রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিক

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকে আমাদের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাব,রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয় এবং চারপাশ ঠান্ডা হয়ে যায়। এই ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য আপনি আপনার ঘরে রুম হিটার ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিকগুলো কি। না জেনে থাকলে চলুন নিম্নে আমাদের আর্টিকেল থেকে জেনে নেই।   
রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিক
রাতে ঘুমানোর মধ্যে ও বেখেয়ালে আমাদের শরীরে ঠান্ডা লেগে যায় এবং আমরা অসুস্থ হয়ে যাই। এই অসুস্থতা থেকে বাঁচতে এবং রুমকে গরম রাখতে আমরা আমাদের রুমে রুম হিটার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিকগুলো।

ভূমিকাঃ

গ্রীষ্মকালে যেমন এসিতে থাকতে পছন্দ করেন সবাই তেমনি শীতকালেও বর্তমানে হিটারের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই হিটার স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর তাকে জানা আছে আমাদের। আপনি যখন আপনার রুমে হিটার ব্যবহার করবেন তখন নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে আপনার, আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - হিটারের ক্ষতিকর দিকগুলো।
অধিকাংশ হিটারের ভেতর লাল গরম ধাতুর পাত বা সিরামিক কোর থাকে। যার কারণে কক্ষের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য গরম হওয়া বাহির করে আনে ভিতর থেকে তবে এই গরম হাওয়ায় উপস্থিত আর্দ্রতাকে চুষে নেই। হিটার থেকে যে হাওয়া বের হয় তা অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে থাকে এর রুম হিটার আবহাওয়া উপস্থিত অক্সিজেনকে পুড়িয়ে দেয় যার কারণে আমাদের নানা রকম ক্ষতি হয় যেমন অনিদ্রা মাথাব্যথার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে আপনার।

রুম হিটার কিঃ

রুম হিটার এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র যেটার মাধ্যমে গরম বাতাস বের হয় এবং শীতল জায়গাকে গরম করে তোলে। আমরা ঘরকে গরম রাখার জন্য রুম হিটার ব্যবহার করে থাকি। প্রচন্ড শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা ঘরের রুম হিটার ব্যবহার করি বেশিরভাগ রুম হিটার বৈদ্যুতিক সাহায্যে চলে তবে কিছু কিছু রুম হিটার আছে যেগুলো গ্যাস ও তেলের সাহায্যে চালানো হয়।
সাধারণত আমরা রুমটার ছোট শিশু ও অসুস্থ বয়স্ক মানুষের জন্য ব্যবহার করি কারণ ছোট শিশু এবং বয়েস করা অতিরিক্ত শীত সহ্য করতে পারেনা। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি ব্যবহার করা হয় শীতকাল আসলে ছোট বাচ্চাদের ঠান্ডা জড়িত নানা সমস্যা দেখা দেয়। সেজন্য এই ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে বাঁচতে আমরা ঘর গরম রাখার জন্য রুম হিটার ব্যবহার করে থাকি।

রুম হিটার ব্যবহারের নিয়মঃ

রুম হিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে কারণ এটি বৈদ্যুতিক জিনিস। আপনি যদি সে নিয়ম গুলো অনুসরণ না করেন তবে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন। আমাদের আর্টিকেলের আজকের পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম সম্পরকে। চলুন আর দেরি না করে নিম্নে জেনে নেওয়া যাক রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম গুলো-
  • আপনার ঘরের দরজা জানালা যদি ফাটা থাকে বা কোন ফোটা থাকে সেক্ষেত্রে বন্ধ করে দিবেন ঘরের সেই ফাটা দরজা জানালা গুলো।
  • যখন রুমে হিটার চালু করা হয় তখন ঘর স্বাভাবিক গরম হয়ে যাবে তখন আপনি হিটারটি বন্ধ করে দিবেন।
  • রুম হিটার চালু করার পরে ঘরে কোন রকমের যেন বাতাস প্রবেশ না করে সেই দিকে নজর রাখা জরুরী আপনার জন্য।
  • রুম হিটারের ওয়াট যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে কারেন্টের বোর্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
  • হিটার চালু করার পরে সেটার পাশে বসা থেকে বিরত থাকুন তাছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে আপনার।
  • দরজার ফাঁকা জায়গায় কাগজ কিংবা কাপড় গুতে দিবেন তাছাড়া ভিতরের ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করবে। এতে করে আপনার রুমটার কোন কাজ হবে না।
  • সব সময় শিশুদের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবেন রুম হিটার। কারণ যে কোন সময় দুর্ঘটনা হতে পারে এবং এমন জায়গায় রাখুন যাতে আপনার যাতায়াতের কোন কষ্ট না হয় এবং সেখানে যাতায়াত করা না লাগে।
  • আপনি আপনার ঘরে সর্বোচ্চ তিন থেকে চার ঘণ্টা চালু রাখবেন। তা নাহলে যে কোন সময় যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
  • আপনি যখন রুম হিটারটি চালু করবেন তখন অবশ্যই ভালোভাবে চেক করে নিন যেন সবকিছু ঠিক আছে নাকি তারপরে রুম হিটার চালু করুন।

রুম হিটারের ক্ষতিকর দিকঃ

প্রতিটি জিনিসেরই যেমন একটি ভাল দিক রয়েছে তেমনি এর খারাপ দিক ও রয়েছে। যেহেতু রুম হিটার একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র সেজন্য এটার ক্ষতিকর কিছু দিক রয়েছে। সেজন্য আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো রুম হিটারের ক্ষতিকর দিকগুলো। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক-
  • রুম হিটার চালু করে ঘুমানোর ফলে আপনার মাথা ব্যথা এবং মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
  • সমস্যা এবং এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা হিটার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন তা না হলে আপনাদের সমস্যা গুলো আরো বেড়ে যাবে।
  • খেয়াল রাখবেন কখনোই যেন আসবাবপত্র এবং কম্বলের আশেপাশে রুম হিটার রাখা না হয় কারণ যেকোনো সময় আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে সেখান থেকে।
  • আপনার রুমে যদি শিশু বা বয়স্ক লোক থাকে সে ক্ষেত্রে হিটার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন কারণ এটা থেকে নিগত বাতাস শিশু এবং বয়স্কদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • আপনি যখন আপনার রুমে অতিরিক্ত পরিমাণে রুম হিটার চালাবেন তখন অতিরিক্ত রুম হিটার চালানোর কারণে সেই বাতাস ফুসফুসে কফ জমাতে শুরু করবে।
  • যখন অনেক সময় ধরে রুমটার চালাবেন তখন আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে এবং আপনি ঠিকমতো ঘুমাতে পারবেন না।
  • আপনি কি প্রতিদিন ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিদিন হেটার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন তাছাড়া আপনার গলা মাথা চোখের সমস্যা হবে এবং নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে আপনার।
  • রুম হিটার চালু অবস্থায় হিটারের পাশে বসা থেকে বিরত থাকুন কারণ যখন গিটার থেকে বাতাস বের হয় সেটা সরাসরি আপনার হার্টের উপরে প্রভাব ফেলবে।
  • রুম হিটার যখন আমরা চালু করি তখন হিটার থেকে একটি রাসায়নিক পদার্থ বের হয় যেগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস এর মাধ্যমে মানুষের শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে এবং এতে করে মানুষের শরীরে নানা রকম ক্ষতি হয়।
  • আপনি যখন রুম হিটার ব্যবহার করবেন তখন রুম হিটার থেকে যে গরম বাতাস বের হবে সেটা ত্বককে আদ্র এবং শুষ্ক করে দেবে যার ফলে ত্বকের ক্ষতি হবে।
  • গবেষণায় দেখা গেছে, যে বাড়িতে গ্যাস সেটার বা এলপিজি হিটার বেশি ব্যবহার করা হয় সেসব পরিবারের শিশুদের মধ্যে এজমার সমস্যা অধিক দেখা যায়।
  • আপনি ভুলেও কখনো কম্বলের মধ্যে রুম হিটার রাখবেন না কারণ এতে করে আপনার শরীরে আগুন লেগে যেতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি প্রতিদিন হেটার ব্যবহার করেন তবে আপনার কাশি, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হওয়া শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
আপনি যদি এসব ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে চান তবে ঘরে রুম হিটার চালানো থেকে একেবারে বিরত থাকুন।

রুম হিটার ব্যবহারের আরও কিছু নিয়মঃ

যদি সেটার ব্যবহার করতে হয় তাহলে কিছু সাবধানতা মেনে চলা ভালো। আমাদের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। চলুন আর দেরি না করে নিম্নে জেনে নেই-
  • ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • ঘরের কোন অংশে পাত্র ভর্তি পানি রাখুন এর ফলে বাড়ির ভেতরে বায়ু আর্দ্র থাকবে।
  • নির্দিষ্ট রাখুন হিটার এর তাপমাত্রা।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম পানি পান করুন।
  • নির্দিষ্ট সময় পর পর চা কফি বা সুপ পান করুন। এর ফলে গলার আদ্রতা বজায় থাকবে আপনার।

উপসংহারঃ রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিক

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, রুম হিটার যখন অধিক মাত্রা দিয়ে ব্যবহার করা হয় তখন ঘরের তাপমাত্রার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। রোমের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে ছোট বাচ্চারা রীতিমতো ঘামতে শুরু করবে আবার এই ঘাম শুকিয়ে গেলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হবে আপনার শিশু, সেজন্য রুম হিটার চলাকালীন রুমের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে গেলে রুম হিটার বন্ধ করে দিন।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনারা যারা এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন রুম হিটার ব্যবহারের নিয়ম - রুম হিটারের ক্ষতিকর দিকগুলো। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url