টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো টাইগার মুরগী পালন পদ্ধতি সম্পর্কে। টাইগার মুরগি হল এমন এক প্রকার মুরগি যা দেশে সোনালি মুরগির সাথে দ্রুত বর্ধনশীল জাতের মুরগির ক্রস করে তৈরি করা হয়েছে। টাইগার মুরগি কোন বিশেষ জাত নয় পৃথিবীতে যতটুকু ছাত্র আছে তার মধ্যে টাইগার মুরগী নামে কোন জাত নেই। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক টাইগার মুরগী পালন পদ্ধতি সম্পর্কে।

কালিকার মুরগি সম্পন্ন দেশী মুরগীর একটা হাইব্রিড সংস্করণ। এই মুরগি বৃদ্ধির হার তুলনামূলক বেশি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। আপনি যদি টাইগার মুরগী পালন করে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপন্ন করে বিক্রি করেন তবে অধিক লাভবান হতে পারবেন।

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ঃ

যেহেতু টাইগার মুরগি দ্রুত বর্ধনশীল সেহেতু এর খাদ্য প্রোটিন সোনালী মুরগীর চেয়ে বেশি থাকতে হবে। অনেক খামারি বয়লার মুরগির খাদ্যে খাওয়ায়। বয়লার খাদ্য খাওয়ালে উৎপাদন ভালো আসলেও খরচ বেশি হতে পারে। সেজন্য আপনি আপনার খরচ কমাতে ভালো কোম্পানির সোনালীর খাদ্য খাওয়াতে পারেন।

টাইগার মুরগিকে তবে খাদ্য নিজে প্রস্তুত করে খাওয়ালে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায় এ মুরগি পালন করে। আপনি যখন টাইগার মুরগির বাড়ন্তক মুরগির খাদ্য তৈরি করবেন তখন খেয়াল রাখবেন যেন প্রোটিন ১৮ % ও ফ্যাট ৫%এরকম না হয়।

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতিঃ

টাইগার মুরগিকে দেশি মুরগির মত ছেড়ে অথবা খামারে আবদ্ধ অবস্থায় পালন করতে পারবেন। খামারে আবদ্ধভাবে পালনের ক্ষেত্রে বয়লার ও সোনালী মুরগীর পালন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে আপনাকে। টাইগার মুরগি দুই মাসে দেড় কেজি ওজন হয়। সর্বোচ্চ ওজন মোরগ সাত থেকে আট কেজি মুরগি তিন থেকে চার পাঁচ কেজি। প্রতিদিন টাইগার মুরগির খাদ্য খায় ১৫০ গ্রাম। পাঁচ থেকে ছয় মাসে পরিপূর্ণ ডিম দিতে পারে টাইগার মুরগি। টাইগার মুরগী বছরে ১৫০ থেকে ২০০ টি ডিম দেয় । টাইগার মুরগির প্রতিটি বাচ্চার দাম হল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

শীতে টাইগার মুরগির ফার্মে বিশেষ সর্তকতাঃ

শীতে টাইগার মুরগির খামারে ভাইরাসজনিত রোগ বালাইয়ের পাদুর্ভাব বাড়ে তাই খামারীকে সতর্ক থাকতে হবে। খামারের জন্য হাট বাজার হতে সব রকম হাঁস মুরগি ক্রয় হতে বিরত থাকুন। খামারের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। সেডের ভিতর ও বাহিরে তিন অনুপাত ১ আকারে সুট এবং ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করুন। 

১ থেকে ২ দিন পর পর জীবানুন আসুক সেটের ভিতর এবং বাহিরে স্প্রে করুন। মেঝের লিটার সব সময় শুকনা ও ঝরঝরে রাখার চেষ্টা করুন। দুই সপ্তাহ পর পর প্রতি ১০ বর্গফুট জায়গার জন্য ২৫০ গ্রাম হারে শুকনা চুন গুড়া করে মুরগির লিটার উলটপালট করে মিশিয়ে দিন। শুরু হওয়ার আগেই রানীক্ষেত বা অন্যান্য ভ্যাকসিন প্রয়োগ করুন মুরগিকে। 

খামারে বন্যপ্রাণী যেন প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। মুরগির খামারের তাপমাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা করুন। ভেটেরিনারী ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া হুটহাট ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ হতে বিরত থাকুন।

উপসংহারঃ টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে খামারীদের কিছু তথ্য দিতে চাই- কেননা ইদানিং বাংলাদেশের খামারি ঘন টাইগার মুরগী পালন অধিক লাভজনক মনে করছেন। কিন্তু সবাইকে লাভ করতে পারছেন পারছেন না তাহলে সমস্যাটা কোথায় সমস্যা এই মুরগির বাচ্চার দামও খাবার ম্যানেজমেন্টের অর্থাৎ বাচ্চার দাম এত বেশি যে কম খরচে সর্বোচ্চ উৎপাদন অর্জন করতে না পারলে লাভ হবে কোথা থেকে। সেজন্য আমি বলতে চাই যে, যে কোন কাজ করার আগে ভেবে চিন্তে তার পরে করুন।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের সঙ্গে থেকে যারা এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url