ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর কারণ ও প্রতিকার
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। ঘুমের মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত একটি জটিল সমস্যা হল স্লিপ এপোনিয়া। এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা ঘুম ভাঙার পর শ্বাস নেই এবং সঙ্গে সঙ্গে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। এই সমস্যার কারণে আমাদের রক্তে অক্সিজেন পরিমাণও কমে যায় এটি একটি প্রাণঘাতী রোগ।
সূচিপত্রঃ ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর কারণ ও প্রতিকার
ভূমিকাঃ
ঘুমের মধ্যে হঠাৎ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় অনেকের। ঘুম ভেঙ্গে তারা হাসফাঁস করতে থাকে এবং অনেকক্ষণ পর কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসে তারা ঘুমন্ত অবস্থায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা এমন ইয়ার কারণে হতে পারে জিহ্বায় বাড়তি চর্বি বা মোটা জিহবা। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
ঘুমের মধ্যে দম আটকে যাওয়া রোগ, এটা হতে পারে জন্মগত অথবা পারপাসিক কোনো কারণে । তবে যেহেতু ঘুম যত কম হবে ঘুমের মধ্যে সমস্যা তৈরি করার সম্ভাবনা তত কম হবে।ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর অন্যতম একটি বিষয় হলো ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসনালির উপরের দিকে আংশিক অথবা পুরোটা আটকে যাওয়া।
যাদের ওজন বেশি অথবা ঘাড় ও টনসিল বড় তাদের এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষকরা ৬৭ জন স্থূলকারী লোকের ওপর গবেষণা করে দেখেছেন তারা শরীরের ওজন দশ শতাংশ কমানোর পর তাদের ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর লক্ষণগুলো ৩০ শতাংশ কমে গেছে। ওজন কমার পর তাদের শ্বাসনালির ওপরের অংশের আকার পরীক্ষা করে এই পরিবর্তনের ব্যাপারে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকরা। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক ঘুমের মধ্যে কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
ঘুমের মধ্যে দম আটকানো কিঃ
ঘুমের মধ্যে দম আটকানো হচ্ছে যখন আপনার গলার বেশি মাঝে মাঝে শীতল হয়ে যায় এর ফলে ঘুমের মধ্যেই আপনার শ্বাসনালী ব্লক হয়ে যেতে পারে এর প্রধান লক্ষণ হলো নাক ডাকা। ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর আরো কয়েকটি কারণ আছে সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-
- ঘুমের সময় শ্বাস-প্রসার বন্ধ হওয়া হঠাৎ জেগে ওঠা।
- যে কোন কাজে মনোযোগের অভাব।
- উচ্চ রক্তচাপ।
- মেজাজ পরিবর্তন যেমন বিষন্নতা বা বিরক্তি।
- লিবিডো কমে যাওয়া।
- হাঁপানি ওর দম বন্ধ হয়ে যাওয়া।
- দিনের বেলায় অত্যাধিক ঘুমঘুম ভাব হওয়া।
ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর কারণঃ
নাক ডাকার ও ঘুম কম হওয়ার সমস্যা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যদি শ্বাসনালী বাধা গ্রস্থ হয় তবে ঘুমের মধ্যে সবচেয়ে নাক ডাকার শব্দ হয় নিদ্রা কালীন শ্বাস ব্যাঘাত নাক ডাকার অন্যতম কারণ এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঘুম মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় শরীর তান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিমিত ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে হৃদরোগ সহ নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়। হৃদরোগের প্রধান কারণ হলো ঘুম কম হওয়া।
- যাদের ওজন বেশি তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
- বয়স ৩০ থেকে ৬৫ বছর হলে এ রোগের প্রবণতা বেশি হয় তবে শিশুদের বিশেষ করে যাদের টন ছিল অথবা আকারে বড় হয় তাদেরও হতে পারে।
- ধূমপানের ফলে ও এই রোগ হয় যা প্রতিরোধ যোগ্য।
- জেনেটিক ও বংশগত হার্ট ফেইলর এজমা সি ও পি ডি কিডনি ফিউলার স্টক হাইপোথাইরয়েড ইত্যাদি এরোগ বাড়িয়ে দেয়। বংশগত কারণেও এই রোগ হয়ে থাকে।
- সাধারণত নারীদের চেয়ে পুরুষের বেশি হয় এই রোগ। নারীদের তুলনায় পুরুষদের ঘুমের হার ২ গুণ বেশি তবে রজবন্ধ বা মনোপজের পর পুরুষ ও নারীরা সমানভাবে এ রোগে আক্রান্ত হয়। গর্ভবতী নারীরা এ রোগে বেশি ভোগেন।
- কিছু মানুষের বিশেষত এর এশিয়া অঞ্চলের মানুষের মধ্যে দেখা যায় নিচের চলে ছোট বা পিছনের দিকে চাপা ফলে মুক্ত হওয়ার সংকীর্ণ হয়ে যায় এ ধরনের রোগীদের দৈহিক স্থূলতা না থাকলেও স্লিপ এমোনিয়া হতে পারে।
ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর প্রতিকারঃ
ঘুমের মধ্যে দো মটকানোর প্রতিকার সম্পর্কে চিকিৎসকরা মনে করেন যে সতর্ক থাকলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-
- শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আপনার।
- সুষম খাদ্যাভ্যাস করতে হবে আপনাকে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে আপনাকে।
- মাথায় দিকটা উঁচু করে ডান বা বাঁদিকে হাত কাত হয়ে শোয়া।
- ধূমপান ত্যাগ করা
- যদি নাক বন্ধ হয়ে যায় তবে ফ্লোটি ক্যাশন মেজাল স্প্রে ব্যবহার করা বা চিকিৎসা করা।
নিদ্রাকালীন শ্বাস ব্যাঘাতের কারণ অতিরিক্ত ওজন এছাড়াও অনিদ্রা নিদ্রাকালীন সাররাতের ও অন্যতম কারণ ফলে ভালো করে ঘুম না হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কাজেই পরিণত আহার করে ওজন ঠিক রাখতে হবে। আপনাকে তাতে প্রশান্তির ঘুম হবে জীবন যাপন পদ্ধতি পরিবর্তনে এনে নাক ডাকার ও ঘুম হওয়ার সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
এছাড়া রাতে খাওয়ার পরপরই ঘুমাতে না যাওয়া, ধূমপান না করলে ঘুম ভালো হয়। সমস্যার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় এ থেকে মুক্তি পেতে হলে ওষুধ এবং ওষুধ এবং শৈল চিকিৎসায় নাক ডাকার সমস্যা দূর করা যায়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এগুলো ছাড়াও ঘুমের মধ্যে বারবার যদি আপনার দম বন্ধ হয়ে আসে তবে দেরি না করে দ্রুত কোন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে আপনাকে।
উপসংহারঃ ঘুমের মধ্যে দম আটকানোর কারণ ও প্রতিকার
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, মনে রাখবেন যিনি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকছেন তাকে ডেকে বা ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দেওয়া কোন সমাধান নয়। নির্দিষ্ট কোন ভঙ্গিতে শুয়ে থাকা অবস্থায় নাক ডাকার সমস্যা হলে সেই ভঙ্গিতে না শুয়েই ভালো না যেভাবে সুবিধা আপনি সেভাবেই সুবিধা জনক ভঙ্গিতে শুতে পারেন।
প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url