ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় | Creatinine
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ, কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে, ক্রিয়েটিনিন কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান। তাই ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় জানতে হলে আপনাকে এই লেখাটি ধৈর্য্য সহকারে পড়তে হবে।
ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় |
ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে এই লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আশা করি, ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পারবেন।
ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় - ৪ টি
ক্রিয়েটিনিন কমানোর ৪ টি উপায় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সাধারণত যেসব খাবার ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়ায়, সেইসব খাবার খাওয়া যাবেনা। আর যেসব খাবর খেলে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ কমে সে সব খাবর খেতে হবে। ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা কমে এ রকম খাবার তালিকা দেওয়া হল:
১। যেসব খাবার ফাইবার যুক্ত সে সব খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। ফলের মধ্যে আপেল, কমলা, পেয়ারা, আনারস, বেল , তরমুজ খেতে হবে।
২। শাকসবজির মধ্যে লাউ, বেগুন , পটল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, শসা, ফুলকপি, ব্রকলি, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা কলা, করোল্লা ও লালশাক খাওয়া যায়।
৩। প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে , দৈনিক ৮ – ১০ গ্লাস অর্থাৎ ২ – ৩ লিটার পানি করতে হবে।
৪। শর্করা জাতীয় খাবার যেমন - ভাত, রুটি, নুডুলস খেতে হবে। সাথে ডিমের সাদা অংশ , মাছ ও মুরগির মাংস ( চামড়া ছাড়া ) খেতে হবে। তাছাড়া দারুচিনি ক্রিয়েটিনিনের লেভেল কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, তাই দারুচিনি খেলে এই মাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি আপনারা ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।
২। শাকসবজির মধ্যে লাউ, বেগুন , পটল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, শসা, ফুলকপি, ব্রকলি, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা কলা, করোল্লা ও লালশাক খাওয়া যায়।
৩। প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে , দৈনিক ৮ – ১০ গ্লাস অর্থাৎ ২ – ৩ লিটার পানি করতে হবে।
৪। শর্করা জাতীয় খাবার যেমন - ভাত, রুটি, নুডুলস খেতে হবে। সাথে ডিমের সাদা অংশ , মাছ ও মুরগির মাংস ( চামড়া ছাড়া ) খেতে হবে। তাছাড়া দারুচিনি ক্রিয়েটিনিনের লেভেল কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, তাই দারুচিনি খেলে এই মাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি আপনারা ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।
ক্রিয়েটিনিন কি: ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়
সিরাম ক্রিয়েটিনিন হল মানব দেহের মাংস পেশির ভাঙ্গন এবং খাবারে প্রোটিন হজমের ফলে তৈরি নাইট্রোজেন ঘটিত একটি প্রাকৃতিক ক্ষতিকর রাসায়নিক বর্জ্য পদার্থ ,যা কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। ক্রিয়েটিনিন ( Creatinine ) লিভারে তৈরি হয়। বিভিন্ন কারণে কিডনি যখন স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে না পারে, তখন ক্রিয়েটিনিন শরীরে ক্ষতি করে।
ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণঃ
কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সাথে সাথে রক্তে ইউরিয়া, পটাশিয়াম ও ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার কারণ হল কিডনি অকেজো বা বিকল হয়ে যাওয়া। আর কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো হল –
- · পা ও পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়া।
- চোখের নিচ ফুলে যাওয়া ।
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া ।
- প্রস্রাবে অতিরিক্ত প্রোটিন যাওয়া।
- প্রসাবে জ্বালা পোড়া করা , রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব হওয়া ।
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা ক্ষেত্র বিশেষে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া।
- শরীর ফুলে যাওয়া।
আরো পড়ুনঃ হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া ।
কারো মধ্যে যদি এই লক্ষণগুলো দেখা যায়, তবে ধরে নিতে হবে সেই ব্যাক্তি কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং তার রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেছে। তখন তাকে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কিডনি অকেজো বা বিকল হওয়ার কারণ:
কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ব্যথা নাশক ঔষধ , মারাত্মক ডায়রিয়া, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ , নেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনিতে পাথর ইত্যাদি কারণে কিডনি বিকল হতে পারে। আবার ডায়রিয়া বা বমি না হলেও অযথা স্যালাইন খেলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
মানব দেহে স্বাভাবিক ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ:
সাধারণত বয়স ও জেন্ডার ভেদে আমাদের দেহে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। নিচে ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক পরিমাণ বা মাত্রা দেওয়া হলোঃ
পুরুষঃ ০.৬ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
মহিলাঃ ০.৫ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
টিন এজারঃ ০.৫ থেকে ১.০০ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
শিশুঃ ০.৩ থেকে ০.৭ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার ।
পুরুষঃ ০.৬ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
মহিলাঃ ০.৫ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
টিন এজারঃ ০.৫ থেকে ১.০০ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার
শিশুঃ ০.৩ থেকে ০.৭ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার ।
আরো পড়ুনঃ প্রস্রাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
ক্রিয়েটিনিন কত হলে ডায়ালাইসিস ( Dialysis ) করতে হয়: ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়
রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ বা মাত্রা ২.০ মিলিগ্রাম / ডেসিলিটার বা তার বেশি হলে কিডনি অকেজো বা নষ্ট হয়ে গেছে ধরে নেওয়া হয় এবং ডায়ালাইসিস করতে হয়। কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো বা বিকল হওয়ার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে মেশিনের মাধ্যমে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস ।
কিডনি বিকল হলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় এবং রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন রক্তের ক্ষতিকর বর্জ্য দ্রব্যাদি অপসারণের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর রোগীকে ডায়ালাইসিস করানো হয়। এই পর্যায়ে রোগীর জীবন রক্ষার জন্য ডায়ালাইসিস করতে হয় অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়। এটি একটি কষ্ট সাধ্য, সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া।
আরো পড়ুনঃ লিভার সুস্থ রাখে যে সব খাবারে।
কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে
প্রিয় পাঠক, কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে তা নিচের লেখাটি পড়লে বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পারবেন।
যেসব খাবার খেলে আমাদের রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বেড়ে যায় সেইগুলো বর্ণনা করা হলঃ
১। লাল মাংস বিশেষ করে গরুর মাংস, খাসির মাংস সবচেয়ে ক্ষতিকর ।
২। ফলমূলের মধ্যে পাকা কলা, নারিকেল, ডালিম, আম , কাঁঠাল, বড়ই, খেজুর, ডাবের পানি ও বাদাম এড়িয়ে চলতে হবে।
৩। শাক সবজির মধ্যে আলু, কচু, শিম, বরবটি, ঢেঁড়স, পুই শাক, পালং শাক, ধনে পাতা এড়িয়ে চলতে হবে ।
৪। এলকোহল বা মদ, অতিরিক্ত লবণ, প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চ মাত্রার ফসফরাস ও সোডিয়াম থাকার কারণে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়, তাই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। NSAIDs ( Non-Steroidal Anti Inflammatory Drugs ) জাতীয় Pain Killer ঔষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবেনা এবং অবশ্যই ধূমপান করা যাবেনা।
যেসব খাবার খেলে আমাদের রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বেড়ে যায় সেইগুলো বর্ণনা করা হলঃ
১। লাল মাংস বিশেষ করে গরুর মাংস, খাসির মাংস সবচেয়ে ক্ষতিকর ।
২। ফলমূলের মধ্যে পাকা কলা, নারিকেল, ডালিম, আম , কাঁঠাল, বড়ই, খেজুর, ডাবের পানি ও বাদাম এড়িয়ে চলতে হবে।
৩। শাক সবজির মধ্যে আলু, কচু, শিম, বরবটি, ঢেঁড়স, পুই শাক, পালং শাক, ধনে পাতা এড়িয়ে চলতে হবে ।
৪। এলকোহল বা মদ, অতিরিক্ত লবণ, প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চ মাত্রার ফসফরাস ও সোডিয়াম থাকার কারণে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়, তাই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। NSAIDs ( Non-Steroidal Anti Inflammatory Drugs ) জাতীয় Pain Killer ঔষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবেনা এবং অবশ্যই ধূমপান করা যাবেনা।
৫। ডায়রিয়া বা বমি হওয়া বাদে স্যালাইন খাওয়া যাবেনা। এমন কি সঠিক নিয়ম ছাড়া স্যালাইন খাওয়াও যাবেনা। এতে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এবং িকডনি বিকল হতে পারে।
আশা করি, কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে তা আপনারা বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ ক্রিয়েটিনিন - উইকিপিডিয়া
ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় | ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ | ক্রিয়েটিনিন কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় | কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে | ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলে করণীয় | ক্রিয়েটিনিন কমানোর ওষুধ | ক্রিয়েটিনিন কমানোর ঘরোয়া উপায়
আরো পড়ুনঃ দ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ।
শেষ কথা: ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায়
আমাদের সবার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হবে এবং নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে । টাটকা ফলমূল শাকসবজি খেতে হবে, এলকোহল ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে। ভারি ব্যায়াম করা যাবেনা। তবে হাল্কা ব্যায়াম যেমন – হাটা হাটি করতে হবে। স্বাভাবিক খাবার দাবার খেলে শরীরে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা কম থাকবে এবং আমাদের কিডনি ভাল থাকবে। আর কিডনি ভাল থাকলে আমাদের শরীরও ভাল থাকবে। আর শরীর ভাল থাকলে আমরা সুস্থ ও সুন্দর থাকতে পারব।
আশা করি, তথ্যবহুল ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে এবং অনেকেই উপকৃত হবেন। আর এই লেখাটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তবে আপনার বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন। আপনাদের আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন। ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।
এইরকম আরও ভাল ভাল লেখা পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।।
আশা করি, তথ্যবহুল ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে এবং অনেকেই উপকৃত হবেন। আর এই লেখাটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তবে আপনার বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন। আপনাদের আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন। ক্রিয়েটিনিন কমানোর উপায় লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।
এইরকম আরও ভাল ভাল লেখা পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url