বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকে আপনাদের জানাবো বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। বেগুন একটি সুপরিচিত সবজি বেগুন আমরা সকলেই চিনি কিন্তু আমরা জানি না বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। বেগুনে রয়েছে যে স্বাস্থ্যকর উপাদান তার জ্বর হওয়ার পর মুখ ওটের কোণের ঘা জীবের ঘা প্রতিরোধ করে। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ভালো রাখে বেগুন। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তকো চুল ভালো রাখে বেগুন এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
এ সি ই এবং কে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ভিটামিন এ চোখে পুষ্টি যোগায় চোখের যাবতীয়
রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বেগুন একটি শীতকালীন সবজি। কিন্তু এই সবচেয়ে
বেশি শীতকালীন হওয়ার ফলে ও আমরা সারা বছরই বেগুন পেয়ে থাকি। চলুন নিম্নে জেনে
নেওয়া যাক বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
পেইজ সূচিপত্রঃ বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ভূমিকাঃ
বেগুনকে আমরা সবজি হিসেবে পেয়ে থাকি বেগুন একটি শীতকালীন সবজি। শীতকালীন সবজি হলেও প্রায় সারা বছর ওই বেগুন পাওয়া যায় একটি সহজলভ্য সবজি বেগুন বিভিন্ন রঙের হতে পারে কালো সবুজ বা লাল বেগুন সম্পর্কে একটা চলতি কথা আছে কথাটি হল কোন গুণ নেই যার সেই বেগুন কথাটা কিন্তু মোটেও সত্যি নয় সবজির হিসেবে বেগুনের মধ্যে গুণের শেষ নাই একটি সবজি। জেনে নেওয়া যাক বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা কলার পুষ্টিগুন
বেগুন খাওয়ার উপকারিতাঃ
বেগুন খাওয়ার নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। যেগুলো আমরা অনেকেই জানিনা। সেজন্য আজকে
আমাদের আর্টিকেলের এই পর্বে আপনাদের জানাবো বেগুন খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বেগুন খাওয়ার উপকারিতা-
বেগুন হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ
বেগুন খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পারেপাক তন্ত্রের মধ্যে দিয়ে যাই। ফাইবার হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য করে এবং কাঁচা বা ভাজা বেগুন খাওয়া হার্টের কার্যকারিতা ভালো রাখে ও হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা দূর করে। বেগুনে আছে ভালো কোলেস্টেরল এবং টাই গ্লাসাইডের মাত্রা কম করতে পারে।
বেগুন হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ
বেগুন খেলে শরীরে হজম শক্তির বৃদ্ধি হয় কেননা বেগুনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে
ফাইবার। যা পরিপাকতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে যাই ফাইবার হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য
করে এবং চিনিকে অর্থাৎ শর্করাকে পোষণ করে ধীরে ধীরে রক্তের মধ্যে থাকা শর্করার
পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। সেজন্য আপনি যদি হজমের সমস্যায় বুকে থাকেন তবে আপনি
নিয়মিত বেগুন খেতে পারেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ
বেগুনের মধ্যে আছে ফাইবার যা শরিরে খিদে কম করতে সাহায্য করে যার ফলে আজা আপনার ওজন কমতে থাকবে খুব সহজেই। তাই যারা ডায়েটে আছেন তাদের ডায়েট লিস্টে নিয়মিত বেগুন রাখতে পারেন।
বেগুন চোখের জন্য খুব উপকারীঃ
বেগুনের মধ্যে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ যেগুলো চোখের জন্য খুবই উপকারী। আর ভিটামিন এ চোখের পুষ্টি যোগায় চোখের সমস্ত রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। চোখের বিভিন্ন রোগের ঝুকি কমায় তাই যারা চোখের সমসায় ভুগছেন তারা বেগুন খেতে পারেন তাদের জন্য উপকারী হবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেঃ
আপনার রক্তে যদি খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি হয় তবে আপনি নিয়মিত বেগুন খেতে পারেন। এতে করে আপনার খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাবে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এবং এর ফলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
বেগুন রক্তস্বল্পতা সমস্যা কে দূর করতে সাহায্য করেঃ
রক্তস্বল্পতা সমস্যায় যারা বহুদিন ধরে ভুগছেন তারা নিয়মিত বেগুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে করে আপনার শরীরে রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। আর বেগুনে থাকা আয়রন শরীরের রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
বেগুন খেলে ডাইরিয়া ভালো হয়ে যায়ঃ
জিংকের ঘাটতি দেখা যায় বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক আছে তাই ঠিকঠাক হয়ে গেল। আপনার যখন ডায়রিয়া ভালো হয়ে যাবে তখন আপনি নিয়মিত বেগুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে করে আপনার জিংকের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বেগুন থেকে।
হাড় শক্ত করতে সাহায্য করেঃ
দেখুন আমাদের হার্ট শক্ত করতে সাহায্য করে কেননা বেগুনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যাহার জন্য খুবই উপকারী। তাই বেগুন খেলে আমাদের হার শক্তিশালী হবে এবং হাড়ের গঠন বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করবে।
বেগুন খেলে ঠোঁটের কোণে বা মুখে ঘা ভালো হয়ে যায়ঃ
আমাদের মধ্যে অনেকের মুখের টিম বা ঠোঁটের কোণে বাজিয়ে ঘা হয় এই ঘা হওয়ার কারণ হলো রিবফ্লাবিন এর অভাব। আর বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রিপোর্ট প্লাভিন উপাদান আছে ফলে আপনি যদি নিয়মিত বেগুন খেতে পারেন তবে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
বেগুন রক্তস্বল্পতা সমস্যা কে দূর করতে সাহায্য করেঃ
রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতার মতো সমস্যা কি দূর করতে সাহায্য করে বেগুন কেননা বেগুনের মধ্যে আছে আয়রন আর এই আয়রন শরীরের রক্তের পরিমাণ বাড়াদের সাহায্য করে। সেজন্য আপনারা যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বেগুন খেলে উপকার পাবেন।
চোখের জন্য উপকারীঃ
চোখের জন্য বেগুন খুবই উপকারী। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে ভিটামিন এ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ একটি সবজি। আর ভিটামিন এ চোখের পুষ্টি যোগায়। চোখের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায় বেগুন তাই যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বেগুন খেলে উপকার পাবেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ
বেগুন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে সে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই বেগুন।
আরো পড়ুনঃ তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
বেগুন খেলে কি ক্যান্সার হয়ঃ
বেগুন খেলে কি ক্যান্সার হয়। বেগুন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বেগুনের মধ্যে আছে এনটিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের সম্ভাবনা সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। বেগুন খাওয়ার সুবিধা হলো আপনার অঙ্গগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে বেগুন সাহায্য করে।
বেগুন খাওয়ার অপকারিতাঃ
দেখুন খাবার যেমনি উপকারিতা রয়েছে তেমনি অন্যদিকে এর অপকারিতাও রয়েছে। সেজন্য
আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আপনাদের জানাবো বেগুন খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বেগুন খাওয়ার অপকারিতা-
- যাদের কিডনি সমস্যা আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন। কেননা বেগুনের মধ্যে আছে অক্সালের নামক একটা উপাদান যা কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক।
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেগুন খাওয়া উচিত নয় কারণে বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- আবার এলার্জি থাকে অনেকের বেগুনে তাদের বেগুন খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
- যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেগুন খেলে ক্ষতি হতে পারে সমস্যা হতে পারে আপনার শরীরে।
- যাদের ভাতের ব্যথা সমস্যা আছে তারা বেগুনকে এড়িয়ে চলবেন।
- যাদের এজমা আছে তারা বেগুন থেকে এড়িয়ে চলবেন।
- যাদের এলার্জি আছে তারা বেগুনকে এড়িয়ে চলবেন।
বেগুনের পুষ্টিগুণঃ
বেগুনের নানা রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে যথা-
- প্রোটিন
- ক্যালরি
- ম্যাঙ্গানিজ
- কপার
- ফোলেট
- পটাশিয়াম
- কার্বোহাইড্রেট
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন b ৬
- ভিটামিন কে
- থায়ামিন
- আইরন
- ফসফরাস
- ফাইবার
- ফলিক এসিড
- ম্যাগনেসিয়াম
- জিংক
উপসংহারঃ বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, শুধু বেগুন নয় কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়।
সব জিনিসের যেমন একটা ভাল দিক রয়েছে তেমনি আরেকটা খারাপ দিয়ে রয়েছে। সেজন্য
আপনি যে কোন জিনিস পরিমাণ মতো খাবেন অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। আপনারা যারা বেগুন
খেলে সমস্যায় পড়েন তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বেগুন খাবেন না।
আরো পড়ুনঃ তালমাখনা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
এতক্ষণ আমাদের আরটিকালে আপনারা যারা ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন বেগুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং এর মাঝে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url