সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ

সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আপনি কি সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ জানতে চান? আজকের আর্টিকেলে আমরা পবিত্র আল-কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও ছোট সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ ফজিলত বিষয়ে আলোচনা করব।
সূরা-ইখলাস
সূরা-ইখলাস। ছবি-এআই 
সূরা ইখলাস পবিত্র আল-কোরআনের ১১২ তম সূরা। এই সূরাকে মাক্কী সূরা বলা হয়, কেননা এটি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবী জীবনে মক্কায় অবস্থান কালে অবতীর্ণ হয়েছিল। সূরা ইখলাসের রুকু সংখ্যা ১ এবং আয়াত সংখ্যা ৪। সূরা ইখলাসের মাধ্যমে তাওহীদের আকিদাকে দৃঢ় অর্থাৎ মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা করা হয়েছে। তাই সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ জানার জন্য এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ 

আল্লাহ সুবহানোতায়ালার সম্পর্কে কাফেরদের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে এবং মহান আল্লাহর একত্ববাদের বর্ণনা করতেই এই সূরা নাযিল হয়েছে। তো চলুন বন্ধুরা, সূরা এখলাসের বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ জেনে নেই।

আরো পড়ুন:

সূরা ইখলাস এর আরবি উচ্চারণ

ِ( بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ )

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ - اللَّهُ الصَّمَدُ - لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ - وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ

সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ

( বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)
১। কুল হুয়াল্লাহু আহাদ।
২। আল্লাহুস সামাদ।
৩। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ।
৪। ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফওয়ান আহাদ।

সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ

( পরম করুণাময় মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি)
১। বলো, তিনিই আল্লাহ (যিনি) এক - অদ্বিতীয়।
২। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।
৩। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি।
৪। আর তাঁর কোন সমকক্ষ কেউই নেই।
( সূরা ইখলাস: আয়াত: ১ - ৪ )।
সূরা-ইখলাস-বাংলা-উচ্চারণ-ছবি
সূরা-ইখলাস-বাংলা-উচ্চারণ-ছবি। ছবি-এআই 

সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি ও ফজিলত

আল্লাহ সুবহানোতায়ালার সন্তান-সন্ততি আছে বলে কাফেররা যে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেছিল, এই সূরা ইখলাসের মাধ্যমে তার কড়া প্রতিবাদ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ সব অভাবের অতীত এবং তার কোন তুলনা নেই।

সূরা ইখলাসের ফজিলতের বিশলতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, এটি পবিত্র আল-কোরআনের এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ এ সূরা তিনবার পাঠ করলে সমস্ত কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করার সওয়াব পাওয়া যায়। সূরা ইখলাসের ফজিলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস পাওয়া যায়। 

তবে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দিন শুরু ও শেষ করতেন এই সূরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে। অর্থাৎ তিনি ফজরের সুন্নত ও সালাতুল বিতরে সূরা ইখলাস ও সূরা কাফিরুন পাঠ করতেন। (তাফসির ফি যিলালিল কুরআন: ৬/৪০০৫)

আরো পড়ুন:

এক হাদিস থেকে জানা যায়- 
এক সাহাবী প্রতি দুই রাকাতে এই সূরাটি নামাজের মধ্যে একবার করে পাঠ করতেন, অন্য সাহাবীরা এটা জানতে পেরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অভিযোগ দিলেন এবং আল্লাহর রাসূল ওই সাহাবীকে প্রশ্ন করলেন, "তুমি কি সত্যি প্রতি রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তে থাকো"?

সেই সাহাবী উত্তরে বললেন, "জ্বী হ্যাঁ, ইয়া রাসুলুল্লাহ!  আমি প্রতি দুই রাকাত নামাজের মধ্যে অন্তত একবার করে সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করি"।

তখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, "কিন্তু কেন?  তখন সাহাবী উত্তরে বললেন, "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পড়তে অনেক ভালো লাগে, কারণ এই সূরায় আমার মহান আল্লাহর একত্ববাদের পরিচয় রয়েছে। আমি যত তেলাওয়াত করি, ততই শান্তি পাই। সাথে সাথে রাসুল (সাঃ) বললেন, "এই ব্যক্তি মৃত্যুর পর সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে"।

অন্য এক হাদিসে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর কাছে গিয়ে বললেন, "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি সূরা ইখলাসকে ভালোবাসি"। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, "এই সূরাকে ভালোবাসার কারণে তুমি বেহেশতে যেতে পারবে"।  (মুসনাদে আহমদ শরীফ)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পাঠ করবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে সকল বিপদ আপদ ও বালা মুসিবত থেকে রক্ষা করবে"।  (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ শরীফ)

রাসুল (সাঃ) ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস, সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পড়ে দুই হাত মুবারকে ফু দিয়ে পুরো শরীর মাথা মাসেহ করতেন।  (সহীহ বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিজি শরীফ)

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) এর বরাতে বলা হয়েছে, 
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি তিনটি কাজ ঈমানের সঙ্গে করতে পারবে, জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে সে প্রবেশ করতে পারবে:  এক.  যে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেবে। দুই.  যে গোপন ঋণ শোধ করবে।  তিন.  যে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর দশ বার সূরা ইখলাস পাঠ করবে"।  (তাফসীরে কাসির)

সূরা ইখলাস অবতীর্ণ হওয়ার কারণ - সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি

যখন কাফেররা অবিশ্বাসীদের মতো হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে আল্লাহর বংশ পরিচয় জিজ্ঞেস করেছিল, তার জবাবে মহান আল্লাহ এই সূরা নাযিল করেন। কোন কোন রেওয়াতে আছে যে, তারা আরো প্রশ্ন করেছিল - আল্লাহতালা কিসের তৈরি?  সোনা, রুপা, না অন্য কিছুর? তার মোক্ষম জবাবে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে।

সর্বশেষ কথা - সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি 

প্রিয় পাঠক আজকে আল কুরআনের অত্যন্ত মহামূল্যবান সূরা ইখলাস বাংলা অর্থসহ বিস্তারিতভাবে আপনাদের সামনে নির্ভুলভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। হাদিস অনুযায়ী বুঝা যায়, সূরা ইখলাস অত্যন্ত মূল্যবান এবং মহান আল্লাহ বেশি বেশি সূরা ইখলাস পাঠ কারীর উপর খুশি হন।

কাজেই মহান আল্লাহ আমাদের যেন বেশি বেশি সূরা ইখলাস পাঠ করার তৌফিক দান করেন আমিন। আজকের সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ লেখাটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধব দের সাথে শেয়ার করুন কেন তারাও প্রকৃত হতে পারেন। সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ ছবি অর্থসহ লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url