শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আপনাদের জানাব শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। শীতকালে খেজুরের রস খেতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি। খেজুরের রসে পুষ্টিগুণ প্রচুর পরিমাণে থাকে। খেজুরের রস কাঁচা বা গরম করে খাওয়া হয় আবার খেজুরের রসকে ফুটিয়ে খেজুরের গুড় বা পাটালি তৈরি করা হয়।

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

বর্তমান সময়ে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং খেজুর রস সংগ্রহকারী মানুষের সংখ্যাও কমে আসছে। সাধারণত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে নিম্নে জেনে নেওয়া যাক শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ।

সূচিপত্রঃ শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

ভূমিকাঃ

ষড়ঋতুর বাংলাদেশ। বাংলাদেশ গরম ঋতুর দেশ তাই বাংলাদেশের শীতকাল অনেক আনন্দের সাথে উদযাপন করা হয়। নভেম্বর মাস আসার সাথে সাথে বাতাসে শীতের গন্ধ নিয়ে আসে ছয় ঋতুর মধ্যে শীত এমন একটি ঋতু যে ঋতুতে আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি পিঠাপুলি এবং নবান্ন উৎসব পালন করে থাকি। বাংলাদেশের দুই থেকে তিন মাস শীত থাকে। এই শীতের জনপ্রিয় একটি পানীয় হচ্ছে খেজুরের রস।

খেজুরের রস খেতে যতটা সুস্বাদু তেমনি এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। কিন্তু সকল জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতা ও রয়েছে। অনেক মানুষ আসে এবং শ্বাসকষ্টের জন্য খেজুরের রস খেয়ে থাকেন। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার নিয়মঃ

শীতকালের খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম হলো ভোরবেলা। কারণ যখন রস সারারাত ধরে জমতে থাকে এবং সকাল পর্যন্ত এই রস টাটকা থাকে। সেজন্য আপনি যদি খেজুরের রস ভোরবেলা খেতে পারেন তবে সেটা টাটকাই থাকবে। এবং এর স্বাদ গন্ধও থাকবে টাটকা। আপনি যখন রস একটু বেলা বাড়ার পর খাবেন তখন রসের স্বাদ ও গন্ধের পরিবর্তন আসতে পারে। 

কারণ দিনের আলোয় ফার্মেন্টেশন বা গাজন প্রক্রিয়া দ্রুত হতে থাকে সেজন্য আপনি যদি শীতকালে খেজুরের রস খেতে চান তবে সেটা ভোর বেলা খেতে পারেন। খেজুরের রস যদি আপনি দিনের বেলা খান তবে আপনার পেট খারাপ এবং বমি বমি ভাব হতে পারে কারণ এতে তখন গাজন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং রসে অম্লত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

 জমে থাকা খেজুরের রসে কোন পাখি বা কোন পোকামাকড় যেন মুখ না দেয় সেদিকে সাবধানতা অবলম্বন করা সকলেরই উচিত। আপনি যদি খেজুরের রস খেতে চান তবে খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম হলো ভোরবেলা। খেজুরের রস ভোরবেলা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতাঃ

শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। খেজুরের রস এবং গুড়ে নানা রকম পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিকর সমৃদ্ধ। খেজুরের রসে ১৫-২০% দ্রবীভূত শর্করা থাকে যা থেকে গুড় ও সিরাপ উৎপাদন করা হয়। আপনি যদি খেজুরের রসের উপকারিতার কথা জানেন তবে প্রত্যেক দিন শীতের সময় নিয়ম করে প্রতিদিন এক গ্লাস করে রস খাবেন। তাহলে চলুন নিম্নে যেনে নেওয়া যাক খেজুর রসের উপকারিতা সম্পর্কে।

ভিটামিনের অভাব দূর করতেঃ

খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৩। এটি রক্ত উৎপাদন করতে এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি কোর্স থেকে বজ্র পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে আপনার শরীরে এবং খেজুরের রস আপনি যদি নিয়মিত খেতে পারেন তবে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করবে আপনাকে। এছাড়াও রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দিবে আপনার শরীরে। আপনার শরীরে যদি ভিটামিনের অভাব দূর করতে চান তবে আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় শীতকালে খেজুরের রস রাখুন।

হাড় মজবুত করেঃ

খেজুরের রসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ক্যালসিয়াম। এটি হাড় ও বেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে খেজুরের রস। আপনি যদি নিয়মিত খেজুরের রস খেতে পারেন তবে আপনার হাড় মজবুত করতে সাহায্য করবে এই রস।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ

আপনি যদি নিয়মিত খেজুরের রস খেতে পারেন তবে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে এবং খেজুরের গুড় বা রস অনিদ্রা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে আপনার শরীরে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াইঃ

ভিটামিন ও মিনারেলের সমৃদ্ধি খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে সর্দি-কাশির হাত থেকেও রক্ষা করে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করেঃ

খেজুরের রসে এবং খেজুরের প্রচুর পরিমাণে লৌহ ও আয়রন থাকে ফলে শীতকালে খেজুরের রস খেলে বা খেজুরের তৈরি গুড় খেলে রক্তে প্রচুর পরিমাণে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ

আপনি যদি প্রতিদিন শীতে খেজুরের রস খেতে পারেন তবে আপনার হজমের সাহায্য করতে পারে এবং হজমের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে আপনার খাবার পেটে তাড়াতাড়ি হজম হবে আপনি যদি খাওয়ার পর প্রতিদিন খেজুরের রস খান তাহলে আপনার হজম শক্তি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

শরীরে ক্লান্তি দূর করেঃ

খেজুরের রস বা গুড় পেশি কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। কারণ খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম রয়েছে। এছাড়াও খেজুরের রসে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। আমাদের অনেক সময় শরীরে ক্লান্তি দেখা যায় ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে এই ক্লান্তি দূর করতে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় খেজুরের রস বা গুড় রাখতে পারেন দেখবেন আপনার শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে।

প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংকঃ

খেজুরের রসকে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক বলা হয় কারণ এতে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং জলীয় অংশ বেশি থাকে।এছাড়াও খেজুরের রসে দূর্বিভূত শর্করা বা গ্লুকোজের পরিমাণ কম বেশি ১৫% থেকে ২০ % এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। সহজ প্রাচ্য ফ্যাট এবং খনিজ বা মিনারেল এ ভরা খেজুরের রস।

মেদ ঝরাতে/ওজন কমাতেঃ

খেজুরের রসে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় যার ফলে আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে চান তবে চিনির পরিমাণ কম খাওয়ার চেষ্টা করুন এর বিপরীতে আপনি খেজুরের গুড় খেতে পারেন।

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার অপকারিতাঃ

শীতকালে খেজুরের রস ছাড়া শীত যেন মনে হয় না। খেজুরের রস গ্রাম কিংবা শহরাঞ্চলে সবার কাছে একটি জনপ্রিয় পছন্দের পানীয়। খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং এর রসকে আমরা প্রাকৃতিক ড্রিংস ও বলে থাকি। আমাদের আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের জানিয়েছি শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো খেজুরের রস খাওয়ার অপকারিতা গুলো-

খেজুরের রস প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য। খেজুরের গুড় আখের গুড়ের থেকেও পুষ্টিকর ও সুস্বাদু এছাড়াও খেজুরের গুঁড়ে প্রোটিন ফ্যাট মিনারেল সবই রয়েছে। সেজন্য খেজুরের রসে যেন কোন পোকামাকড় মুখ না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। এবং মুখ দেয়া থেকে রক্ষা করতে আপনাকে জাল কিংবা নেট দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। যদি কোন পাখি কিংবা পোকামাকড় রসে মুখ দেয় তবে সেই মুখ দেওয়ার রস খেলে রোগ হতে পারে আপনার শরীরে।

রসের পাত্র যখন গাছে রাখবেন খেয়াল রাখবেন রসের পাত্রটা যেন নেট বা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা যায়। কারণ রাতের বেলায় বাদুর এসে সেই খোলা খেজুরের রসের পাত্রে বসে রস পান করতে পারে। এবং বাদুড়ের মুখের লালা রসের সঙ্গে মিশে সেই রস যখন মানুষ খায় তখন নিপাই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে মানুষ। নিতাই ভাইরাস একটি প্রাণঘাতী ভাইরাস এ ভাইরাস প্রধানত জলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এরপরে খিচুনি তারপরে মৃত্যু ঘটাতে পারে আপনার। যেহেতু নিপা ভাইরাস খেজুরের রসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে সেজন্য রস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই রসকে হালকা ফুটিয়ে নিয়ে তারপর পান করুন।

রস যেহেতু খোলা অবস্থায় গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় তাই এতে জীবাণু থাকতে পারে প্রচুর পরিমাণে। সেজন্য খেজুরের রস কাঁচা অবস্থায় না খাওয়াই উত্তম আপনি হালকা গরম করে খেজুরের রস খেতে পারেন তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা খেজুরের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অপরদিকে খেজুরের রসের অপকারিতার চেয়ে উপকারী বেশি।

শিতকালে খেজুরের রস আহরণের নিয়মঃ

খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের পূর্বে গাছকে কান্ডের একেবারে উপরের অংশে পাতা সম্বলিত বাকল গুলি ধারালো তা দিয়ে ছেছে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এর সাত থেকে আট দিন পর পুনরায় পরিষ্কার করতে হবে। গাছ চাছার দুই সপ্তাহের মাথায় চাছা অংশে কিছুটা কেটে সেখানে বাশের নল বা খিল লাগিয়ে এবং মাঝখানে একটি মাটির হাড়ি বেঁধে দিয়ে  রস সংগ্রহ করা হয়।

এই রস কে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক-

সন্ধ্যার রসঃ

প্রথম রাতে গুণীয় মানে সর্ব্কিষ্ট এবং পরিমাণেও সর্বোচ্চ রস বলা হয় সন্ধ্যার রস কে। এই সন্ধ্যার রস অনেকেই খেতে পছন্দ করে প্রতিদিন বিকালে গাছের কাঁটা অংশটুকু দা এর সাহায্যে চেয়েছে পরিষ্কার করা হয় এবং সেখানে মাটির হাড়ি বেঁধে দিলে আস্তে আস্তে সেখানে রস জমতে থাকে।

 দ্বিতীয় রাত্রের রসঃ

দ্বিতীয় রাত্রের রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হয় দ্বিতীয় রাত্রের রস সন্ধ্যার রসের মত সুস্বাদু নয় কিন্তু এটা দিয়ে গুর তৈরি করা হয়। সন্ধ্যার রসের থেকে দ্বিতীয় রাতের রস পরিমাণে কম হয়।

 তৃতীয় রাত্রের রসঃ

তৃতীয় রাতে প্রাপ্ত রস কে ঝরা রস বলা হয়। দ্বিতীয় রাত্রের চেয়েও পরিমাণে কম এবং কম মিষ্টি। অনেক সময় ঝরা রস টক স্বাদ যুক্ত হয়।

এরপরে পরবর্তী তিনদিন কাজকে অবসর দেওয়া হয়। এরপর আবার নতুন করে গাছকে চাছা হয় এবং রস সংগ্রহ করা হয়। খেজুরের রস আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে আবহাওয়া যদি প্রচুর ঠান্ডা হয় এবং পরিচ্ছন্ন মেঘলা মুক্ত আকাশ থাকে তাহলে রস পরিষ্কার ও মিষ্টি হয়। কিন্তু যদি আবহাওয়া মেঘলা হয় তবে রাতে খেজুরের রসের টক-ভাব চলে আসে। নভেম্বর প্রথম দিক রস আহরণ শুরু হলেও ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে সর্বাধিক পরিমাণে রস পাওয়া যায়। 

শীতকালে খেজুরের রসের পুষ্টিগুণঃ

পুষ্টিগুণ বিচারে খেজুরের রস অন্যতম একটি খাদ্য এতে বিদ্যমান প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রনের পরিমাণ অনেক বেশি। খেজুরের গুড় সাদা চিনির একটি চমৎকার পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। আমাদের আর্টিকেল এর আজকের পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো শীতকালে খেজুরের রসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের রসে 

  • প্রোটিন ১.০৮ গ্রাম
  • লিপিড ১.১৫ গ্রাম
  • ফাইবার ০.১৮ গ্রাম
  • আশ ০.৪৬ গ্রাম
  • শরকরা ৮৫.৮৩ গ্রাম
  • রিভিউং সুগার ৩. ৯৫ গ্রাম
  • ক্যালরি ৩৫৮ কিলো ক্যালরি

এছাড়াও এতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান

  • ভিটামিন এ ৪১০ আই ইউ ওট
  • থায়ামিন ভিটামিন বি১০.৫ মিলিগ্রাম/১০০ গ্রাম
  • রাইবোফ্লোভিন ভিটামিন বি ২ ০.৬২ মিলিগ্রাম অথবা ১০০ গ্রাম
  • ভিটামিন বি ৩.৩ মিলিগ্রাম ১০০ গ্রাম
  • প্যান্টোট্রেনিক এসিড ০.১২৭ মিলিগ্রাম
  • পাইরেডি স্কিন ০.৪৫ মিলিগ্রাম
  • এসকরবিক এসিড ১২.৭৫ মিলিগ্রাম

এছাড়া সামান্য পরিমাণে ফলিক এসিড, সাইনোকোবালঅ্যামিন, কোলেক্যালসি ফেরল, বায়োটিন ও ফাইটোডিওন রয়েছে যার পরিমাণ নির্ভরযোগ্য মাত্রার নিচে।মাইক্রো উপাদানের মধ্যে রয়েছে-

  • ক্যালসিয়াম ৪.৭৬ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম ২.২৩ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম ৮০ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস ১৮০.৯ মিলিগ্রাম
  • জিংক ৭.২৩ মিলিগ্রাম
  • আইরন ১৫.৮ মিলিগ্রাম

খেজুরের রস অনেক খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে এবং এতে কোন ক্ষতিকর রাসায়নিক অথবা কৃত্রিম উপাদান নেই। এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা ঔষধি গুনাগুন বিদ্যমান এটা শরীরে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এবং ঠান্ডা কাশি সারাতে সাহায্য করে। এছাড়াও খেজুরের গুঁড়ে উচ্চ মাত্রার কর্পোজিট কার্বোহাইড্রেট বিদ্যামান যা স্বাভাবিক চিনির চেয়ে খাবার কে দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।

খেজুরের রস খাওয়ার আগে কিছু সাবধানতাঃ

খুব সকালবেলা সূর্যের তাপ বেড়ে যাওয়ার আগেই আপনাকে খেজুরের রস পান করতে হবে। কারণ ফাঙ্গাস বা ছত্রাক বাতাসে ভেসে রসের সাথে মিশে যায় এবং সূর্যের তাপে গরম হওয়া রস ফারর্মেন্টেশনের করে ফলে প্রথম অ্যালকোহল বা মত তৈরি হয়ে পরে আরো ফার্মেন্টেশন এর কারণে ভিনেগার তৈরি হয়। সেজন্য আপনি যদি খুব দেরি করে রস পান করেন তবে আপনার পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

রসের হাড়ি অবশ্যই যেন জাল বা কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে এ বিষয়টি খুব লক্ষ্য রাখতে হবে কারণ বাদুর হাঁড়ির ভেতরে ঢুকে মুখ ঢুকিয়ে রস খায় এর থেকে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য আপনি যখন খেজুরের রস পান করবেন অবশ্যই রসকে ফুটিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন কারণ ফুটিয়ে খেলে রস নিরাপদ হয়ে যাবে।

শীতকালে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি খাবারঃ

শীতকালে গ্রামাঞ্চলে নতুন ধান ওঠার পরে নবান্ন উৎসব তৈরি হয় এবং বিভিন্ন পট পিঠাপুলির ধুম পড়ে যায় চারিদিকে মম করে শীতের আমেজ। এছাড়াও শীতকালে খেজুরের রস ছাড়া শীত যেন একেবারেই বেমানান। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হয় নানা রকম পিঠাপুলি আমরা হয়তোবা অনেকেই জানিনা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি পিঠা পুলি সম্পর্কে। আজকের এই পোস্টে আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছি শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে চলুন আমাদের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো শীতকালে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি খাবার সম্পর্কে।

খেজুরের রস আমরা সাধারণত পানিও হিসেবে খেয়ে থাকি এছাড়াও খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় গুড় বা আমরা বিভিন্ন রকম পিঠা বলিতে খেজুরের রস ব্যবহার করে থাকি। চলুন আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো খেজুরের রস দিয়ে কয়েকটি পিঠাপুলির নাম-

  • খেজুরের রসের ক্ষীর পায়েস
  • রস চিতই
  • খেজুরের রসের চাল কুমড়ার মিঠাই
  • খেজুরের রসের পায়েস
  • খেজুরের রসের বিবিখানা পিঠা
  • খেজুরের রসে টইটম্বুর রসে চুটকি

উপসংহারঃ সকালে খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টি গুণ

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, খেজুরের রসে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকায় খেজুরের রস বা গুড় বেশি কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের ঘাটতি পূরণ করে এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর করে। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থেকে ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url