হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকারআসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, হঠাৎ করে কি হাতের আঙ্গুল অবশ লাগছে? এমনটা কিন্তু আমাদের অনেকের সাথে ঘটে থাকে। এর নানা রকম কারণ থাকতে পারে। অনেক সময় আঘাত পাওয়ার ফলে আমাদের হাতের রক্তনালী দিয়ে স্বাভাবিকভাবে রক্ত প্রবাহ হয় না, তখন আঙ্গুল অবশ হয়ে যায়। তাহলে হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার লেখাটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে করতে হবে।

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

তবে হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণটি যদি আপনার সাথে প্রতিনিয়তই হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনাকে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা জরুরি। তার আগে আপনি আমাদের আজকের হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন। 

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণঃ

হাতের আঙ্গুল অবশ নানা কারণে হয়ে থাকে। হাত অবশ অনুভব করা অনেক সময় অপ্রীতিকর হতে পারে। এমনকি সঠিকভাবে আপনার হাত ব্যবহার করার ক্ষমতা সীমিত করে দিতে পারে। আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্কের ব্যাধি, মেরুদন্ডের সমস্যা, স্নায়ু রোগ এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। 

আরো পড়ুন: 

এছাড়াও হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ সম্পর্কে আমাদের আজকের হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার আর্টিকেলে আমরা আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাবো। চলুন নিম্নে জেনে নেই হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণগুলো-

কার্পাল টানেল সিনড্রোমঃ

আপনার কব্জির কাছে একটি অংশকে কার্পাল টানেল বলে। আপনার হাত ও আঙ্গুল কে পরিচালনার করে এমন অনেক স্নায়ু এই চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে। আপনি যদি অনেকক্ষণ ধরে কম্পিউটারে কাজ করেন, বাট টাইপ করেন সে ক্ষেত্রে আপনার এই কার্পাল টানেলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর্থ্রাইটিসের কারণেও এমনটা হয় এতে আপনার স্নায়ুতে সমস্যা সৃষ্টি করে আঙুলে অবশ ভাব তৈরি করে এবং হাত অবশ করে ফেলে। কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম যদি আপনার হয়ে থাকে তবে নিম্নে লক্ষণগুলো আপনার শরীরে দেখতে পাবেন-
  • হাতে বা আঙুলে ব্যথা
  • হাত বা আঙুলে শিরশির করা
  • হাতের মুঠো দুর্বল হয়ে যাওয়া
  • হাত থেকে জিনিসপাতি পড়ে যাওয়া
উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো যদি আপনার দেখা দেয় তবে আপনি বুঝবেন এগুলো কার্পাল টানেল সিনড্রেম এর কাজ।

দীর্ঘক্ষণ টাইপ করা:

দীর্ঘক্ষণ টাইপ করার মাধ্যমে হাতের আঙ্গুলের স্নায়ুর চারপাশের টিস্যুগুলো স্নায়ুকে প্রসারিত এবং সংকুচিত করতে পারে। হাতের চাপের কারণে হাতের আঙ্গুল অবশ, অস্বস্তি এবং দুর্বল হতে পারে। 
 
 এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে আপনাকে অনেকক্ষণ ধরে টাইপ করার ফাঁকে হাত একটু সামনে পেছনে করতে হবে। মাউস ব্যবহারের সময় হাতের মুঠো বাঁকিয়ে না রেখে সমান করে রাখুন। চিকিৎসকরা আপনাকে রিস্ট ব্রেস বা কব্জি বেল্ট পরতে বলতে পারেন। দরকার হলে এই পদ্ধতিও ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার কার্পাল  টানেলের  ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে না।

কমপ্রেসড নার্ভসঃ

আপনার শরীরে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণেও আঙ্গুল অবশ দেখা দিতে পারে। এমনই আরেকটি অসুস্থতা হলো কমপ্রেসড নার্ভস। স্নায়ুর আকার বৃদ্ধি পাওয়া আঘাত পাওয়া রক্তনালী বড় হয়ে যাওয়া এবং সিস্টেম এর কারণে এমনটা হতে পারে।

স্ট্রোক: 

মস্তিষ্কে যদি পর্যাপ্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ না হয় তবে হাতের আঙ্গুল অবশ হতে পারে। বেশিরভাগ সময় হাতের আঙ্গুল অবশ জরুরি অবস্থা নির্দেশ করে না, যা হোক কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি একটি স্ট্রোকের ইঙ্গিত হতে পারে। আর স্ট্রোকের প্রথম লক্ষণ হল হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া। সুতরাং স্ট্রোকের কারণে আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ হয়ে যেতে পারে।

ভিটামিন ও খনিজ ঘাটতি:

বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ ঘাটতির কারণে হাত পা ঝি ঝি করতে পারে বা অবশ হতে পারে। সাধারণত ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি সমস্যা হয় এবং হাতের আঙ্গুল অবশ হতে পারে। পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি একটি বিশেষ অবস্থা যখন হাত পায়ের আঙ্গুলে থাকা নার্ভ গুলো ঠিক মত কাজ করে না, এর ফলে কোন অনুভূতি হয় না। এর ফলে হাতের আঙ্গুল অবশ হয়ে যায়। কারণ ভিটামিন বি ১২ এবং অন্যান্য খনিজ আপনার নার্ভের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। অতএব ভিটামিন বি ১২ এবং ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম এর মত খনিজ আপনার হাতের আঙ্গুলের অবশ সারাতে অবদান রাখবে বলা হয়।

স্লিপড সারভিকাল ডিস্ক:

আপনার মেরুদন্ডের হাট বা কশেরুকার মধ্যবর্তী কুশন স্পেসকে সাধারণত ডিস্ক বলা হয়। আপনার মেরুদন্ডের কলামের গঠনে পরিবর্তন হতে পারে। কাজেই আপনার মেরুদন্ডের নার্ভগুলো সংকুচিত হতে পারে এবং হাড়ের অবনতির সাথে নার্ভের চারপাশে ফুলে যাওয়া, যা উভয় হাতের আঙ্গুল অবশ হতে পারে।

লুপাস:

লুপাস হল একটি অটো ইমিউন সিস্টেম। এটি নির্দেশ করে যে আপনার শরীর তার নিজস্ব টিস্যু এবং অঙ্গ আক্রমণ করছে। এটি ফুসফুস, হার্ট, জয়েন্ট সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যু গুলোকে প্রভাবিত করে। লক্ষণগুলো উঠানামা করে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকেনা। এটি আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ গুলোর মধ্যে একটি হতে পারে।

অ্যালকোহল সেবন:

অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে হাত পা অবশ হতে পারে। দেখা গেছে, দীর্ঘদিন অ্যালকোহল সেবনের ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় এবং শরীরের নার্ভগুলো কিছুটা অকেজো হয়ে যায়। এভাবেই হাতের আঙ্গুল অবশ হতে পারে।

থাইরয়েড ডিসঅর্ডার:

ঘাড়ের থাইরয়েড গ্রন্থি হরমোন তৈরি করে, যা আপনার শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সহায়তা করে। যখন আপনার থাইরয়েড পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করে না, তখন এ অবস্থাকে হাইপো থাইরয়েডডিজম বা আন্ডার একটিভ থাইরয়েড বলে। এটি পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির কারণ হতে পারে। সময় মত চিকিৎসা না করলে আপনার হাত পা অবশ ও দুর্বল হতে পারে। 

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি:

যাদের ডায়াবেটিস রোগ রয়েছে তাদের অর্ধেকেরই এই সমস্যা হয়। কারণ এতে নার্ভ গুলো নষ্ট হয়ে যায়, যা থেকে হাতে ব্যথা হয় এবং পরে অবশ অনুভূত হয়। এমনকি হাত দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সুতরাং হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার এটি একটি কারণ।

বিছানায় শোওয়া:

অনেকে ঘুমানোর সময় হাত ভাঁজ করে শুতে অভ্যস্ত। তাতে ঘুম থেকে উঠার পর আঙ্গুল যেন কাজ করতে চায়না - এরকম অনুভব করে এবং এটি হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ। তাই সঠিক নিয়মে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার রোগ নির্ণয়:

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ হিসেবে প্রথমে ই আপনার রোগ নির্ণয় করা জরুরী। এজন্য চিকিৎসক গণ আপনার শরীরের ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। যেমন- আপনার হাতের আঙ্গুলে কখনো তীব্র আঘাত লেগেছিল কিনা, একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ নিউরোপ্যাথি হয়েছে কিনা, আপনার মেরুদন্ডের কোন সমস্যা হয়েছে কিনা, আপনার মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহিত জনিত কোন সমস্যা আছে কিনা, ভিটামিন ও খনিজ সম্পর্কিত কোন অভাব রয়েছে কিনা ইত্যাদি।
তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অন্তর্নিহিত কারণ নির্ধারণের জন্য কিছু ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন। হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার জন্য কিছু স্ট্যান্ডার্ড ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে-
  • এমআরআই  ( MRI )
  • এক্স-রে 
  • আল্ট্রা সাউন্ড 
  • লাম্বার পাংচার 
  • রক্ত পরীক্ষা 
  • ইলেকট্রো মাইওগ্রাফি ( Electromyography ) ইত্যাদি।
উপরের পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ জানা যেতে পারে।

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার চিকিৎসাঃ

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার চিকিৎসার জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড এমবিবিএস ( নিউরোলজি )  বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ব্যথা নাশক জাতীয় মেডিসিন সেবন করতে পারেন। 

ঔষধ:

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঔষধ সেবন সাধারণত হাতের আঙ্গুলের অবশ ভাব দূর করতে পারে। যেকোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। হাতের আঙ্গুল ও অবশ চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে-
  •  এন্টি ডিপ্রেশন 
  • পেইনকিলার বা ব্যথা নাশক 
  • এন্টিকোগুল্যান্ড 
  • পেশি শিথিলকারি বা নিউরোপ্যাথি পেইন কিলার।
খাবার বা পথ্য:

 যে অবস্থার কারণে হাতের আঙ্গুল অবশ সৃষ্টি হয় সেগুলো খাদ্য তালিকা সামঞ্জস্য করে চিকিৎসা করা যেতে পারে, এটি হতে পারে ভিটামিন বা খনিজ গ্রহণ। আপনাকে পুষ্টিকর খাবার, সুষম খাবার নিয়মিত খেতে হবে। কিছু লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে, যেমন অতিরিক্ত অ্যালকোহল, মদ পান, ধূমপান ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। এসব অবস্থার উন্নতি করতে পারে আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ।

সার্জারি:

যদিও এটি খুব কম চিকিৎসকের পরামর্শ। তারপরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। সার্জারি বা অস্ত্রোপচার অন্তর্নিহিত অবস্থার উপর নির্ভর করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারগণ সার্ভিক্যাল মেরুদন্ডের অস্ত্রোপচারের সুপারিশ করতে পারেন, যদি তারা সন্দেহ করেন যে মেরুদন্ডের সমস্যাগুলোর কারণেই হাতের আঙ্গুল অবশ হচ্ছে।

বিকল্প চিকিৎসা:

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার জন্য অনেকগুলো বিকল্প থেরাপি আছে। আপনার অসুস্থতার ওপর নির্ভর করে আপনি কি কি থেরাপি পেতে পারেন। যেমন-

  • বোটক্স ইঞ্জেকশন 
  • মালিশের মাধ্যমে চিকিৎসা 
  • আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি 
  • জ্ঞানীয় আচরণ থেরাপি।
যদি হাতের আঙ্গুল অবশ কয়েক ঘন্টার মধ্যে নিজে থেকে চলে না যায় বা এটি আপনার শরীরে অন্য অংশে প্রসারিত হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি কোন আঘাত বা অসুস্থতা এই অবশতা সৃষ্টি করে তাহলে আপনার জরুরিভাবে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত। হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার চিকিৎসা করাতে যদি কোন গড়ি মসি বা অবহেলা করেন বা কাল ক্ষেপণ করেন, তাহলে ভবিষ্যতে এটি তীব্র আকার ধারণ করে জীবনের হুমকি হতে পারে। 

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার প্রতিকারঃ

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার আগে প্রতিকার করা বেশি জরুরী। যে সব কারণে হাতের আঙ্গুল অবশ হয় সে সব বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে।
হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার সমস্যা সারিয়ে তুলতে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন যেমন-

ব্যথা বা অবশ হওয়া স্থানে বরফ বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা: 

অবশ বা ব্যথা হওয়ার জায়গায় একটু মোটা ধরনের এক খণ্ড নরম সুতি কাপড়ে কয়েক টুকরা বরফ টুকরো জড়িয়ে ধরলে আরাম পাওয়া যায়। ঠান্ডা পানিতে হাতের কব্জি ১০ মিনিটের মতো ডুবিয়ে রাখলেও ব্যথা কমে আসতে পারে। এছাড়া এভাবে ৫-৬ মিনিট ধরে শেঁক দিলেও আরাম পাওয়া যায়।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া:

হাতের আঙ্গুল অবশ হয়ে গেলে সেই হাত দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। হাত দুটোকে যত সম্ভব বিশ্রাম দেওয়ার চেষ্টা করুন। একটা বালিশের উপরে হাত রেখে হাতকে বিশ্রাম দিতে পারেন। এভাবে করলে হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া অনেকটাই দূর হয়।

বিশ্রামের সময় হাতের পজিশন ঠিক রাখা:

কাজ করার সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়ে আপনি আপনার হাত দুটোকে উঁচু করে বা উপরে তুলে রাখতে পারেন। এতে আপনার হাত তুলে থাকলে সেই হাত ফোলা কমে আসবে। যেই হাতের  আঙ্গুল অবশ সে হাতের ওপর কাজ হয়ে শোয়া থেকে বিরত থাকুন এবং ঘুমানোর সময় হাতের উপর ভার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

হাতে ব্রেইস বা বেল্ট পরা:

আপনার হাতের আঙ্গুল যদি বেশি অবশ মনে করেন তাহলে ঘুমানোর সময় হাতের কব্জিতে ব্রেইস বা বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন। এসব হাতের কব্জির ব্রেইস বিভিন্ন ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়।

কাজের সময়ে সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলা:

কম্পিউটার ডেস্কে অনেকক্ষণ ধরে বসে থেকে কাজ করলে, চেষ্টা করুন হাতের অবস্থান ঠিক রাখতে। টাইপ করার সময় খেয়াল করুন হাতের অবস্থান যেন সোজা থাকে এবং হাতের কনুই যেন কিছুটা উঁচুতে থাকে। এরকম করলে হাতে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে এবং আপনার হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া অনেকটা যাবে।

হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা:

সারাদিন কাজের ফাঁকে বা অবসরে দুই হাত স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম করে নিতে পারেন। এটা হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে। হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য কাজের ধরন বা ভঙ্গি কিছুটা বদলে ফেলুন।

লবণ খাওয়া কমানো:

প্রতিদিনের খাবারে লবণ পরিমিত রাখার চেষ্টা করুন। কারণ অতিরিক্ত লবণ খাওয়া শরীর হাত-পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

উপরের পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করলে হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়া এড়াতে আঙ্গুলের ব্যায়াম-

  • বাহু সহ পুরো হাতকে উপরের দিকে আরামদায়ক অবস্থানে রাখুন। 
  • এরপর আঙ্গুল গুলো মুষ্টিবদ্ধ করুন। 
  • এভাবে দশবার মুষ্টি বাঁধন এবং খুলুন। 
  • পরবর্তীতে হাতের ভেতরে নরম রাবারের বল নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করার অভ্যাস করুন।

শেষ কথাঃ হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক, আশা করি হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়াকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আজকের হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন যেন তারাও উপকৃত হতে পারেন। হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার সবার মেনে চলা উচিৎ। হাতের আঙ্গুল অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url