কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা - ১০টি বিস্তারিত
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা - ১০টি বিস্তারিতটানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয় বিস্তারিত জেনে নিন কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা, মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা, কাঁচা হলুদ খেলে কি ক্ষতি হয় - আপনি কি জানতে চান? কাঁচা হলুদের গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কাঁচা-হলুদের-উপকারিতা-অপকারিতা। |
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা শিরোনামে আজকে আমরা হলুদের গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেব। হলুদ গাছের প্রাচীনতম উৎস দক্ষিণ এশিয়ায় মনে করা হয়। হলুদ সাধারণত রান্নায় মসলা হিসেবে এবং ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অসাধারণ গুনাগুনের জন্য হলুদকে অনেক সময় অলৌকিক ভেষজ বলা হয়ে থাকে।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা গুণাগুণ বিচার বিশ্লেষণ করলে এর উপকারিতাই বেশি পাওয়া যায়। প্রাচীন শাস্ত্র মতে, হলুদ একটি মহৌষধ। হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলীর কারণে এটি মরণঘাতী ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ করে। মুখে কাঁচা হলুদ মাখলে চেহারা উজ্জ্বল হয় প্রতিদিন সকালে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেলে নানা রকম অসুখ-বিসুখ দূর হয়ে যায়। আবার হলুদের ভুল ব্যবহারের কারণে এটি অনেকের ক্ষতির কারণ হয়েও দাঁড়ায়। তো চলুন বন্ধুরা কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা
কাঁচা হলুদে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার চিনি, প্রোটিন, রেসিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-সি এবং কারকিউমিন ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ, যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচায়। হলুদ আমরা সাধারণত রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কাঁচা হলুদের কিছু কিছু উপকারিতা গুণ আছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। তো চলুন কাঁচা হলুদের উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জেনে নিই।
- কাঁচা হলুদ ত্বকের বয়স কমাতে
- কাঁচা হলুদ ডায়াবেটিস কমাতে
- কাঁচা হলুদ হাড়ের ক্ষয় রোধে
- কাঁচা হলুদ খাদ্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে
- কাঁচা হলুদ হাড় জোড়া লাগাতে
- কাঁচা হলুদ খাদ্য পরিপাকে
- কাঁচা হলুদ ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে
- কাঁচা হলুদ ক্যান্সার নিরাময়ে
- কাঁচা হলুদ আর্থ্রাইটিস থেকে বাঁচাতে
- কাঁচা হলুদ দাঁতের ক্ষয় রোধে
- কাঁচা হলুদ স্ট্রোকের পরে
আরো পড়ুন:
কাঁচা হলুদ ত্বকের বয়স কমাতে
কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ ত্বককে বয়সের ছাপ থেকে রক্ষা করে। বহু প্রাচীনকাল থেকেই কাঁচা হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষা করতে এবং ত্বকের বয়স কমাতে সাহায্য করে। এলোভেরার সাথে কাঁচা হলুদ মিশ্রণ করে ব্যবহার করলে মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক সুস্থ সতেজ থাকে। তাছাড়া কাঁচা হলুদের কিছু উপাদান সানবার্ন, দাগ, রিংকেল ইত্যাদি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। তাই কিছু কিছু ক্রিমের প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করা হয়।
কাঁচা হলুদ ডায়াবেটিস কমাতে
কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন অ্যান্টি ডায়াবেটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং রক্তে কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আমরা অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নামক হরমোন পেয়ে থাকি যা আমাদের ডায়াবেটিস হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই কাঁচা হলুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অগ্নাশয়কে সুস্থ রাখে।
কাঁচা হলুদ খাদ্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে
আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তার সাথে কিছু ক্ষতিকারক জীবাণু থেকে যেতে পারে। এই কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়া খাবারে ব্যবহার করার ফলে সে জীবাণু ধ্বংস করে আমাদের খাদ্যনালীকে ক্ষতিকারক সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিনের অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় তা বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে আমাদের খাদ্যনালীকে রক্ষা করে। এভাবে কাঁচা হলুদ খাদ্য সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে প্রতিনিয়ত।
কাঁচা হলুদ হাড়জোড়া লাগাতে
কাঁচা হলুদ বহু প্রাচীনকাল থেকেই হাড়ের নানা রকম রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাঁচা হলুদ একটি প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক কারো হাত পা মচকে গেলে আমরা সাধারণত চুন আর হলুদ মিশ্রণ করে একসাথে লাগিয়ে দেই। তাছাড়া ভাঙ্গা হাড়ের জায়গায় কাঁচা হলুদ বেটে পেস্ট করে লাগালে ভালো উপকার পাওয়া যায়। হলুদের আন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ ব্যথা এবং প্রদাহকে কমায়। তাছাড়া কাঁচা হলুদ হাড়ের টিস্যু গুলোকে রক্ষা করে এবং ভাঙ্গা আর জোড়া লাগাতে সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ খাদ্য পরিপাকে
কাঁচা হলুদে গ্যাস্ট্রো প্রটেকটিভ কিছু গুনাগুন থাকার কারণে খাবার পরিপাকে এটি বিশাল ভূমিকা রাখে। ফলে হজমের গোলমাল, গ্যাস-এসিডিটির সমস্যার ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ খুবই উপকারী। তাছাড়া ডায়রিয়া হলে এক চা চামচ পরিমাণ কাঁচা হলুদের রস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে জীবাণু ধ্বংস হয়ে ডায়রিয়া নিরাময় হয়ে যায়।
কাঁচা হলুদ ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে
কাঁচা হলুদের কারকিউমিন গুনাগুন ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে যে সমস্ত ভীতি জনক স্মৃতি থাকে তা কমাতে সাহায্য করে। তাই কারো যদি দুর্ঘটনার কোন দুঃসহ স্মৃতি থাকে তাহলে কাঁচা হলুদ সেই উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ কমিয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
হলুদ ক্যান্সার নিরাময়ে
কাঁচা হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণের কারণে কোষের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোকে ধ্বংস করে ক্যান্সার দূর করতে সাহায্য করে। কাঁচা হলুদের কারকিউমিন গুণ ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে তাদের মৃত্যু ঘটায়। এর ফলে শরীরে ক্যান্সার হতে পারে না। এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খেলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে।
কাঁচা হলুদ আর্থ্রাইটিস থেকে বাঁচাতে
কাঁচা হলুদে থাকা কার কিউমিন নানাভাবে আর্থ্রাইটিসের হাত থেকে আমাদের দেহকে বাঁচায়। এটি অ্যান্টিইনফ্লামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। যারা রিমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে ভুগেন দেখা গেছে সাধারণ ফিজিওথেরাপির থেকে তারা যদি নিয়ম করে প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খান তাহলে ব্যথা কমে এবং হাড়ের জয়েন্টের মুভমেন্টের অনেক ভূমিকা পালন করে।
কাঁচা হলুদ দাঁতের ক্ষয় রোধে
কাঁচা হলুদের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলীর কারণে জীবাণু থেকে দাঁত কে রক্ষা করে। দাঁতের উপরে থাকা সাদা রংয়ের এনামেলের আস্তরণকে রক্ষা করে এবং দাঁতের ক্ষয় থেকে দাঁতকে বাঁচায়। অনেক সময় টুথপেস্টের সাথে হলুদ মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়। ফলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া কমে এবং মুখের ভেতরে ক্ষত সারাতে কাঁচা হলুদ সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ স্ট্রোকের পরে
কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খেলে আমাদের স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারি এছাড়া কাঁচা হলুদের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণ পরবর্তী চিকিৎসাতে অনেক উপকার দেয়। কাঁচা হলুদ আমাদের হাটকে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। এছাড়া অপারেশনের পরে যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে তাকেও কাঁচা হলে কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
কাঁচা-হলুদের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা। ছবি-এআই |
এছাড়াও কাঁচা হলুদ আরো আমাদের উপকার করে থাকে তা নিচে দেওয়া হল-
- কাঁচা হলুদ ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ অ্যানিমিয়া কমাতে ব্যবহৃত হয়।
- কাঁচা হলুদ সর্দি কাশি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- কাঁচা হলুদ রান্নার তেলের অক্সিডেশন কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ হেপাটাইটিস রোধে উপকারী।
- কাঁচা হলুদ হাঁপানিতে উপকারী।
- কাঁচা হলুদ হলুদ চুলের যত্নে সহায়তা করে।
- কাঁচা হলুদ নিউ কেমিয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ প্রজননে ভূমিকা পালন করে।
- কাঁচা হলুদ অনিদ্রা দূর করতে সহায়তা করে।
- কাঁচা হলুদ মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ এলার্জি রোধ করতে সহায়তা করে।
- কাঁচা হলুদ ব্রণ কমাতে পারে।
- কাঁচা হলুদ পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ রক্ত পরিশুদ্ধ রাখতে ভূমিকা পালন করে।
- কাঁচা হলুদ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ যকৃত ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
- কাঁচা হলুদ তামাক জাত ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারি।
- কাঁচা হলুদ অগ্নাশয় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ ধাতব বিষক্রিয়ায় সহায়তা করে।
- কাঁচা হলুদ মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ বেনাপোজের সময়ে উপকারী।
- কাঁচা হলুদ হেপাটাইটিস রোধে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদ থাইরয়েডের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
আরো পড়ুন:
কাঁচা হলুদের অপকারিতা
কাঁচা হলুদের অপকারিতা গুলো নিচে দেওয়া হল:
হলুদে কারকিউমিন থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো এবং স্বাস্থ্যের দিক দিয়েও বেশ উপকারী। কিন্তু প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হলুদ খেলে এনিমিয়া বা রক্ত শূন্যতা হতে পারে।
অতিরিক্ত হলুদ খেলে আমাদের শরীর থেকে আয়রন শোষণ করে নেয়। তখন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় হলুদ আমাদের কিডনি স্টোন এবং রক্তপাতে সমস্যা করতে পারে।
প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত হলুদ খেলে মাথাব্যথা, ত্বকের সমস্যা - এসব লেগেই থাকে। এছাড়াও আলসার, লিভার বড় হয়ে যাওয়া এবং লিভারের প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে।
আশা করি কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা
মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা কি - চলুন জেনে নেয়া যাক। ত্বক সতেজ আর উজ্জ্বল থাকলে মুখের সৌন্দর্য অনেকক্ষণ বেড়ে যায়। আর ঠিক এই কাজটিই করে থাকে কাঁচা হলুদ। চোখের নিচের কালি ত্বকের রুক্ষতা ইত্যাদি দূর করে কাঁচা হলুদ। প্রথমে এক চামচ হলুদ গুঁড়া, দুই চামচ টক দই, এক চামচ ময়দা এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই পেস্ট পুরো মুখে ভালোভাবে মেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শুকিয়ে এলে হালকা করে ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের মলিন ভাব দূর হয়ে যাবে। আপনার তো দেখাবে উজ্জ্বল এবং সতেজ। ফলে আপনার চেহারার সৌন্দর্য অনেক গুণ বেড়ে যাবে এবং আপনাকে আগের চেয়ে আরো বেশি আকর্ষণীয় দেখাবে।
যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই তৈলাক্ত ত্বকের কারণে ব্রণ, দাগ, রেস ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাঁচা হলুদ ত্বকের এই তৈলাক্ততা দূর করতে পারে খুব সহজেই। সেই জন্য প্রথমে একটি পাত্রে দুই চামচ চন্দনের গুড়া সামান্য হলুদের গুঁড়া এবং দুই চামচ লেবুর রস মিশাতে হবে। এবার সেই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ হালকা করে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত এভাবে কাঁচা হলুদ মুখে ব্যবহার করলে ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হয়ে ত্বককে আরো উজ্জ্বল, মসৃণ এবং আকর্ষণীয় দেখাবে। এগুলোকে আপনি মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা ধরে নিতে পারেন।
আবার অনেকে ই দাঁতের হলদেটে ভাব নিয়ে অস্বস্তিতে থাকেন। দাঁতের এই হলদেটে ভাব দূর করতে পারে হলুদ। প্রতিদিন দাঁত পরিষ্কার করার সময় ব্রাশে সামান্য হলুদের গুড়া মিশিয়ে ব্যবহার করুন। প্রতিদিন এভাবে ব্যবহার করলে দাঁতের হলদেটে ভাব কেটে যাবে এবং আপনার দাঁত দেখাবে ঝকঝকে সাদা।
আবার শীতকাল এলেই অনেকের ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এই ঠোঁট ফাটা সমস্যা থেকে দূর করতে পারে হলুদ। একটি পাত্র ে এক চামচ হলুদ এক চামচ চিনি এবং এক চামচ মধু নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার সেই মিশ্রিত পেস্ট ঠোটে ভালোভাবে মেখে ৫ মিনিট রেখে দিন এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে হালকা করে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
মুখে-কাঁচা-হলুদের-উপকারিতা। ছবি-এআই |
কাঁচা হলুদ খেলে কি ক্ষতি হয়
কাঁচা হলুদ খেলে কি ক্ষতি হয় - চলুন এবার আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।
যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তারা সতর্কতার সাথে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। কেননা কাঁচা হলুদে রয়েছে পলিফেনলস বা কার কিউমিন উপাদান। ফলে এটি সহজে হজম হয় না। তাই যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচা হলুদ না হয় ভালো।
কাঁচা হলুদ মহিলাদের জরায়ু সংকোচন প্রসারণে সাহায্য করে। ফলে কাঁচা হলুদ খেলে গর্ভপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে অন্তঃসত্ত্বা মা কাঁচা হলুদ খেতে পারবেন না।
যারা ক্যান্সার নিরাময়ের ওষুধ খাচ্ছেন, তারা কাঁচা হলুদ খেতে পারবেন না। কেননা কাঁচা হলুদ ওইসব ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। আবার যারা ডায়াবেটিক ওষুধ সেবন করেন, তারা কাঁচা হলুদ খেতে পারবেন না। কেননা কাঁচা হলুদ ডায়াবেটিস ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে।
কাঁচা হলুদ খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষ করে যাদের পরিবারে কিডনিতে পাথর হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা বেশি দেখা দেয়। আবার যারা হরমোনের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু ক্যান্সার যেমন স্তন জরায়ুর ক্যান্সারে হলুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। আশা করি, কাঁচা হলুদ খেলে কি ক্ষতি হয় - জানতে পেরেছেন। সুতরাং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাঁচা হলুদ সেবন না করাই ভালো।
সর্বশেষ কথা - কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা শিরোনামের লেখাটি পড়ে আপনারা ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। কাঁচা হলুদ আমাদের অনেক রকম উপকার করে তার সাথে কিছু ক্ষতি বা অপকারও করে। কাঁচা হলুদ আমরা রান্নায় ব্যবহার করি এবং বিভিন্ন ঘরোয়া ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করি। আশা করি আজকের লেখাটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে এবং আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে লেখাটি শেয়ার করুন, যেন আপনার বন্ধুবান্ধবও উপকৃত হতে পারেন। এরকম আরো তথ্যবহুল লেখা পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন। লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url