ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম - ডাটা শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পেইজ সূচিপত্রঃ ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম - ডাটা শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ভূমিকা
- ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম
- ডাটা শাকের উপকারিতা
- ডাটা শাকের অপকারিতা
- ডাটা শাকের পুষ্টিগুণ
- উপসংহার
ভূমিকাঃ
শাকসবজির প্রতি বাঙালির সবসময় একটা আলাদা দরদ আলাদা আলাদা ভালোবাসা রয়েই যায়।
সবজির কাছেই ফিরে আসি বাসাক-সবজিতে শরীরের সুস্থতা ও শান্তি খুঁজে পাই। ডাটা শাক
বা ডাটা এখন বাজারে সারা বছরই পাওয়া যায়। নিরামিষ তরকারি ও শুক্তো তৈরিতে ডাটা
না হলে কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। ডাটা বা অমরান্ত সবুজ পুষ্টিকর একটি সবজি
মধ্যম আমেরিকা এর আদি বাসস্থান।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের নুডুলস খাওয়ার নিয়ম - নুডুলস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলম্বিয়ার প্রাক যুগে আইমানান্ত পাতা বা সবজিটি এস্টেক্স এবং ইনকাস্টদের প্রধান
খাদ্য ছিল। ডাটা সব খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি ডাটা চাস শীতকালেও গ্রীষ্মকালে উভয়
মৌসুমে শাকসবজি হিসেবে চাষ করা যায়। ডাটাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ বি সি ডি
এবং ক্যালসিয়াম ও লৌহ থাকে।
ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নামঃ
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম কি সেই
সম্পর্কে। অনেকে মিষ্টি নামে অভিহিত করেন। আন্তর্জাতিকভাবে কিছু নির্দিষ্ট
নিয়ম-নীতি মেনে জিব প্রাণীর নাম নির্ধারণ করা এই বৈজ্ঞানিক নাম বলে। অর্থাৎ
বৈজ্ঞানিক নামের মাধ্যমে আমরা এই বিশ্বের সকল প্রাণীকুলকে খুব সহজেই জানতে
পারি।
বৈজ্ঞানিক নাম অবশ্যই ইংরেজি ল্যাটিন ভাষায় লিখতে হয়। দাদা শাকের বৈজ্ঞানিক
নাম-ENHYDRA FLUCTUANS. আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম
কিভাবে লেখা হয় এবং ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম কি সে সম্পর্কে।
ডাটা শাকের উপকারিতাঃ
স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু সবজির মধ্যে হল ডাটা শাক। এটি সারা বছরই বাজারে পাওয়া
যায়। ডাটার জনপ্রিয় খাবার হলো দন্ত্য শাক চিংড়ি বা ইলিশ দিয়ে ভাজা লেবু
খাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। লতানো উদ্ভিদের একটি শ্রেণী হলো ডাটা শাক।
গাছের পাতা এবং ডালপালা সবজি হিসেবে খাওয়া হয় বলে এটি সাধারণত একটি শাক জাতীয়
সবজি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এটির পুরো গাছ গুলি সহজেই ১০ ফুট উচ্চতায়
পৌঁছাতে পারে।
ডাটা শাকের ফলিক এসিড এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ উভয় ত্বকের জন্য চমৎকার। এই সবজিতে
থাকা ভিটামিন গুলি প্রতিদিনের পুষ্টি দেয় চুল এবং ত্বক পাতলা হওয়া বন্ধ করে এবং
মুখের ভিতরে শুকনো টিসুগুলিকে রক্ষা করে এছাড়াও এই সবজিতে পাওয়া ভিটামিন এ
চোখকে পুষ্টি যোগায় এবং রাতকানা দূর করতে সাহায্য করে।
ডাটার মধ্যে থাকা আয়রন নতুন রক্ত উৎপাদন এবং বিদ্যামান রক্তের স্বাস্থ্যসম্মত
রক্ষণাবেক্ষণ উভয়ের সাহায্য করে এতে আছে ভিটামিন কে যাহারকে মজবুত করে।
কর্ম বাধ্য মান ঋতু উভয় সময়ে আমার আন্ত সবজি হিসেবে চাষ করা যায়। আয়রন
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ বি সি এবং টি ডাটা শাকের যথেষ্ট পরিমাণে উপস্থিত
রয়েছে। ডালপালা পাতার তুলনায় কম পুষ্টিকর ঘন অল্প কিছু শাকসবজিতে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে ডাটা শাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ
ডাটা শাকের সবুজ শাকসবজিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি ক্যান্সার প্রতিরোধ
করতে প্রভাব ফেলে। ক্যান্সার এড়াতে এবং শরীরের রোগের ঝুঁকি কমাতে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ক্যান্সারের রোগী হয়ে থাকেন
তবে আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ডাটা সংরক্ষণ এতে আপনার ক্যান্সার প্রতিরোধ
করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
ডাটা শাকের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে যার মধ্যে প্রথমটি হলো একটি রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা উন্নত করে। উপস্থিত শরীরকে অসংখ্য ক্ষত এবং সংক্রামক থেকে রক্ষা করে।
ভিটামিন সি ইউনিয়ন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে সবুজ ভিটামিনের কারণে
এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং জ্বর সর্দি এবং কাশির মতো মৌসুমী
অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে আপনাকে।
রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতেঃ
ডাটা শাক নিয়মিত খেলে আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। লৌহ এবং ফসফরাসের মত
খনিজ গুলি ডাটা শাকগুলোতে পাওয়া যায় আয়রন এবং ফসফরাস দ্বারা শরীরের রক্ত
উৎপাদন এবং সঞ্চালন উভয়ই বৃদ্ধি পায়। সেজন্য আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ডাটা
সংরক্ষণ এতে আপনার রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ মেথি খাওয়ার নিয়ম - মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
হজমে সহায়তা করেঃ
ডাটা শাক আপনি নিয়মিত খেলে আপনার হজমের সমস্যা দূর হবে। হওয়া যাবে সাহায্যকারী
এনজাইম ডাটা শাকে পাওয়া যায় ফল হিসেবে ডাটা শাকসবজি হজমে সাহায্য করে। তাহলে
মনে রাখতে হবে যে খাবার হজমের জন্য শাকসবজি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হৃদরোগের ঝুকি কমায়ঃ
ডাটা শাকের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধার মধ্যে একটি হলো একটি হার্টের অবস্থায়
চিকিৎসায় কতটা ভালো কাজ করে সেটা ও কমাতে শরীরের পাতায় উপস্থিত ফাইটো কেমিক্যাল
প্রয়োজন ফলের রোগের ঝুঁকি কমে উপরন্ত ডাটা শাক আমাদের হার্টের অন্যান্য অবস্থা
থেকে রক্ষা করে। আপনি যদি হৃদরোগের সমস্যায় ভুগেন তবে নিয়মিত ডাটা
সাক খান।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন। তবে
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য ডাটা শাকের ভূমিকা রয়েছে ডাটা শাকের ক্যালরির মাত্রা
কম থাকার ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। ডাটা শাকের ক্যালরির মাত্রা অনেক কম এর
পাশাপাশি ফ্যাটের মাত্রা নাই বললেই চলে। সেজন্য আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ না রাখার
জন্য আপনি নিয়মিত ডাটা শাক খেতে পারেন।
ব্রেন কে সচল রাখেঃ
ডাটা শাকের অধিকতার পলিশনাল পদার্থ ব্রেন কে কার্যকর করতে সাহায্য করে। এবং এর
ফলে দেহের কগনিটিভ ফাংশন এর উন্নতি সাধন করে ফলে আপনার ব্রেন কে সচল রাখে ডাটা
শাক। আপনি যদি আপনার ব্রেন কে সচল রাখতে চান তবে আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত
ডাটা শাক রাখুন।
অনিদ্রা থেকে মুক্তি দেয়ঃ
ডাটা শাক খেলে ইনসম্নিয়া এবং অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এর মধ্যে
থাকা শক্তিশালী কেমিক্যাল ব্রেইনকে শান্তি প্রদান করে যার ফলে ভালো ঘুম হয়। আপনি
যদি অনিদ্রাই ভোগে থাকেন তবে অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনার খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত ডাটা শাক রাখুন।
আশা করি ,আপনারা ডাটা শাকের উপকারিতা গুলো বুঝতে পেরেছেন, সেজন্য উপরে উল্লেখিত
সমস্যাগুলো থেকে যদি আপনি মুক্তি পেতে চান তবে আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ডাটা
শাক রাখুন।
ডাটা শাকের অপকারিতাঃ
ডাটা শাক এর উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। টাটা শাক খাওয়ার
আগে আমাদের জেনে নেওয়া দরকার ডাটা শাকের অপকারিতা সম্পর্কে-
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ডাটা শাক খেলে মাথা ঘোরা মাথা ব্যথা মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যারা ওজন বাড়াতে চান তারা ডাটা শাক খাবেন না কারণ ডাটা শাক খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- রাতে খালি পেটে খাওয়া উচিত নয় কারণ ডাটা শার্ট পেট ভরতে সাহায্য করে পেটজনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন আপনি।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তারাও অতিরিক্ত বেশি ডাটা শাক খাবেন না অতিরিক্ত ডাটা শাক খেলে রক্তের চাপ বাড়তে পারে ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে আপনার।
- জন্য ডাটা শাক খাওয়া ক্ষতিকর হবে। ডাটার সাথে থাকা প্রোটিন লেটেক্স এর মত উপাদান থাকাই এটি করতে পারে।
ডাটা শাকের পুষ্টিগুণঃ
ডাটা শাক এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের পাতাও ডাটা শাক হিসেবে খাওয়া হয়
বলে সচরাচর একে ডাটা শাক বলে উল্লেখ করা হয়। এর মাংস লতা দ্রুত বেগে ১০ ফুট
পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এর মোটা রসালো ডাটা ও পাতার নিদ্রা সুগন্ধ আছে পাতা
খানিকটা খসখসে এসব দুই ধরনের। একটি পাতা সবুজ ও ডাটা হালকা সবুজ। অন্যটির
পাতাও সবুজ তবে কান্ড ডাটা লালচে বেগুনি রঙের।
ড্যাটাস আগে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফলিক এসিড জাতকের জন্য অত্যন্ত
উপকারী। এই সাথে থাকা ভিটামিন গুলো প্রতিদিনের পুষ্টি যোগায় চুলের ক্ষয় রোধ করে
মুখের ভেতরের নরম অংশ গুলোকে রক্ষা করে। এছাড়া এর সাথে থাকা ভিটামিন এ চোখের
পুষ্টি যোগায় রাতকানা রোগ দূর করতে ভূমিকা রাখে।
ডাটা সাথে থাকা আয়রন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতেও অবদান
রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন কে যাহার মজবুত করে এটাতে স্বাভাবিকভাবে এলার্জি হওয়ার
কথা নয়। তবে খাওয়ার পর যদি কারো এলার্জি হয় সেক্ষেত্রে এটা এড়িয়ে চলতে হবে
এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডাটা শাকের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে তা আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব
পূরণ করতে সাহায্য করে। কেউ যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম ডাটা শাক খায় তাহলে সেই
ব্যক্তি ৭৭ শতাংশ ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে পারবে। সুতরাং যারা প্রতিদিন ডাটা
শাক খাবে তারা তার প্রতিদিনের চাহিদা যতটুকু ভিটামিন সি প্রয়োজন তা পূরণ করতে
পারবে।
উপসংহারঃ ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম - ডাটা শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আমাদের খুব পরিচিত একটি শাক ডাটা শাক। আমাদের সকলেরই
প্রিয় এই শাক। আমরা অনেকেই ডাটা শাক খেয়ে থাকি কিন্তু ডাটা শাকের উপকারিতা ও
অপকারিতা জানিনা সেজন্য আজকে আমাদের আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
আপনারা যদি একটু মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন ডাটা শাকের বৈজ্ঞানিক
নাম - ডাটা শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - মুড়ি খাওয়ার ১৪ টি উপকারিতা
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url