রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিন
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিন আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আপনি কি রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? কলা একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল, যা সারা বছরেই পাওয়া যায়। কলা - কাঁচা এবং পাকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। তবে আপনি যদি রাতের বেলা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
রাতে-কলা-খাওয়ার-উপকারিতা। ছবি-এআই |
তবে রাতে শুধুমাত্র পাকা কলা ই খাওয়া হয়। অনেকেই বলে থাকেন, রাতে কলা খেলে নাকি ভালো ঘুম হয়, সেই সাথে ভালো উপকারও পাওয়া যায় কিন্তু সত্যি কি তাই? তাই রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। তো চলুন বন্ধুরা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
উচ্চ ক্যালরির একটি ভালো উৎস হল কলা। এতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সঙ্গে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যেকোনো তাজা ফলের তুলনায় বেশি। কলায় রয়েছে আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টিগুণের মত টিস্যু গঠনকারী উপাদান। কলা দিনে বা রাতে যে কোন সময়ই খাওয়া যায়। তবে রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা কি? - এই সম্পর্কে মানুষের একটু বেশিই কৌতুহল রয়েছে।
ভালো ঘুমের জন্য রাতে কলা
অনেকেই বলে থাকেন, রাতে কলা খাওয়া ঠিক নয় কিন্তু এটা সম্পূর্ণ তাদের ভুল ধারণা। কারণ কলার মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের পেশিকে শিথিল হতে সাহায্য করে। এছাড়াও কলাতে প্রচুর শক্তি থাকে তাই রাতে খাবার খাওয়ার পর একটা মিডিয়াম বা মাঝারি ধরনের পাকা কলা খেলে একটা ভালো ঘুম হয়।
অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কলায় কিছু যাদুকরি উপাদান রয়েছে যেমন অ্যামিনো এসিড ট্রিপ্টোফ্যান। পুষ্টিবিদগণ বলেন, ট্রিপ্টোফ্যান হল সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে অগ্রদূত, যা স্নায়ু সংবেদন সৃষ্টিকারী একটি উপাদান। আর এই দুটি হরমোন মন ভালো রাখে, শরীরে আরাম প্রদানে সহায়তা করে, ফলে আরামদায়ক একটা ঘুমের উদ্রেক করে। তাই রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে ভালো ঘুম এবং আরামদায়ক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদান উৎপাদনে সহায়তা করে থাকে।
আমরা ঘুমোতে যাওয়ার আগে অনেকেই পছন্দের বই পড়ি বা পছন্দের গান শুনি একটা ভালো ঘুমের লক্ষ্যে। কেননা এগুলো মানুষের মস্তিষ্ককে ঘুমের জন্য সংকেত দেয় এবং মন প্রশান্ত রাখে। কিন্তু এক পুষ্টিবিদ বলেন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কলা খেলে প্রাকৃতিক ভাবেই ঘুমের মাধ্যমে একটি আরামদায়ক রাত্রি উপহার দিতে ভূমিকা রাখে।
আরো পড়ুন:
পেশি শক্তি বৃদ্ধিতে কলা
কলাতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো অত্যাবশ্যকীয় খনিজ উপাদান, যা শরীরের পেশীতে আরাম প্রদানে সাহায্য করে। আমরা ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরের পেশিতে টান পায়, তখন কলাতে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম এই টান কমাতে সহায়তা করে এবং আরাম অনুভবে ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে এটি একটি।
দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতা
দুধ একটি আদর্শ খাবার কারণ এতে সব রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে কাজেই দুধ যেকোনো সময় খাওয়া যায়। আর কলায় রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইডেট, প্রাকৃতিক সুগার, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কলায় বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে ব্লাড প্রেসার কমে যাবে। পক্ষান্তরে কলায় বিদ্যমান ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাকে অনায়াসে বসে আনতে পারবে। তাই দুধ কলা একসঙ্গে খেলে শরীরে প্রোটিন এবং এনার্জির ঘাটতি দূর হবে। তবে যদি কেউ দুধ কলা খাওয়ার পর গ্যাস - এসিডিটির সমস্যায় পড়ে থাকেন, তাহলে তাদের এই খাবার এড়িয়ে চলায় উচিত হবে।
রাতে-কলা-খাওয়ার-উপকারিতা-কি। ছবি- এআই |
প্রতিদিন কয়টি কলা খাওয়া উচিত
যে কোন সুস্থ মানুষ সাধারণত প্রতিদিন একটি বড় কলা খেতে পারেন আর ছোট সাইজের কলা হলে দুইটা খেতে পারেন। যারা প্রতিদিন কায়িক পরিশ্রম করেন তারা দেহে পটাশিয়াম এবং কার্বোহাইডেট সরবরাহের জন্য কলা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা পেতে পারেন।
আরো পড়ুন
কলা খেলে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়
কলা হলো একটি ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ ফল। আমাদের দেহে সুস্থ কোষ তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন, হিমোগ্লোবিন এবং অ্যামিনো এসিড উৎপাদনে এই ভিটামিন-৬ খুবই দরকারি। তাই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ৬ এর চাহিদার পাঁচ ভাগের এক ভাগ পূরণ করে থাকে এই কলা। তাছাড়া কলা ভিটামিন-সি এর আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার ১৫ শতাংশই পূরণ করে থাকে।
সর্বশেষ কথা - রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা আজকের রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। কলা একটি সহজলভ্য ফল যা সারা বছর এবং দেশের সবখানেই পাওয়া যায়। কলা একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। কলা দেহের পুষ্টিগুণ পূরণ করে রাতে ভালো ঘুমের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এজন্য প্রতিদিন বিকেল অথবা রাতে অন্তত একটি কলা খাওয়া উচিত। প্রিয় পাঠক আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে লেখাটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও শেয়ার করুন, যেন তারাও উপকৃত হতে পারেন। আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url