্মগ্রন্থ কুরআনে বিশেষভাবে হস্তমৈথনের কথা উল্লেখ করা হয়নি কিন্তু কিছু হাদিসে
এটির কথা উল্লেখ রয়েছে তবে সেগুলোকে অবিশ্বস্ত হাদিস হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়ে
থাকে। সেজন্য আমরা আমাদের আর্টিকেলে আজকে আপনাদের জানাবো হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি
- এটাকে ইসলাম কি বলে।
পেইজ সূচিপত্রঃ হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে
- ভূমিকা
- হস্তমৈথুনের অপকারিতা
- হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
- হস্তমৈথুন করা কুরআনে কি বলে
- হস্তমৈথুন করা হাদিসে কি বলে
- হস্তমৈথুন করা ফিকাহ কি বলে
- উপসংহার
ভূমিকাঃ
ইসলামে হস্তমৈথুন করা নিয়ে পন্ডিতের মধ্যে মধ্য পার্থক্য রয়েছে। ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কুরআনে বিশেষভাবে বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করা হয়নি কিছু হাদীসের কথা উল্লেখ রয়েছে তবে সেগুলোকে অবিস্বাস্থ্য হাদিস হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ইসলামের আইনবিদ কারো কারো মতে হস্তমৈথুন বা সমাহন হল মুসলিমদের জন্য হারাম আবার কারো কারো মতে হস্তমৈথুন হল হালাল। যেমন ইমাম আহমদ হস্তমৈথুন হালাল মনে করতেন।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ব্রেস্ট ঝুলে যাওয়ার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
যা ইউসুফ আল কার্জাবি তার আল হারামখিল ইসলাম বইয়ের ১৬৬ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ
করেছেন ইসলামে হস্তমৈথুন সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও অনেক হাদিসে
পরোক্ষভাবে সেটাকে হারাম বুঝানো হয়েছে। অধিকাংশ ইসলামের আইনবিদের মতে সাধারণভাবে
হস্তমৈথুন আরাম বা নিষিদ্ধ। আবার অনেকে মনে করেন ইসলামে হস্তমৈথুন
ক্ষেত্রবিশেষে বৈধ। চলুন নিম্নের জেনে নেই হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে
ইসলাম কি বলে।
হস্তমৈথুনের অপকারিতাঃ
পুরুষরা যদি নিয়মিত হস্তমৈথুন করে তবে তাদের বীর্যের শুক্রাণু সংখ্যা কমে যায়
তখন বীর্যে শুকানোর সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম। সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতার দেখা
দেয় এসব পুরুষের একজন পুরুষ যখন স্ত্রীর গমন করেন তখন তার থেকে যে বীর্য বের হয়
শুক্রানুর সংখ্যা হয় 42 কোটির মত। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের মধ্যে কোন পুরুষের থেকে
যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সে পুরুষ থেকে কোন সন্তান হয় না
অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গকে দুর্বল করে দেয়। চলুন নিম্নে জেনে নেই
হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি।
- চোখের ক্ষতি করে।
- মাথা ব্যথা হয় আরো অনেক সমস্যা হয়।
- পুরো শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
- স্মরণ শক্তি কমে যায়।
হস্তমৈথুন করার ফলে আরও একটি সমস্যা হয় সেটি হল সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হয়ে যায় ফলে অনেক মুসলিম ভাই নামাজ পড়তে পারেন না। মহান আল্লাহ তায়ালার স্মরণ থেকে মুসলিমদের দূরে রাখে হস্তমৈথুন।
আর কোন নারী যখন হস্তমৈথুন করে তখন তার কুমারিত্ব হারানোর সম্ভাবনা
বেড়ে যায়। অনেকে হস্তমৈথুন করতে গিয়ে কুমারিত্ব হারিয়ে ফেলে।
অনেক মেয়েদের বিয়ের পরে স্বামী তার এ অবস্থা দেখে তাকে সন্দেহ করে তালাক দেয় তাই হস্তমৈথুন নারীদের অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি করে এখন একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি মিশরীয় সারাবাদের আনুষ্ঠানিকভাবে নীল নদে হস্তমৈথুন করতে হতো। এখন আধুনিক সারাবাদের কথা বলি ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষের মাঝে করা একটি জরিপে দেখা যায় ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৯৫ % পুরুষ ও ৭১ % নারী তাদের জীবনের যেকোনো সময় অন্তত একবার হস্তমৈথুন করেছে।
২০০৯ সালে নেদারল্যান্ড অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সাথে যুক্ত রাজ্য বাসন্তীকালীন
ছেলে মেয়েদের হস্তমৈথুন করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয় হস্তমৈথুন একটু ভালো
অভ্যাস বলে তারা প্রচার করছে। এর কারণ হলো এটা যদি এরা না করে তবে তাদের ব্যবসা
বন্ধ হয়ে যাবে। এদের কাছে হস্তমৈথুনের সাথে পণ্য গ্রাফির খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
জুতার সাথে মজার সাথে চায়ের সাথে বিস্কুটের কাগজের সাথে কলমের যেরকম ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক হস্তমৈথুনের সাথে পর্নোগ্রাফিরও সেই রকম সম্পর্ক।
আরো পড়ুনঃ স্তনের নিচের চুলকানি কেন হয় - স্তন ক্যান্সারের ১৪ টি লক্ষণ
পর্নোগ্রাফির ব্যবসা হল কোটি কোটি টাকার ব্যবসা পশ্চিমারা যদি হস্তমৈথুনের
অপকারিতা মানুষের কাছে তুলে ধরে তাহলে তাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসা ক্ষতি হবে
কারণ তখন হস্তমৈথুনের হার কমে যাবে কোন অপকারিতা নেই বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা
সমকামিতা বৈধ করেছে সমকামিতার মতো হস্তমৈথুনের অপকারিতা কেউ তারা এড়িয়ে
চলছে।
হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ঃ
হস্তমৈথুন যদি আপনি নিয়মিত করেন তবে এ থেকে আপনি মারাত্মক ক্ষতির মুখে সম্মুখীন
হতে পারেন। খেয়াল রাখবেন হস্তমৈথুন যেন নেশায় পরিণত না হয় যাদের কাছে এটা
নেশার মত মনে হয় এবং মনেপ্রাণে কমিয়ে দিতে চাইছেন তাদের জন্য নিম্নে আমরা
হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুনঃ
আপনি যখন গোসল করতে যান তখন যদি আপনার ইচ্ছে করে হস্তমৈথুন করার তখন আপনি খুব
তাড়াতাড়ি করে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল ছেড়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসুন। দেখবেন
ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে আপনার হস্তমৈথুন করার ইচ্ছেটা চলে যাবে।
সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড শুরু করুনঃ
আপনি সারাদিন বসে না থেকে আপনার সময় গুলো অপচয় না করে সময় গুলো কাজে লাগান।
জীবনকে সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড দিয়ে ভরিয়ে তুলুন সবসময় নতুন কিছু করার দিকে জোক
থাকলে দেখবেন হস্তমৈথুনের ব্যাপারটা মাথা থেকে দূর হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনার যদি
আরো কোন বাজে জিনিস থাকে সেগুলোও দেখবেন আবার আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যাবে নতুন
ভাবে আপনি আপনার জীবনকে উপলব্ধি করতে পারবেন বেঁচে থাকার নতুন আশা খুঁজে
পাবেন।
শখ নিয়ে মেতে উঠুনঃ
আপনার যদি কোন শখ থাকে তবে সেই সবগুলো পূরণ করার চেষ্টা করুন যেমন আপনার যদি কোন
শখ থাকে বাগান করতে অথবা নিজে রান্না করে নিজে খেতে আরও কত কিছু আছে আপনি যা করতে
বেশি পছন্দ করেন সেটাই করবেন কিছুদিন পর আবার আরো নতুন কিছু করতে বা জানতে চেষ্টা
করুন এতে করে আপনার সময় চলে যাবে এবং অন্যদিকে মন আপনার কিছুতেই যেতে
পারবেনা।
পণ্য ব্লকিং সফটওয়্যার ব্যবহারঃ
আপনার কম্পিউটারে পণ্য ব্লগিং সফটওয়্যার ইন্সটল করে নিন আজব একটা পাসওয়ার্ড
দিয়ে রাখেন যাতে পরে ভুলে যান অথবা কোন বন্ধুকে দিয়ে পাসওয়ার্ড দিন নিজে মনে
রাখবেন না।
কক্ষে একাকি রাত কাটাবেন নাঃ
হাদিসে এসেছে নবী সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন পুরুষকে একা একাকী রাত
কাটাতে নিষেধ করেছেন।
দৃষ্টি অবনত রাখুনঃ
আপনার দৃষ্টিকে সব সময় নতুন রাখার চেষ্টা করুন। কারণ কোন ব্যক্তি বা অশ্লীল ছবির
দিকে দৃষ্টিপাত করা সেটা জীবিত মানুষের হোক কিংবা আঁকা হোক দৃষ্টি বেক্তিকে
হারামের দিকে নিয়ে যাই এ কারণে আল্লাহ তাআলা বলেছেন মুমিনদেরকে বলুন তারা যেন
তাদের দৃষ্টি নত রাখে (সূরা নূর আয়াত ৩০) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন তুমি বৃষ্টির পর বৃষ্টি দিবে না।
ঘুমানোর আদব মেনে চলুনঃ
আপনি ঘুমানোর সময় ঘুমানোর আদবগুলো মেনে চলুন যেমন ঘুমানোর সময় ঘুমানোর দোয়া
গুলো পড়বেন, ডান পাশ হয়ে শোয়ার চেষ্টা করবেন পেটের উপর ভর দিয়ে না ঘুমানোই
ভালো যেহেতু এই সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিষেধ আছে।
নিজেকে পুরস্কৃত করুনঃ
আপনি যখন ভাল কাজ করবেন তখন আপনি নিজেকে নিজেই পুরস্কৃত করবেন। ভালো কোন জায়গাতে
ঘুরতে যাবেন ভালো কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেয়ে আসবেন নিজেকে ছোট ছোট গিফট কিনে
দেবেন এবং সেগুলো চোখের সামনে রাখবেন এমন মনে করবেন যে অমুক ভালো কাজের জন্য এই
জিনিসটা আপনি পেয়েছেন।
খারাপ বন্ধু এড়িয়ে চলুনঃ
আপনার বন্ধুদের মধ্যে যারা বাজে বিষয় নিয়ে বা মেয়েদের নিয়ে বা পণ্য মুভি
বা চটি নিয়ে বেশি আলোচনা করে তাদের থেকে আপনি এড়িয়ে চলুন।
ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করুনঃ
আপনাকে ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করতে হবে। কারণ একদিনের একটা নেশা থেকে মুক্তি
পাবেন এমন হবে না একাগ্রতা থাকলে ধীরে ধীরে যে কোন নেশা থেকেই বের হয়ে আসা যায়
মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যাবে। তখন আপনি হতাশ হয়ে ছেড়ে দেবেন না ভুল থেকে শিক্ষা
নিয়ে আবার আগাতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ
আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন এতে আপনার মনে শৃঙ্খলাবোধের সৃষ্টি হবে।
নিয়মিত হাঁটতে পারেন দৌড়াতে পারেন সাঁতার কাটতে পারেন জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে
পারেন বিকেলে ফুটবল ক্রিকেট যা ইচ্ছা কিছু একটা করুন এতে করে আপনার শরীর ক্লান্ত
হয়ে যাবে এবং আপনি অন্যদিকে কোন কাজ করতে ইচ্ছে থাকবে না।
কাছের বন্ধুদের সাথে সময় কাটানঃ
আপনি একা একা না থেকে আপনার কাছের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। একা একা ঘরে না বসে
থেকে টিভি সিরিয়াল না দেখে আপনার কাছের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন
আবার যদি আপনার বন্ধুবান্ধব না থাকে তবে আপনি ঘরে না বসে থেকে পাবলিক প্লেসে বেশি
সময় কাটান। দেখবেন হস্তমৈথুন থেকে আপনি দূরে থাকতে পারবেন কারণ বাইরে বেশি সময়
কাটালে জগিং করতে গেলে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে আসলে আপনার শরীর ক্লান্ত হয়ে যাবে এবং
অন্যদিকে আপনার মন কখনোই থাকবে না।
অলস বসে থাকবেন নাঃ
আপনি যখন বসে থাকবেন তখন আপনার যদি ইচ্ছে জাগে হস্তমৈথুন করা তখন আপনি কোন না কোন
কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। কারণ অলস বসে থাকা হল শয়তানের কারখানা। আপনি আগে থেকে ঠিক
করে রাখুন আপনার সারাদিনে কি কাজ করতে হবে তারপর একের পর এক কাজ করুন দেখবেন
হস্তমৈথুনের চিন্তা মাথায় আসবে না আপনার।
পুড়িয়ে ফেলুন পন্য কালেকশনঃ
আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে সত্যি সত্যি মুক্তি পেতে চান তাহলে
আপনার কাছে যদি পন্য মুভি বা পন্য কালেকশন থাকে তবে সেগুলো এক্ষুনি নষ্ট করে
ফেলুন বা পুড়িয়ে ফেলুন। আপনার হার্ড ড্রাইভ বা মেমোরি থেকে এখনই ডিলিট করে দিন
ইন্টারনেট ব্যবহারের আগে ব্রাউজারে পেরেন্টাল কন্ট্রোলে গিয়ে কন্টেন ব্লক করে
দিন।
শারীরিক পরিশ্রমে নিজেকে কাজে লাগানঃ
আপনি কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন সেই সময় গুলো চিহ্নিত করুন। বাথরুম বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি আপনাকে উত্তেজিত লাগে অথবা হঠাৎ কোন সময় যদি এমন ইচ্ছে হয় তাহলে আপনি সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রমে নিজেকে কাজে লাগিয়ে দিন। যেমন বুকডন বা অন্য কোন ব্যায়াম করতে পারেন যতক্ষণ না শরীর ক্লান্ত হয়ে যাই। এতে করে আপনার হস্তমৈথুন করার মত আর শক্তি থাকবে না।
হস্তমৈথুন করা কুরআনে কি বলেঃ
ইমাম শাফেয়ি নিকাহ অধ্যায় বলেন,
স্ত্রী বা দাসি ছাড়া অন্য সবার থেকে লজ্জাস্থান হেফাজত করা উল্লেখ করার মতো
স্ত্রী ও দাসী ছাড়া অন্য কেউ হারাম হওয়ার ব্যাপারে আয়াতটি সুস্পষ্ট। এরপরও
আয়াতটিতে তাগিত করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে
তারাই সীমালংঘনকারী সুতরাং স্ত্রী বা দাসি ছাড়া অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গ
ব্যবহার করা বৈধ হবে না হস্তমৈথুনও বৈধ হবে না ।আল্লাহই ভাল জানেন।
কোন কোন আলেম এই আয়াত দিয়ে দলিল দেন-
" যারা বিবাহের সক্ষম নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন" সূরা নূর আয়াত ৩৩
ইবনে কাসীর এর মতে, ইমাম শাফি এবং যারা তার সাথে একমত পোষণ করেছেন তারা সবাই এই
আয়াত দিয়ে হস্তমৈথুন হারাম হওয়ার পক্ষে দলিল দিয়েছেন-
" আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গ কে হেফাজত করে। নিজেদের স্ত্রী বা মালিকানা ভুক্ত দাসীগণ ছাড়া এক্ষেত্রে স্ত্রী ও দাসীর ক্ষেত্রে অবশ্যই তারা নিন্দিত নয়। যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে তারাই সীমালংঘনকারী" সূরা মুমিনুন আয়াত ৫ - ৬
হস্তমৈথুন করা হাদিশে কি বলেঃ
সালাফী ফিকাহাবিদ সালিহ আল মোয়াজ্জিত বলেন, আলেমগণ এ ব্যাপারে সাহাবী
আব্দুল্লাহ বিন মাসুদ এর নিমিত্তে হাদিস দিয়ে দলিল দেন-
"নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আমরা এমন কিছু যুবককে ছিলাম যাদের
কিছু ছিল না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হে যুবকেরা
তোমাদের মধ্যেকার জার বিয়ের খরচ বহন ও শারীরিক সামর্থ্য রয়েছে সে যেন বিয়ে করে
ফেলে কেননা তা তার দৃষ্টি নিম্নগামী রাখতে ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করার সহায়ক
হয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখেনা সে যেন রোজা রাখে কারন তারা যৌন উত্তেজনা
প্রমোশনকারী"(সহীহ বুখারী )
নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন,
" নিশ্চয়ই আল্লাহর কিতাব যা হালাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা হালাল আর আল্লাহর কিতাবে যা হারাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা হারাম। আর যে সব বিষয়ে অনুলেখিত রয়েছে সেগুলো তার ভুলে যাওয়া নয় সেগুলো তার ক্ষমা সেগুলো নিয়ে তর্ক করো না" আল বাইহাকি
হস্তমৈথুন করা ফিকাহ কি বলেঃ
ঠিকা গন হস্তমৈথুন প্রতিরোধে বিবাহ অক্ষ মুসলিম ব্যক্তিকে আল্লাহ ভীতি বৃদ্ধি করা
ও আল্লাহর আদেশ-নিদেশ অধিক মেনে চলা দ্রুত বিবাহ করা দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ জীবন্ত
কিংবা আকা উভয়প্রকার অশ্লীল দৃশ্যতে দৃষ্টিপাত হতে বিরত থাকা রোজা রাখা গায়রে
মাহরামের সঙ্গ ত্যাগ অসৎ সঙ্গ ত্যাগ ও সঙ্গম বিধি একাকি রাত্রি যাপন ত্যাগ যৌন
চিন্তা ত্যাগ ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণময় চিন্তাবিদ হস্তমৈথুনের স্বাস্থ্যগত
ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া স্বয়নে ইসলাম অনুসরণ ও আল্লাহর কাছে ধৈর্য সংযম ও
সতীর্থ রক্ষার প্রার্থনা এবং ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কাজ করে ফেললে তওবা ইস্তিক
অফার ও অধিক ভালো কাজ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে হস্তমৈথুন নিয়ে কত ইসলামিক পন্ডিতের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে তাদের মতে-
কুরআনে হস্তমৈথুন নিয়ে সরাসরি কিছু বলা হয়নি এবং হস্তমৈথুন বিষয়ক বলে গণ্য
হাদীসগুলোকে সরাসরি হস্তমৈথুনের কোন উল্লেখ না থাকায় তারা এ ব্যাপারে হাদিসগুলোর
অবস্থান অনির্দৃষ্ট বলে মনে করেন এ কারণে হস্তমৈথুন সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ হওয়ার
বিষয়ে তাদের অভিমতে পার্থক্য রয়েছে। অবিবাহিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সকল
প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের পরও আত্মনিয়ন্ত্রণের পণ্য অপারগ হয়ে ব্যভিচারের
আশঙ্কা থাকলে ব্যভিচারের বিকল্প হিসেবে এর অনুমতি দিয়েছেন।
হানাফী ও হাম্বলী মাযহাব অনুসারে-
বৈধ যৌন সংঘের অভাবে সমস্যায় ভুগছেন এমন নারী পুরুষ মুসাফির ও বন্দিদের জন্য
ব্যভিচারের ন্যায় তুলনামূলক বড় পাপ থেকে বেঁচে থাকার প্রয়োজন ক্ষেত্রে তা
বৈধ।
আরো পড়ুনঃ শারীরিক সম্পর্ক করলে কি হয় - শারীরিক মিলনের উপকারিতা
সাফেয়ি মালেকি মাযহাব ওসিয়া আইনে এটি সর্বব্যবস্থায় নিষিদ্ধ। সালাফী অভিমত
অনুসারে তা সর্ব অবস্থায় নিষিদ্ধ এবং সালাফি আলেমগণ ক্ষেত্র বিশেষে হস্তমৈথুন
বৈধ হওয়া বিষয়ক মতবাদকে বিভ্রান্তি মূলক দাবি করে এর কঠোর বিরোধিতা করে থাকেন
তাদের মতে হস্তমৈথুন ত্যাগে অন্যতম করণীয় হলো ফুল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পরিতৃষ্ঠে
দূর করার কারণ কিছু কিছু যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার ধোয়া
তুলে এই অভ্যাসকে জায়েজ মনে করে অথচ হতে পারে সে যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতার
নিকটবর্তী হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নাই।
উপসংহারঃ হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আর্টিকেলটি যারা আজকে পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন হস্তমৈথুনের অপকারিতা কি - এটাকে ইসলাম কি বলে সে সম্পর্কে। আপনারা যদি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url