গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন গর্ব অবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার তবে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। গর্ভাবস্থায় একজন মা অনেক রকম জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন যার ফলে মা ও গর্ভস্থ শিশু উভয়ের জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকে। তেমনি একটি জটিলতা হলো গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়া। গর্ভধারণের যেকোনো সময় এই অসুবিধাটি হতে পারে তবে সাধারণত শেষের দিকে বেশি হয়। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলে আমরা আজকে আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার। গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার। 

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি -  এর চিকিৎসা ও প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় নানা করণে শরীরে পানি কমে যেতে পারে। সাধারণত এমিউটিক মেমব্রেন রাফচার বা পানি ভাঙ্গার ঘটনা হয় লেবার পেইন্ট ওঠার পর। সেজন্য আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। চলুন আমরা নিম্নে বিস্তারিত জেনে নেই।

পেইজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার

ভূমিকাঃ

মানব শিশির ভ্রুণ মাতৃগর্ভে পানির মতো এক ধরনের তরলে ভেসে থাকে। হালকা হলুদ রংয়ের ক্লিয়ার এই তরলকেই অ্যামিনোটিক ফ্লুট বলে। ধরনের ১২ দিনের মধ্যেই অ্যামিনো টিক শেখ বা ব্রণের ধারক থলিটি গঠনের সাথে সাথেই এমন উৎপন্ন হওয়া শুরু হয়। শিশু মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়ে এই ফ্লাইট পান করে আবার এতেই মূত্র ত্যাগ করে এভাবে চক্রাকারে এই ফ্লাইটের balance ঠিক থাকে। এই ফ্লাইট ব্রনের লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আলতাস্নত করে ফ্লুইডের পরিমাণ কম না বেশি সেটা বোঝা যায়। আপনার শরীরে যদি পানি কম থাকে গর্ভাবস্থায় তবে এই ফ্লাইট এর মাধ্যমে বোঝা যাবে।

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কিঃ

  • সাধারণত ৩৪ থেকে ৩৬ সপ্তাহের পর থেকে পোষব আগ পর্যন্ত এমোনিয়টিক ফ্লাইড এর পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।
  • প্রসবের সময় এর আগেই যোনিপথে ফোঁটায় ফোঁটায় অথবা তার থেকে বেশি পরিমাণে পানির মতো তরল নিগিত হয়।
  • গর্ভধারণের সময়ের তুলনায় পেটের আকার ছোট থাকলে বা বাচ্চার নড়াচড়া কম হলে গর্ভস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ।
  • গর্ভধারণের সাথে মায়ের ওজন বৃদ্ধির হার কম হলে।
  • গর্ভস্থ শিশুর হার্ট রেট হঠাৎ কমে গেলে।
এ লক্ষণগুলো যদি আপনার শরীরে থাকে তবে জানবেন আপনার গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কম রয়েছে। এমতাবস্থায় কিভাবে আপনার শরীরে পানি বাড়ানো যায় সেজন্য আপনি একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার কারন কিঃ

  • গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার কারণ নির্দিষ্ট করে সব সময় বলা যায় না এটা খুব বেশি হয়নীয় তৃতীয় টাঈমিনিস্টারের শেষের দিকে বিশেষ করে যখন প্রসবের সময় পেরিয়ে যায়।
  • এমনটিওটিক থলিতে কোন কারণে ছিদ্র হলে গর্ব অবস্থায় শরীরের পানি কমে যায়।
  • গর্ভাবস্থায় যদি আপনার গর্ভ হলে কোন সমস্যা হয় তবে আপনার গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যায়।
  • মায়ের কোন অসুখ থাকলে গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যায়।
  • গর্ভে যদি একের অধিক বাচ্চা থাকে তবে আপনার শরীরে পানি কমে যাবে।
  • ভ্রুনের কোন অস্বাভাবিকতা থাকলে গর্ভ অবস্থায় শরীরে পানি কমে যায়।

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে গেলে কিভাবে একজন গর্ভবতী বুঝবেনঃ

  • অস্বাভাবিকভাবে প্যান্ট ভিজে যাওয়া।
  • ইউরিন যাওয়ার সময় আমরা কিন্তু চাইলে তার বেগ কমাতে পারি কিন্তু এই তরল যোনিপথ দিয়ে বাইরে বের হয়ে আসে এবং যখন বের হয় তখন এর বেগ কন্ট্রোল করা যায় না।
  • হঠাৎ ভ্যাজাইনা থেকে শরু স্রোতের মত বর্ণহীন তরল বেরিয়ে আসে।
  • তরলটির গন্ধ কিন্তু ইউরিন এর মত একেবারেই হয় না বরং সেটা একটু মিষ্টি গন্ধযুক্ত হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার চিকিৎসা ও প্রতিকারঃ

  • সাধারণত গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়া রোধ করার কোন উপায় নেই তবে নিয়মিত চেকআপ পেয়ে থাকলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মত চললে যে কোনো রকম দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলা যায়।
  • ২৪ সপ্তাহের আগে পানি ভাঙ্গা শুরু হলে সেটি শিশুর জন্য খুব ঝুঁকির হয়ে দাঁড়ায় সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ক্লোজ মনিটরিং এ থাকতে হবে আপনাকে।
  • ৩৪ সপ্তাহের পর পানি ভাঙ্গা শুরু হলে গর্ভাবস্থা বিবেচনা করে যদি সম্ভব হয় মাকে সম্পূর্ণ বেড রেস্টে রেখে ৩৭ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করার চেষ্টা করা হয় তারপর ডেলিভারি করা নিরাপদ কারণ ততদিন শিশুর পৃথিবীতে টিকে থাকার মতো বিকাশ হয়ে যায়।
  • ২৪ থেকে ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে পানি ভেঙ্গে গেলে এন্টিবায়োটিক ও স্টোরয়েড ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় স্টোরয়েড শিশুর ফুসফুস বিকাশের সাহায্য করে।
  • গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়া বা পানি ভাঙ্গার চিকিৎসা গর্ভাবস্থার পর্যায়ের উপর নির্ভর করে যদি 37 সপ্তাহ সম্পন্ন হওয়ার পর পানি ভাঙ্গা শুরু হয় তাহলে শিশুর নিরাপত্তার খাতিরে অনেক সময় চিকিৎসক ডেলিভারি করিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন।
  • বর্তমানে বাংলাদেশ জরুরি কারণে ২৮ সপ্তাহের পর ডেলিভারি করেও শিশুকে বাঁচানো সম্ভব যদি তাকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে ক্লোজ মনিটারিং এ রেখে চিকিৎসা দেওয়া যায়।
গর্ভের পানি কমে গেলে দুশ্চিন্তা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার তত্ত্বাবধানে থাকলে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই ভয় না পেয়ে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন সুস্থ থাকুন নিরাপদে পৃথিবীর আলো দেখুক শিশু।

গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে গেলে যে সমস্যাগুলো হয়ঃ

  • জরায়ু সংকুচিত হয়ে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় শিশুর অঙ্গ পতঙ্গ বিকৃত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • সময়ের আগে শিশু ভূপৃষ্ঠ হতে পারে।
  • মিস ক্যারেজ বা গর্ভপাত হতে পারে।
  • স্টিল বাঁধ বা শিশু-মৃত অবস্থায় জন্ম নিতে পারে।
  • সময়ের আগেই পানি ভেঙ্গে গেলে ইনফেকশন হতে পারে।
  • শিশুর বিকাশ জনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • সংকুচিত হয়ে বাচ্চার অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি আদান-প্রদানে বাধা সৃষ্টি করে।
  • সিজারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

উপসংহারঃ গর্ভাবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আপনারা যারা আমাদের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন গর্ব অবস্থায় শরীরে পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ কি - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো ঠিক করতে পারি। এতক্ষন ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url