জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়

 আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায় সম্পর্কে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। দলিল রেজিস্ট্রির পর তাতে দাগ খতিয়ান মৌজা বা নামের বানানে কোন প্রকার ভুল ধরা পড়লে তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে দলিল সংশোধনের মামলা করতে হবে আপনাকে এতে করে আপনার জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধন করা যায়। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলে আমরা আজকে আপনাদের জানাবো জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়। জেনে নেই জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়।

জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়

জমি রেজিস্ট্রি করার পর অনেক সময় দেখা যায় দলিলে কোন জায়গার হয়তো ভুল হয়েছে। এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই দলিল রেজিস্ট্রার পর তাদের দাগ খতিয়ান মৌজা বা নামের বড় ধরনের কোন ভুল তিন বছরের মধ্যে ধরা পড়লে তা খুব সহজে সংশোধন করা যায়। সেজন্য চলুন আমরা জেনে নেই জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়।

পেইজ সূচিপত্রঃ জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়

ভূমিকাঃ

সাধারণ নাগরিকগণ এখনো মনে করে থাকে যে জমির দলিল একবার ভুল হয়ে গেলে তা আর সংশোধন করা যায় না। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। দলিল রেজিস্ট্রির পর তাতে দাগ খতিয়ান মৌজা বা নামের বানানে কোন প্রকার ভুল ধরা পড়লে তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানী আদালত দলিল সংশোধনের মামলা করতে হবে আপনাকে।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে মোবাইল লোন - অনলাইন লোন অ্যাপস বাংলাদেশ 

এক্ষেত্রে আদালত ক্রর্থিক প্রধানকৃত মামলার রায় হচ্ছে সংশোধনের দলিল। রায়ের একটি সার্টিফাইড কপি আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্টার এর কাছে পাঠানো হলে সাপ রেজিস্টার উত্তর আয়ের আলোকে সংশ্লিষ্ট ভলিউম সংশোধন করে নিবেন। এক্ষেত্রে আর নতুন করে কোনো দলিল করার প্রয়োজন নেই আপনার।

দলিল সংশোধন কিঃ

পক্ষ গনের প্রকৃত অভিপ্রায় কার্যকরের উদ্দেশ্যে চুক্তিতে থাকা ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে দলিল সংশোধনে একটি ন্যায়পর প্রতিকার হিসেবে কাজ করে থাকে যা সাধারণ লিখিত অবস্থায় দেওয়া হয়। দলিল সংশোধন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি যা অন্যতম MAXIM ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। যাহোক বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে ৩১ থেকে ৩৪ ধারা পর্যন্ত দলিল সংশোধন সংক্রান্ত বিধি বিধান বলি উল্লেখ করা হয়েছে।

দলিল সংশোধন নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৩১ ধারায় বলা হয়েছে যে ক্ষেত্রে প্রতারণা বা পক্ষ গনের পারস্পরিক ভুলের জন্য কোন লিখিত দড়ির প্রকৃত অর্থে পক্ষবনের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করে না সে ক্ষেত্রে দলিলের যে কোন পক্ষপাত তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দলিলটি সংশোধনের জন্য মামলা দায়ের করতে পারে। যে দলিলটি প্রত্যায়নের সময় প্রতারণা বা ভুল হয়েছে এবং দলিলটি কার্যকর করার জন্য প্রকৃত উদ্দেশ্য নির্ণয় করা প্রয়োজন তাহলে আদালত তার ইচ্ছা দিন ক্ষমতা বলে দলিলটি সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন।শুধুমাত্র আদালতের মাধ্যমে একটি দলিল সংশোধিত করা যায়।

আরো পড়ুনঃ জাতীয় জনসংখ্যা দিবস কবে - জাতীয় জনসংখ্যা নীতি কয়টি

জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়ঃ

জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধন করলে দলিলের মূল কাঠামো বা সত্যের কোনো পরিবর্তন ঘটবে না সেরূপ ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্টার বরাবরে আবেদন করা যাবে। সাব রেজিস্টার এই ধরনের ছোটখাটো ভুল সংশোধন করতে পারেন এটাকে ভ্রম সংশোধনী দলিল বলা হয় ৭৪ (১) অনুচ্ছেদের অনুসারে জন্য গ্রহিত দলিলে ভুল ত্রুটি থাকলে এবং তার সংশোধনের জন্য উক্ত ভুল ত্রুটি প্রমাণের জন্য দাখিল করা হলে যে রেজিস্টার এরূপ সংশোধনের বিষয়ে সাব রেজিস্টার একটি টীকা লিখবেন সংশোধন করা হইয়াছে।

(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে যে রেজিস্টার বাহির বহিতে মূল দলিলটি নকল করা হয়েছে তা যদি সদর রেকর্ড রুমে প্রেরিত হয়ে থাকে তাহলে যেসব রেজিস্টার ভ্রম সংশোধন দলিলটি রেজিস্ট্রি করেছেন তিনি জেলা রেজিস্টার কে তার নিজ স্বাক্ষরে সংশোধনী সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় টিকা যথাযথ রেজিস্টার বহিতে লেখার জন্য অনুরোধ করে পত্র লিখবেন।

দলিল সংশোধনী রেজিস্ট্রি খরচ কতঃ

রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ১০০ টাকা। স্ট্যাম্প সুলুক দিতে হবে ৩০০ টাকা। সেই সাথে ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা আর রয়েছে এএনপি বাংলায় প্রতি তিনশত শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বাতার অংশবিশেষের জন্য ১৬ টাকা। আর ইংরেজি ভাষা হলে ২৪ টাকা। স্ট্যাম্প সুল্ক মওকুফ চাইলে স্টাম্প আইন 1999 এর ষোলো ধারা মোতাবেক ২০ টাকার কোটফি আবেদন করতে হবে। তাহলে হয়ে যাবে ভ্রম সংশোধনী দলিল।

আদালতের মাধ্যমে মামলা দায়ের করে ভুল সংশোধনঃ

১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে প্রতারণা অথবা পক্ষগণের পারস্পরিক ভুলের জন্য কোন লিখিত দলিল হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে দলিলের যে কোন পক্ষ অথবা তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দলিলটি সংশোধনের জন্য মামলা দায়ের করতে পারেন। দলিল সংশোধনের মামলায় প্রতারণা বা পারস্পরিক ভুল অবশ্যই থাকতে হবে তা না হলে সংশোধনের মামলা দায়ের করা যাবে না। প্রতারণা বা পারস্পরিক ভুল আদালতের কাছে অবশ্যই প্রমাণিত হতে হবে উভয় পক্ষের সাধারণ ভুল থাকতে হবে যে কোন এক পক্ষের ভুল থাকলে চলবে না।

দলিল সংশোধনের বিকল্প প্রতিকারঃ

  • অন্য কোন ব্যক্তি দখল উদ্ধারের মামলা দায়ের করলে সেই মামলার আত্মরক্ষায় দলিল সংশোধনের দাবি উপস্থাপন করা যায়।
  • রিডেনশনের মামলায় দলিল সংশোধনের প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়।
  • দলিল সংশোধনের মামলা দায়ের না করে সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের মামলা করা যায়।
  • দখল স্থায়ীকরণের ডিগ্রী লাভের জন্য মামলা দায়ের করা যায়।
  • দলিল সংশোধনের মামলা তমা দিতে পারি তো হওয়ার পর সত্য ঘোষনার মামলা দায়ের করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। 

আরো পড়ুনঃ ট্রফি থেকে ইনকাম করার সহজ উপায় 

উপসংহারঃ জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায়

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আপনারা যারা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন জমির দলিলে ভুল হলে সংশোধনের উপায় সম্পর্কে। আপনারা যারা আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন জমির দলিল সংশোধনের উপায় কি কিভাবে করতে হয় সেটা তো সম্পর্কে। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url