বাচ্চাদের দাঁতে ব্যথার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন বাচ্চাদের দাঁত ব্যথার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। শিশুরা প্রায়ই মুখ ও দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পাই তীব্র ব্যথায় বিশেষ করে খাবার জীবনের সময় কান্নাকাটিও করে। কিন্তু ব্যথার স্থান চিহ্নিত করতে পারে না এ ক্ষেত্রে মা-বাবাকে উদ্যোগী হতে হয়। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুত্ব না দিলে পরে বিষয়টা জটিল হয়ে উঠতে পারে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার।

বাচ্চাদের দাঁতে ব্যথার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
আপনার শিশু যদি কোন কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করে অথবা খাবার খেতে অসুবিধা হলে মুখের ভেতর ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে। আপনার শিশুর প্রথম এক বছরে প্রতিবার খাবারের পর পরিষ্কার কাপড় বা তুলা দিয়ে মারি ও জীব মুছে দিন এর ফলে খুতখর ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার।

পেজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের দাঁতে ব্যথার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

ভূমিকাঃ

শিশুর মুখে বাঁধাতে ব্যথা হলে অবশ্যই একজন দাঁতের চিকিৎসক দেখাতে হবে। এবং প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে আপনার শিশুর দাঁতে কোথায় ব্যথা করছে। এ সময় শিশুকে বেশি ঠান্ডা বা গরম ও মিষ্টি জাতীয় খাবার দেওয়া যাবে না। ব্যথা উপশম এ তাৎক্ষণিক কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে যেমন-

ডেন্টাল ফ্ল্যাশ ব্যবহার করে তাদের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্য বের করতে হবে।

কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে মুখের ৩০ সেকেন্ড ধরে গুলি করলে মুখ ও আক্রান্ত স্থান পরিস্কার হবে এবং আপনার শিশুর ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।

আরো পড়ুনঃ ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

বাচ্চাদের দাঁতে ব্যথার কারণঃ

শিশুরা কোনো কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করলে অথবা খাবার খেতে অসুবিধা হলে মুখের ভেতর ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে শিশুদের মুখ ও দাঁতের কোথায় ব্যথা হচ্ছে। এবং ব্যথার অন্যতম কারণ গুলো খুঁজে বের করতে হবে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার কারণ-

  • মুখের ভেতর জন্ম নেওয়ার ব্যাকটেরিয়া বা এসিডিটির কারণে দাঁতের উপরের শক্ত আবরণ বা এনামেল ক্ষয় হতে পারে। শক্ত কোন জিনিস কামড় দিলে ফাটল দেখা দিতে পারে এ সমস্যায় দাঁতের শিরশির অনুভূতি ও ব্যথা হয়।
  • দাঁতের ব্যথার অন্যতম কারণ ক্যাভিটি। শিশুর দাঁতের ছোট বা বড় কোন গর্ত দেখলে বুঝতে হবে সে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে।
  • বাড়ি চলে গেলে লাল রং হলেও ব্যাথা হবে এটি এক ধরনের প্রদাহ।
  • দুধ দাঁত পড়ে নতুন দাঁত ওঠার সময় কারো কারো মারে ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়।
  • ছোট ছোট দানার মত ঘা দেখা যায়। এ সমস্যায় শিশুর মুখ জ্বালাপোড়া করে কিছু খেতে চায় না।
  • এক বছরের বয়সী শিশুর জিহ্বার সাদা আস্তরণ বা ফ্যাঙ্গাল সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। এ সমস্যায় খাবারের রুচি থাকে না খাবার খাওয়ার সময় জ্বালা করে।
  • খেলতে গিয়ে আঘাত পেলে দাঁত ভেঙ্গে গেলে তীব্র ব্যথা হয় শিশুর দাঁতে।

যে সব খাবার খেলে দাঁত ভালো থাকবেঃ

শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ও বুদ্ধি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি তার দাঁতের স্বাভাবিক গঠন ও বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ। তাই দাঁত ভালো রাখতে বিভিন্ন ক্ষতিকর খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে পাশাপাশি এমন কিছু খাবার খেতে দিতে হবে আপনার শিশুকে যাতে করে তারা তার দাঁতগুলো ভালো থাকে এবং ভালো রাখতে সহায়তা করে। জেনে নেওয়া যাক এসব খাবার খেলে দাঁত ভালো থাকবে আপনার শিশুর-

বাদামঃ

বাদাম একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষ করে কাঠ বাদাম ব্রাজিল নাটক ও কাজুবাদাম তাদের জন্য বেশ উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে যাদের জন্য বেশ ভালো পাশাপাশি দাঁত ভালো রাখতে সহায়তা করে। আপনার শিশুকে হালকা খাবার খাওয়ানোর জন্য আপনি বাদাম খাওয়াতে উৎসাহিত করতে পারেন এতে করে আপনার শিশুর পুষ্টির চাহিদা ও পূরণ হবে এবং আপনার শিশুর দাঁতও ভালো থাকবে।

পানীয়ঃ

কোমল পানিও খেতে খুবই পছন্দ করে শিশুরা কিন্তু কোমল পানি হতে থাকে অতিরিক্ত চিনি। কিছু ক্ষেত্রে থাকে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড তাই এই ধরনের পানীয় তাদের জন্য বিপদ ডেকে আনে আপনার শিশুর। এ ধরনের পানীয় বদলে শিশুকে দুধ খেতে উৎসাহিত করুন।

তবে অনেক কিছুই দুধ খেতে চায় না এখন দুধের সঙ্গে খাওয়ার জন্য বেশ কিছু সুস্বাদু শিশুদের উপযোগী খাবার কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো আপনি দুধে মিশিয়ে খুব সহজেই আপনার শিশুকে দুধ খাওয়াতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়

পনিরঃ

বাদামের মতো পনিরেও খেতে সুস্বাদু এ কারণে শিশুরা খেতে পছন্দ করে পনির। পনির যেহেতু দুগ্ধ যাক পদার্থ তাই এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে পাশাপাশি পনির মুখ গহবরের অম্ল ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করতেও সাহায্য করে। ফলে দাঁতের ক্ষয় কমে এবং হ্রাস পাইকাভিটির আশঙ্কাও।

বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার চিকিৎসাঃ

আপনার শিশু কি দাঁতে ব্যথায় অনেক কান্নাকাটি করে। তবে আপনাকে আগে লক্ষ্য করতে হবে আপনার শিশুর দাঁতের কোথায় ব্যথা করছে। এরপরে আপনি একজন ভালো ডেন্টাল চিকিৎসকের কাছে আপনার শিশুকে নিয়ে যেতে পারেন। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার চিকিৎসা গুলো-

আপনার শিশু যদি দাঁতে ব্যথায় অনেক কষ্ট পায় এবং আপনার শিশুর দাঁতের গর্ত গুলো খুব গভীরে চলে যায় তবে আপনি এই চিকিৎসা গুলো দিতে পারেন-

Afin,Profen,Famoman আপনার শিশুকে এই ঔষধ গুলো সকালে এবং রাত্রিতে খাওয়াতে পারেন এতে করে আপনার শিশুর দাঁতে ব্যথা অনেকটাই কমবে।

এবং আপনার শিশুকে DENTOSAFE RAPID RELIEF (Toothpaste) সামান্য পরিমাণে একটি নরম টুথব্রাশে দিয়ে বাচ্চাকে সকালে এবং রাত্রিতে দাঁত পরিষ্কার করে দিলে আপনার বাচ্চার দাঁতে ব্যথা অনেকটাই কমবে। এই টুথপেস্টে আপনি আপনার বাচ্চার জন্য নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার প্রতিকারঃ

প্রতিটি দুধ দাঁত একটি নির্দিষ্ট সময়ে পড়ে নতুন দাঁত ওঠে। ছয় বছর থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে এসব ঘটে কোন দাঁত কখন নড়ে সেটা খেয়াল রাখতে হবে দাতে হলে দ্রুত ফিলিং করে নিতে হবে। ক্যামেরাটি বড় হয়ে গেলে প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে হবে। শিশুর প্রথম এক বছরে প্রতিবার খাবারের পর পরিষ্কার কাপড় মুছে দিন এর ফলে ক্ষতি করবে ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যাবে। এবং জীবের ছত্রাকের সংক্রমণ হবে না শিশুর 6 মাস বয়স থেকে বিভিন্ন রকমের ফল পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন শিশুকে এতে আলসার হওয়ার ঝুঁকি কমবে আপনার শিশুর।

দাঁত ওঠা শুরু করলে ক্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট খুব অল্প পরিমাণে নরম টুথব্রাশে নিয়ে দিনে দুবার গ্রাস করতে হবে। বাড়ির দাত গুলো ভালোভাবে পরিস্কার করতে হবে শিশুকে বোতলে না খাওয়ানোই ভালো। প্রতি ছয় মাসে একবার দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এতে আপনার শিশুর দাঁতে ব্যথা কমবে। শিশুর মুখে বা দাঁতে ব্যথা হলে অবশ্যই একজন তাদের চিকিৎসককে দেখাতে হবে আপনাকে। এ সময় শিশুকে বেশি ঠান্ডা বা গরম ও মিষ্টি জাতীয় খাবার দেওয়া যাবে না।

  • ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্য বের করতে হবে।
  • কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে কুলি করলে মুখো আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার হবে ব্যথা ও অনেকটা কমে যাবে।

উপসংহারঃ বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আপনার শিশুর যদি দাঁত দাঁতে ব্যথার কারণে খুব কান্নাকাটি করে তবে আগে আপনি দেখবেন আপনার শিশুর দাঁতের কোথায় ব্যথা করছে। তারপরে শিশুকে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট খুব অল্প পরিমাণে নরম তূদ্রাসের নিয়ে দিনে দুইবার ব্রাশ করাতে হবে। এবং শিশুকে একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

আরো পড়ুনঃ বর্ষায় ত্বকের যত্নে  ১৫ টি উপায়

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url