শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা - কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আপনাদের জানাবো শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। শীতকালে সর্দি কাশিসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় তাই এ সময়ে সুস্থ থাকতে ঘরোয়া কিছু উপাদানেও নির্ভর করতে পারেন। শীতের সর্দি-কাশিকে দূরে রাখতে খেতে পারেন আপনি কাঁচা আদা। আপনি যদি নিয়মিত কাচাদা খেতে পারেন তবে খুশখুসে কাশিসহ নানারকম রোগ থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে।

শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়ম

রান্নায় সাত বাড়াতে আধা যেমন কাজে লাগে তেমনি অশোক সারাতে আদার জুড়ি নেই। আপনি যদি খুসখুসে কাশি, জ্বর, হজম শক্তি বাড়াতে চান তবে আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আদা রাখুন। আপনি পেটের সমস্যায় ভুগছেন আদা চা খান পেটে থাকা গ্যাস আপনাকে বিদায় জানাবে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে এই আদা খাওয়া আবার শরীরের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে।

সূচিপত্রঃ শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা - কাঁচা খাওয়ার নিয়ম

ভূমিকাঃ

আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভেষজ গুণ। এই ভেষজ গুণের দ্বারা আধা আমাদের শরীরের স্বাস্থ্য রক্ষার সাথে সাথে ত্বকের কাজও করে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় এ আদায় রয়েছে ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক, লবণ, পটাশিয়াম, ভোলা টাইল, অয়েল ইত্যাদ। আদা খাদ্য শিল্পে পানীয় , আচার ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আদা শুকনো অথবা ভেজা দুভাবেই খাওয়া যায়।

আদা কে আমরা বেশিরভাগ সময় মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি সেই হিসাবে আদাকে মশলায় বলা চলে। দারুণ এক ভেষজ ঔষধি হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই আদার ব্যবহার হয়ে আসছে কথাই বলে আদা হচ্ছে সকল রোগ নিরাময়ের দাদা। আপনি যদি পেটের ভাপা বা পেটে গ্যাস সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান দেখবেন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আদা কিঃ

আদা কে মূলত মসলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। এই হিসেবে এটিকে মসলায় বলা চলে মসলা হলেও এর রয়েছে ভেষজ গুণ। নানা রোগ নিরাময় ও পুষ্টিগুণে এর জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীন কাল থেকেই এর ভেষজ ঔষধি গুনাগুন ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এবং বি কমপ্লেক্স। এছাড়াও আদায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ,ফসফরাস, সিলিকন ,সোডিয়াম, আয়রন, দস্তা, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি এ সকল উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

শীতকালে কাঁচা আদার উপকারিতাঃ

শীতকাল এলে সর্দি-কাশি গলা ব্যথার সহ আরো নানা রোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেজন্য আপনি শীতকালে কাঁচা আদা খেতে পারেন কারণ আদা একটি দারুণ উপকারী খাদ্য এর রয়েছে নানাবিধ উপকার। চলুন আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে জেনে নেই শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা গুলো।

  • কাচা আদা খেলে সর্দি কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।
  • কাঁচা আদা খেলে গলা ব্যাথার উপশম হয় দ্রুত।
  • বাতের ব্যথা দূর করতেও কাঁচাদা খেতে পারেন।
  • দাঁতে থাকা জীবাণু ধ্বংস করতে কাঁচা বা কাঁচা আদার রস খেতে পারেন।
  • বমি বমি ভাব দেখা দিলে অল্প করে কাঁচা লবণ দিয়ে খেয়ে নিন।
  • কাচা আদা খেলে আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার অপকারিতাঃ

কাঁচা আদায় অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে তাই বলে ওষুধি গুন দেখেই প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তার আগে জানতে হবে এ থেকে অপকার হয় কিনা সকল কিছুর মতোই আদারও রয়েছে কিছু অপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার অপকারিতা গুলো-

  • আদা বেশি পরিমাণে খেলে হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যায়।
  • আদা চা বেশি পান করলে মাইগ্রেনের সমস্যা কমার বদলে বাড়তে পারে পাশাপাশি অনিদ্রার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • আধা পরিবারের চেয়ে বেশি খেলে ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে যা ক্ষতির কারণ হতে পারে আপনার শরীরের জন্য। পাশাপাশি ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের ঔষধ শ্রবন করেন যারা তাদের  আদা এড়ানোই ভালো।
  • যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা আদা বেশি খেলে শরীরে চুলকানির কারণে শরীর ও মুখ ফুলে যেতে পারে।
  • আপনি যদি আদা মাত্রা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তবে এটি শরীরের উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। তাই গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া উচিত নয় কারণ গর্ভাবস্থায় এটি খেলে প্রিম্যাচিউর বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেজন্য গর্ভবতী নারীরা কাঁচা আদা খাওয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখবেন।
  • আদা বেশি খেলে ডায়রিয়া পেটে ব্যথা এসব সমস্যা ও দেখা দিতে পারে আপনার শরীরে।

শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়মঃ

কাচাঁ আদা খাওয়ার বিশেষ কোন নিয়ম নেই সাধারণত আমরা আদা রান্নার সময় বেশি খেয়ে থাকি। তবে কাঁচা আদা খেতে বেশি উপকার পাবেন যেমন আপনি চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা কাঁচায় চিবিয়ে খেতে পারেন। আদা কাঁচা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

আদার পুষ্টিগুণঃ

আদাতে রয়েছে ভিটামিন বি সিক্স, ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস, রাইবোফ্লোবিন, ইয়াসিন এবং ফোলেট। এছাড়াও

  • প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় মিলবে ৭৯ ক্যালোরি
  • ১৭.৭৮৬ কার্বোহাইড্রেট
  • ৩.৬ গ্রাম ভৌর্য আস
  • ৩.৫৭ গ্রাম প্রোটিন
  • ৩৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম
  • ১.১৫ গ্রাম লৌহ
  • ১৪ মিলিগ্রাম সোডিয়াম
  • ৭.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি

উপসংহারঃ শীতকালে কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা - কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়ম

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আদা এক ধরনের ভেষজ হলেও এটি খাওয়া উচিত পরিমিত পরিমাণে। শুধু আদায় নয় যে কোন খাবার বা ভেষজ উপাদান বা ওষুধ খাওয়া উচিত পরিমিত পরিমানে তা না হলে উপকারের বদলে অপকার বেশি হবে আপনার শরীরে।

এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের আর্টিকেলটি যারা ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url