ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা আজকে জানতে চেয়েছেন ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ম্যাগনেসিয়াম আয়রন খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ডুমুর সহায়তা করে থাকে। সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ। আর দেরি না জেনে নেওয়া যাক ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ।
ডুমুর ফলের মিষ্টি স্বাদ, নরম এবং চিবানোরর টেক্সচার রয়েছে এবং এগুলো সামান্য কুড়কুড়ে, ভোজ্য ভিজে ভরা। টাটকা ডুমর গুলি শুকনো এবং পচনশীল। তাই প্রায় সই সেগুলি সংরক্ষণের জন্য শুকানো হয়। ডুমুরের একাধিক প্রজাতি রয়েছে। চলুন নিম্নে জেনে নেই ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ।পেজ সূচিপত্রঃ ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ
- ভূমিকা
- ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ডুমুর ফল খাওয়ার অপকারিতা
- ডুমুর ফল এর পুষ্টিগুণ
- শুকনো ডুমুর খাওয়ার নিয়ম
- উপসংহার
ভূমিকাঃ
ডুমুরের প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। যেমন- প্রোটিন, চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আইরন। ডুমুর একটু মিষ্টি এবং পুষ্টিকর ফল যা শুকিয়ে সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়। ডুমুরের একাধিক প্রজাতি রয়েছে। ডুমুর ফলের অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে যার মধ্যে হজম এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।
ডুমুর নামটি সচরাচর সবার কাছেই পরিচিত। কিন্তু সকলের কি জানা আছে ডুমুর ফল কি,
ডুমুর ফল হল একটি উচ্চ গুন সমৃদ্ধ ভেষজ উদ্ভিদ ডুমুর ফল এর ভেতরের অংশে ছোট ছোট
বিষ থাকে এবং বাইরের আবরণটি অনেক পাতলা হয়। এটি খুব নরম এবং মিষ্টি জাতীয়
ফল।
আরো পড়ুনঃ ত্রিফলা খেলে কি হয় - ত্রিফলার ঔষধি গুণ
ডুমুরের ইংরেজি নাম হল দ্যা ফিগ। আর এর বৈজ্ঞানিক নাম হল ফিকাস কারিকা। ডুমুর গাছ
একটি উদ্ভিদ, এটি প্রায় চার মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এটির অসংখ্য
শাখাযুক্ত বৃক্ষ যদিও আমরা জানি একটু একটু ফল তবে জৈবিকভাবে বর্ণনা করতে গেলে ফল
নয় এই উদ্ভিদের নাম সাইকন, এটি মহিলা ও পুরুষ উভয় সমর্থন হিসেবে কাজ করে
থাকে।
ডুমুর গাছ উষ্ণ জলবায়ুর অঞ্চলে বেশিরভাগ জন্মে থাকে। প্রায় ৯ হাজার প্রজাতির
গাছ লতাগুল্ম এবং গুল্ম যার মধ্যে বেশিরভাগ গুলোই ডুমুর নামে পরিচিত। ডুমুর যে
কেবলমাত্র ফল হিসেবে খাওয়া যায় এমনটি নয়। ডুমুর কে আমরা সবজি হিসেবেও খেতে পারি
ডুমুর রান্না করার পদ্ধতি রয়েছে অনেকগুলো যেমন-
- ডুমুরের হত্যা করে খাওয়া যায়
- ডুমুরের ভাজি রান্না করা যায়
- ডুমুর দিয়ে চিংড়ি রান্না করা যায়
- ডুমুরের বড়ার কালিয়া খাওয়া যায়
- ডুমুর দিয়ে আলুর ডালনা তৈরি করা যায়
- ডুমুরের কোপ্তা করা যায়। ইত্যাদি
ডুমুর ফল আপনি নানাভাবে খেতে পারেন। ডুমুর ফল কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খাওয়া যায়। আবার কাঁচা ডুমুর চিবিয়েও খাওয়া যায়। ডুমুর দ্বারা আবার মিষ্টি জাতীয় খাদ্য তৈরি করা যায়। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ।
ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ
ডুমুরের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। যা নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো-
- ডুমুর হজম হতে সাহায্য করে। ডুমুর ফল উচ্চ ফাইবার সামগ্রীর কারণে একটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে। ডুমুর যদি নিয়মিত আপনি খেতে পারেন তবে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের মত হজমজনিত সমস্যার বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে কাজ করবে।
- ডুমুর বিশেষ করে থাকা পলিফেনল নামক প্রতিরক্ষামূলক উদ্ভিদ যৌগ সমৃদ্ধ। এই যৌগ গুলির প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মানে তারা অক্সিজেনকে অন্যান্য রাসায়নিকের সাথে বিক্রিয়া করে থাকে এবং কোষ ও টিস্যুগুলির ক্ষতি হতে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- ডুমুর সুস্থ রক্তচাপ সমর্থন করতে সাহায্য করে। আমরা অনেকেই খুব বেশি লবণ গ্রহণ করি যা প্রক্রিয়াজাত খাবার এ পাওয়া যায়। সোডিয়াম বেশি গ্রহণ করলে পটাশিয়ামের ঘাটতি হতে পারে এবং এই ভারসাম্যহীনতা উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
- ডুমুরের প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য তালিকা গত ফাইবার ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের ভরপুর।
- ডুমুর আপনার খাদ্যের পুষ্টিকর ঘনত্ব উন্নত করতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে একটি দরকারি খাদ্য অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। উচ্চ ভাইবার যুক্ত খাবার পূর্ণতার অনুভূতি দেয় এবং খুধা কমাতে সাহায্য করে।
- ডুমুর রক্তচাপ ও রক্তের চর্বির মাত্রা উন্নত করতে পারে। এবং হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে ডুমুর। এবং আপনার রক্তনালী স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- মানবদেহে হিমোগ্লোবিন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে ডুমুর।
- কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করে।
যাদের ত্বকে চুলকানি এলাচি প্রভাব আছে তারা ডুমুর খেলে উপকার পাবেন। ডুমুরের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে । ডুমুর হজমের উন্নতি করতে পারে, ক্যান্সারের কোষ কে মেরে ফেলতে পারে, রক্তের চর্বি ও সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তাই সবার উচিত কমবেশি ডুমুর ফল খাওয়া।
ডুমুর ফল খাওয়ার অপকারিতাঃ
ডুমুর ফলের যেমন অনেক উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে এর মধ্যে কিছু অপকারিতা
রয়েছে। প্রতিটি জিনিসের যেমন সুবিধে রয়েছে ঠিক তেমনি এর অসুবিধা থাকে। চলুন
নিম্নে জেনে নেওয়া যাক ডুমুর ফল খাওয়ার অপকারিতা গুলো-
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
- অতিরিক্ত ডুমুর খেলে শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে মাত্রা অতিরিক্ত ডুমুর খাওয়া যাবে না।
- বেশি পরিমাণ ডুমুর খেলে ওজন বৃদ্ধি করে থাকে যা শারীরিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
- অতিরিক্ত ডুমুর খেলে আবার ডায়রিয়াও হতে পারে।
- মাত্র অতিরিক্ত ডুমুর খাওয়ার ফলে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ডুমুরের আঠা শরীরের লাগলে এলার্জি হতে পারে। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে।
ডুমুর ফল এর পুষ্টিগুণঃ
ডুমুর ফলে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ এবং ডুমুর নানারকম রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। চোখ ও ত্বকের যত্নেও ডুমুর উপকারী। ডুমুরে থাকা ফেনুলি কো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুকি কমায়। দুপুরে থাকা লাভয়ে নেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেষ্ট ক্লোন ও পোস্টেড ক্যান্সার রোধ করে।
এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ বলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ডুমুর। ডুমুরের প্রচুর পটাশিয়াম থাকে যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকে বলে শরীরে ইনসুলিন স্থিতিশীল রাখে ডুমুর। ডুমুর যা হজমের সহায়ক এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চোখে যে দৃষ্টিশক্তিহীনতা দেখা দেয় তা দূর করতে সাহায্য করে ডুমুর।
ইউরিন এর মাধ্যমে যাদের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায় তাদের জন্য ডুমুর বেশ উপকারী একটি ফল। ডুমুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড়গোড়ে তোলা ও মজবুত করার জন্য খুব প্রয়োজন। দুপুরে থাকা ফসফরাস হার তৈরিতে ভূমিকা রাখে সেজন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা ডুমুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
শুকনো ডুমুর খাওয়ার নিয়মঃ
ডুমুর বিভিন্ন অবস্থাতেই গ্রহণ করা যায়। শুকনো ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে শুকনো ডুমুর কেটে খাওয়া যায় এছাড়া এতে অন্য কোন
খাবার যোগ করে খেতে পারেন। দু-একটা শুকনো ডুমুরকে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে পরের
দিন সকালে খেলে এর সমস্ত পুষ্টিগুণ আপনি গ্রহণ করতে পারবেন।
অন্যদিকে পাকা ডুমুর দিয়ে বিভিন্ন রকম রেসিপি তৈরি করে খাওয়া যায় এ ছাড়া পাকা
ডুমুর খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতাও রয়েছে যেমন-
- পাকা ডুমুর শরীরের হরমোন গুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- তৈরি করে মুখে ব্যবহার করলে ব্রণ প্রতিরোধে এটি অনেক সহায়তা করে থাকে।
- পাকা ডুমুর খেলে শরীরের শক্তি সঞ্চালন হয় এবং পাকা ডুমুর খেলে ত্বক ভালো থাকে।
ডুমুর নিঃসন্দেহে একটি কার্যকরী ফল শুকনো ডুমুরের অনেক উপকারিতা রয়েছে তবে শুকনো ডুমুর খাওয়া কি ক্ষতিকর না ভালো এ বিষয়ে আজ আমরা আপনাদের জানাবো। আপনাদের মধ্যে যারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এবং পিত্তথলির রোগ রয়েছে সেসব ব্যক্তিরা শুকনো ডুমুর না খাওয়াই ভালো কারণ আক্রান্ত অঙ্গটিতে শুকনো ডুমুর ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত গরমকালে শুকনো ডুমুর না খাওয়াই ভালো।
উপসংহারঃ ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, ডুমুর ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং
প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ডুমুর খেতে
পারেন তবে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আপনারা যারা আজকে আমাদের
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন ডুমুর ফল খাওয়ার
উপকারিতা কি - ডুমুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের খুনি রোগ - এর চিকিৎসা ও প্রতিকার
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url