মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আপনাদের জানাবো মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন। নারী ও পুরুষের চুল পড়ার পেছনে রয়েছে ভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন। এই হরমোনি পুরুষদের চুল ঝরার বা টাক পড়ার প্রধান কারণ। আমাদের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন। কথা না বাড়িয়ে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন।
টেষ্টস্টোরুন নামের একটি হরমোন পুরুষদের মধ্যে পাওয়া যায় এবং এই হরমোন এই পুরুষদের চুল ঝরার বা টাক পড়ার প্রধান কারণ। যদিও এই হরমোন মহিলাদের মধ্যে পাওয়া যায় না কিন্তু মহিলাদের মধ্যে পুষ্টির অভাবে চুল পড়া শুরু হয়। চলুন নিম্নে জেনে নেই মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পরে কেন।
পেজ সূচিপত্রঃ মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন
- ভূমিকা
- মাথায় টাক পড়ার কারণ
- ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন
- টাক পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়
- উপসংহার
ভূমিকাঃ
টাকের ব্যাপারে বুঝতে গেলে চুলের গোড়ার কথা একটু জানতে হবে। জন্মের সময় মানুষের মাথায় ত্বকে প্রায় এক লাখ চুলের গোড়া বা হেয়ার ফলিকল থাকে। একটি চুলের জীবন চক্রের তিনটি দশা। প্রথম তিন বছর হল অ্যানাজন দশা। নতুন চুল বেড়ে ওঠার সময় এরপরে দুই থেকে চার সপ্তাহের একটা স্বল্প স্থায়ী পর্যায়ে হলো ক্যাটাজেন। এর পরের তিন থেকে চার মাসের টেলেজেন দশা শেষ করে চুল পড়ে যায়।
কোন শারীরিক ব্যাধি যদি নাও থাকে তবু চুলের ঘনত্ব এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। তবে যেকোনো বয়সেই ৯০% ও ১০% ক্লোলোজেন চুল থাকার কথা। ঋতু বিশেষ আবার এই ভাগ বদলে যায়। চলুন নিম্নে জেনে নেই মাথার টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন।
আরো পড়ুনঃ
মাথায় টাক পড়ার কারণঃ
মাথায় টাক পড়ার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা নানা সময় নানাবিধ কারণকে দায়ী করলেও তাদের কোনটি সুনির্দিষ্ট ভাবে চুল কমে যাওয়ার জন্য দায়ী নয় তবে এর সমাধান এবার আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আপনাদের জানাবো।
জাপানের টোকিও মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল ইউনিভার্সিটি গবেষকরা সে দাবি করেছেন তাদের ভাষ্যমতে মাথায় চুল নাকি মাথার ত্বকে পরিণত হতে থাকে ক্রমে, আর এর ফলে মাথার চুল কমে গিয়ে টাক দেখা দেয় যুক্তরাজ্য ভিত্তিক লাইফ স্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ড জানিয়েছে এই খবর।
মানুষের চুলে যে অসংখ্য সেল থাকে সেগুলো বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চুলের ফলিকল উৎপাদন করা বন্ধ করে দেয়। ফলে চুলের বৃদ্ধি থেমে যায় এবং চুল পড়ে যায়। এভাবে অষ্টম সেলগুলোর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন চুলের উৎপাদনও কমতে থাকে এবং দেখা দেয় টাক।
৫৫ বছর পার হলেই মানুষের চুলের ফলিক গুলো ত্বকে পরিণত হতে শুরু করে। এ প্রক্রিয়া অনেকের ক্ষেত্রে অবশ্য অনেক আগেই শুরু হয়ে যেতে পারে। গবেষকরা আশা করছেন এই নতুন আবিষ্কারের সূত্র ধরে হয়তো তারা টাকা মূল্যের একটা উপায় পেয়ে যাবেন। যদিও অন্যরা দাবি করছে ফলিকলের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি টাক পড়ার পেছনে অন্য কারণে থাকতে পারে।
ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেনঃ
ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন এমনটা কেন হয় আপনি কি ভেবেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন এর উত্তর লুকিয়ে রয়েছে ক্রোমোজোমে। এন্টোজেন এবং ওয়াই ক্রোমোজোমের প্রভাবে চুল পড়ে। androgen হরমোন পুরুষের বংশগতি ও প্রজননের ভূমিকা রাখে। আর মেয়েদের দেহে ক্রোমোজোম থাকেই না তাই মেয়েদের থেকে বেশি ছেলেদের মধ্যে টাক পড়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
মাথায় চুল কমতে শুরু করলে মন খারাপ না করে একে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিন। নিয়মিত যত্ন মানে পরিষ্কার রাখা মাসে দুই তিন দিন অন্তত তেল ম্যাসাজ করা। পছন্দের একটি প্যাক লাগানো এসব সাধারণ যত্ন নিলেই চুল সুন্দর থাকবে ও কম পড়বে। আর সঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ও ব্যায়াম করতে হবে।
ছেলেদের মাথায় টাক পড়ার আরেকটি প্রধান কারণ হলো বংশগতি, ওর মনের পরিবর্তণ, চিকিৎসা পরিস্থিতি বা বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক অংশের ফলাফল হতে পারে। যে কেউ তাদের মাথার চুল হারাতে পারে তবে এটি পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। টাক সাধারণত আপনার মাথায় ত্বক থেকে অতিরিক্ত চুল পড়াকে বোঝায়। বয়সের সাথে বংশগত চুল পড়া টাক পড়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ।
মানসিক চাপ নিম্নমানের জীবনযাত্রা সুষম খাবারের অভাব ঠিক সময় না ঘুমানো কিংবা অপর্যাপ্ত ঘুমেও চুল পড়তে পড়ে যেতে পারে। এছাড়া হর মনের ভারসাম্যহীনতা ও প্রচুর ভ্রমণ চুল কোষের জীবন চক্র সমস্যা তৈরি করতে পারে। বড় একটা সময় ধরে চুল ঝরলে তাতে দীর্ঘস্থায়ী চুলকে আনতে হবে আর চুল ঝরা তীব্রতর হলে স্বল্প সময়ের চুল হারাতে হতে পারে।
এমনটা নিয়মিত ঘটলে মাথা খালি হয়ে টাক পড়ে যাবে। ভিটামিন বি ১২ ভিটামিন ডি ৩অ লৌহ ঘাতটি কিংবা রক্তশূন্যতা হরমোন ভারসাম্যহীনতা বা ইনসুলিন নিরোধক পি সিওএস পলিসি সঠিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থাইরয়েডের ঘাটতি কিংবা মানসিক চাপ বৃদ্ধি ও সেই সময়টা পার হওয়ার পরে রোগাক্রান্ত হওয়া কিংবা গর্ভাবস্থার পরে চুল ঝরে যেতে পারে।
টাক পড়া সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়ঃ
এন্ড্রোজেনের জন্য চুল ওঠার চিকিৎসা শুরু হয় আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। দেখা যায় রক্তচাপ কমানোর ওষুধ মিনোকিডিল খেলে গায়ের লোমও চুল বেড়ে যায়। মিনস কডিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণায় দেখা গেল এ ওষুধ মাথার টাক হয়ে যাওয়া জায়গায় লাগালে চুলও গজাতেও সাহায্য করে। শরীরেও বিশেষ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না।
আরো পড়ুনঃ
তারপর থেকে এন্ড্রোজেন প্রভাবিত এলোপেশিয়ায় ২% থেকে 5% মিনোকিডিল দিনে দুইবার লাগানোর পদ্ধতি চালু হয়। চার থেকে ছয় মাস লাগানোর পরে মোটামুটি এবং টানা এক বছর লাগানোর পর এর পুরো ফল পাওয়া যায়। ।মিনোসকিডিল দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে পুরুষদের মুখে লোমের আধিক্য দেখা যায়।
অনেক সময় স্থানীয় ত্বকে চুলকানি হয় মিনিস্কোডিলের সঙ্গে ফেনস্টোরাইল নামের ঔষধ খেলে পুরুষদের ক্ষেত্রে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে খুব সামান্য কয়েকটি ক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়ার সময় কিছু যৌন সমস্যা দেখা যায়। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েটিসিয়ান ন নিউট্রি সনি স্টকিং বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার তালিকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। চাপমুক্ত থাকুন বড় কোন রোগ হলে শরীর সারাতে সমস্ত শক্তি ব্যয় হয় এবং চুল পড়ে এক্ষেত্রে চুল পড়তে থাকে তিন মাস।
পরে চুল গজাতে সময় লাগে তিন মাস তাই দুশ্চিন্তা না করে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে খাবারের অনিয়ম করা যাবে না। অসুস্থ তাই এই প্রোটিন ডায়েট গ্রহণ করুন রক্তশূন্যতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চুলো মাথার ত্বকের সবচেয়ে বড় যত্ন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। চুলের সঠিক যত্নের জন্য প্রথমেই চুলের সঠিক ধরণ জেনে নেওয়া জরুরি। চুলের ধরন বুঝে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহার করা উচিত।
অতিরিক্ত রাসায়নিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না চুলে। ক্রমাগত গরম জিনিস যেমন ব্লোড্রায়ার এগুলো যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে। চুলের অন্যতম শত্রু হলো খুশকি তাই খুশকির প্রতিকার করতে হবে দ্রুত। এবং আপনাকে দেখতে হবে কি কারনে আপনার চুল ঝরে পড়ছে সেটা নির্ধারণ করে তার চিকিৎসা নিতে হবে।
আপনি চাইলে ঘরোয়া ভাবে কয়েকটি উপায় ব্যবহার করতে পারেন এগুলো আপনার চুল পড়া ও টাক মাথায় চুল গজাতে অনেকটাই সাহায্য করবে। চলুন নিম্নে জেনে নেই ছেলেদের টাক পড়া সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়।
ঝিঙ্গার গুড়াঃ
নারিকেল তেলের মধ্যে ঝিঙ্গার গুঁড়া মিশিয়ে গরম করুন। এবার ঠান্ডা করে মাথার ত্বকে 15 মিনিট এই তেল ম্যাসাজ করুন। দেখবেন মাথার টাক সমস্যার সমাধান হবে।
পেয়ারা পাতাঃ
পেয়ারার পাতা বেটে পানির সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে বিশ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে অনেক দ্রুত চুলের টাক সমস্যার সমাধান হবে।
লাউর রসঃ
লাউ বেটে রস বের করে মাথা আর তোকে ম্যাসাজ করুন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার টাক মাথায় চুল গজাবে।
আখরোটঃ
আখরোট পানির মধ্যে ফুটিয়ে এর রস বের করে নিন। এবার হালকা গরম থাকা অবস্থায় এই রস দিয়ে মাথার ত্বকে মেসেজ করুন। এতে আপনার চুল পড়ার সমস্যার সমাধান হবে।
আমের বীজঃ
আমলকি গুড়ার সঙ্গে আমের বীজের গুঁড়া মিশিয়ে এর মধ্যে পানি দিন। এবার ঘন মিশ্রণ তৈরি করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে বিশ মিনিট পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল পড়া অনেক অংশে কমে যাবে আপনার এবং আপনার টাক মাথায় চুল গজাতে সাহায্য করবে।
উপসংহারঃ মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আপনারা যারা এতক্ষন আমাদের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন মাথায় টাক পড়ার কারণ - ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে কেন। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
আরো পড়ুনঃ
এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেল এর মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url