আখের রসের উপকারিতা অপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আমাদের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের যারা পাকের রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। রসের মধ্যে ফ্যাট,কোলেস্টেরল,ভাইবার এবং প্রোটিন একেবারেই নেই কিন্তু এতে প্রচুর পরিমাণে আছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন,পটাশিয়াম এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান। আখের রস ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎস।

আখের রসের উপকারিতা অপকারিতা জেনে নিন

আখের রস মানুষের শরীর থেকে অবাঞ্ছিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এবং যাদের লিভারের সমস্যা আছে তাদের জন্য আখের রস খুবই উপকারী জন্ডিসের রোগীদের আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আখের রসের উপকারিতা অপকারিতা।

সূচিপত্রঃ আখের রসের উপকারিতা অপকারিতা জেনে নিন

ভূমিকাঃ

আখের রস খুব সহজ লক্ষ্য এবং খুব উপকারী একটি পানীয়। । আগে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। শুধু তাই নয় আখের রসের প্রচুর ফাইবার এবং মাইক্রো মিনারেল রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী কারণ আখের রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। আখের রসের কয়েক ফোটা লেবুর রস আর একটু বিট লবণ দিলে সেটা খেতে আরো সুস্বাদু হবে।

আখের রস থেকে শুধু চিনি ও গুড় তৈরি করা হয় না। আখের রসকে গ্রীষ্মকালে সবথেকে বিশেষ একটি পানীয় হিসেবেও ব্যবহার করা হয় আখের রস আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও আখের রস খাওয়ার ফলে জন্ডিস বদহজম প্রস্রাবের রোগের চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

আখের রস শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে এবং শরীর ভালো রাখে। আপনি যদি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে চান এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তবে আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আখের রস রাখুন।

আখের রসের উপকারিতাঃ

আখের রস ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎস। আখের রস যদি আপনি নিয়মিত পান করেন তবে ক্যালরির পাশাপাশি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম পেয়ে থাকবেন আখের রস থেকে। আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো আখের রসের উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আখের রসের উপকারিতা গুলো-

  • আখের রস লিভারের জন্য উপকারী। সেজন্য যারা জন্ডিসের ভুগছেন তাদের আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
  • গরমে ক্লান্তি দূর করতে দারুন কাজ করে আখের রস। এবং এটি হাইড্রেশন থেকে রক্ষা করে।
  • আখের রস লিভারের জন্য খুবই উপকারী এবং আখের রস শরীর থেকে অবাঞ্ছিত অবাঞ্ছিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
  • আখের রস ফেলোভেনের নামক একটি বিশেষ উপাদানের মাত্রা ভারতের সাহায্য করে। এবং এটি ক্যান্সার থেকে আপনাকে দূরে রাখবে।
  • আপনি যদি চিবিয়ে খেতে পারেন তবে আপনার দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম হার ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
  • হজমে গন্ডগোল দূর করতে আখের রস খুবই উপকারী।
  • রস আমাদের ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে কারণ আখের রসের হাইড্রেটের মাত্রা পর্যাপ্ত পরিমাণে বেশি থাকে।
  • শরীরে শক্তির প্রাথমিক উৎস হল চিনি ও গ্লুকোজ। আপনি যদি আখের রস প্রতিদিন খেতে পারেন তবে আপনার শরীরে চিনি ও গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেবে। 
  • আপনারা যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত আছেন তারা যদি নিয়মিত আখের রস খেতে পারেন তবে আপনার ওজন কমতে থাকবে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য আখের রস অত্যন্ত বেশি উপকারী। বর্তমান সময়ে ক্যান্সার রোগের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাই আপনি যদি ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চান তবে আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আখের রস রাখুন।
  • আপনার কি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা আছে। অনেক সময় পানি কম খাওয়ার কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে সেজন্য আপনি যদি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পেতে চান তবে প্রতিদিন আখের রস খেতে পারেন।
  • গর্ভধারণের জন্য আখের রস অনেক উপকারী আপনি যদি নিয়মিত আখের রস খেতে পারেন তবে আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দেবে।

আখের রসের অপকারিতাঃ

উপরে বর্ণিত আখের গুনাগুন শুনে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন গরমের সময় আখের রস কতটা উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। সেজন্য আপনার শরীরকে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তবে আখের রস খেতে পারেন। অন্যদিকে ময়লার সংস্পর্শে আখের রস উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হতে পারে আপনার শরীরের জন্য।

আখের রস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে যে কোন জিনিস পরিমাণ এর চেয়ে বেশি যদি গ্রহণ করা হয় তবে নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আখের রস খাওয়ার অপকারিতা গুলো।

  • রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া আখের রস এগিয়ে চলুন কারণে রসে ক্ষতিকারক জীবাণু থাকতে পারে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে আপনার।
  • ছত্রাকের মতো জীবাণু দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা আখের রসের জন্মাতে পারে জাকের রসের ক্ষতি করতে পারে।
  • শীতকালে এর ব্যবহার এড়িয়ে চলুন অন্যথায় ঠান্ডা এবং ঠান্ডা লাগা নানা সমস্যায় পড়তে পারেন আপনিও।

আখের রসের পুষ্টিগুণঃ

গরমের দিনেও রোজার দিনে ইফতারের ক্লান্তি দূর করতে আখের রস বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয়। এর রস একটি গ্লাসে বড় বা শুধু রস দিয়ে পরিবেশন করা হয়। আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো আখের রসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

পুষ্টি উপাদান              প্রতি ১০০ মিলি

  • শক্তি - ৪৯  কিলোক্যালোরি 
  • কার্বোহাইডেড  - ১১.৫১ গ্রাম
  • চিনি - ৮.৫৫ গ্রাম      
  • ক্যালসিয়াম - ১০ মিলিগ্রাম
  • আইরন - ০.১৮ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম - ১২ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম  - ১৬০ মিলিগ্রাম     

আখের রস কখন খাওয়া উচিতঃ 

আখের রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে কাজ করে। অসাধারণ সত্যি এবং অন্যান্য সংক্রমণ নিরাময়ের সাহায্য করে এবং জলের সঙ্গে লড়াই করে এর পাশাপাশি একটি শরীরের প্রোটিনের মাত্রা বাড়ায়। চৈত্র মাস পড়তে না পড়তেই গরম শুরু হয়ে যাবে সময় যত বাড়বে পাল্লা দিয়ে বাড়বে তাপমাত্রা। 

গরমের সময় আপনি আপনার শরীরকে জাঙ্গা রাখার জন্য বিভিন্ন রকম পানিও বেছে নিন কিন্তু এ ধরনের পানীয়তে শর্করার পরিমাণ বেশি যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। গরমকালে আপনি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে আখের রস পান করতে পারেন কারণ আখের রসের পুষ্টিগুণে ভরপুর। আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য ইলেকট্রোলাইট রয়েছে আখের রসে। 

এছাড়াও আখের রস কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুবই উপকারি। চিকিৎসকদের মতে আখের রস পান করার উপযুক্ত সময় হল বিকাল বেলা। আখের রস রাতের বেলায় খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো।

আখের রস খাওয়ার নিয়মঃ

আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চান তবে সকালে খালি পেটে আখের রস সঙ্গে ভিনেগার খেতে পারেন। সকাল আটটার আগে আখের রস খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী কারণ এই সময়ে পাকস্থলী তার মোটা ওয়ালিজম কাজ শুরু করে এবং তাই এটি খেলে ফ্যাট বান করে এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করে। 

আখের ভিনেগার ফ্যাট বান করতে পারে। আখের রসের ভিনেগারের কথা আমরা অনেকেই জানি না। এই ভিনেগারটি প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ যা ত্বকের দিক থেকে নানাভাবে উপকারী। প্রথমত এটি বডি টিপস সহায়ক তৃতীয়ত একটি পেটের অনেক সমস্যা নির্ণয় করতে পারে জন্য উপকারি।

আখের রস খাওয়ার আগে একটু রাগ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিবেন এবং সেটা থেকে রস বের করে নিবেন রস বের করে নেওয়ার পরে রসগুলো ভালোভাবে ছেঁকে নিবেন সেকে নেওয়ার পরে সেই আখের রস আপনি খেতে পারেন।

আখের রস খেলে কি মোটা হয়ঃ

আখের রস খেলে শরীরের স্বাস্থ্য বাড়ে না বরং আখের রস খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে আপনার শরীরে আখের রস মিষ্টি হওয়া সত্বেও। এমনকি আখের রস কোলেস্টেরলের পরিমাণও কমিয়ে দেয়।

আখের রসে কত ক্যালরি থাকেঃ

আখের রস ওজন কমাতে উপকারী পানীয়। এক গ্লাস বা ৩০০ মিলিলিটার আখের রসে ক্যালরি থাকে ১১১। এরমধ্যে কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৭ গ্রাম, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে ০.২৭ গ্রাম। আখ মোটামুটি সবই তো তাই পাওয়া যায় এতে মিনারেল প্রোটিন ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও আয়রন যারা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এছাড়াও আখের রসের দেহের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় নিমেষেই।

উপসংহারঃ আখের রসের উপকারিতা অপকারিতা জেনে নিন

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আঁখে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ও পটাশিয়াম রয়েছে যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আখের রস রাখেন তবে দেখবেন আপনার দেহের সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে নিমেষে।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি এতক্ষণ যারা ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url