সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থ সহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থ সহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থ সহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আপনি কি সুরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত জানতে চান? আপনি যদি সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই লেখাটি আপনার জন্য।
সূরা-হাশর-শেষ-তিন-আয়াত-অর্থসহ-বাংলা-উচ্চারণ-ফজিলত। ছবি- এআই |
সূরা হাশর। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ৫৯তম সূরা আল হাশর। সূরা হাশর সৌদি আরবের পবিত্র মদিনায় অবতীর্ণ হয়। সূরা হাশর এর রুকু সংখ্যা ৩ এবং আয়াত সংখ্যা ২৪। পবিত্র এই সূরায় ইহুদিদের নির্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা হাশর শেষ তিন আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালার আসমাউল হুসনা এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসমা বা নাম উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সুন্দর সুন্দর নাম গুলো মহান আল্লাহ এই সূরা হাশর শেষ তিন আয়াতের মধ্যে তুলে ধরেছেন।
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত আরবি
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ (22) هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ (23) هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত
প্রিয় পাঠক সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ হওয়ায় আপনাদের সকলের খুব সহজে মুখস্ত করার জন্য বাংলায় সহজ ভাবে উচ্চারণ দেওয়া হল-
বাংলা উচ্চারণ:
হুয়াল্লাহু হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আলিমুল গাইবি ওয়াশ শাহাদাতি হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুয়াল্লাহু হল্লা যি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুস সুস সালামুল মু'মিনুল মুহাই মিনুল আজিজুল জাব্বারুল মোতাকাব্বির। সুবাহানাল্লাহি আম্মা ইয়ুস রিকুন। হুয়াল্লাহুল খালিকুল বারিউল মুসা ওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউ সাব্বিহু লাহু মাফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব, ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।
আরো পড়ুন:
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত
প্রিয় পাঠক, আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত এর বাংলা অনুবাদ নিচে উল্লেখ করা হলো। কারণ, শুধু আরবিতে সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত না পড়ে অর্থ জেনে পড়া অধিক উত্তম।
বাংলা অর্থ
তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল তিনিই অহংকারের অধিকারী। ওরা যাকে শরিক করে আল্লাহ তার থেকে পবিত্র, মহান। তিনি আল্লাহ, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সব সুন্দর তার নামই। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তার পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, তত্ত্বজ্ঞানী। (সূরা হাশর, আয়াত: ২২ - ২৪ )
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত বাংলা অর্থসহ পড়ার ও আমল করার তৌফিক দান করুন - আমিন।
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত এর ফজিলত
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত এর ফজিলত অনেক বেশি। সকাল বিকাল সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত পড়া প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং সওয়াবের আমল।
ইহুদিরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বনু নাজির নবী সাঃ এর সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। এই অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মহল্লায় গেলে তারা তাকে একটি ছাদের নিচে বসতে দেয়। পরে ছাদ থেকে পাথর ফেলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
এ অবস্থায় মহান আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টি জানালে তিনি জায়গাটি থেকে সরে যান। তাদের জানিয়ে দিন,
'তোমরা যুক্তি ভঙ্গ করেছ। তোমাদের যেখানে ইচ্ছা চলে যাওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হল। এরপর তোমাদের কাউকে পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে'।
এ বিষয়ে সূরা আল হাশরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আলোচনা করা হয়।
আরো পড়ুন:
সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত সম্পর্কিত হাদিস
হাদিস ও তাফসীর গ্রন্থে সূরা হাশরের বেশ কিছু ফজিলত ও আমল উল্লেখ করা হয়েছে।
১। ইরবাজ ইবনে সারিয়া রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর আগে মুসাব্বিহাত সূরা পাঠ করতেন। এগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত আছে, যে আয়াতটি ১ হাজার আয়াত অপেক্ষা উত্তম। (মুসাব্বিহাতের মধ্যে সূরা হাশর অন্তর্ভুক্ত, তিরমিজি: হাদিস নং ২৯২১ )
২। হযরত মাকাল বিন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
"যে ব্যক্তি সকালবেলা তিনবার 'আউযুবিল্লাহিস সামিয়ীল আলিম মিনাস শয়তানির রাজীম' পড়বে, এরপর সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা'আলা ওই ব্যক্তির জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন; যারা ওই ব্যক্তির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। আর এ সময়ের মধ্যে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করবে আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে"।
(সুনানে তিরমিজি: হাদিস নং ৩০৯০, আবু দাউদ: হাদিস নং ২৯২২, মুসনাদ আহমদ: হাদিস নং ১৯৭৯৫, কানজুল উম্মাল: হাদিস নং ৩৫৯৭)
সর্বশেষ কথা - সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত
সূরা হাশর এর প্রথম থেকে তৃতীয় তথা শেষ রুকু এক থেকে চব্বিশ নম্বর আয়াত সত্য অস্বীকারকারীদের পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাতে কত কঠিন তা বলে শুরু হয়েছে সূরা হাশরের বড় অংশে সমনীতির আলোচনা করা হয়েছে সূরা শেষ হয়েছে মোমেনদের উদ্দেশ্যে উপদেশ বাণী দিয়ে। সুরাটির শেষ তিন আয়াতে আছে, তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়"।
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা সূরা হাশর শেষ দিন আয়াত বাংলা অর্থ সহ উচ্চারণ ও ফজিলত বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই যেন নিয়মিত সূরা হাশর শেষ তিন আয়াত পাঠ করতে পারি, মহান আল্লাহ যেন আমাদের এই তৌফিক দান করেন আমিন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url