ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আপনা আপনাদের জানাবো ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। এই চুলকানি ছেলে-মেয়ে উভয়েরই হয়ে থাকে। সেজন্য আপনি এই চুলকানির আক্রমণ থেকে বাঁচতে মাঝে মাঝে গোপনাঙ্গে দই ব্যবহার করে পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে যদি কোন চুলকানি দেখা দেয় বা ফুসকুড়ি দেখা দেয় তবে আপনি জেনে রাখুন সেখানে যদি আপনি বেশি চুলকান তবে আরো খারাপ হতে পারে। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি হলে কি করনীয় এবং চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির কারণঃ
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির নানা রকম কারণ রয়েছে। যেমনঃ আটশত পোশাক পরা, সেভ করার ফলে যৌনাঙ্গে আঁচিল, টিউবিক চুলের গোড়ায় সংক্রমণ এবং অবিরাম সূর্যের এক্সপোজার ত্বকের ঘর্ষণ এবং ঘামের সাথে মিলিত। এই কারণগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি হতে পারে।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির লক্ষণঃ
মানসিক চাপ যৌনাঙ্গে চুলকানির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় পুরুষ কিংবা মহিলা উভয়েরই। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি আরো খারাপ বা বারবার যোনি পথে চুলকানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দাঁড়াও ত্বককে নমনীয় থাকার জন্য আদ্রতার প্রয়োজন হয় এবং আপনার বয়স যত বেশি হবে ত্বকের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখা ততই কঠিন হয়ে যাবে। চলুন নিম্নে জেনে নেই ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির লক্ষণগুলো-
- বিবর্ণ ত্বক লাল বেগুনি বা হলুদ রং
- এক জায়গায় ত্বক পুরু হয়ে যাওয়া
- প্রদাহ
- প্রস্রাব বা সহবাসের সময় ব্যথা
- প্রস্রাবের রাস্তায় চারপাশ এবং ভিতরে চুলকানি জ্বালাপোড়া এবং লাল ভাব
- প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া
- স্রাব
- প্রস্রাবের রাস্তা বা যৌনাঙ্গের অংশে ব্যথা
- হলুদ সবুজ রঙের এবং খুব তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
- সহবাসের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া
- সাদা গন্ধহীন যোনি স্রাব
- তলপেটে ব্যথা
- এছাড়াও যৌনাঙ্গে খেশপত্র এবং মাইক্রোপ্লাজমা জেনেটারিয়াম সংক্রমণের কারণে জনি পথে চুলকানি হয়
- কিছু যৌনবাহিত রোগ যেমন সিফিলিস গনোরিয়া এইডস ইত্যাদি ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির কারণ হতে পারে।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির চিকিৎসাঃ
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি এ রোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন গাইনোকলজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান। অবহেলা করবেন না বা লজ্জা পাবেন না কারণ এটি পরবর্তীতে আরো খারাপ কিছুর দিকে নিয়ে যেতে পারে আপনাকে। সেজন্য দেরি না করে অবশ্যই আপনি যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির চিকিৎসা গুলো।
- ছত্রাকের সংক্রমনের ক্ষেত্রে ছত্রাক রোধই ঔষধ যেমন-কেতোনা জল, মাইকোনা জল, ক্লোট্রি মাজল ,। ইত্যাদি ৩ থেকে ৫ দিনের জন্য খাওয়া যেতে পারে কিন্তু কিছু ওষুধ একদিনেও কাজ করে তাই আপনার দোষ কতদিনের জন্য তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। এছাড়াও এর সাথে ল্যাকটোবেশ ক্লাস ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।
- প্যারাসাইট সংক্রমনের ক্ষেত্রে মেট্রোনিডাজল গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়াও ভ্যাজাইনাল ক্লিন্ডা মাইসিন ক্রিম ( ক্লেন সিন ) বা তিনিডাজল যোনিতে লাগাতে হবে।
- ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ওষুধ শোভন করা উচিত। আপনি যে খান না কেন অন্তত পাঁচ থেকে সাতদিন খান।
- আপনি সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
- নিয়মিত গোসল করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- যোনিকে আদ্র ও ভেজা রাখবেন না।
- একাধিক ব্যক্তির সাথে সহবাস এড়িয়ে চলুন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- সহবাসের পর প্রস্রাব করুন।
- দই খেতে পারেন কারণ এতে ল্যাপটপেছিলাস নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা আপনার গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
- মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করুন।
- সুতির আত্মবাস বা প্যান্টি পড়ুন। সিন্থেটিক প্যান্টি পরবেন না।
- আপনি সর্বদা আপনার গোপনাঙ্গের পাশ পরিষ্কার রাখুন আর প্রস্রাব করার সময় বা টয়লেট যাওয়ার সময় এই নিয়ম অনুযায়ী সামনে থেকে পেছনে হাত দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে টয়লেট থেকে ব্যাকটেরিয়া যেন জনি পথে প্রবেশ না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- গোপনাঙ্গের পাশে রঙিন এবং ভারী গন্ধযুক্ত টয়লেট টিস্যু এবং সাবান ব্যবহার করবেন না।
- ভেজা কাপড়ে বেশিক্ষণ থাকবেন না। গোসল বা ব্যায়াম করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা কাপড় পরিবর্তন করুন। যারা সুইমিংপুলে সাঁতার কাটে তারাও ক্লোরিনের কারণে গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি অনুভব করতে পারে।
- পেভীষণ ক্রিম ব্যবহার করুনঃ পেভিসন ক্রিমের নাম অনেকে হয়তো শুনেছেন ছোটবেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে শরীরে যে কোন অংশে চুলকানোর সমস্যা হলে আমাদের মা-বাবা এই ক্রিম নিয়ে এসে আমাদের সেই স্থানে লাগিয়ে দিতেন এবং ক্ষতিকর ভাইরাসের বিরুদ্ধে খুব ভালোভাবে কাজ করে। আপনার শরীরে নির্ণয় যদি কোন যে কোন জায়গায় চুলকানি সমস্যা হলে স্থানটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন তারপর সেই স্থানে ক্রিমটি দিনে দুইবার লাগিয়ে নিন এভাবে ব্যবহার করলে আশা করা যায় তিন দিনের মধ্যেই আপনার চুলকানো কমে যাবে এবং ঘা থাকলে তার শুকিয়ে যাবে।
- নারকেল তেল ব্যবহারঃ চুলকানি সমস্যা হচ্ছে সেখানে নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করুন এতে করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বিস্তার ঘটাতে পারবে না এবং দ্রুত সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- নিমের পাতা ব্যবহার করুনঃ ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি সমস্যা আছে সেখানে নিমপাতা পেটে লাগাতে পারেন আমরা কমবেশি সবাই নিম পাতার গুণাবলী সম্পর্কে জানি।
- সুতির অন্তবাস পড়ার চেষ্টা করুনঃ বর্তমান বাজারে বিভিন্ন স্টাইলে বিভিন্ন প্লাস্টিকের আন্তর্জ বা আন্ডারওয়্যার কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু এ ধরনের আন্তর্জ গুলো পড়লে শরীরের নিম্নাংশে বাতাস ভালোভাবে যাওয়া আসা করতে পারে না যার কারণে এবং তার পরবর্তীতে সূর্যের ক্ষতিকর চুলকানোর সমস্যা দেখা দেয়।
- বেকিং সোডা দিয়ে গোসলঃ বেকিং পাউডার এক বালতি পানিতে এক কাপ মিশিয়ে ভালোভাবে গোসল করুন।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির প্রতিকারঃ
ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির কারণে এর উপর নির্ভর করে চিকিৎসা পরিবর্তিত হয়। আপনি যদি আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির প্রতিকার। এছাড়া আপনি যদি আগে কখনো গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি সমস্যায় না ভুগে থাকেন তবে ঔষধ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ শ্রবণ করতে হবে। চলুন নিম্নে জেনে নিয়ে ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির প্রতিকার গুলো-
- ইস্ট্রোজেন সাপোজিটরি গুলি পোস্টমোনোপজাল চুলকানির জন্য গোপনাঙ্গে পাশে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- স্টেরেট ক্রিম প্রদাহ কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি বেশি হলে আক্রান্ত স্থানে লিডোকেন জেল লাগাতে পারেন।
- চুলকানি কমাতে ফেনাডিন লোরা টারডিনো মতো অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণ করা যেতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ঔষধ শোবন করা উচিত। আপনি যে অ্যান্টিবায়োটিকই খান না কেন অন্তত ৫ থেকে ৭ দিন খান।
- প্যারাসাইট সংক্রমনের ক্ষেত্রে মেট্রোনিডাজোল গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়াও ভ্যাজাইনাল ক্লিন নামাইসিন ক্রিম বা টিনিডাজল যোনিতে লাগাতে হবে।
শেষ কথাঃ ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানির কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, শরীরের অন্যান্য অংশ আমরা যেভাবে প্রতিদিন পরিষ্কার করে থাকি সে তুলনায় গোপনাঙ্গ নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এছাড়া বাইরে বের হলে বাতাসের কারণে শরীরে অন্যান্য অংশে ঘাম শুকিয়ে গেলেও গোপনাঙ্গ ওইভাবে বাতাস লাগতে পারে না এবং ঘাম সহজে শুকাতে পারে না। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন রকমের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ হয় এবং ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি দেখা দেয়।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তবে আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এছাড়া আপনার কোন প্রশ্ন বা অভিযোগ থাকলে এই পোস্টে কমেন্ট করতে পারেন আপনার কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url