থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলামে কি বলে। ইংরেজী বছরের শেষ ৩১ শে ডিসেম্বর রাত বারোটা এক মিনিটকে থার্টিফার্স্ট হিসেবে উদযাপন করা হয়। পুরনো বছরকে বিদায় জানানো ও নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উপলক্ষে নেশা ও অবৈধ যৌনতার উন্মাদনায় মেতে উঠে । ইসলামিক জীবন বিধান অনুযায়ী এ কাজগুলো মারাত্মক অপরাধ।
থার্টিফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টিফার্স্ট নাইটসম্পর্কে ইসলামে কি বলে
থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টি ফাস্ট নাইট  সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।

বাঙালির এত সুন্দর ভাগ্য যে তারা বছরে দুবার নতুন বছরের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এই দুটি নতুন বছরের পার্থক্য ও আবার ঋতুতে। একটি শুরু হয় গরমকালে, অন্যটি শুরু হয় শীতকালে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করল সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হলো। সারা বিশ্বের মুসলিম জাতিরা এ দিবস পালনের অপসংস্কৃতিকে হারাম বলে অবহিত করেছেন। 

ভূমিকাঃ

বাংলাদেশের ২০০০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর মধ্য রাতের মিলেনিয়াম বা সহস্রাব্দ পালনের মধ্য দিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎপত্তি। বিত্তশালী, উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক-যুবতীদের মধ্যে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ে এ রীতি। থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের রীতি চালু হয়েছে খ্রিস্ট জগতে। সুতরাং এ দিবস পালনের মাধ্যমে বেধর্মীদের সন্তুষ্টি অর্জন করা হয়। ইসলাম বিজাতিয় সংস্কৃতি পালন করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। 
আল্লাহ তা'আলা বলেন "নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ইসলাম ই একমাত্র মনোনীত দিন"( সূরা আল ইমরানঃ আয়াত ১৯ )। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক থার্টিফার্স্ট নাইটের উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টিফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।

থার্টি ফাস্ট নাইট এর উৎপত্তিঃ

ইংরেজি বা গ্রেক রিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তিত হয় ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে। এই ক্যালেন্ডার চালু করেন খ্রিস্ট ধর্মের জাজক পোপ গ্রেগরি। ইতিপূর্বে নববর্ষ পালনের রীতি বিভিন্ন সভ্যতায় থাকলেও পাকাপোক্তভাবে পহেলা জানুয়ারি নববর্ষ পালনের রেওয়াজ শুরু হয় এ সময় থেকে। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ সালে ইংরেজি নববর্ষ প্রচলন করেন। 
প্রথম দিকে নববর্ষ বিভিন্ন তারিখে পালন করা হতো। পরবর্তীতে ১৫৮২ সালে গ্রেট রিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর পহেলা জানুয়ারিতে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়। বাংলাদেশের থার্টি ফাস্ট নাইটের ব্যাপক প্রচলন ঘটে ২০০০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর মধ্য রাতের মিলেনিয়াম বা সহস্রাব্দ পালনের মধ্য দিয়ে।

থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম যা বলেঃ

দ্বিজাতীয় সাদৃশ্যঃ

থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন সম্পূর্ণরূপে বিজাতীয় সংস্কৃতি। থার্টিফার্স্ট নাইটে রাত্রিতে বলে ও মেসেজের মাধ্যমে অভিবাদন জানানো আতশবাজি ফাটানো সেশনস ডিজে পার্টি কনসার্ট এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতির সাথে সাদৃশ্য রাখে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সদৃশ্য অবলম্বন করলো সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত"।
যুব সমাজকে ধ্বংস ও নারী সমাজকে নষ্ট করার নীল নকশাঃ

যুব সমাজকে ধ্বংস ও নারী সমাজকে নষ্ট করার জন্য থার্টিফার্স্ট নাইট বাংলাদেশ আমদানি করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন "আর তোমরা জেনার নিকটবর্তী হয়ো না" ( সুরাবনী ইসরাইল আয়াত ৩২ ) ২০০০ সালে ৩১শে ডিসেম্বর ২৫ মিনিটে গুলশানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনকারী এক তরুণকে কিছু মাতাল যুবক শ্লোতাহানি করে ও তার শরীরের বেশিরভাগ কাপড় ছিড়ে ফেলে। 
আর ২০০১ সালের শাওন আখতার বাঁধনের ক্ষতবিক্ষত দেহকে কে না দেখেছেন। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় একটি যৌন উৎসব যা তাদের জন্য অসম্মানজনক। অন্য এক হাদীসে এসেছে, "হে নবী আপনি মুমিনদের বলে দিন আমার পালনকর্তা সব ধরনের অশ্লীল বিষয়গুলো হারাম করেছেন"( সূরা আরাফ ৩৩ )

অশ্লীলতাঃ 

এ রাত্রিকে কেন্দ্র করে চলে অশালীন মহা উৎসব। যুবতীরা অশালীন ও অর্ধনগ্ন পোশাক পরিধান করে অবাধে চলাফেরা করে। এ প্রসঙ্গে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন," ঐসব নারী যারা হবে পোশাক পরিহিতা কিন্তু প্রায় নগ্ন। যারা পরপুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে তাদের মাথা বক্র উঁচু কাজ বিশিষ্ট উটের নেয়। তারা জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে না এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না তারা"।

উপসংহারঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি ও ইতিহাস - থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, যেনা, মদ্যপান ও অমুসলিমদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণের এই নিকৃষ্ট সাংস্কৃতিকে চিরদিনের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিলীন করা উচিত। এ লক্ষ্যে সকল মুসলিমকে সীসাঢালা প্রাচীরের মতো অবস্থা তৈরি করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা ও অন্যদেরকে এই বিষয়ে সচেতন করার মাধ্যমে। আমাদের সকলকে জান্নাত লাভ করার জন্য আল্লাহ তৌফিক দান করুন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের এই পোষ্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url