এইচপিভি টিকা - এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বিস্তারিত

এইচপিভি টিকা - এইচপিভি টিকা নিবন্ধন এইচপিভি টিকা হল হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা। প্রিয় পাঠক এইচপিভি টিকা কিশোরীদের জরায়ুর মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা। এইচপিভি কি, এইচপিভি টিকা দেওয়ার আগে অবশ্যই এইচপিভি টিকা নিবন্ধন করতে হবে। আজকে আপনাদেরকে এইচপিভি টিকা ও এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।
এইচপিভি-টিকা - এইচপিভি-টিকা-নিবন্ধন
এইচপিভি-টিকা-এইচপিভি-টিকা-নিবন্ধন। ছবি-এআই 
প্রিয় পাঠক, বর্তমানে এইচপিভি টিকার জন্য সকল বিভাগের ছাত্রীগণ অথবা কিশোরীগণ (পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছাত্রীগণ এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীগণ) নিবন্ধন করতে পারবেন।এইচপি ভি টিকা এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বিষয়ে জানতে হলে আজকের লেখাটি আপনাকে খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

এইচপিভি টিকা - এইচপিভি কি

বাংলাদেশে নারীদের ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর কারণ। আর এই জরায়ু ক্যান্সারের জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি। জরায়ুর মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকার নাম হল এইচপিভি টিকা। বাংলাদেশে গ্যাভি, ইউনিসেফ এবং ডব্লিউএইচও এর সহায়তায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫,০০০ নারীর মৃত্যু হয় জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগে। বিভিন্ন গবেষণার বরাতে বলা হচ্ছে, কেবল মাত্র এইচপিভি টিকাদানের মাধ্যমে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যেতে পারে প্রায় ৯০ শতাংশ।


নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য দায়ী একটি সাধারণ ভাইরাস - হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)

এইচপিভি গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও নারীদের মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ। তবে এই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ যোগ্য। এর প্রথম ধাপ হল সব নারীকে কৈশোর বয়সেই এইচপিভি টিকা নিতে হবে।

প্রথম ধাপ:

এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এইচপিভি টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রায় ৯০% হ্রাস পেয়েছে। এই এইচপিভি টিকার ফলে তারা আসন্ন দুর্ভোগ, পারিবারিক বিপর্যয় এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ থেকে রেহাই পেয়েছেন। বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এইচপিভি টিকার গ্রুপের কথা বলে আসছেন এবং গত কয়েক মাসেই সেই স্বপ্ন সকলের প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপ:

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল, যাদের এই এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়নি তাদের সহ সব নারীর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা যেন এইচপিভি ভাইরাসটি ক্যান্সারের কোষ তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়।

এইচপিভি টিকা নিবন্ধন - জরায়ু টিকা নিবন্ধন
এইচপিভি টিকা নিবন্ধন-জরায়ু টিকা নিবন্ধন 

এইচপিভি টিকা নিবন্ধন: জরায়ু টিকা নিবন্ধন

বর্তমানে বাংলাদেশের সকল বিভাগের কিশোরীগণ বা ছাত্রীগণ (পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীতে অধ্যানরত ছাত্রী এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিহীন কিশোরীগণ) এইচপিভি টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। এইচপিভি টিকা বা জরায়ু টিকা দেওয়ার আগে প্রত্যেক ছাত্রী বা কিশোরীকে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন দিয়ে এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বা জরায়ু টিকা নিবন্ধন করতে হবে নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে। 

প্রথম পদ্ধতি:

ভ্যাক্সইপিআই ( VaxEPI) অ্যাপ - এর মাধ্যমে এইচপিভি টিকার জন্য নিবন্ধন করা যায়। অ্যাপ এর মাধ্যমে জরায়ু টিকা নিবন্ধন বা এইচপিভি টিকা নিবন্ধন এর জন্য প্রথমেই আপনাকে VaxEPI অ্যাপ টি ডাউনলোড করে নিতে হবে। VaxEPI অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য নেটওয়ার্ক সংযুক্ত মোবাইল ফোন দিয়ে গুগল ওয়েবসাইটে গিয়ে গুগল প্লে স্টোর থেকে VaxEPI অ্যাপ টি ডাউনলোড করে লগইন করে নিতে হবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি: 

সরকার নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে এইচপিভি টিকা নিবন্ধন করতে হবে সরকারের ছুটির দিন বাদে সকাল আটটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রতিদিন টিকা দান কর্মসূচি চলবে।

ওয়েবসাইট ঠিকানা ( ক্লিক করুন):

উপরোক্ত ওয়েবসাইটের ঠিকানায় গিয়ে প্রত্যেক ছাত্রী বা প্রত্যেক কিশোরীকে তার জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সঠিকভাবে প্রথমে জন্মতারিখ, জন্ম নিবন্ধন সনদ নম্বর, লিঙ্গ, ক্যাপচা কোড লিখে লিখে যাচাই করতে হবে।
নিবন্ধন সম্পর্কিত যেকোনো সহযোগিতার জন্য ফোন করতে পারেন, ফোন নাম্বার: ১৬২৬৩।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রংপুর বিভাগে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) এর টিকা প্রদান কার্যক্রমের চূড়ান্ত পর্যায়ে সম্পন্ন করেছে ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে। এই কার্যক্রমে সহায়তা করেছে দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গাভি, ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই এইচপিভ টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ৫৬ লাখ কিশোরীকে লক্ষ্যমাত্রা ৯৩ শতাংশ যাদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছর তাদের এইচপিভি টিকা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কিশোরীরাও রয়েছেন। নারীর জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোধে এটি একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ। গ্যাভি, ইউনিসেফ ও ডব্লিউএইচও সারাদেশব্যাপী এইচপিভি টিকা প্রদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানায়। এই প্রজন্মকে জরায়ু মুখ ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ক্যাম্পেইনের প্রথম পর্যায়ে ঢাকায় ১৫ লাখের বেশি কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছিল।

এইচপিভি টিকা কার্ড:

এইচপিভি টিকা দেওয়া হলে টিকা কার্ডটি সযত্নে সংরক্ষিত রাখুন।

কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন:  এইচপিভি টিকা কত সাল থেকে পাওয়া যায়?
উত্তর:  এইচপিভি টিকা ২০০৬ সাল থেকে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন:  কত বছর বয়স থেকে এইচপিভি টিকা বা জরায়ু টিকা নিতে পারবে?
উত্তর:  ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী নারীরা এই টিকা নিতে পারবে।
প্রশ্ন:  কারা এই টিকা নিতে পারবে না?
উত্তর: গর্ভবতী মায়েরা এ টিকা নিতে পারবেনা।
প্রশ্ন: এইচপিভি টিকার ডোজ কয়টি?
উত্তর: ১ টি।

সর্বশেষ কথা - এইচপিভি টিকা - এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বা জরায়ু টিকা নিবন্ধন

প্রিয় পাঠক, উপরের এইচপিভি টিকা - এইচপিভি টিকা নিবন্ধন লেখাটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য প্রধানত দায়ী এইচপিভি ভাইরাস। আর জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য এইচপিভি টিকা নিবন্ধন করে এইচপিভি টিকা অবশ্যই দেয়া উচিত। তার জন্য প্রত্যেক কিশোরী, নারী ও পিতা-মাতা সহ সকল অভিভাবককে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। আজকের এইচপিভি টিকা- এইচপিভি টিকা নিবন্ধন বা জরায়ু টিকা নিবন্ধন লেখাটি মনোযোগ সহকারে করার জন্য তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই লেখাটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন যেন তারাও উপকৃত হতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url