১৪ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলের আজকের এ পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো ১৪ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেন- "তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা মুমিন হবে, আর তোমরা মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরে একে অপরকে ভালবাসবে" ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস।

এ দিনটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু সংখ্যক তরুণ তরুণী অবাধ মেলামেশায় মশগুল হয়ে পড়ে। একে অপরের জন্য নিজের ভালোবাসার দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয়। এসবের প্রতি লক্ষ্য করলে সহজেই বোধগম্য হয় যে দিবসটি উপলক্ষে তারা কি ভালোবাসায় সম্মান করছে নাকি ভালোবাসাকে কলঙ্কিত করছে। 

ভূমিকাঃ

ভালোবাসা মানে মনের টান। ভালোবাসা নিঃস্বার্থ এতে কোন স্বার্থপরতার আভাস থাকবে না। ভালোবাসার গুরুত্ব অপরিসীম ভালোবাসা ঈমানের প্রতীক। একে অপরের প্রতি ভালবাসা থাকা মুমিন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন" তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না, 

যতক্ষণ না তোমরা মুমিন হবে আর তোমরা মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরে একে অপরকে ভালবাসবে" আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ে কথা বলবো না যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি জানতে পারবেন ১৪ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।

১৪ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ইসলামের কথাঃ

ভালোবাসা আল্লাহর দান যার প্রতি ভালোবাসা হোক না কেন তা অবশ্যই শরীয়ত সমর্থিত হতে হবে আর ভালোবাসার উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার। কেবল আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্ট অর্জনের উদ্দেশ্যে কেউ যদি কাউকে ভালোবাসে তবে সে প্রশান্তি লাভ করবে আর আখিরাতে থাকবে তার জন্য পুরস্কার।

সাহাবীগণ বলেন ইয়া রাসুল আল্লাহ আমাদেরকে বলুন, কোন লোকগুলো আখিরাতের দিন পুরস্কৃত হবেন তিনি বলেন তারা ঐসব লোক যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একে অপরকে ভালোবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই এবং কোন অর্থনৈতিক লেনদেনও নেই আল্লাহ শপথ নিশ্চয়ই তাদের চেহারা হবে নূরানী এবং তারা নূরের মধ্যে থাকবে। তাদের কোন চিন্তা থাকবে না যেদিন মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকবে।

প্রকৃত ভালোবাসা হওয়া চাই আল্লাহর জন্যই। দুনিয়াতে কোন মানুষকে ভালবেসে তার ভালোবাসা পাওয়ার গ্যারান্টি নেই, যে কোন সময় ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। মানুষের মন মুহূর্তে রং বদলায় কিন্তু আল্লাহ দিয়েছেন ভালবাসার গ্যারান্টি আল্লাহকে ভালবাসলে নিশ্চিত আল্লাহ তোমাকেও ভালবাসেন এবং প্রতিদানও দেবেন মহাপ্রতিদান। তুমি যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

মহান রাব্বুল আলামিন প্রতিটি মানুষের অন্তরে ভালোবাসা দান করেছেন। নারী পুরুষের মাঝে দিয়েছেন এক অন্যরকম ভালোবাসার বন্ধন। নারী পুরুষের মহব্বত আকর্ষণ এটা আমাদের প্রতি আল্লাহতালার অন্যরকম অনুগ্রহ রহমত। পবিত্র কুরআনুল কারীমের এরশাদ হয়েছে আল্লাহর কুদরতের মধ্যে অন্যতম একটি নির্দেশন এই যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও অনুগ্রহ সৃষ্টি করেছেন।

সেজন্য মহান রাব্বুল আলামিনের বিধান অনুযায়ী নারী পুরুষের এই আকর্ষণ কাজে লাগাতে হবে অবৈধভাবে এই আকর্ষণের অপব্যবহার করে ভালবাসাকে অপবিত্র করার অধিকার কারো নেই। বিবাহ বহির্ভূত নারী পুরুষের ভালোবাসা কখনো পবিত্র হতে পারে না এটা ভালোবাসার নামে নষ্টামি সামাজিক বিশৃঙ্খলা ইসলামের এই ভালোবাসার ঠাঁই নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "তুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যাই ব্যায় করো না কেন তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিত রূপে প্রদান করা হবে এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও তারও প্রতিদান দেওয়া হবে" 

ইসলামের রয়েছে ভালোবাসার যথাযথ মর্যাদা রয়েছে বৈধ ব্যবস্থা বৈধ সম্পর্ক। কিন্তু আজ বিশ্বে ভালোবাসা দিবসের নামে নারী-পুরুষের অবৈধ যৌন সম্পর্কে প্রতি উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ভালোবাসাকে ব্যভিচারে পরিণত করা হচ্ছে যুবক-যুবতীরা অবৈধভাবে মেলামেশা করা তাদের নোংরামি জনসমক্ষে প্রকাশ করছে। বোনেরা বিপদ না ভাবে বেহাইয়ার মত অর্ধ উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় পার্কে ঘোরাফেরা করছে।, গুলো গুনাহগার কাজ হারাম ও নিষিদ্ধ সামাজিকভাবে এগুলো গ্রহিত কাজ কোন মুসলমান সুস্থ সমাজ কখনোই এগুলো সমর্থন করতে পারেনা।

১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস উদযাপন করে বর্তমান সমাজের তরুণ তরুণীরা সমাজ ও মুসলিম ঈমানদারদের মাঝে নোংরামি ছড়াচ্ছে তাদেরকে আল্লাহ তা'আলা কঠিন হুঁশিয়ারি করেছেন আল্লাহ বলেন-" নিশ্চয়ই যারা ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার অশ্লীলতা প্রসার করতে চাই তাদের জন্য ইকবাল ও পরকালের রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আল্লাহ জানেন তোমরা জানো না" সূরা নূর 

উপসংহারঃ ১৪ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, ভালোবাসা এক ধরনের মায়ার টান যা সারা জীবন অনুভব হয়। আর একটা দিনে কত নারী স্বেচ্ছায় ধর্ষিত হয়। ভালোবাসা সেটা নয় যেখানে ভালোবাসা প্রমাণ দিতে গিয়ে নিজের দেহ দান করতে হবে। যে আপনাকে ভালোবাসে সে আপনার দেহ চাইবে না আর যে আপনা্র দেহ চাইবে সে আপনাকে কখনো ভালোবাসে না। আপনি তার কাছে তার ভোগের বস্তু নারীরা মায়ের জাত আর তোমার সম্মান সবার উপরে তোমার মূল্যবান জিনিস হচ্ছে তোমার চরিত্র আর এই চরিত্রের কারণে তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ আবার তোমার চরিত্র দাগ পড়লে তুমি হতে পারো সর্ব নিকৃষ্ট, তাই নিজের চরিত্র কখনো দাগ লাগতে দিও না।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আর্টিকেলের মাঝে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url