তারাবির নামাজের নিয়ম, নিয়ত, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আসসালামু আলাইকুম, রমজান মাসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বাড়তি নেয়ামত হল নামাজে তারাবি। রমজানের সিয়ামের বিশেষ অনুসঙ্গ তারাবির সালাত পবিত্র রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে রাতে তারাবির নামাজ পড়া অত্যন্তর ফজিলত  যা আল্লাহর কাছে অতি পছন্দনীয়। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা চলুন নিম্নে জেনে নেই তারাবির নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে।

তারাবি শব্দটি একটি আরবি শব্দ এর আর আভিধানিক অর্থ -  হলো আরাম করা, বিশ্রাম করা, ধীরে ধীরে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ ইত্যাদি। ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা গুরুত্ব দিক থেকে ওয়াজিবের কাছাকাছি। আমাদের দেশে দুই ধরনের তারাবি প্রচলিত একটি হল সূরা তারাবি এবং অন্যটি হলো খতম তারাবি।

তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়তঃ

এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নত এর পর এবং ঈদের নামাজের আগে দুই রাকাত করে দশ সালামের যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয় তাকেই তারাবির নামাজ বলে। তারাবির নামাজের নিয়ত-" নাওয়াইতুয়ান উসারলিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রকাতাই সালাতে তারাবি সুন্নাতু রাসুলুল্লাহ হি তালালা মুতাও জিহান ইলাজিহাতিল শরিফাতি আল্লাহু আকবার"।

তারাবির নামাজ পড়ার বাংলা নিয়ত " আমি কেবলামুখী হয়ে দুই রাকাত তারাবির সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজের নিয়ত করছি আল্লাহু আকবার"( আপনি যদি তারাবির নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়েন তবে জামাতের স্থানে ঈমানের পেছনে পড়ছি এটা যোগ করতে হবে )"।

তারাবির নামাজ পড়ার দোয়া ও মোনাজাতঃ

দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সালা ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা আবার দুই রাকাত নামাজ পড়া এভাবে চার রাকাত আদায় করার পর একটু বিশ্রাম নেয়া। বিশ্রামের সময় তাসবিহ তাহলিল পড়া দোয়া দুরুদ ও জিকির আজগার করা। তারপর আবার দুই দুই রাকাত করে আলাদা আলাদা নিয়তে তারাবি আদায় করতে হয়।

"সুবহানাজিল মুলকি ওয়াল মালাকতি, সুবহানাজিল ইজ্জাতি ওয়ালা আসমাতি ওয়াল হাই বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল্লাহ মালিকিল হায় আল্লাহ জি লা ইয়ামাহু ওয়ালা ইয়ামুদ আবাদান আবাদ, সভ্যুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ"।

অনেকেই চার রাকাত পর পর মোনাজাত করে থাকেন। আবার অনেকে পুরো নামাজ শেষে মোনাজাত একসঙ্গে করেন। তবে নামাজ শেষ করে ভিতর পড়ে মোনাজাত করাই উওম। মোনাজাতের জন্য দেশব্যাপী মানুষের কাছে একটি দোয়া প্রাচীনকাল থেকেই ব্যাপকভাবে পড়া হয়। তারাবি নামাজের দোয়ার মত এ মোনাজাত নামাজ হওয়া বা না হওয়ার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। 

তবে মোনাজাতের শব্দগুলো অনেক চমৎকার। অনেকে তারাবির নামাজের মোনাজাতের জন্য এই দোয়াটি নিয়ে অবশ্য মনে করেন। ইস্তেগফার দুইটি বেশি বেশি পড়া জরুরী আর তা হলো- ১="আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওযইয়া, সা ফু, আ ন্নি"।২=" আল্লাহুম্মা আমতা রাব্বিলা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্তানি, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাস্টার তাতো আউযুবিকা মিনসার্রি মাসালাতো আবুউলাকা বেনী মাতিকা আলাইয়া, ওয়া অবুজাম্বি থাক ফিরলি ফা ইনাহু। লায়াগুবা ইল্লা আনতা"।

রমজান মাসে কুরআন হাদিসে বর্ণিত যে কোন দোয়ায় পড়া যাবে আলেমদের মধ্যে তারাবি নামাজের চার রাকাত পর বিশ্রামের সময়টিতে কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়া তওবা ইস্তেগফার গুলো পড়াই উত্তম।

উপসংহারঃ তারাবির নামাজের নিয়ম, নিয়ত, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, কোন কারণবশত যদি একদিন তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন তাহলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। নামাজ না পড়ার শাস্তির ভোগ করতে হবে। আমরা অনেকেই মনে করি তারাবির নামাজ আদায় না করলে রোজা হবে না অথচ এমন কোন কথা কুরআন হাদিসে নেই এটা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা।

কিন্তু আপনাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে।আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে তারাবির নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন। এবং এই তারাবির নামাজ আদায়ের মাধ্যমে জীবনের সব গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার তৌফিক দান করুন। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url