সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত বিস্তারিত

সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থসহ pdf সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ফজিলত বিস্তারিত জানা প্রত্যেক মুসলমানের উচিত। সূরা মূলক মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআনের ১১৪টি সূরার মধ্যে ৬৭তম সূরা। আল মুলক শব্দের অর্থ রাজত্ব। এ সূরায় মহান আল্লাহ তায়ালার মালিকানা এবং সার্বভৌমত্ব প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়াও এ সুরাতে ঈমানদারদের জন্য সুখবর এবং অবিশ্বাসীদের জন্য শাস্তির কথা বর্ণনা করা হয়েছে।।
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ-ও-অর্থসহ
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ-ও-অর্থসহ। ছবি-এআই 
সূরা মূলক সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে অবতীর্ণ হয়েছে,  এর আয়াত সংখ্যা ৩০ এবং রুকু সংখ্যা ২। সূরা মূলকে, একদিকে ইসলামী শিক্ষার মূল বিষয়সমূহ বর্ণনা করা হয়েছে এবং অন্যদিকে যেসব লোক অমনোযোগী ও বেপরোয়া ছিল তাদেরকে সজাগ করে দেওয়া হয়েছে। সূরা মূলকের অপর নাম 'আলমানিআহ্' অর্থাৎ বাধা দানকারী, প্রতিহতকারী। সূরা মূলক মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা।

সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ

সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ শিরোনামের লেখাটিতে এই সূরায় মহান আল্লাহ তায়ালার মালিকানা এবং সার্বভৌমত্বের বর্ণনা পাওয়া যায়। সূরা মুলক মহান আল্লাহ তায়ালার সকল সৃষ্টির মহত্ব, জবাবদিহিতার ধারণা এবং স্রষ্টার করুণা ও ক্ষমা চাওয়ার গুরুত্বের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। এই সুরাটি বিশ্বাসীদেরকে সৃষ্টির লক্ষণ নিয়ে মননশীল চিন্তা করতে এবং সমস্ত কিছুর ওপর আল্লাহ তাআলার মহিমা ও কর্তৃত্ব স্বীকার করতে উৎসাহিত করে। সূরা মূলক ইসলামী ঐতিহ্যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, আধ্যাত্মিক এবং ধর্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব বহন করে। সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ লেখাটিতে নিচে আপনাদের সুবিধার জন্য খুব সহজ ভাষায় উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ দেওয়া হল।

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ )
উচ্চারণ: (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)
বাংলা অর্থ: (পরম করুণাাময় মহান আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি)।

(১) تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ: তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু ওয়াহুয়া আ'লা কুল্লি শাইয়্যিন কাদির।
বাংলা অর্থ: মহা মহিমান্বিত তিনি যার হাতে রয়েছে সার্বভৌম কর্তৃত্ব আর তিনি সব কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

(২) الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
উচ্চারণ: আল্লাযী, খা'লাকাল মাওতা ওয়াল হায়াতা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহসানু আমালাওঁ ওয়া হুয়াল আজিজুল গাফুর।
বাংলা অর্থ:  যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন - কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাময়।

(৩)الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُور
উচ্চারণ: আল্লাযী খা'লাকা সাব আ সামাওয়া তিন তিবা কান মা তারা ফি খালকির রাহমানী মিনতাফাওত ফারজি ইল বাশারা হাল তারা মিন ফুতুর।
বাংলা অর্থ:  যিনি সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন সুবিন্যস্তভাবে। তুমি পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তারপর তুমি দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নাও, তুমি কি কোন ফাটল দেখতে পাচ্ছ?
আরো পড়ুন:
(৪) ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ
উচ্চারণ: ছুম্মার জি'ইল বাসারা কাররাত ইনি ইয়ান কালিব ইলাইকাল বাশারু খাসি আওঁ ওয়া হুওয়া হাছীর।
বাংলা অর্থ:  অতঃপর তুমি বারবার তাকিয়ে দেখো, তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ-ও-অর্থসহ-ফজিলত
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ-ও-অর্থসহ-ফজিলত। ছবি-এআই 
(৫) وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
উচ্চারণ: ওয়া লাকাদ যাইয়ান্নাস সামা আদ্দুন ইয়া বিমাসা বিহা ওয়াজা' আলনা হা রুযুমাল লিস সায়া তীনি ওয়া আ'তা দনা লাহুম আযা বাছছা'ঈর।
বাংলা অর্থ: আমি সর্বনিম্ন আসমানকে প্রদীপ মালা দ্বারা সুসজ্জিত করেছি, সেগুলোকে শয়তানদের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্য জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি।

(৬) وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
উচ্চারণ: ওয়া লিল্লাযিনা কাফারু বিরাব্বিহিম আজা বু জাহান্নামা ওয়া'বিশাল
মাসীর।
বাংলা অর্থ: যারা তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান!

(৭) إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ
উচ্চারণ: ইজাউল কূফিহা সামি 'উ লাহা শাহি কাওঁ ওয়াহিয়া তাফুর।
বাংলা অর্থ: যখন তারা তথায় নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে।

(৮) تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِير
উচ্চারণ: তাকা দুতা মাইয়াজু মিনাল গাইজী কুল্লা মাউল কিয়া ফিহা ফাউজুন শাআলহুম খাজানা তুহা আলাম ইয়া'তিকুম নাজির।
বাংলা অর্থ: ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই তাতে কোন সাম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তাদেরকে তার সিপাহীরা জিজ্ঞেস করবে - তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি?

(৯)قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ
উচ্চারণ: কা' লু বালা কাদ যাআনা নাজিরুন ফাকাযযাবনা ওয়াও কুলনা মানাঝঝা লাল্লা হু মিন শাইয়িন ইন অনতুম ইল্লা ফি দালা লীন কাবির।
বাংলা অর্থ: তারা বলবে, 'হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেছিল'। অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলাম, 'আল্লাহ তা'আলা কোন কিছু নাযিল করেননি'। তোমরা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে রয়েছো।

(১০) وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِير
উচ্চারণ: ওয়া কা-লুলাও কুন্না নাছমা'উ আও না'কিলুমা কুন্না ফি আসহা বিছছা'ঈর।
বাংলা অর্থ:  কারা আরও বলবে, 'যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না'।

(১১)فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ
উচ্চারণ: ফা'তা রাফু বিজাম বিহীম ফাসু হক্ক লি আসহা বিছছা'ঈর।
বাংলা অর্থ: অতঃপর তারা তাদের দোষ স্বীকার করবে। জাহান্নামেরা দূর হোক।

(১২) إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
উচ্চারণ: ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখ শাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবির।
বাংলা অর্থ: নিশ্চয়ই যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।

(১৩) وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
উচ্চারণ: ওয়া আশিররূ কাওলাকুম আবিজ হারুবিহী ইন্নাহু আলিমুম তিস সুদূর।
বাংলা অর্থ: তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত।

(১৪) أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
উচ্চারণ: আলা ইয়া'লামু মান খালাকা ওয়া হুওয়াল্লাতী ফুল খাবির।
বাংলা অর্থ: যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না? তিনি সূক্ষ্ম জ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত।

(১৫) هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
উচ্চারণ: হুওয়াল্লাযী যা'আলা লাকুমুল আরদা জালুলান ফাম সুফি মানা কিবিহা ওয়া কুলুমীর রিঝকিহী ওয়া ইলাইহীন নুসুর।
বাংলা অর্থ: তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে সুগম করেছেন। অতএব তোমরা তাঁর কাঁধে বিচরণ করো এবং তাঁর দেয়া রিজিক আহার কর, তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে।

(১৬) َأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
উচ্চারণ: আ আমীন তুম মান ফিস সামাই আইঁ ইয়াখশিফা বিকমুল আরদা ফাইজা হিয়া তামূর।
বাংলা অর্থ: তোমরা কি চিন্তামুক্ত হয়ে গেছো যে, আসমানে যিনি আছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন; অতঃপর তা কাঁপতে থাকবে।

(১৭) أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِير
উচ্চারণ: আম আমিন তুম মান ফিস সামাই আইঁ ইউরছিলা আলাইকুম হা-সিবান ফাসাতা' লামুনা কাইফা নাজির।
বাংলা অর্থ: না তোমরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছো যে, আসমানে যিনি আছেন তিনি তোমাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী।

(১৮)وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
উচ্চারণ: ওয়া লাকাদ কাযযা বাল্লাজিনা মিন কাবলিহীম ফাকাইফা কা -না নাকির।
বাংলা অর্থ: তাদের পূর্ববর্তীগণ মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কত কঠোর হয়েছিল আমার অস্বীকৃতি।

(১৯) أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ
উচ্চারণ: আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্তাইরি ফাওকা হুম সাফফা তিওঁ ওয়াইয়াকবিদন। মাইউমসি কুহুন্না ইল্লার রাহমানু ইন্না হু বিকুল্লি শাইয়িম বাসির।
বাংলা অর্থ: তারা কি লক্ষ্য করেনা, তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি, পাখা বিস্তারকারী ও পাখা সংকোচনকারী? রহমান আল্লাহ ই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব বিষয় দেখেন।

(২০) أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُنْدٌ لَكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ
উচ্চারণ: আম্মান হা যাল্লাযী হুওয়া জুন দুল্লাকুম ইয়ান শুরুকুম মিন দু নীর রাহমানী ইনিল কাফিরুনা ইল্লা -ফি গুরূর।
বাংলা অর্থ: রহমান আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত তোমাদের কোন সৈন্য আছে কি, যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফেররা বিভ্রান্তিতেই পতিত আছে।

(২১) أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَلْ لَجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ
উচ্চারণ: আম্মান হা জাল্লাজি ইয়ারঝ কুকুম ইন আমছাকা রিঝ কাহু বাল্লা জজুফী উতু বিওয়া নুফূর।
বাংলা অর্থ: তিনি যদি রিজিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে যে তোমাদেরকে রিজিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে।

(২২) أَفَمَنْ يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّنْ يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
উচ্চারণ: আফামাইঁ ইয়ামসি মুকিব্বান আলা ওয়াজহি হী আহদা আম্মাইঁ ইয়ামসি ছাবি ইয়ান আলা সিরা তিম মুছতাকিম।
বাংলা অর্থ: যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে, সে ই কি সৎপথে চলে না ,সে ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?

(২৩) قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُ ونَ
উচ্চারণ: কুল হুআল্লাজি আনশা আকুম ওয়া যা'আলা লাকুমুছ ছাম আ ও'আল আবসা-রা ওয়াল আফইদাতা কালিলাম মা তাশকুরুন।
বাংলা অর্থ: বলুন, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

(২৪) قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
উচ্চারণ: কুলহু ওয়াল্লাজি যারা আকুম ফিল আরদিওয়া ইলাইহি তুহ সারুন।
বাংলা অর্থ: বলুন, তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সমবেত হবে।

(২৫) وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
উচ্চারণ: ওয়া ইয়া কুলুনা মাতা হা জাল ওয়াদু ইন কুনতুম সা-দিকীন।
বাংলা অর্থ: কাফেররা বলে, এই প্রতিশ্রুতি কবে হবে যদি তোমরা সত্যবাদী হও?

(২৬) قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ
উচ্চারণ: কুল ইন্না মাল ইলমু ইনদাল্লাহ হি ওয়া ইন্নামা আনা নাজিরুম মুবিন।
বাংলা অর্থ: বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তায়ালার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।

(২৭) فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَدَّعُونَ
উচ্চারণ: ফালাম্মা রা আওহু ঝুল-ফাতান ছীআত ঊজুহুল্লাজিনা কাফারু ওয়া কিলা হা জাল্লাজি কুনতুম বিহী তাদ্দা'ঊন।
বাংলা অর্থ: যখন তারা সেই প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে, তখন কাফেরদের মুখমন্ডল মলিন হয়ে পড়বে এবং বলা হবে - এটাই তো তোমরা চাইতে।

(২৮) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
উচ্চারণ: কুল আরা আইতুম ইন আহলাক কানিয়াল্লাহু ওয়া  মাম্মা ইয়া আও রাহিমানা ফামাইঁ ইউজিরুল কাফিরিনা মিন আজা-বিন আলিম।
বাংলা অর্থ: বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছো যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে ও আমার সঙ্গীদেরকে ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন তবে কাফেরদেরকে কে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?

(২৯) قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ
উচ্চারণ: কুলহু ওয়ার রাহমানু আমান্না বিহী ওয়া আলাইহি তাও য়াক্কালনা ফাছাতা লামুনা মান হু ওয়া ফি দালা লিম মুবিন।
বাংলা অর্থ: বলুন, তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাতে বিশ্বাস রাখি এবং তাঁরই ওপর ভরসা করি। অতি সত্বর তোমরা জানতে পারবে, কে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় আছে।

(৩০) قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ
উচ্চারণ: কুল আরা আইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়াতি কুম বিমাইম মা'ঈন। 
বাংলা অর্থ: বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ
সূরা-মুলক-বাংলা-উচ্চারণ। ছবি-এআই 

সূরা মুলক এর ফজিলত - সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ

সূরা মূলক এর ফজিলত বলতে এই সূরা তেলাওয়াতকে ইসলামী ঐতিহ্যে উৎসাহিত করা হয়েছে, কারণ এর সাথে উপকারিতা বিদ্যমান। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পবিত্র কোরআনে ৩০ টি আয়াত নিয়ে একটি সূরা (সূরা মুলক) আছে, যা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করে যতক্ষণ না তাদের ক্ষমা করা হয়।

প্রতিদিন যে ব্যক্তি সূরা আল মূলক পাঠ করবে সে আল্লাহর নিকট্য লাভ করবে। তার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে এবং কবর আজাব ও কিয়ামতের মসিবত হতে রক্ষা পাবে এবং জান্নাতবাসী হবে।
এক হাদিস হতে জানা যায়, যে ব্যক্তি নিয়মিত সূরা মূলক তেলাওয়াত করবে তাকে সূরা মুলক কবরের আজাব থেকে কেয়ামত পর্যন্ত রক্ষা করবে।
আরো পড়ুন:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'কাল কেয়ামতের মাঠে এক ব্যক্তির উপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে সূরা মূলক নিয়মিত পাঠ করত, তখন সূরা মূলক আল্লাহকে বলবে, অমুক ব্যক্তিকে আপনি ক্ষমা করে দিন। আল্লাহ বলবেন, না। সূরাটি আবারও বলবে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে আপনি ক্ষমা করে দিন কারণ সে আমাকে পাঠ করত। আল্লাহ আবারও বলবেন, না। এভাবে সূরা মুলক আল্লাহর কাছে অমুক ব্যক্তির জন্য ক্ষমা চাইতেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ উক্ত ব্যক্তিটিকে ক্ষমা না করেন। (আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪০০)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস সাথে বর্ণিত, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার আকাঙ্ক্ষা যে সুরাতুল মুলক মুসলমানের অন্তরে থাকুক।

সর্বশেষ কথা - সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ

সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ শিরোনামের লেখাটিতে এই সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কোরআন শরীফের অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও মর্যাদা সম্পন্ন এই সূরাটি আমরা যেন বেশি বেশি তেলাওয়াত করতে পারি এবং আমল করতে পারি, মহান আল্লাহ যেন আমাদের এই তৌফিক দেন আমিন।
আশা করি আজকের এই সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ শিরোনামের লেখাটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি লেখাটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন, যেন তারা উপকৃত হতে পারেন। আজকের লেখাটি নির্ভুলভাবে লেখার চেষ্টা করা হয়েছে তারপরও যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তবে আল্লাহ যেন আমাদের ক্ষমা করেন। আর লেখাটিতে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে আপনারা কমেন্টের মধ্যে জানাবেন। লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url