ঈদুল আযহা ২০২৪ কত তারিখে

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা ঈদুল আযহা ২০২৪ কত তারিখে এটা সম্পর্কে যারা জানতে চেয়েছেন আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। কারণ পবিত্র ঈদের সময়ই জানা আমাদের জন্য খুব জরুরী আমাদের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রতিবছর দুটি আনন্দের উৎসব আল্লাহ পাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন ঈদুল আযহা ২০২৪ কত তারিখে।

ঈদুল আযহা ২০২৪ কত তারিখে

ঈদুল আযহার তারিখ নির্ধারণ করা হয় যেভাবেঃ 

হিজরী চন্দ্র বছরের গননা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার মাঝে দুই মাস দশ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সর্বোত্তর দিন হতে পারে উদাহরণ স্বরূপ ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতর হয়েছিল দুই মেয়ে এবং ঈদুল আযহা হয়েছিল ২৯ জুন এই দু ঈদের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৭০ দিন।

এটিকে হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ঈদুল আযহার কোরবানি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে চলে। এই তিন দিনকে বলা হয় "ইয়াওমুল আজহা" বা ঈদের দিন। ঈদুল আযহার কোরবানি করা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত।

ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ ২০২৪ঃ

সাধারণত প্রতিটা আরবি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয়ে থাকে সেই ক্যালেন্ডার থেকে আমরা ইংরেজি মাসের একটি তারিখ নির্ধারণ করে থাকি। সে তারিখ অনুযায়ী ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ হবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ১৬ জুন এবং বাংলাদেশে হবে ১৭ জুন সোমবার। তবে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে এই তারিখে সামান্য এগিয়ে পিছিয়ে যেতে পারে।

মুসলমানদের জীবনে কোরবানি এবং ঈদুল আযহার গুরুত্বঃ

প্রত্যেকটা মুসলমানের জীবনে একমাত্র চাওয়া হল মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। আর সেটা হল কোরবানি কারণ কোরবানি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের সম্পদ জানমাল ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা সবকিছু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে। এছাড়াও ঈদ উল আযহা এবং কোরবানির ঈদ মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব।

ঈদুল আযহা মুসলমানদের অন্তরের কৃপণতা ও হিংসা বিদ্বেষ দূর করে এবং তাদেরকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভক্তিশীল করে তোলে। এই ঈদুল আযহা মুসলমানদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে। হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম আল্লাহর নির্দেশে তার পুত্র হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম কে কোরবানি করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। 

কিন্তু আল্লাহর রহমতে শেষ মুহূর্তে হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলমানরা শিক্ষা লাভ করে এই ঘটনা থেকে আল্লাহর জন্য সবকিছুই ত্যাগ করা যাই। কোরবানি ঈদ পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম ও হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম এর অতুলনীয় অনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পূর্ণময় স্মৃতি বহন করে। এছাড়াও হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত ঈদ সম্পর্কে একটি হাদিসে এসেছে তিনি বলেন-

" রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন মদিনা বাসির দুটি উৎসবের দিবস ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন এ দুটি দিবস কি হিসেবে তোমরা এদের উৎসব পালন করো তারা বলল জাহিলিয়াত তথা ইসলাম পূর্ব যুগে আমরা এ দিনটিতে উৎসব পালন করতাম। 

তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বললেন আল্লাহ তোমাদেরকে দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন যেগুলো হল ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর" সুনানে আবু দাউদ হাদিস ১১৭৪, সুনানে নাসায়ে হাদিস ১৫৫৬, মুসনাদে আহমদ হাদিস ১২০০৬।

ঈদুল আযহার কোরবানি করার জন্য প্রয়োজনীয় সর্তাবলিঃ

বিরক্ত কোরবানি করবে তার জন্য ঈদুল আযহার দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে ঈদুল আযহার দিন সূর্যাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোরবানি করা বৈধ। এবং সে ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে ১২ মন রুপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ। এছাড়াও যে ব্যক্তি কোরবানি করবে তার কিছু প্রয়োজনীয় সত্তা বলে রয়েছে যেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-

  • মুসলমান হওয়া
  • বালেগ হওয়া
  • পূর্ণবয়স্ক হওয়া
  • স্বাধীন হওয়া
  • সুস্থ হওয়া
  • নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া।

ঈদুল আযহার শিক্ষাঃ

ঈদুল আযহা  ত্যাগ ও সমর্পণের শিক্ষা দেয়। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে ঈদুল আযহা  পালন করা হয়। কোরবানির মাধ্যমে আমরা দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করি। ঈদের আনন্দ সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করি। ঈদুল আযহা মুসলমানদের ত্যাগ সমর্থন কৃতজ্ঞতা সহানুভূতি এবং সামাজিক বন্ধনের শিক্ষা দেয়। ঈদের এই শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করা উচিত।

শেষ কথাঃ ঈদুল আযহা ২০২৪ কত তারিখে

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, ঈদুল আযহা একটি ধর্মীয় উৎসব এই উৎসব কেবল ধর্মীয় রীতি নীতি পালনের মাধ্যমেই নয় বরং সকলের প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যমেও উদযাপন করা উচিত। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। 

আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এ আর্টিকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url