বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়ার কারণ
আসসালামু আলাইকুম, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়ার কারণ। প্রতিটি বাবা-মায় চাই শুধুমাত্র একটা বিষয়ে তার সন্তান অন্যদের মতো সাধারন বা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকুক সেটা হচ্ছে ওজন। বাচ্চাদের ওজন কম হলে বাবা-মা দুশ্চিন্তা করেন যে তার বাচ্চা অসুস্থ নাকি আকারে ছোট। আপনার বাচ্চা যদি মলমূত্রত্যাগের পরিমাণ ঠিক থাকে ঘুম ঠিক থাকে এবং ঘুম থেকে জাগার পরে যদি সজাগ মনে হয় এবং সে যদি স্তন বা বোতল থেকে ঠিকভাবে দুধ খেতে পারে তবে তার ওজন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।
ভূমিকাঃ
বাচ্চাদের শারীরিক বৃদ্ধি বেশিরভাগ অংশই ঘটে থাকে শিশুকালে। অন্য শিশুর সঠিক
বৃদ্ধি না হলে বাবা-মায়ের চিন্তার কারণ থাকে না কারণ বয়স পার হয়ে গেলে আর
বৃদ্ধির সুযোগ থাকে না। প্রত্যেকটা বাচ্চারই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ও মনের
বিকাশ ঘটতে থাকে। সেজন্য প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত তার বাচ্চার বয়স অনুযায়ী
শারীরিক বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।
যেহেতু কোন রোগ জানার আগে কি রোগ হয়েছে সেটা জানা জরুরী। সেজন্য আপনার বাচ্চার
বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা সেটা আপনাকে আগে জানতে হবে তারপরে
ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে হবে। জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী
শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়ার কারণগুলো।
বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়ার কারণঃ
জন্মের পর প্রথম ছয় মাস দেখা যায় স্বাভাবিক ওজন থাকে কিন্তু অনেকেরই এরপর রেখা নিম্নগামী হয়ে যায় কারণ বুকের দুধ এখন যথেষ্ট নয় দুধের পাশাপাশি বাড়তি যে খাবার দেওয়া দরকার তা ঠিক পরিমাণে হচ্ছে না কিংবা হজম করতে পারছে না। বাচ্চাদের শারীরিক বৃদ্ধি এক জটিল প্রক্রিয়া যা বহুবিধ বিষয় দ্বারা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
জন্মগত ত্রুটিঃ
আপনার বাচ্চা যদি জন্মকালীন কম ওজন, গর্ভকালীন সময়ে মায়ের অপুষ্টি, রক্তশূন্যতা, শিশুকে ঠিকমতো স্তন্যপান না করানো থেকে শুরু করে শিশুর না না ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগঃ যেমন হাঁপানি, হিমোগ্লোবিন এর সমস্যা, হৃদ রোগ, বারবার সংক্রমণ শিশুর সঠিক বেড়ে ওঠাতে বাধাগ্রস্থ করে।
এছাড়াও থাইরয়েড ও গ্রোথ হরমোনের সমস্যা পিটুইটারি ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির
রোগ কিছু জন্মগত রোগ যেমন প্রাণার ইত্যাদি কারণে শিশুরা খর্বকাই হয়। প্রতিটি
বাচ্চার ঠিকঠাক বেড়ে ওঠার জন্য পুষ্টি যথেষ্ট আমি স্লোভো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন
ডি এবং পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও প্রেমের প্রয়োজন হয়। আমরা আমাদের শিশুদের লেখাপড়া
পরীক্ষার ফল ক্লাসে প্রথম হওয়া নিয়ে যত দুশ্চিন্তা করি এ বিষয়গুলো নিয়ে ততটা
ভাবি না।
পারিবারিক অবস্থানঃ
দারিদ্র আর অশিক্ষার কারণে এ দেশে অপুষ্টি সমস্যা প্রকট, আর তাই বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই ব্যাহত হয় শিশুদের বেড়ে ওঠা। এ সমস্যার মোকাবেলা করতে সরকারিভাবে
গ্রোথ মনিটরিং এন্ড প্রোমোশন কর্মসূচি ( জিএমপি ) বাস্তবায়িত হয়েছে। এই
কর্মসূচিতে বলা হয়েছে নিয়মিত সন্তানের ওজন উচ্চতা পরিমাপ করতে-
বয়স ০ থেকে ২৪ মাস হলে প্রতি মাসে ওজন তিন মাস অন্তর উচ্চতা।
বয়স দুই থেকে পাঁচ বছর হলে তিন মাস অন্তর ওজন ও উচ্চতা। এই ওজনের উচ্চতা গ্রুপ
চারটে স্পষ্ট করার মাধ্যমে শিশুর সঠিক হচ্ছে কিনা তা অনুমান করা সম্ভব
দীর্ঘমেয়াদি রোগঃ
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা উৎফলন ঘটে নানা ধরনের হরমোনের প্রভাবে এ সময় তারা দ্রুত বেড়ে ওঠে। তারপর ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে থেমে যায় এই বৃদ্ধি। জন্মকালীন কম ওজন গর্ভকালীন সময়ে মায়ের অপুষ্টি রক্তশূন্যতা শিশুকে ঠিকমতো স্তন্যপান না করানো থেকে শুরু করে শিশুর নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ-যেমন হাঁপানি হিমোগ্লোবিনের সমস্যা হৃদরোগ বারবার সংক্রমণ শিশুর সঠিক বেড়ে উঠাকে বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়া শিশুদের কিছু জন্মগত রোগ থাকতে পারে যেমন প্রাণার সিনড্রেন ইত্যাদি কারণে শিশুরা খর্বকাই হয়।
অপুষ্টি ঃ
আপনার বাচ্চা যদি অপুষ্টিতে ভোগে তাহলে বাচ্চার বয়স অনুযায়ী শারীরিক বিদ্ধি
নাও হতে পারে। সুষুম খাবার মানে পরিমিত আমিষ শর্করা ও চর্বির সঙ্গে যথেষ্ট
ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার। দিতে হবে আপনার বাচ্চাকে। হাড়ের বৃদ্ধির
জন্য যথেষ্ট আমিষ সবজি এবং সুষম খাবার মানে পরিমিত আমি শর্করা ও চর্বির সঙ্গে
যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার আপনার বাচ্চাকে
খেতে ্দিন।
মাছ মাংস দুধ ডিম সহ নানা ধরনের শাকসবজি ফলমূল দিতে হবে বাচ্চাকে হাড়ের বৃত্তির
জন্য যথেষ্ট ক্যালসিয়াম দরকার দুধ দুই পানির ও সবুজ শাক-সবজিতে ক্যালসিয়াম আছে।
ভিটামিন ডি ছাড়া হাড়ের বৃদ্ধি হয় না ক্যালসিয়াম শোষণও হয় না আর ভিটামিন ডি
আছে সূর্যলোকে। সেজন্য আপনার বাচ্চাকে ঘরে আটকে না রেখে বাইরে রোদে খেলাধুলা করতে
দিন।
এর কারণগুলো আবশ্যিকভাবে বাচ্চাদের সঠিক বৃদ্ধি বিশেষ করে শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত করার জন্য দায়ী। পাশাপাশি মানসিক বিকাশের জন্য স্নায়ু রোগ ও মানসিক চিকিৎসা বিশেষ ক্ষেত্রে কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সর্বোপরি হরমোন জনিত সমস্যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক উভয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি পাঁচটি শিশুর মধ্যে
দুটি খর্বকায়। মানে বয়স অনুযায়ী কাঙ্খিত উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। বর্তমানে এর
অন্যতম কারণ হচ্ছে জন্মের সময় কম ওজনের জন্ম নেওয়া এবং ভূপৃষ্ঠ হওয়ার আগেই
ভূপৃষ্ঠ হওয়া। আপনার বাচ্চা শুধু গোলগাল নাদুসনুদুস হলেই হবে না এর সঙ্গে সঠিক
উচ্চতাও দরকার এটা অনেক বাচ্চার মা-বাবা ভাই জানেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা উৎফলন ঘটে নানা ধরনের হরমোনের প্রভাবে এ সময় তারা দ্রুত
বেড়ে ওঠে। তারপর ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে থেমে যায় এই বৃদ্ধি। জন্মকালীন কম ওজন
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের অপুষ্টি রক্তশূন্যতা শিশুকে ঠিকমতো স্তন্যপান না করানো
থেকে শুরু করে শিশুর নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ-যেমন হাঁপানি হিমোগ্লোবিনের
সমস্যা হৃদরোগ বারবার সংক্রমণ শিশুর সঠিক বেড়ে উঠাকে বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়া
শিশুদের কিছু জন্মগত রোগ থাকতে পারে যেমন প্রাণার সিনড্রেন ইত্যাদি কারণে শিশুরা
খর্বকাই হয়।
একটি শিশুর ঠিকঠাক বেড়ে ওঠার পেছনে তার সুসন্ত পুষ্টি যথেষ্ট আমিষ লৌহ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এবং পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও প্রেমের প্রয়োজন। আমরা আমাদের শিশুদের লেখাপড়া পরীক্ষার ফল ক্লাসে প্রথম হওয়া নিয়ে যত দুশ্চিন্তা করি এ বিষয়গুলো নিয়ে ততটা কম ভাবি। আপনার বাচ্চা বয়স অনুযায়ী তার ওজন ও শারীরিক বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন এবং সেটা না হয়ে থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url