বাচ্চাদের দাউদ হলে করণীয় চিকিৎসা ও প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের দাউদ হলে করণীয় চিকিৎসা ও প্রতিকার। দাউদ ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ জনিত প্রদাহ। ছত্রাক এক ধরনের অণুজীব যা মৃতজীবী ও পরজীবী। দাউদ সাধারণত সোয়াচে রোগ। স্যাতসেতে পরিবেশে এর বৃদ্ধি পায়।

আপনার শরীরে যদি প্রথমে একটি ছোট লাল গোটা বা ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয় বা চুলকাতে থাকে তবে আপনি বুঝবেন সেটা দাউদ। এটি অতি দ্রুত বৃত্তাকারে ছড়াতে থাকে ও অনেকটা চাকা বা রিংয়ের আকার ধারণ করে যার কিনারা গুলো কিছুটা উঁচু ও লাল রঙের হয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাকার পরিধি ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং অতিরিক্ত চুলকানোর কারণে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে।

ভূমিকাঃ

দাউদ যদি আপনার মাথায় হয় তবে আপনার মাথার চুল পড়ে যেতে পারে। আপনি যদি মনে করেন আপনার বাচ্চার দাউদ হয়েছে তবে যত দ্রুত সম্ভব চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। দাউদের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। সেজন্য আপনি যদি মনে করেন আপনার বাচ্চার কিছুটা উপশম হয়েছে তবে চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।

প্রথমত দেখা যায় বাচ্চাদের শরীরে যখন দাউদ এর সংক্রমণ দেখা যায় তখন বাচ্চারা বলতে পারে না যার কারণে সেটা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এবং যখন সেটা বোঝা যায় তখন কিছু কিছু অভিভাবকেরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মলম ব্যবহার এবং ওষুধ শ্রবণ করিয়ে থাকেন। 

যার কারণে বেশিরভাগ বাচ্চাদের চুলকানি কিছুটা কমে যায় কিন্তু এতে ছত্রাক আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ত্বক পড়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটে থাকে। সেজন্য বাচ্চাদের কিংবা প্রাপ্তবয়স্কদের যেকোনো বয়সের দাউদের চিকিৎসায় পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ শ্রবন করা উচিত নয়।

বাচ্চাদের দাউদ হলে করণীয়ঃ

আপনি যদি মনে করেন আপনার বাচ্চার দাউদ হয়েছে তবে যত দ্রুত সম্ভব একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেওয়া জরুরী। কারণ এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। সেজন্য আপনার পরিবারের যতগুলো সদস্য আছে সবগুলোরই চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। দাউদের চিকিৎসা কিছুটা দীর্ঘ মেয়াদী।

তাই এ রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে হবে আপনার বাচ্চার এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। আপনি যদি দেখেন আপনার বাচ্চার ওষুধ খেয়ে রোগ কিছুটা উপশম হয়েছে তবে চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয় কারণ চিকিৎসা বন্ধ করে দিলে পরবর্তীতে দাউদ আপনার বাচ্চার শরীরে আবার হতে পারে।

বাচ্চাদের দাউদ হলে চিকিৎসাঃ

দাউদের ওষুধ এখন খুব স্লো কাজ করে। এজন্য ধৈর্য ধরে টানা চার মাস দাউদের ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। আপনি আপনার বাচ্চার দাউদের চিকিৎসার জন্য নিম্নের ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে পারেন-

  • বেট - সিএল ক্রিম
  • লিউ লিজল ক্রিম
  • ক্লোটিমেজোল ক্রিম
  • ফাঙ্গি ডাল ক্রিম

এছাড়া পরিবারের সকল সদস্যদের সাবান ব্যবহার করতে হবে। কিটোকোনাজোল, লুলিকোনাজল সাবান পাওয়া যায়। এই সাবান গায়ে মাখার পর পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে। এ কাজটা শীতকালে সপ্তাহে তিনবার করতে পারেন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে পারেন।

বাচ্চাদের দাউদ হলে প্রতিকারঃ

  • বাচ্চাকে নিয়মিত গোসল করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • আপনার বাচ্চাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সুতি কাপড় পরিধান করানোর চেষ্টা করুন।
  • বাচ্চা যদি অতিরিক্ত ঘেমে যায় তবে অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঠান্ডা বা বাতাস চলাচল করে এমন পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন।
  • আপনার বাচ্চা যদি শরীর ঘেমে যায় তবে সেটা নরম কাপড় দিয়ে মুছে শুকানোর চেষ্টা করুন।
  • আপনার বাচ্চা পরিধান করে এমন কাপড় অন্য কোন বাচ্চাকে পড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
  • বাচ্চার তোয়ালে গামছা আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।

উপসংহারঃ বাচ্চাদের দাউদ হলে করণীয় চিকিৎসা ও প্রতিকার

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, বাচ্চা কিংবা বয়স্ক যেকোনো বয়সেরই যদি দাউদ হয়ে থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ শ্রবন করা উচিত নয়। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আমাদের আজকের আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই জানাবেন। যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url