তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

আসসালামু আলাইকুম, পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন তাল খাওয়ার উপকারিতা  অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। তালে যেমন রয়েছে উপকারিতা অন্য দিকে অপকারিতা রয়েছে এবং তাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলে আমরা আজকে আপনাদের জানাব তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। জেনে নেওয়া যাক তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ ।

তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
তালে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুন সমৃদ্ধ হওয়ায় তাল  ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। আজকে আমাদের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো তাল খাওয়ার উপকারিতা  অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। জেনে নেওয়া যাক তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন। 

পেজ সূচিপত্রঃ তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

ভূমিকাঃ

তালের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল Broassus Flabellifer । তালের ইংরেজি নাম হলো Plam Fruit । তালগাছ আমাদের সকলের কাছেই খুব পরিচিত একটি গাছ। তাল গাছের উচ্চতা প্রায় ৩০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাল গাছের পাতার রং সবুজ দেখতে বড় বড় পাখার মত হয়। পাতার সংখ্যা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি। অন্যান্য গাছের থেকে তাল গাছের পাতা আকারে অনেক বড় হয় বৈশাখ মাসের সময় তালগাছে বাবুই পাখিতে বাসা বাঁধে।
তাল দেখতে অনেকটা গোলাকার এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং পেকে গেলেও খাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় এই ফল খেতে অনেকেই পছন্দ করে বিশেষ করে এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় বাচ্চাদের অনেক প্রিয় হয়। রাস্তাঘাটে এই ফলটি বিভিন্ন বিক্রেতার কাছে দেখা যায় অন্যান্য ফলের তুলনায় কাঁচা অবস্থায় খেতে অনেক সুস্বাদু হয় তাল। এবং অন্যান্য ফলের তুলনায় তালের দাম অনেক কম।
তাল গাছের কান্ড থেকে ওরা সংগ্রহ হয় এবং তা থেকে গুড় পাটালি মিশ্রি তাড়ি ইত্যাদি তৈরি হয়। সুস্বাদু এই ফলটি খেতে যেমন মিষ্টি এবং এর চাহিদা রয়েছে অনেক তেমনি এই ফলের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন।

তাল গাছের বর্ণনাঃ

তালগাছ হল একটি শাখা প্রশাখাহীন একবীজপত্রী উদ্ভিদ। স্ত্রী পুরুষ উভয় তালগাছের ফুল আসে কিন্তু ফল ধরে শুধুমাত্র স্ত্রীর গাছে। তালগাছটি বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হলে তবেই গাছে ফল আসতে শুরু হয়। তাল কচি অবস্থায় সবুজ এবং পাকা অবস্থায় কমলা ও কালচে বা কালো রঙের হয়ে থাকে। তাল কাঁচা পাকা এবং তালের আঁটি মাটিতে ফেলে রাখার পর যখন অঙ্কুর বের হয় ওই তখন ওই আটিটিকে কেটে আটির মাঝখানে সাদা অংশটি খাওয়া হয়।
আষাঢ় শ্রাবণ মাসে কচিকাঁচারাল খাওয়া হয়। কচি কাঁচা ফলের বৃষ্টি জেলি মতো নরম হয় এবং বরফের মত সচ্ছ হয়। কচি কাঁচাল খেতে যেমন সুস্বাদু সেরকম সাদা মিষ্টি কচিকাঁচাদের মধ্যে থাকে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। ভাদ্র আশ্বিন মাসে তাল পেকে যায়। তখন পাকা তালের বিভিন্ন রকম খাবার বানিয়ে খাওয়া হয় যেমন-তালের বড়া পিঠা, তালের পায়েস,তালের ক্ষীর ,তালের ফুলুরি , তালের রুটি , তালের লুচি ইত্যাদি বিভিন্ন রকম পাকা তালের তৈরি খাবার। এগুলো খেতে খুব সুস্বাদু হয়।

তাল খাওয়ার উপকারিতাঃ

কাল খেতে অনেকেই পছন্দ করে বিশেষ করে পাকা তালের রস দিয়ে পিঠা বানিয়ে খেতে অনেকেই পছন্দ করে। পাকা তাল নানান ভাবে খাওয়া যায় যেমন তালের পিঠা তালের তালের বড়া তালের জুস তালসত্ব এর পাশাপাশি তালের রসের সঙ্গে নারকেল দুধ চিনি কলামেশিয়ে আর নানা স্বাদের খাবার তৈরি করা হয়। তাই বাঙ্গালীদের পাকা তাল অনেকেরই পছন্দ তবে পাকা তাল খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে যা নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো-
পুরনো কাশি দূর করেঃ
দীর্ঘদিন ধরে কাশি দূর করার জন্য তালের ভূমিকা রয়েছে। যারা চার চামচ তালের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারবে তারা এর সমস্যা দূর করতে পারবে সকাল বিকাল কয়েকদিন খেলে পুরনো কাশি ভালো হয়ে যায়।
বুক ধরফর কমে যায়ঃ
অনেকের বুক ধরফর এর সমস্যা রয়েছে। তিন বা চার চামচ তালের রস দুধের সাথে মিশিয়ে সকাল বিকাল কয়েকদিন খেলে বুক ধরপাড়ানি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
দাঁতও হাড় সুস্থ রাখেঃ
তাহলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। তালের রসে থাকা ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আমাদের দাঁত ও হারকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ
ক্যান্সার প্রতিরোধাল এর ভূমিকা রয়েছে অনেক।তাল এনটিঅক্সিডেন্ট গুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম।সেজন্য আপনি যদি ক্যান্সারের রোগী হয়ে থাকেন তবে নিয়মিততাল খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হবে।  
শ্বেতপদরঃ
শ্বেতপদব কি সমস্যা অনেকের রয়েছে। এই সমস্যা দূর করার জন্য আধা কাপ তালের টাটকা রস সকাল-বিকাল দুইবার করে কয়েকদিন খেলে ভালো হয়ে যায়।
বমি বমি ভাবঃ
আমাদের মধ্যে অনেকের বিভিন্ন কারণে বমি বমি ভাব হয়। এ ধরনের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে তালের ভূমিকা রয়েছে অনেক। চার চামচ তালের রস দুধের সাথে মিশিয়ে সকাল বিকাল কয়েকদিন খেলে বমি বমি ভাব চলে যায়।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃ
যাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল তাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে তালের ভূমিকা অনেক। তালের শাঁস এবং তালের রস আমাদের স্মৃতিশক্তিতে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ছাড়াও তাল খাওয়ার মাধ্যমে মাথাব্যথা সত্যিই অনিদ্রাদ রোগ দূর করা যায় এবং ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করে তাল। সেজন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্য উপকারিতা হিসেবে তাল রাখা উচিত।

তাল খাওয়ার অপকারিতাঃ

তালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতা ও রয়েছে। স্বাস্থ্য রক্ষার্থে অন্যান্য ফলের মতন তালের ভূমিকা ও রয়েছে অনেক। আমাদের শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে এর কার্যকারিতা রয়েছে প্রচুর এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম এর অভাব পূরণ করে তাল। সেজন্য আমাদের সকলের উচিত তাল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। এবং তাদের ক্ষেত্রে তাল খাওয়া উচিত নয় চলুন নিম্নে জেনে নেই-
তালের স্বাস্থ্য উপকারিতায় বেশি। তাল খাওয়া আমাদের জন্য অনেক উপকারী। যেহেতু তালে ক্যালরির মাত্রা কম এর ফলে ওজন বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। যারা সোজা শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চায় তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

তালের পুষ্টিগুণঃ

  • পাকা তালের খাদ্য প্রযুক্তি প্রতি ১০০ গ্রামে
  •  জলীয় অংশ ৭৭.২ গ্রাম।
  • খনিজ ০.৭ গ্রাম।
  • আস ০.৫ গ্রাম।
  • আমিষ ০.৭ গ্রাম।
  • চর্বি ০.২ গ্রাম।
  • শরকরা ২০.৭ গ্রাম।
  • ক্যালসিয়াম ৯ মিলিগ্রাম।
  • খাদ্যশক্তির ৮৭ কিলো ক্যালরি। 
শ্লেশ্মানাশক,এটি মূএয়াকার ,প্রদাহ ও কোষ্টাঠিন্য নিবারন করে।তালের রস থেকে তৈরি তাল মিশ্রি সর্দি কাশির মহা ঔষধ। যকৃতের দোষ নিবারক ও  পৃওনাশক। 

উপসংহারঃ তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আপনারা যারা এতক্ষন আমাদের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন তাল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আমাদের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য এবং আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 
আমাদের আর্টিকেল এর মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url