বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চাদের সমস্যা দেখা দেয়। রাইনোভাইরাস সবচাইতে বেশি বাচ্চাদের সর্দি কাশি সৃষ্টি করে। বাচ্চাদের সর্দি কাশি হওয়ার কারণ হচ্ছে বাচ্চাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম যার ফলে খুব সহজেই সর্দি কাশির মতো সাধারণ রোগের বাচ্চারা আক্রান্ত হয়।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার

আমাদের মধ্যে অনেকেই বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে আমরা গুগলে সার্চ করে জানতে চাই  সর্দি কাশির ওষুধের নাম নাম। সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের সত্যিকারের সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার। বাচ্চারা যদি সর্দি-কাশি রোগে আক্রান্ত হয় তবে সেটা নিউমোনিয়ার মতো ভরাভহ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সেজন্য বাচ্চাদের সর্দি কাশি অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন।

ভূমিকাঃ

বাচ্চাদের মধ্যে সর্দি কাশির সমস্যা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। শিশু জন্মানোর কয়েক ঘন্টা পর থেকেই শিশুদের  সর্দি-কাশি শুরু হয়। সাধারণত ভাইরাস নামক একটি জীবাণু দ্বারা কাশি এবং সর্দির সৃষ্টি হয়। বেশিরভাগ সময়ই ভাইরাস নামক জীবাণু দ্বারা বাচ্চারা সর্দি-কাশিতে ভোগে। শীতকালে শিশুদের ঠান্ডা ও সর্দি কাশির সমস্যা একটু বেশি হয়ে থাকে। সেজন্য এ সময়ে একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।

কতটি শিশুরই বছরে ৫-৬ বার সত্যিই বা পুরো হওয়া খুবই সাধারণ সেজন্য আপনার শিশুর বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। শীত চলে এসেছে শীতের সকাল খুব ঠান্ডা। । বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ে। আবার সন্ধ্যাবেড়া জেঁকে বসে শীতে কখনো হয়তো শুষ্ক দমকা বাতাসে হুট করে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা।

আবার এমন ঋতুর সঙ্গে যে কারো খারাপ খাওয়ানো কঠিন হয়ে পড়ে শিশুদের ক্ষেত্রে তো এর আরো বেশি সমস্যা সেই কারণে শিশুদের সময় ঠান্ডা লাগার সমস্যা গুলো একটু বেশি হয়ে থাকে এবং সেই ঠান্ডা থেকে হতে পারে জ্বর গলা ব্যথা অন্যান্য অনেক জটিলতা। এসব সমস্যা থেকে আপনার শিশুকে নিরাপদে রাখতে হলে আপনার শিশুর ঠান্ডার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায় গুলো জানা অত্যন্ত জরুরী। সেজন্য বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকারঃ

বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া কিছু প্রতিকার রয়েছে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের সর্দি-কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার গুলো।

  • নারিকেলের তেলের মধ্যে অল্প একটু কর্পূর দিয়ে তেল গরম করুন। এবার সেই গরম করা তেল গুলো শিশুর বুকে পিঠে এবং গলায় ভালোভাবে মাখিয়ে দিন দেখবেন উপকার পাবেন।
  • আপনার শিশুর সর্দি কাশি সারাতে আদা এবং মধু খাওয়াতে পারেন। আদার রস করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খাওয়ান দেখবেন সর্দি কাশি থেকে আপনার শিশু অনেকটা উপকার পাবে।
  • বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর জন্য যার ফল খুবই কার্যকরী একটি বস্তু। আপনি শিশু সর্দি সারাতে দুধ এবং জয়ফল খাওয়াতে পারেন এতে খুব ভালো কাজ করবে। কয়েক চামচ দুধ হয়ে এক চিমটি যায় ফল পাউডার দিয়ে একবার ফোটান এবং ঠান্ডা করে আপনার শিশুকে খাইয়ে দিন দেখবেন অনেকটা উপকার পাবেন।
  • অন্যদিকে বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারাতে সরিষার তেলেও খুবই উপকারী। দুই কোয়া রসুন এবং কিছু কালোজিরা বিচ দিয়ে সরিষার তেল ভালোভাবে গরম করে নিন। এবার তেল গুলো ঠান্ডা করে বসবাস গরম করে আপনার বাচ্চার শরীরে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে দিন। এতে করে বাচ্চা সর্দি কাশি থেকে অনেকটাই আরাম পাবে।
  • দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাদেরকে গরম পানি দিয়ে গাল করান এতে করে অনেকটা আরাম পাওয়া যায় সর্দি  কাশির সময়।
  • মাঝারি মাপের একটি পেঁয়াজ কুচি করে কেটে নিয়ে তারপরে আধাঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপরে তিন চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পেঁয়াজের রস আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান। এটা এক বছরের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে নয়।
  • কুসুম গরম দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে খেতে দিন এতে করে সর্দি-কাশি অনেকটাই দূর হবে।
  • আদা ও তুলসী পাতা থেঁতো করে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
  • লেবু পানি এবং মধু মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে খেতে দিতে পারেন। এই পানি আপনার বাচ্চার বুক থেকে কষ্ট দূর করতে সাহায্য করবে।
  • শীতকালে আপনার বাচ্চার শরীরকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন।
  • শীতকালে বাচ্চাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করানো বা ঠান্ডা পানি না খাওয়ানো ভালো হালকা গরম পানি দিয়ে বাচ্চার যাবতীয় কাজ করা উচিত গোসল করানো থেকে শুরু করে খাওয়া পর্যন্ত।
  • বাচ্চার শরীর যদি থেমে যায় সঙ্গে সঙ্গে মুছে দিন।
  • ধুলোবালি থেকে শিশুকে খেলতে দেওয়া থেকে বিরত রাখুন।
  • ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে দিন আপনার বাচ্চাকে।
  • শিশুকে সংক্রমণের টিকা দিন।
  • তাপমাত্রা অনুযায়ী শিশুকে গরম জামা কাপড় পড়ানোর চেষ্টা করুন।
  • নিয়ম মেনে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

বাচ্চাদের সর্দি কাশির সময়ে নির্দেশনাঃ

  • বাচ্চাকে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে এমন জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন।
  • সব সময় খেয়াল রাখবেন শিশুর যাতে নাক পরিষ্কার থাকে। অথবা সব সময় শিশুর নাক পরিষ্কার রাখুন।
  • বাচ্চারা তো পর্যাপ্ত ঘুমাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।
  • বাচ্চাকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন।
  • আপনার বাচ্চার বয়স যদি এক বছরের বেশি হয় তবে বাচ্চাকে গরম পানির ভাব দিতে পারবেন কিন্তু যদি বাচ্চার বয়স এক বছরের কম হয় তবে গরম পানির ভাব দিতে পারবেন না এর পরিবর্তে আপনি গরম তেল মালিশ করতে পারেন আপনার বাচ্চার শরীরে।
  • আপনার বাচ্চাকে শীতের সময় অল্প কিছুক্ষণ রোদে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন যাতে করে রোদের ভিটামিন ডি শরীরে প্রয়োগ করতে পারে এবং সেটা থেকে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
  • বাচ্চাকে সন্ধাতে ও ভোরের সময় পাতলা জ্যাকেট পরিয়ে দিন।

সর্দি কাশির সময় বাচ্চাদের কখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবেঃ

  • বাচ্চার যদি খিচনি হয়।
  • আপনার বাচ্চার শরীরে যদি ১০৪ ডিগ্রী ফরেনহাইট এর উপর জ্বর থাকে।
  • পানি শূন্যতা দেখা দেয় এই বাচ্চা শরীরে।
  • ঠোঁট মুখ নীল হয়ে যায়।
  • আপনার বাচ্চা যদি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
  • বাচ্চা যদি দ্রুত নিঃশ্বাস নেয় এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

উপসংহারঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকার

আপনার বাচ্চাদের যেকোনো ধরনের অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাওয়া সাধারণত একজন বাবা-মায়ের পক্ষে দেখা খুব কঠিন। সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলের বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া প্রতিকারগুলো উনার বাচ্চাদের সর্দি এবং কাশি মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারে। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url