পুঁই শাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

 প্রিয় পাঠক বন্ধুরা,, আজকে তোমাদের জানাবো পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে। কথায় আছে সাপের মধ্যে পুঁই মাছের মধ্যে রুই, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুঁইশাককে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। সেজন্য আজকে আমাদের আর্টিকেলের বিষয় হচ্ছে পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে। রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ,আয়রন ,ফলিক এসিড ,পটাশিয়াম, জিংক। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক পুইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে।

পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

দেশের জনপ্রিয় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর অনেক ধরনের সাপের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুঁইশাক। বাজারের সবসময় কম বেশি পুঁইশাক পাওয়া যায় ইলিশ মাছ ও পুঁইশাক এবং চিংড়ির সাথে পুই এটি বাঙ্গালীদের অতি জনপ্রিয় একটি খাবার। সেজন্য আজকে আপনাদের জানাবো পুঁই শাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে।

পেইজ সূচিপত্রঃ পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

ভূমিকাঃ

দেশের জনপ্রিয় সুস্বাদু পুষ্টিকর অনেক ধরনের সাকের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুঁইশাক। বাজারে সব সময় কমবেশি পুঁইশাক পাওয়া যায়। ইলিশ মাছ ও পুঁইশাক এবং চিংড়ির সাথে পুই এটি বাঙ্গালীদের অতি জনপ্রিয় একটি খাবার। অনেক পুষ্টিগুনে ভরপুর এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ এই পুঁইশাক যেমন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে আবার আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বেশ কার্যকর।

আরো পড়ুনঃ পেঁয়াজের উপকারিতা অপকারিতা - পেঁয়াজের পুষ্টিগুণ

অন্যান্য শাকের মতো এই শাকেও রয়েছে অনেক ভিটামিন এতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন সি লোহা এবং ক্যালসিয়াম। আমিষের পরিমাণও রয়েছে বেশি এছাড়াও এসাকে আসেএর পরিমাণও অনেক বেশি। নিম্নে পুঁইশাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পুঁই শাক খাওয়ার উপকারিতাঃ

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ

পুঁইশাকে থাকা ভিটামিন সি এবং আয়রনসমৃদ্ধ মোটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া সহজ করে ক্যালোরি ক্ষয় করতে সাহায্য করে।অতিরিক্ত মোটা হলে নিয়মিত পুঁইশাক খাওয়া বেশ উপকারী। কারণ নিয়মিত পুঁইশাক খেলে আপনার ওজন অনেকটা পরিমাণ কমে যাবে।

হজমের ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

পুঁইশাক কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে রাখতে বেশ উপকারী। পুঁইশাকের সাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেয় না আমাদের সকলের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা একটি কমন সমস্যা। কিন্তু পুঁইশাক এই সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে এটি হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় যেহেতু খাবার ভালোভাবে হজম হয় তাই বদহজমের সমস্যা হয় না।

এনার্জি বাড়াইঃ

আজকের এই বর্তমান যুগে আমাদের সবাইকে অনেক কাজ করতে হয় এবং তার জন্য দরকার প্রচুর এনার্জি। পুঁইশাক এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। পুঁইশাকের থাকা ম্যাগনেসিয়াম এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে পুঁইশাক ফ্লোটের একটি ভালো উৎস যা খাবারকে এনার্জিতে রূপান্তরিত করে। তাছাড়া পুই শাক হল ন্যাচারাল এল কালাইন যা সারাদিন আমাদের এনাযেটিক ধরে রাখতে বেশ কার্যকর।

পুঁইশাকের অপকারিতাঃ

পুঁইশাকের কিছু অপকারিতা রয়েছে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা বেশি পরিমাণে এই শাক খেলে এলার্জির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। পুঁইশাক অক্সলেটোস সমৃদ্ধ এটি গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের তরল পদার্থ অক্সলেটোস এর পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

পুঁইশাকে পিউরিন নামক উপাদান রয়েছে যা অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে শরীরে ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে গেটে বাত কিডনিতে পাথর ইত্যাদি রোগ হতে পারে। কিডনি এবং পিত্তথলির বিভিন্ন সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের অবশ্যই পুঁইশাক খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।

পুঁইশাকের পুষ্টিগুণঃ

পৈশাখে আছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ। শরীরের কোন অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফুলে গেলে পুঁইশাকের শিকড় বেটে লাগালে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। শরীরে কেশরা কিংবা ফোঁড়ার মতো অনবশক সংক্রম মধ্যে লড়তে পারদর্শী পুঁইশাক। যাদের প্রায় প্রতিদিনই মাথা ব্যথা থাকে নিয়মিত পুঁইশাক খেলে তারাও উপকার পাবেন খুব দ্রুত তাই পরিবারের সবার স্বাস্থ্য সচেতনতাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পুঁইশাক রাখুন।

আরো পড়ুনঃ ভিটামিন বি এর উপকারিতা - ভিটামিন বি এর পুষ্টিগুণ

পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতাঃ

পাইলসঃ

নিয়মিত পুই সাক খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য যেমন দূর হবে তেমনি পাইলস ফিশ্চুলা ও হোমেরয়েড হওয়ার আশঙ্কা কমায়।

মাথাব্যথাঃ

প্রতিদিন মাথা ব্যথার রোগ থাকলে নিয়মিত আপনি পুঁইশাক খেতে পারেন এতে করে আপনার মাথা ব্যথা দূর হয়ে যাবে।

ব্রণের জন্যঃ 

মাত্রা অতিরিক্ত তেল বা সিবাম হল ব্রণের কারণ। পুঁইশাক এই শিবাম নিঃসরণ করায় তাই ব্রণ হয় না। ভিটামিন সি ত্বকের কোচ কোলাজিনের জন্য যে ভালো তাও আছে এই পুঁইশাকে।

প্রদাহঃ

পুঁইশাকে রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। সেজন্য আপনার শরীরে যদি কোন প্রদাহ হয় তবে পুঁইশাকের শিকড় বেটে পলেপ লাগান দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে ফলে শরীরে ফেসপ্যাকরা ফোঁড়া ইত্যাদির সংক্রমণ হতে রক্ষা পাবে আপনার শরীর।

হজমেঃ

বদহজম গ্যাস এসিডিটির সমস্যা দূর করে এই পুঁইশাক। এটি হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এর ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য হতে রক্ষা করে শরীর থেকে বজ্র পদার্থ বের করে দেয়।

চুল ও ত্বকের জন্যঃ

ভিটামিন এ ত্বকের ও স্কাল্পের তেল নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। এইসব জায়গা আদ্রতা বা মশ্চেরাইজার ধরে রাখে এবং আপনার চুল ও ত্বক ভালো রাখে। সেজন্য আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পুইশাক রাখতে পারেন।

ক্যান্সারেঃ

সবুজ শাকসবজিতে ক্লোরোফিল থাকে, এই ক্লোরোফিল কাসিনোজেনিক প্রভাব আটকাই। এই কাসিনোজেনিকের প্রভাবেই ক্যান্সার হয়। তাই পুঁইশাক খুবই উপকারী। তাছাড়া এর ফাইবার পাকস্থলী আরক্লোন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। পুঁইশাক ক্যান্সার দূরে রাখতে সক্ষম।

রোগ প্রতিরোধেঃ

পুইশাকের পুষ্টিগুণ প্রচুর। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই পুঁইশাক বেশ উপকারী। সেজন্য আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তবে আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পুঁইশাক রাখুন দেখবেন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।

হাড়ের জন্যঃ

আপনি যদি হাড় শক্ত করতে চান তবে নিয়মিত পুঁইশাক খান। আমাদের হার শক্ত করতে সাহায্য করে ভিটামিন কে, তাই ভিটামিন কে শরীরে কম প্রবেশ করা মানে হাড়ের মজবুতি কমে যাওয়া। পুঁইশাক ভিটামিন কে এর একটি খুব ভালো উৎস। ভিটামিন কে হাড়ের ম্যাট্রিক্স প্রোটিন উন্নত করে। ক্যালসিয়াম ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় পাশাপাশি ইউরিন এর ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম করে হাড়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য তাই পুঁইশাক অতি প্রয়োজনীয় একটি খাবার।

এনার্জি বাড়াইঃ

পুঁইশাকে থাকে ম্যাগনেসিয়াম এটি এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। পুঁইশাকের থাকে ফোলেট এটি এনার্জির উৎস, এটি খাবারকে এনার্জি তে রূপান্তরিত করে তাছাড়া পুঁইশাক হলো ন্যাচারাল এলকালাইন। এই উপাদান আমাদের তরতাজিক রাখে।

অ্যাজমা আটকায়ঃ

পুঁইশাকে আছে বিটা ক্যারোটিন। এই বিটা ক্যারোটিন অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা কমায়। আপনি যদি নিয়মিত পুঁইশাক খান তবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা কমাবে।

রক্তচাপঃ

পটাশিয়ামের ভালো উৎস পুঁইশাক। পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসার কমায় এবং শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ফলে রক্তচাপের মাত্রা কমিয়ে দেয় পুঁইশাক।

শিশুদের জন্যঃ

শিশুদের নিয়মিত পুইশাক খাওয়ালে তাদের বুদ্ধি ভাল হয়। শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ যেমন ভিটামিন, প্রোটিন, নানান খনিজ এই পুঁইশাক থেকে পাওয়া যায়। সেজন্য আপনার শিশুর বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত পুঁইশাক খেতে দিন।

আরো পড়ুনঃ মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - মুড়ি খাওয়ার ১৪ টি উপকারিতা 

শর্করার জন্যঃ

পুঁইশাকের প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর নাম লিপইক অ্যাসিড। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। পাশাপাশি ইনসুলিন এর ভারসাম্য ধরে রাখে তাছাড়া এটি ডায়াবেটিস রোগীদের পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি এবং অটোমিক নিউরোপ্যাথির সমস্যা কমায়।

চোখের জন্যঃ

পুঁইশাক চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে আছে বিটা ক্যারোটিন লিটউইন এই উপাদানগুলি চোখের জন্য খুবই ভালো। কারণ রেটিনার একটি অংশ মাকুলা এতে থাকে লুটেইন, এই লুইটেন অতিরিক্ত আলোর কুপ্রভাব থেকে চোখকে রক্ষা করে। ম্যাকুলার ডিজাইনারেশনের থেকেও চোখকে রক্ষা করে পুঁইশাক।

উপসংহারঃ পুঁইশাক খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আমাদের বাঙ্গালীদের মধ্যে একটা কথা প্রচলন আছে সেটা হল মাছের মধ্যে রুই আর শাকের মধ্যে পুই। এই শা কামরা নানাভাবে রান্না করতে পারি আমাদের অনেককে যেমন এই শাক নিরামিষ খান তেমনই অনেকে আবার ইলিশ কইবা চিংড়ি পুই খেতে বেশি ভালোবাসি।

সেজন্য এখন থেকে বেশি করে পুঁইশাক খান আর উপকার পাওয়ার পর আমাদের অবশ্যই জানাবেন। আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনারা উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url